ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা : মোর দ্যান অ্যা ক্লাব
আমরা যারা ফুটবলের ভক্ত ও নিয়মিত রাত জেগে ইউরোপিয়ান ফুটবল উপভোগ করি, তারা “More than a club” অথবা Més que un club” (একটি ক্লাবের চেয়েও বেশি) কথাটার সাথে কম-বেশি সবাই পরিচিত। “More than a club” বলতেই চোখের সামনে ছবির মতো ভেসে ওঠে “ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা” এর লোগো! প্রায় একশত উনিশ বছর আগে জন্ম নেওয়া প্রাচীন এই ক্লাবটির “একটি ক্লাবের চেয়ে বেশিকিছু” হয়ে ওঠার গল্প তথা ইতিহাস নিয়ে কথা বললে দিন শেষে রাত হয়ে যাবে, রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাবে। তবুও রবিঠাকুরের ছোটগল্পের মতো বলতে ইচ্ছে করবে, “শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ!” তারপরও সুযোগ ও সময়ের যোগসূত্রে যখন দুইয়ে-দুইয়ে চার হলো, তখন প্রিয় বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব নিয়ে কিছু লেখার লোভটা সামলাতে পারলামনা।
বার্সেলোনা ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকাল ও প্রতিষ্ঠাতা:
১৮৯৯ সালের ২৯শে নভেম্বর এক সুইস ব্যবসায়ীর মাথায় ঢুকলো স্পেনে ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করার ভূত। ক্লাব প্রতিষ্ঠার এই ভূত অবশ্য এই প্রথম তাঁর মাথায় ঢোকেনি। প্রায় বছর তিনেক আগেই নিজ জন্মভূমি সুইজারল্যান্ডের জুরিখে প্রতিষ্ঠা করেন “এফ, সি, জুরিখ” নামক ফুটবল ক্লাব! জন্মসূত্রে সুইস হলেও ব্যবসায়িক কারণে স্পেন ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে কেটেছে তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়। ঠিক সেকারণেই কিনা তাঁরই নেতৃত্বে তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি কিংবা সেকেন্ড হোম স্পেনের কাতালুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা হয় “ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা”। সেই বিখ্যাত ভদ্রলোকের নাম “জোয়ান গাম্পার”।
ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা এর মালিকানা:
“ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা” শুধুই একটি ক্লাব নয়, বরং একটি পরিবার যে পরিবারের সদস্যরা সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে। এর প্রমাণ মিলবে এর মালিকানার বিষয়টা স্পষ্ট হলেই। খেলোওয়াড়েরাতো আছেনই, এছাড়াও ক্লাবের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সাধারণ সদস্যরা (মূলত সমর্থকেরা) এই ক্লাবের অর্থনৈতিক বিষয়ে অবদান রেখে চলেছেন বছরের পর বছর। ঠিক এইজন্যই এই ক্লাবটির কোন নির্দিষ্ট মালিক ছিলোনা, এখনও নেই। ভবিষ্যতেও খুব সম্ভবত থাকবেওনা! এ ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের বলা হয় “সসিস” আর সমর্থকদের বলা হয় “কিউল”! মূলত কিউলরাই এ ক্লাবের প্রধান অংশ! কিউলদের অফুরন্ত ভালোবাসা আর ডেডিকেশনেইতো শতবছর ধরেই এ ক্লাব হাটি-হাটি পা-পা করে আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছে! বার্সেলোনার অফিসিয়াল মেম্বার তথা কাগজে-কলমে “কিউল” হতে হলে আপনাকে বেশ কিছু ডলার খরচ করতে হবে। বিনিময়ে আপনি পাবেন একটা মেম্বারশিপ কার্ড যেটা “কিউল” তথা ক্লাবের অফিসিয়াল মেম্বারশিপের পরিচয় বহন করে।
যাত্রা শুরু হয় যেভাবে:
১৮৯৯ সালের ২২ শে অক্টোবর ফুটবলের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা থেকেই “জোয়ান গাম্পার” স্থানীয় পত্রিকা “লস দেপোর্তেস” এ একটি ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠার ইচ্ছার কথা জানিয়ে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন। সেই বিজ্ঞাপন বৃথা যায়নি। সেবছর ২৯ শে নভেম্বর বিজ্ঞাপনের সাড়ায় এক সম্মেলনে জড়ো হন এগারোজন খেলোয়াড়। সেই থেকে এই ক্লাবের যাত্রা শুরু, আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রথম একাদশ:
মেসি, পিকে, বুস্কেস্টদেরতো সবাই চিনেন। কিন্তু যারা বার্সেলোনার প্রথম স্বপ্নসারথী, তাদের নামগুলো ক’জনই বা জানেন?! আপনি “কিউল” হয়ে থাকলে তাঁদের নামগুলোর সাথে পরিচিতি থাকাটা একপ্রকার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। গাম্পার সাহেবের সেই বিজ্ঞাপনের ডাকে সাড়া দেওয়া সেই এগারোজন খেলোয়াড় নিয়েই তৈরি হয় ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার প্রথম একাদশ। সেই খেলোয়াড়েরা হলেন:
গুয়ালতেরি ওয়াইল্ড, লুইস ডি’ওসো, বার্তোমেউ তেরাদাস, অটো কুঞ্জলে, অটো মায়ের, এনরিক ডুক্যাল, পেরে ক্যাবত, জোসেপ লোবেত, জন পার্সনস এবং উইলিয়াম পার্সনস।
স্টেডিয়াম:
“কাম্প দে লা ইন্দাস্ত্রিয়া”। কি, নামটা অপরিচিত লাগছে?! এটাই আসলে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার প্রথম স্টেডিয়াম। প্রথমে এর ধারণক্ষমতা ছিলো মাত্র ছয় হাজার। অবকাঠামো ও জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে ১৯২২ সালে এর দর্শক ধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে ২০ হাজার করা হয়। পরবর্তীতে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা হয় ৬০ হাজার।
১৯৫৪ সালে বার্সেলোনা নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ করে যার নাম ছিলো “এস্তাদিও দেল এফসি বার্সেলোনা” এবং এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৫৭ সালে। ১৯৫৭ সালের ২৪ শে সেপ্টেম্বর স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করা হয়। ২০০০ সালে এর নাম পালটে রাখা হয় “এল’ এস্তাদিও ক্যাম্প ন্যু” বর্তমানে যা ক্যাম্প ন্যু বা ন্যু ক্যাম্প নামে সুপরিচিত।
১৯৯২ সালে উয়েফার নীতি অনুযায়ী স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত উন্নয়নের স্বার্থে এর ধারণক্ষমতা করা হয় ৯৯,৭৮৬ যা তৎকালীন সময়ে ইউরোপের সর্ববৃহৎ স্টেডিয়ামের মর্যাদা পায়।
স্প্যানিশ প্রজাতন্ত্র ও গৃহযুদ্ধের দাবানল (১৯২৩-১৯৫৭):
ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা চলার পথে বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়েছে। স্পেনে যখন গৃহযুদ্ধ চলে, তখনও এই ক্লাবকে বলির পাঠা হতে হয়েছে, পড়তে হয়েছে রাজনৈতিক রোষানলে। তাইতো কাতালুনিয়া তথা স্পেনের ইতিহাসের অনেকটা অংশ জুড়েই আছে এই ক্লাব।
১৯২৫ সালের ১৪ই জুন। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক স্পেনের জাতীয় সঙ্গীতকে ব্যঙ্গ করে গাওয়া শুরু করলো। পরিবেশটা ঠিক ব্যঙ্গাত্মক, না ভয়ানক আপনি চোখ বন্ধ করে একবার কল্পনা করে দেখুন। “God Save the King” গানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা মিগুয়েল প্রিমো দে রিভোরার একনায়কতন্ত্রের স্বতঃ:স্ফূর্ত প্রতিবাদ জানায়। আসলে এটা ছিলো একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ভাষা। এর ফলে তৎকালীন স্টেডিয়াম “কাম্প দে লস স্পোর্তস” রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ছয় মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যায় এবং জোয়ান গাম্পারকে পরিচালকের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এতকিছুর পরেও বার্সেলোনার অগ্রযাত্রা থামেনি। ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা ১৯৩০, ১৯৩১, ১৯৩২, ১৯৩৪, ১৯৩৬ ও ১৯৩৮ সালে কাতালান কাপ জেতে।
১৯৩৬ সালে স্পেনে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। সেসময় স্পেনের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন বার্সেলোনা ও এথলেটিকো বিলবাও এর এমন কয়েকজনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেসময়কার ক্লাব প্রেসিডেন্ট ‘ইয়োসেপ সানিওল’ ৬ আগস্ট খুন হন স্পেনের রাজনৈতিক দল ফালাঞ্জের সেনাদের হাতে। তাঁর অপরাধ ছিলো “কাতালানদের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলা ও তাদের সমর্থন দিয়ে যাওয়া!
নুনিয়েজের সময়কাল ও লা মাসিয়া প্রতিষ্ঠা:
ইয়োসেপ লুইস নুনিয়েজ ১৯৭৮ সালে ক্লাব প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাঁর প্রতিশ্রুতি ছিলো বার্সেলোনাকে একটি বিশ্বমানের ক্লাব হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। ১৯৭৯ সালের ২০ শে অক্টোবর ইয়োহান ক্রুইফের অনুরোধে তিনি লা মাসিয়া প্রতিষ্ঠা করেছেন যেখান থেকেই উঠে এসেছেন বুস্কেটস,জাভি, ইনিয়েস্তা, মেসিদের মতো কিংবদন্তীরা যারা বার্সেলোনাকে এনে দিয়েছে ভিন্ন সিজনে হেক্সা ও পেন্টাসহ অনেক শিরোপা! তবে এই অর্জন নুনিজের সময় আসেনি, এসেছিলো ছিলো পেপ গার্দিওলা কোচ থাকা অবস্থায়। নুনিয়েজের সময়েই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী ১৯৮২ সালে রেকর্ড ৫ মিলিয়ন মূল্যমানে বার্সেলোনার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।
ড্রিম টিম বা স্বপ্নের দল:
বার্সেলোনার ড্রিমটিমের কথা অনেকেই শুনেছেন! হ্যাঁ সেই ড্রিম টিমের কথাই বলছি। ১৯৮৮ সালের দিকে ইয়োহান ক্রুইফ বার্সেলোনা দলের ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত হন বার্সেলোনার সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় এবং কোচদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ইয়োহান ক্রুইফ! তিনি পেপ গার্দিওলা, রোমারিও, জোসে মারি বাকেরো, জিকি বেগিরিস্তেইনের মতো তারকাদের নিয়ে গড়ে তোলেন স্বপ্নের একাদশ! মূলত এই ড্রিম টিমই বার্সেলোনাকে সর্বপ্রথম ইউরোপের পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত করেছে। ডিফেন্স ছেঁড়া পাস, ক্রসিং, গতি, শর্ট পাস, লং পাস কি ছিলোনা এই দলের খেলায়?! এসময় বার্সেলোনা ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত টানা স্প্যানিশ লা-লীগা শিরোপা ঘরে তোলে। ২০১১ সালে পেপ গার্দিওলা দায়িত্ব গ্রহণের আগে ইয়োহান ক্রুইফের বার্সেলোনা দল স্প্যানিশ সুপার কোপা, কোপা দেলরে, ইউরোপিয়ান সুপার কাপসহ মোট ১১ টি শিরোপা জয় করে। ইয়োহান ক্রুইফ কোচের দায়িত্বরত থাকাকালে তাঁর শেষ সিজনে বার্সেলোনা ছিলো ট্রফিলেস এবং ক্রুইফ ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে কোচের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। মূল ক্রুইফ ছিলেন বার্সেলোনার সোনার ডিম পাড়া হাঁস, সেটা কোচ বলুন, পরামর্শক বলুন আর খেলোয়াড় হিসেবেই বলুন। মূলত ক্রুইফ বার্সেলোনাকে একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে দিয়ে যান, যেটা বার্সেলোনাকে আজকে এফ,সি, বার্সেলোনা বানিয়েছে!
রবি রবসনের সময়কাল:
ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা ক্রুইফের বিদায়ের পর রবি রবসনকে কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেয়। তবে স্বপ্নের ক্লাব বার্সেলোনায় তাঁর কোচিং ক্যারিয়ার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তিনি শুধু ১৯৯৬-৯৭ সালেই বার্সেলোনার কোচ হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তাঁর সময়েই বার্সেলোনা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী রোনালদোকে দলে ভেড়ায়।
পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে জার্মান ক্লাব বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে উয়েফা সুপার ক্লাব জেতে বার্সেলোনা।
নুনিয়েজের প্রস্থান, লাপোর্তার আগমন এবং ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড যুগ:
২০০০ সালে নুনিয়েজ সাহেবকে বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর দায়িত্বে আসেন জোয়ান গাসপার্ত। ২০০১ সালে বার্সেলোনার কোচের দায়িত্ব নেন ডাচ কোচ লুইস ফন গাল। ২০০৩ সালে দল ব্যর্থ হওয়ায় জোয়ান গাসপার্ত প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
এরপর দলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জোয়ান লাপোর্তা এবং ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পান প্রাক্তন ওলন্দাজ খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড। অনেকের মতে ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের কোচিং দর্শনটা ছিলো অনেকটা একঘেয়েমি ধরনের। খেলার ধরনে বৈচিত্রতা না থাকলেও তাঁর সময়ে বার্সেলোনা স্প্যানিশ সুপার কাপ, লা লীগা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগসহ বেশ কিছু শিরোপা জেতে। তবে রাইকার্ডের সময়ে বার্সার সবচেয়ে বড় অর্জন ছিলো ২০০৬ সালের ১৭ই মে আর্সেনালের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে ২-১ গোলে জয়। সে ম্যাচে আর্সেনাল ১-০ গোলে এগিয়ে গেলেও চরম নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ এ ম্যাচে শেষ ১৫ মিনিটে ইতো এবং বেলেত্তির গোলে ২-১ গোলে ম্যাচ জেতে বার্সা। পরে খেলায় আর ফিরতে পারেনি আর্সেনাল। ফলে কপাল পুড়ে ওয়েঙ্গার দাদুর (আর্সেন ওয়েঙ্গার) আর্সেনালের এবং বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্সলীগ শিরোপা ঘরে তোলে।
পেপ গার্দিওলা যুগ:
২০০৭-২০০৮ সিজনে বার্সেলোনা ট্রফিলেস একটি সিজন পার করে। এরপর কোচের দায়িত্ব পান বার্সেলোনার সর্বকালের সেরা কোচ “পেপ গার্দিওলা”। তিনি ২০০৮-২০১২ সাল পর্যন্ত কোচের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর সময়ে ২০০৮-৯ সিজনে বার্সেলোনা ট্রেবল জেতে। এটাই ছিলো ইউরোপীয় কোন দলের প্রথম ট্রেবল জেতার রেকর্ড। ২০০৯ সালে তারা ইউরোপের প্রথম কোন দল হিসেবে সম্ভাব্য সকল ট্রফি (ছয়টি) জেতে এবং এই রেকর্ডটি আজও টিকে আছে। জাভি, ইনিয়েস্তা, মেসি, বুস্কেস্টসদের মতো তারকাদের নিয়ে গড়া এফ সি বার্সেলোনা দল খেলার সময় ছোট ছোট পাসের পসরা সাজাত। ‘সুন্দর ফুটবল’ বলতে অনেকে পেপ গার্দিওয়ালার কোচিং দর্শনের সেই টিকিটাকাকেই বোঝেন। পেপ গার্দিওলা কোচ থাকা অবস্থায় বার্সেলোনার ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তারকা আর্জেন্টাইন লিওনেল মেসি এক বছরে করেন ৯১ রেকর্ড যা ভবিষ্যতে কেউ ভাঙাতো দূরে থাক, ছুঁতে পারবে বলে আপাতত মনে হচ্ছেনা। মেসিকে ফলস নাইনে খেলিয়ে ছোট ছোট পাসে খেলা তৈরি করে আক্রমণে যাওয়ার যে নতুন ফুটবল দর্শন আবিষ্কার করেছিলেন পেপ গার্দিওলা সেটাই টিকিটাকা বা টিক-টাক ফুটবল বলে পরিচিত। তিনজন খেলোয়াড় মাঠের তিন বিন্দুতে দাঁড়িয়ে একে অন্যকে পাস দিচ্ছে। আর সেই নিখুঁত পাসগুলো একটা একেকটা ত্রিভুজ তৈরি করছে! সায়েন্সের ছাত্ররা হয়তো বলবেন, “আরে! এতো সাক্ষাত জ্যামিতি!” এটাকে জ্যামিতিক খেলা বলুন আর পজিশন ভিত্তিক খেলাই বলুন টিকিটাকা যে কতোটা কার্যকরী ছিলো তা পরিসংখ্যান দেখলেই টের পাবেন। সাধেই কি পেপ গার্দিওলাকে বার্সেলোনার ইতিহাসের সর্বকালের সেরা কোচ বলা হয়!
গার্দিওলা-পরবর্তী যুগ:
মূলত গার্দিওলাই ছিলেন বার্সার ইতিহাসের সেরা কোচ। এরপর সবচেয়ে সফল কোচ লুইস এনরিকে। পেপে গার্দিওলা ২০১২ সালে নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্দেশ্যে বার্সা ছেড়ে চলে যান। ক্লাব অবশ্য তাঁকে ছাড়তে চায়নি। কিন্তু নাছোড়বান্দা পেপ ক্লাব-কর্তৃপক্ষের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ক্লাব ত্যাগ করেন।
সে বছর বার্সার নতুন কোচ হিসেবে গার্দিওলার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন “টিটো ভিলানোভা”! টিটো ভিলানোভার সময়ে বার্সেলোনা খারাপ করেনি। চ্যাম্পিয়ন্সলীগে ভরাডুবি গেলেও লা-লীগায় দেখিয়েছে দাপট, করেছে নতুন রেকর্ড! সেবছর বার্সা হেরেছে মাত্র দুটি ম্যাচ, ১০০ পয়েন্ট নিয়ে লীগ জিতেছে যা লা-লীগাতো বটেও ইউরোপিয়ান ফুটবলে অনন্য এক রেকর্ড! ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পরবর্তীতে অবশ্য সুস্থ হয়ে ফিরলেও ক্যান্সারের সাথে পরাজিত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে একেবারে আকাশে পাড়ি জমান দক্ষ ও কুশলী এই কোচ।
যাইহোক, দু:খের কথা নাহয় বাদই দিলাম। আবার ফিরে আসি পরিসংখ্যান ও ইতিহাস ভিত্তিক আলোচনায়! ২০১৩ সালে আর্জেন্টাইন কোচ টাটা মার্টিনো বার্সেলোনার কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন। টিটো চলে গেলেন, টাটা এলেন। কিন্তু, পারলেন না সফল হতে। তাঁর সময়ে বার্সেলোনা ট্রফিলেস সিজন পার করে। মেসিও আগের মত গোল পাচ্ছিলেন না। আসলে মার্টিনোর উইং নির্ভর ও লম্বা পাসের খেলায় বার্সা মানিয়ে নিতে পারছিলনা। সদ্য ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া নেইমারও ঠিকঠাক পারফর্ম করতে পারছিলেন না। ফলে বার্সা কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোচের পদ থেকে ছাঁটাই করে দেয়।
টাটা মার্টিনোকে “টাটা” বলার পর বার্সা কর্তৃপক্ষ কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় লুইস এনরিকেকে। এদিকে নেইমারের ট্রান্সফার জটিলতার দায় মাথায় নিয়ে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ‘সান্দ্রো রোসেল’। লুইস এনরিকের অধীন বার্সেলোনা এক সিজনে পাঁচটি শিরোপা জেতে। ২০১৪-১৫ সিজনে বার্সেলোনা সেই ঐতিহাসিক “পেন্টা” জয় করে। সাথে লিওনেল মেসিও ফিরে পান শ্রেষ্ঠত্ব, জেতেন পঞ্চম ব্যলন ডি’ অর!
২০১৬-১৭ সিজনের পর ২০১৭-১৮ সিজনের শুরু থেকে এখনো অব্দি কোচের পদে বার্সেলোনার নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন জনাব “এর্নেস্তো ভালভার্দে”। তাঁর অধীনে এখনো পর্যন্ত বার্সা লা-লীগায় অপরাজিত এবং ইতিমধ্যেই লীগ জিতে গেছে। পুরো সিজনে এখনো পর্যন্ত ম্যাচ হেরেছেন মাত্র একটি। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেই হারই দেখা দিলো চ্যাম্পিয়ন্স লীগে! চ্যাম্পিয়ন্স লীগের প্রথম লেগে রোমাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোলে হেরে এগ্রেগেটে পরাজিত দল বার্সার ২০১৭-১৮ সিজনের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ পর্বের এখানেই সমাপ্তি ঘটে। তবে এই সিজনে ইতিমধ্যে বার্সেলোনা তাঁর অধীনে কোপা দেল শিরোপা জিতে নিয়েছে। এই সিজনতো প্রায় শেষ। দেখা যাক, সামনের সিজনে তিনি কেমন খেলার ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনাকে!
এল ক্লাসিকো:
‘এল ক্লাসিকো কিংবা দ্য্ ক্লাসিক’ যেভাবেই বলুননা কেনো, এই নামটি শুনলেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে খেলা করে উত্তেজনার ঢেউ! বেশিরভাগ ফুটবল-বোদ্ধা ও সমর্থকদের মতে এল ক্লাসিকো হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ। এই এল ক্লাসিকো নিয়ে কি না হয়?! কথা-কাটাকাটি থেকে শুরু করে খুনাখুনি পর্যন্ত হয়েছে! হ্যাঁ এই এল ক্লাসিকোর উত্তেজনার পারদ এতটাই ঘন!
এই এল ক্লাসিকোকে ঘিরে আছে লম্বা ইতিহাস। তবে ছোট্ট করে বলতে গেলে কাতালান সমর্থকগোষ্ঠী স্প্যানিশ একনায়কতন্ত্রের বিরোধীতা এবং স্পেন থেকে স্বাধীন হয়ে “কাতালুনিয়া” নামক নতুন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে স্পেনের মাদ্রিদ শহরের রাজকীয় ক্লাব “রিয়াল মাদ্রিদ” এর সাথে মনস্তাত্ত্বিক এবং মর্যাদার লড়াইয়ে লিপ্ত ছিলো বহু বছর ধরে। ফলে এই “এল-ক্লাসিকো” যেটাতে অংশগ্রহণ করে “বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ”, সেই ম্যাচকেই প্রতিবাদ এবং প্রতিশোধ এবং মর্যাদার ম্যাচ হিসেবে বেছে নিয়েছে কাতালানরা। সংস্কৃতি এবং ভাষাগত দিক দিয়ে স্পেন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এক জাতি কাতালানরা। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকসহ সব মিলিয়েই বহুকাল ধরেই তারা চাইছে কাতালুনিয়া যেন স্পেনের একটা রাজ্য হয়ে না থাকে। যুগ যুগ ধরে অবহেলিত কাতালুনিয়া রাজ্যের মানুষের প্রতিবাদের ভাষা যেনো “এল-ক্লাসিকো”!
এল-ক্লাসিকোর পরিসংখ্যান সম্পর্কে বলতে গেলে বার্সা-রিয়াল দুই দলই যেন সমানে সমান! ম্যাচ জয়ের দিক দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ অবশ্য কিছুটা এগিয়ে আছে। পর্যন্ত ২৭০ টি এল-ক্লাসিকো হয়েছে। যার মধ্যে সর্বমোট ৯৫ টি ম্যাচ জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৯৩ টি ম্যাচ জিতেছে বার্সেলোনা! বাকি ম্যাচগুলো ড্র হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে কেনো এটাকে ইতিহাসের সেরা রাইভালরি ম্যাচ বলা হয়। তবে এল-ক্লাসিকোতে সবচেয়ে বড় জয় রিয়াল মাদ্রিদের। ১৯৪৩ সালের ১৯ জুন বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ১১-১ গোলে জয় পায় তারা। এই ম্যাচ নিয়ে অবশ্য অনেক বিতর্ক আছে। তখন স্বৈরাচারী ফ্রাঙ্কোর ইচ্ছায়ই প্রথম লেগ ৩-০ জিতেও দ্বিতীয় লেগে ১১-১ গোলে হারতে হয়েছিলো বার্সাকে। এমনটাই লোকমুখে এবং ইন্টারনেট ঘাঁটলে পাওয়া যায়!
এল ক্লাসিকোতে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড রিয়াল মাদ্রিদের মানোলো সাঞ্চিসের। তিনি সর্বমোট ৪৩ টি ম্যাচ খেলেছেন।
সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা অবশ্য লিওনেল মেসির। ২৫ গোল নিয়ে তিনিই আছেন সবার শীর্ষে।
এল-ক্লাসিকোতে ২ টি হ্যাট্রিক করে সবচেয়ে বেশি হ্যাট্রিকের রেকর্ডে সান্থিয়াগো বার্নাব্যু এবং পুসকাসদের সাথেই আছেন লিওনেল মেসি।
সর্বমোট ১৪ এসিস্ট করে সবচেয়ে বেশি এসিস্টও মেসিরই। বলতে গেলে এল-ক্লাসিকোর রাজা লিওনেল মেসিই।
বার্সেলোনা ডার্বি:
মাদ্রিদ ডার্বি আছে, লন্ডন ডার্বি আছে, মিলান ডার্বি আছে। তেমনি স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের বিরুদ্ধে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার যে ম্যাচ হয়, তাই হল বার্সেলোনা ডার্বি! এই ম্যাচ অবশ্য তেমন জমজমাট হয়না দুই দলের শক্তির পার্থক্যের কারণে। বহুবছর ধরে বার্সেলোনাই এই ডার্বিতে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তবে এই ডার্বি ম্যাচকে ঘিরে স্থানীয় সমর্থকদের মধ্যে এত উত্তেজনার একটা কারণ আছে। ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে এস্পানিওল সমর্থকদের একটি বড় অংশ স্প্যানিশ একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসীবাদীতার সমর্থন দিয়েছিলো। তাই অধিকাংশ কাতালানবাসীরা এস্পানিওল সমর্থকদের “ঘরের শত্রু বিভীষণ” এর মতোই কিছু একটা মনে করে।
সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়:
বার্সেলোনার ইতিহাসের (সম্ভবত ফুটবল ইতিহাসেরই) সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হচ্ছেন “লিওনেল আন্দ্রেস মেসি”! মেসিকে নিয়ে নতুন কিছু বলা আসলেই হাস্যকর। কারণ সবাই তাঁর সম্পর্কে জানেন। শুধুমাত্র বার্সেলোনার হয়ে তাঁর গোল-এসিস্টের পরিসংখ্যানটা তুলে ধরছি।
ম্যাচ: ৬৩৬
গোল: ৫৫২
এসিস্ট: ২১২।
তবে মেসি ছাড়াও ফরওয়ার্ড ও মিডফিল্ডারদের মধ্যে ইয়োহান ক্রুইফ, ম্যারাডোনা, রোনালদো, রোনালদিনহো, ইতো, ইনিয়েস্তা, জাভিদের মতো আরও অনেক কিংবদন্তী ও তারকা খেলোয়াড়েরা মাঠ মাতিয়েছেন ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে।
ট্রফি:
বার্সেলোনাই একমাত্র ক্লাব যারা ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্রফি জিতেছে। ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার ট্রফিকেসে সর্বমোট সম্ভাব্য ট্রফির সংখ্যা ৯৩ টি। যার মধ্যে আছে ২৫ টি লা-লীগা, ৫ টি চ্যাম্পিয়ন্সলীগ, ৫টি ইউরোপা লীগ এবং ৩০ টি কোপা দেল রে শিরোপা। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে ট্রফি-সংখ্যা ও এর বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরলাম।
লা লিগা
বিজয়ী (২৫): ১৯২৯, ১৯৪৪–৪৫, ১৯৪৭–৪৮, ১৯৪৮–৪৯, ১৯৫১–৫২, ১৯৫২–৫৩, ১৯৫৮–৫৯, ১৯৫৯–৬০, ১৯৭৩–৭৪, ১৯৮৪–৮৫, ১৯৯০–৯১, ১৯৯১–৯২, ১৯৯২–৯৩, ১৯৯৩–৯৪, ১৯৯৭–৯৮, ১৯৯৮–৯৯, ২০০৪–০৫, ২০০৫–০৬, ২০০৮–০৯, ২০০৯–১০, ২০১০–১১, ২০১২–১৩, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৭-১৮.
রানার-আপ (২৫): ১৯২৯–৩০, ১৯৪৫–৪৬, ১৯৫৩–৫৪, ১৯৫৪–৫৫, ১৯৫৫–৫৬, ১৯৬১–৬২, ১৯৬৩–৬৪, ১৯৬৬–৬৭, ১৯৬৭–৬৮, ১৯৭০–৭১, ১৯৭২–৭৩, ১৯৭৫–৭৬, ১৯৭৬–৭৭, ১৯৭৭–৭৮, ১৯৮১–৮২, ১৯৮৫–৮৬, ১৯৮৬–৮৭, ১৯৮৮–৮৯, ১৯৯৬–৯৭, ১৯৯৯–০০, ২০০৩–০৪, ২০০৬–০৭, ২০১১–১২, ২০১৩-১৪, ২০১৬-১৭
কোপা দেল রে
বিজয়ী (৩০) (রেকর্ড): ১৯০৯–১০, ১৯১১–১২, ১৯১২–১৩, ১৯১৯–২০, ১৯২১–২২, ১৯২৪–২৫, ১৯২৫–২৬, ১৯২৭–২৮, ১৯৪১–৪২, ১৯৫০–৫১, ১৯৫১–৫২, ১৯৫২–৫৩, ১৯৫৬–৫৭, ১৯৫৮–৫৯, ১৯৬২–৬৩, ১৯৬৭–৬৮, ১৯৭০–৭১, ১৯৭৭–৭৮, ১৯৮০–৮১, ১৯৮২–৮৩, ১৯৮৭–৮৮, ১৯৮৯–৯০, ১৯৯৬–৯৭, ১৯৯৭–৯৮, ২০০৮–০৯, ২০১১–১২, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮
রানার-আপ (১১): ১৯০১–০২, ১৯১৮–১৯, ১৯৩১–৩২, ১৯৩৫–৩৬, ১৯৫৩–৫৪, ১৯৭৩–৭৪, ১৯৮৩–৮৪, ১৯৮৫–৮৬, ১৯৯৫–৯৬, ২০১০–১১, ২০১৩-১৪
স্পেনীয় সুপার কোপা
বিজয়ী (১২) (রেকর্ড): ১৯৮৩, ১৯৯১, ১৯৯২, ১৯৯৪, ১৯৯৬, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১৩, ২০১৬
রানার-আপ (৮): ১৯৮৫, ১৯৮৮, ১৯৯০, ১৯৯৩, ১৯৯৭, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০১২
কোপা ইভা দুয়ার্তে (স্পেনীয় সুপার কাপের পূর্বের প্রতিযোগিতা)[১২৭]
বিজয়ী (৩) (রেকর্ড): ১৯৪৮, ১৯৫২, ১৯৫৩
রানার-আপ (২): ১৯৪৯, ১৯৫১
কোপা দে লা লিগা
বিজয়ী (২) (রেকর্ড): ১৯৮২–৮৩, ১৯৮৫–৮৬
ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা
ইউরোপীয় কাপ / উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ[১২৯]
বিজয়ী (৫): ১৯৯১–৯২, ২০০৫–০৬, ২০০৮–০৯, ২০১০–১১, ২০১৪-১৫
রানার-আপ (৩): ১৯৬০–৬১, ১৯৮৫–৮৬, ১৯৯৩–৯৪
ইউরোপীয়ান কাপ উইনার্স কাপ / উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ
বিজয়ী (৪) (রেকর্ড): ১৯৭৮–৭৯, ১৯৮১–৮২, ১৯৮৮–৮৯, ১৯৯৬–৯৭
রানার-আপ (২): ১৯৬৮–৬৯, ১৯৯০–৯১
ইন্টার সিটিজ ফেয়ার্স কাপ (উয়েফা ইউরোপা লীগের পূর্বের প্রতিযোগিতা)
বিজয়ী (৩) (রেকর্ড): ১৯৫৫–৫৮, ১৯৫৮–৬০, ১৯৬৫–৬৬
রানার-আপ (১): ১৯৬১–৬২
ইউরোপীয় / উয়েফা সুপার কাপ
বিজয়ী (৫) (রেকর্ড – এসি মিলানের সাথে): ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৯, ২০১১, ২০১৫
রানার-আপ (৪): ১৯৭৯, ১৯৮২, ১৯৮৯, ২০০৬
বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা সম্পাদনা
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
বিজয়ী (৩) (রেকর্ড): ২০০৯, ২০১১, ২০১৫
রানার-আপ (১): ২০০৬
ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ
রানার-আপ (১): ১৯৯২
শেষকথা:
এইযে বার্সেলোনা শহর, এই শহরকে ঘিরে গড়ে ওঠা জনপদ এবং শহরের তথা পুরো কাতালানবাসীর প্রতিবাদের ভাষা, তাদের আনন্দ, বেদনা, হাসি-কান্না মিশ্রিত যে ইতিহাস ও সংস্কৃতি, এর সবকিছুর পরিচয় যেনো একটা ক্লাবই বহন করে। আর এই ক্লাবের নাম “ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা”। আসলে এটা শুধুই কোন ক্লাব নয়, এটা একটা পরিবার। এই পরিবারের সদস্যদের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, আবেগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি মিশে আছে নীল আর মেরুন রঙের মাঝে! আর এই নীল-মেরুনের পসরা সাজানোর জন্য সদা প্রস্তুত সবুজ গালিচার নাম “ক্যাম্প ন্যু”!
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, উয়েফা ডট কম, laliga.es/en
purchase terbinafine sale – terbinafine for sale online grifulvin v online buy
how long does it take zyprexa to work
generic zetia cost walmart
semaglutide 14 mg price – order generic semaglutide 14 mg generic DDAVP