প্রত্যেক ক্লাসেই এমন একজন ছাত্র থাকে, যার উদাহরণ বাকী মা রা তার সন্তানদের দিয়ে থাকেন। “তুই ওর মতো হতে পারিস না?” “ওকে দেখে কিছু শিখ”। মনে মনে সব ছাত্রই সেই বিশেষ ছাত্রের মতো রেজাল্ট করতে চায়। বিশ্বকাপ কে যদি আমরা একটি ক্লাস বিবেচনা করি, আর সেখানে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে সেই ক্লাসের ছাত্র, তাহলে সেই বিশেষ ছাত্রটি কে, তা হয়তো আর বলে দিতে হবে না। হ্যা আপনি ঠিকই বুঝেছেন। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল ব্রাজিল এর কথাই বলা হচ্ছে।
ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপের বেশীরভাগ রেকর্ডই তাদের দখলে। শিরোপা জিতেছে সর্বোচ্চ ৫ বার এবং একমাত্র দল হিসেবে ৪ টি ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশে শিরোপা অর্জন করে। বিশ্বকাপের সবগুলো আসরে অংশগ্রহণ করার রেকর্ডটিও তাদের দখলেই। ১০৪ ম্যাচ খেলে ৭০ টি জয়, ১১৯+ গোল ডিফারেন্স, ২২৭ পয়েন্ট অর্জনও একটি রেকর্ড। সবচেয়ে বেশীবার (৪) ফিফা কনফেডারেশন কাপ জিতার রেকর্ডটিকেও নিজের করে রেখেছে তারা।

যুগে যুগে লিজেন্ড তৈরী করা এই দলটিই যে ফুটবলের সবচেয়ে সফল দল তা নিয়ে কোন দ্বিমত থাকবে না। ফুটবল ইতিহাসের সিংহভাগই যেনো নিজেদের করে নিয়েছে তারা। প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টেই অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে অংশগ্রহণকারী দলটির দখলে আছে অজস্র রেকর্ড। প্রতিপক্ষ যেকোন দলের জন্য সবসময়ই একটি ত্রাসের নাম ব্রাজিল। ইতিহাসের সেরা সেরা ফুটবলাররা খেলে গেছেন এই দলেই। শুধুমাত্র সফলতার জন্য নয়, ব্রাজিলের নাম ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবে তাদের শৈল্পিক ফুটবল ‘জোগো বনিতো’র জন্যও। পেলে, গ্যারিঞ্চা, রোমারিও, জিকো, সক্রেটিস, রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহো, কাকা থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের নেইমারের মতো তারকারা সবসময়ই আলো ছড়িয়েছেন এই দলের জার্সি গায়ে। যাদের অবদানে ফুটবলের সৌন্দর্য্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। ফুটবল কে মানুষের ভালোবাষার জায়গায় পরিণত করে গিয়েছিলো তারাই। আপনি এই দলের সমর্থক হোন কিংবা নিন্দুক, আপনাকে মেনে নিতেই হবে ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর ফুটবল খেলা দলগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের নাম থাকবে সবার উপরের দিকেই। তাইতো ব্রাজিলের ম্যাচ দেখার জন্য টিভির পর্দার সামনে জড়ো হয় সবচেয়ে বেশী মানুষ, মনের অজান্তেই যারা হাতে তালি দিয়ে ঘোষণা দিয়ে দেয় তাদের শ্রেষ্ঠত্বের।
ব্রাজিল এবং বিশ্বকাপ শব্দ দুটি যেনো একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই আসছে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ব্রাজিল কে নিয়েও মানুষের কৌতুহল টা একটু বেশীই। শক্তিমত্তার বিচারে শিরোপার অন্যতম দাবিদার তারা। দল এখন আগের চেয়ে অনেক পরিণত। কোচ গুছিয়েও নিয়েছেন ঠিকঠাক। সর্বোপরি ষষ্ঠ বিশ্বকাপ উত্তোলনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ব্রাজিল।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেইর শুরুটা ভালো ছিলো না দলটির। প্রথম ছয় ম্যাচ হোচটের পর হোচট খেয়ে বিশ্বকাপের পথ টা যেনো অনেকটা ঝাপসা হয়ে গিয়েছিলো। ছয় ম্যাচে মাত্র ৯ পয়েন্ট নিয়ে দল তখন অনেকটা নাকানি চুবানি খাচ্ছে। বিশ্বকাপ নিশ্চিত করাই যখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ ঠিক তখনই নতুন কোচ হিসেবে দলের দায়িত্ব নেন টিটে। দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথেই দলের চেহাড়া পালটে যেতে লাগলো। ভুগতে থাকা দলটিই হয়ে উঠলো ইনভিন্সিবল। পরবর্তী ম্যাচগুলো তে অপরাজিত থেকে কয়েকম্যাচ হাতে রেখেই টেবিলের টপে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে তারা। অল্প সময়ের মধ্যেই অগোছালো দলকে গুছিয়ে নিয়ে ছন্দে ফিরিয়েছেন নতুন কোচ টিটে। তাই তো ষষ্ঠবারের মতো আবারো শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছে সেলেকাও রা।
বাছাইপর্বে দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস (৭টি)। নেইমার এবং পৌলিনহো করেন ৬ টি করে গোল। ফিলিপ কৌতিনহো এবং উইলিয়ান ৪ টি করে গোল করেন।
আসুন দেখে নেয়া যাক, দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু খেলোয়াড়দেরঃ
নেইমারঃ
নিঃসন্দেহে বর্তমান ব্রাজিল দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তিনি এবং দলের একটি আস্থার জায়গা। শুধুমাত্র ব্রাজিলের নন, অনেকের মতে বর্তমান বিশ্বেরও অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তিনি। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নেইমার যেনো আরো ভয়ংকর। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে একাই ছয় গোল করেন, সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু এসিস্টের মাধ্যমে জানান দেন ব্রাজিলকে কাধে নিয়ে দুর্গম পথ পাড়ি দিতে তিনি প্রস্তুত। সদ্য প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন এ যোগ দেয়া এই তারকা ক্লাবের হয়েও জ্যোতি ছড়িয়েছেন।

পিএসজির হয়ে এই সিজনে করেছেন ২৮ গোল, সাথে ১৬ টি এসিস্ট। যার মধ্যে ১৭ টি ম্যাচের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছেন তিনি। শেষের দিকে এসে ইঞ্জুরিতে না পড়লে এই স্ট্যাটগুলোকে আরো ঈর্ষনীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারতেন। যদিও এই ইঞ্জুরী তাকে মাঠের বাইরে ছিটকে দিয়েছে অনেকদিনের জন্য। বিশ্বকাপের আগে সুস্থ হয়ে উঠলেও, মাঠে নামার জন্য কতোটুকু প্রস্তুত থাকবেন তা এখনি বলা যাচ্ছে না। দলের এই সেরা তারকা কে ছাড়া দলের শক্তি কমে যাবে কয়েকগুণ। বিশ্বকাপের জন্য মরিয়া হয়ে আছেন নেইমার নিজেও। সেজন্যই বেশী বেশী পরিশ্রম করে নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে চাচ্ছেন বিশ্বকাপের জন্য।
রবার্তো ফিরমিনোঃ
জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত স্টার্টার না হলেও, সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় দলের অন্যতম বাজীর ঘোড়া লিভারপুলের এই ফরোওয়ার্ড। এই সিজনে যেনো অনেকটা অপ্রতিরোধ্য এই তারকা।

ইতিমধ্যেই লিভারপুলের হয়ে করেছেন ২৯ গোল এবং সেই সাথে সতীর্থদের করিয়েছেন আরো ১৬ টি গোল। সরাসরি ৪৫ গোলে অবদান রাখা ফর্মের তুঙ্গে থাকা এই ফরওয়ার্ড কে অবশ্যই নিজের পরিকল্পনায় রাখবেন কোচ টিটে।
ফিলিপ কৌতিনহোঃ
ফুটবল বিশ্বে নিজের জাত চিনিয়েছেন বহু আগেই। লিভারপুলের সাবেক এই খেলোয়াড় সেই সুবাদেই সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনায়। আক্রমণভাগে তার সৃষ্টিশীলতার উপর অনেকাংশেই নির্ভর ব্রাজিল দল। এছাড়াও দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। সিজনের প্রথমাংশে লিভারপুলের হয়ে করেছিলেন ১৫ গোল এবং সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরো ৮ টি গোল।

দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার পরও দমে যাননি একটুও। পুরনো ফর্ম বজায় রেখেই মেসি সুয়ারেজদের পাশাপাশি আলো ছড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন ১০ গোল এবং সাথে আরো ৬ এসিস্ট।এই সেদিনই বার্সার হয়ে লেভান্তের বিপক্ষে করলেন দৃষ্টিনন্দন গোলের হ্যাটট্রিক। বুঝাই যাচ্ছে, নেইমারের অভাব কোনভাবেই বুঝতে দিবেন না দলকে। ব্রাজিল জাতীয় দলেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছেন। আসছে বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্সের উপর ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্বপ্ন নির্ভর করবে অনেকখানি।
গ্যাব্রিয়েল জেসুসঃ
বিশ্বকাপে আলো ছড়াতে পারেন ব্রাজিলের আরেক তরুণ সেনসেশন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরওয়ার্ড আলো ছড়াতে শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। চলতি সিজনে করেছেন ১৮ গোল এবং ৩ এসিস্ট। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে গোল করে দলকে বিপদমুক্ত করেছেন কয়েকবার।

নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করেছেন বিশ্বকাপের মঞ্চের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি। বাছাইপর্বেও দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭ গোল করে মূল একাদশের জায়গাটা প্রায় নিশ্চিতই করে নিয়েছেন।
উইলিয়ানঃ
চেলসীর এই তারকার চেলসীর হয়ে সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো না গেলেও ব্রাজিলের জার্সি গায়ে তিনি বরাবরের মতোই অপ্রতিরোধ্য। বাছাইপর্বেও সেই প্রমাণই রেখেছেন।

গুরুত্বপূর্ণ ৪ গোল করে দলের জয়ে ভূমিকা রাখার পাশাপাশিও সতীর্থদের দিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গোল করিয়েছেন। চেলসীর হয়ে এই সিজনে করেছেন ১৩ গোল এবং ৩ এসিস্ট। আক্রমণভাবে তাই উইলিয়ানের বিকল্প খুব কমই দেখছেন কোচ।
পৌলিনহোঃ
ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে ঘুরে কোথাও থিতু হতে না পেরে চাইনিজ লিগে চলে গিয়েছিলেন। অনেকে যেনো পলিনহোর শেষ দেখে নিয়েছিলেন সেখানেই। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েই ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনায় এসে প্রমাণ করেন এখনো অনেক কিছুই আছে দেয়ার মতো।

ব্রাজিলের জার্সি গায়ে যেনো আরো ভয়ংকর হয়ে উঠেন তিনি। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাছাইপর্বে গুরুত্বপূর্ণ ৬ গোল করে দলে নিজের জায়গা আরো পোক্ত করেছেন। বিশ্বকাপে মাঝমাঠ সামলানোর গুরুদায়িত্ব তার কাধেই থাকবে।
ক্যাসিমিরোঃ
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বলা হয় তাকে। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জিনেদিন জিদানের মাঝমাঠের প্রথম পছন্দ তিনি।

ইন্টারসেপশন, ট্যাকেলিং, পাসিং, লং রেঞ্জ শুটিং সব মিলিয়ে একটি কমপ্লিট প্যাকেজ এই ব্রাজিলিয়ান। ক্যাসিমিরো এবং পৌলিনহো জুটি মাঝমাঠে থাকা মানে দলের রক্ষণভাগের উপর অনেক চাপ কমে যাওয়া।
থিয়াগো সিলভাঃ
ভালো আক্রমণ আপনাকে ম্যাচ জিতাবে, কিন্তু ট্রফি জিততে হলে প্রয়োজন ভালো রক্ষণভাগও। আর ব্রাজিলের শিরোপা জয়ের মিশনে রক্ষণের গুরুদায়িত্ব থাকবে থিয়াগো সিলভার কাধেই। বর্তমানে সিলভা বিশ্বের অন্যতম সেরা সেন্টারব্যাক।

অভিজ্ঞ এই প্লেয়ার নিজের সতীর্থদের দিয়ে রক্ষণ ঠিকভাবে সামলে নিলে, শিরোপা জয় না হয়ে যাবে কোথায়?
মার্সেলোঃ
খেলা দেখে বুঝা কঠিন যে তিনি আসলে উইংগার নাকি লেফট ব্যাক। ইতিহাস এমন স্কিলফুল লেফটব্যাক খুব কমই দেখেছে। ডিফেন্স সাকলানোর পাশাপাশি আক্রমণেও সমান ভাবে সাপোর্ট দিয়ে থাকেন।

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৫ গোল এবং ৮ এসিস্টই তার প্রমাণ। বাম প্রান্ত থেকে নেইমার এবং মার্সেলোর কম্বিনেশনই প্রতিপক্ষ রক্ষণের ঘাম ঝড়াতে যথেষ্ট।
ফ্যাগনারঃ

দ্যানি আলভেজের ইঞ্জুরী দলের জন্য ডেকে এনেছে বিশাল এক সমস্যা। যেই রাইট বযাক পজিশন টা দলের জন্য এক এডভান্টেজ ছিলো, সেটাই এখন হয়ে গিয়েছে সবচেয়ে দুঃশ্চিন্তার কারণ। তার বদলে দলে ডাক পাবেন করান্থিয়ান্সের রাইট ব্যাক ফ্যাগনার। সাম্প্রতিক পার্ফমেন্স এর কারণে, এই পজিশন টায় তাকেই সবচেয়ে বেশী যোগ্য ভাবছেন কোচ টিটে।
মার্কুইনোসঃ
রক্ষণে থিয়াগো সিলভার সাথে ভালো বোঝাপোড়া থাকায় কিছু টা এডভান্টেজ থাকবে তার।

বিশ্বকাপের মঞ্চ মানেই রক্ষণের উপর চাপ থাকবে প্রচুর, আর সেই চাপ সামলাতে তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত।
ফ্রেডঃ

শাখতার দোনেস্কে অসাধারণ একটি সিজন কাটানোর পর নজর কেড়েছেন বড় বড় ক্লাবগুলোর। নেক্সট সিজনেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিবেন এমন গুজব ও উঠেছে আরো আগেই। সাম্প্রতিক এই ফর্ম বিবেচনায় মাঝমাঠের ব্যাক আপ হিসেবে তাকে স্কোয়াডে রাখতে চাইছেন কোচ।
ডেভিড লুইজঃ
অনেক আগে থেকেই দলের আস্থা জায়গা হয়েছিলেন তিনি। দলের বাকিদের সাথে বোঝাপোড়াও ভালো।

বিশ্বকাপেও নিজের সেরাটাই দিতে চান। থিয়াগো সিলভার হয়তো তাকেই দেখা যাবে ডিফেন্স সামলাতে।
এলেক্স স্যান্দ্রোঃ
মার্সেলোর অনুপস্থিতি তে লেফট ব্যাক পজিশন সামলাতে পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি। মার্সেলোর মতো তিনিও আক্রমণেও ভুমিকা রাখেন।

চলতি সিজনে ৪ গোল এবং ৫ এসিস্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন মার্সেলোর অনুপস্থিতি তে তার অভাব বুঝতে দিবেন না দলকে।
ফিলিপ লুইজঃ
নিজের পার্ফমেন্স দিয়ে দলে জায়গা করে নিয়েছেন অনেক আগেই। বিশ্বকাপের জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে কখনোই হতাশ করেননি কোচ কে।

তাই ২৩ জনের স্কোয়াডে তাকে দেখলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।
ডগলাস কস্তাঃ
জুভেন্টাসের এই তারকা কে ব্রাজিলের জার্সিতে অনেক দিন না দেখা গেলেও, বিশ্বকাপের ২৩ জনের স্কোয়াডে জায়গা করে নিতে পারেন নিজের পার্ফমেন্সের বদৌলতে।

ক্লাবের হয়ে একটি ভালো সিজন কাটিয়ে নজরে এসেছেন কোচের। ব্যাক আপ প্লেয়ার হিসেবে তিনি নিঃসন্দেহে ভালো অপশন।
মিরান্ডাঃ
ইন্টার মিলানের এই ডিফেন্ডার কে দলে দেখা যেতে পারে ডেভিড লুইজের স্থানে। কোচ টিটে লুইজের চেয়ে তাকেই খেলাতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

দলের প্রয়োজনে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন আগেও, বিশ্বকাপেও নিজের সেরাটাই দিতে চান। তাই দলে তাকে দেখার সম্ভাবনাই বেশী।
ফার্নান্দিনহোঃ
ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে দারুণ একটি সিজন কাটানোর ফলে এবং ভালো ফর্মে থাকায় তিনিও রাশিয়ায় যাচ্ছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মাঝমাঠে তিনি টা কতোটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারেন, তা ম্যানচেস্টার সিটির মযাচ গুলো দেখলেই বুঝা যায়। ক্যাসিমিরো বা পলিনহোর বদলি হিসেবে তাকে দেখা যেতে পারে।
দানিলোঃ
দানি আলভেজের ইঞ্জুরী শংকায় ফেলে দিয়েছে কোচ কে। তবে সেই দুঃশ্চিন্তায় কিছুটা স্বস্তি ফিরাতে পারেন ম্যান সিটির হয়ে অসাধারণ সিজন কাটানো দানিলো।

রিয়াল মাদ্রিদে থাকাকালীন সময়ে নিজেকে হারিয়ে ফেললেও, ছন্দে ফিরেছেন নতুন ক্লাবে এসে। মূল একদশেই হয়তো দেখা যাবে তাকে।
রেনেতো অগাস্তোঃ
সাবেক বায়ার লিভারকুসেনের এই খেলোয়াড়ের উপর আস্থা রেখেছেন কোচ অনেকবারই। বাছাইপর্বে সেই আস্থার মূল্যও রেখেছেন তিনি। তাই রাশিয়ায় যাচ্ছেন তা বলে দেয়াই যায়।ম্যানচেস্টার সিটি্র গোলরক্ষক এডারসন কিংবা রোমার হয়ে অসাধারন পারফর্ম করা এলিসন যে কেউই গোলবারের দায়িত্ব পেতে পারেন। সাম্প্রতিক ফর্ম অনুযায়ী এটা বলাই যায়, দুজনই এই গুরুদায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। কোচের প্রথম পছন্দ কে হবে তা এখনই বলা কঠিন। তবে শেষ পর্যন্ত গোলবারের নিচে যেই ঠাই পান না কেনো, তিনি প্রতিপক্ষের জন্য কাল হয়ে দাড়াবেন।

ব্রাজিল মানেই সুন্দর ফুটবল, জাদুকরী পারফরম্যান্স। কিন্তু এই দলটিই শেষ শিরোপা উত্তোলন করেছিলো আরো ১৬ বছর আগে। বিশ্বসেরা স্কোয়াড থাকার পরেও বারবার ব্যর্থ হয়েছে তারা। গত বিশ্বকাপে ট্যালেন্টেড একটি দল থাকার পরেও অভিজ্ঞতার অভাবে এবং বড় ম্যাচে চাপ নিতে না পারার জন্য লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হয় তাদের। দল এখন আগের চেয়ে অনেক পরিণত। বেশীরভাগ খেলোয়াড়েরই বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবার মধ্যে বোঝাপড়াটাও বেশ। এটা ধরে রাখতে পারলে হয়তো ভালো কিছুই অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম হট ফেভারিট তারা। তবে বিশ্বকাপে খেলতে হলে ফেভারিটের তকমা যে কোন পার্থক্য গড়ে দেয়না তা কোচ টিটে যেমন জানেন তেমনি জানেন ব্রাজিলের প্রতিটি খেলোয়াড়। এতো বছরের ব্যর্থতা ঘুচিয়ে ব্রাজিল কি পারবে তাদের ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তুলতে? দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।
order levofloxacin online cheap order levaquin