ইতিহাস আমাদের জানায়, শেখায়। কিন্তু ইতিহাসের এমন কিছু বিষয় আছে যা সকলের কাছে অজানা। কিছু রহস্য সাম্প্রতিক, আবার কোনটা শতবর্ষের পুরনো- উত্তরের অপেক্ষায়। ভারতবর্ষেরও এমন কিছু প্রহেলিকা রয়েছে যার কোন সমাধান কয়েক প্রজন্ম ধরে অনুসন্ধান ও গবেষণা করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এবার এমনই অমীমাংসিত ও ব্যাখ্যাতিত কিছু রহস্যের বিষয়ে জানা যাক যা পুরো ভারতবর্ষে ছেয়ে আছে। যদি এই রহস্যের কোন সমাধান পাঠকদের কাছে থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্স এ লিখতে পারেন।
ইন্দুস ভ্যালি সভ্যতার অন্তর্ধান
ইন্দুস ভ্যালি সভ্যতা রহস্য ভারতের সব থেকে প্রাচীন রহস্য হিসেবে বিবেচিত। মিশরীয় এবং মেসপতেমিয়ান সভ্যতা থেকেও বৃহৎ এ সভ্যতাকে ঘিরে রয়েছে হাজার প্রশ্ন, যা আজ পর্যন্ত রহস্যে ঘেরা। ইন্দুস সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতাদের পরিচয় এবং ভগ্নাবশেষ থেকে প্রাপ্ত শিলালিপি গুলোর অর্থ এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল এই যে, এ সভ্যতার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহ প্রায় একই সময়ের মধ্যে ধ্বংস হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে অনেক মতবাদ প্রদান করেছেন কিন্তু কোন মতবাদই শেষ পর্যন্ত কোন উপসংহার টানতে পারেনি।
চারামা গ্রামের গুহায় এলিয়েন এর চিত্র
ছাত্তিসগর প্রদেশের বাস্তার জেলার চারামা গ্রামের এক গুহায় প্রাচীন দেয়াল চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। চিত্র সমুহের আবিষ্কারক, পুরাতত্ত্বজ্ঞ জে আর ভগত এর মতে, ছবিগুলো এমন এক প্রাণীর বর্ণনা দেয় যাদের দেহাবয়ব চেহারাবিহীন মানুষের মত। একই সাথে কিছু উড়ন্ত চাকতির মত জিনিসের ছবিও আছে। মজার ব্যাপার হল, চারামা গ্রামের আশেপাশে সেই ছোট “রোহেলা” মানুষদের নিয়ে কিছু কাহিনী রয়েছে, যারা উড়ন্ত চাকতি থেকে নেমে দু-একজন গ্রামের মানুষ ধরে নিয়ে যেত। এ সকল আবিষ্কারগুলোর উপর গবেষণা চালানোর জন্যে ছাত্তিসগর ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিওলজি অ্যান্ড কালচার , নাসা এবং ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন এর কাছে প্রস্তাব করেছে।
বিহার এর সন ভাণ্ডার গুহা
একটি মাত্র বিশাল পাথর, তার মাঝে খনন করে বানানো বিহার এর সন ভাণ্ডার গুহা কে ধরে নেয়া হয় মগধের রাজা বিম্বিসারা এর ধন সম্পদে পৌঁছানোর পথ, যিনি নিজের ধন দৌলত লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করতেন। কথিত আছে, যখন রাজা বিম্বিসারাকে তার পুত্র অজতশত্রু বন্দী করেছিলেন, তখন রাজার স্ত্রী স্বামীর নির্দেশে সমস্ত ধনদৌলত এই গুহায় গোপন করেছিলেন। ধরে নেয়া হয়, গুহার পশ্চিম দেয়ালের গায়ে প্রাপ্ত দুর্বোধ্য কিছু লিপি সমুহ সেই দৌলতে পৌঁছানোর তথাকথিত সূত্র। ইংরেজরা একবার কামান-গোলা দিয়ে সেই পথ বের করার প্রয়াস চালিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু শুধু মাত্র গোলার কালো দাগ দেয়া ছাড়া র কিছুতে সফল হয়নি।
৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি
ভারতবর্ষের “ইলুমিনাটি” সংস্করন রহস্যময় ‘৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি’ পৃথিবীর সব থেকে শক্তিধর গোপন সংঘ হিসেবে বিবেচ্য। ইতিহাস বলে, এই সংঘ খোদ সম্রাট অশোক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩ সালে, কালিঙ্গার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, যে যুদ্ধে মারা গিয়েছিল প্রায় ১লক্ষ মানুষ। এই ৯ ব্যক্তির প্রত্যেকজনের কাছে গচ্ছিত ছিল ১টি করে বই, যে বইগুলোর বিষয় ছিল সময় অতিক্রম করা, অনুজীব বিদ্যা এবং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধবিদ্যা। এই ৯ জন মানুষের আসল পরিচয় এখন পর্যন্ত অজানা। ধারনা করা হয় যে, এই গোপন সংঘ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংরক্ষিত এবং আজ অবধি এই সংঘ বিদ্যমান।
মীর ওসমান আলীর গুপ্তধন
হায়দ্রাবাদ এর আসাফ জাহ রাজবংশের সপ্তম এবং সর্বশেষ নিজাম মীর ওসমান আলী খান বিখ্যাত ছিলেন তার নিজস্বতা এবং অত্যাশ্চর্য জহরত ও দৌলত এর জন্য। ১৯৩৭ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং বলা হয় থাকে যে, মীর ওসমান আলী ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। উনার মৃত্যুর পর তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং বিখ্যাত নিজাম জহরত এর সিংহভাগই উদ্ধৃত করা সম্ভব হয়নি। অনুমান করা হয় যে, হারিয়ে যাওয়া ধন দৌলত এখন ও লুকিয়ে আছে কোঠি প্রাসাদের গুপ্ত কুঠুরিতে, যে প্রাসাদে নিজাম জীবনের বেশিরভাগ অংশ কাটিয়েছেন।
লামা তেনজিন এর ৫০০ বছরের পুরনো মমি
হিমালয় পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম ঘুয়েন। এই গ্রামে স্ব-বশ্যকরণ (self-mummification) এর প্রাচীন এক অদ্ভুত রীতির কথা জানা গেল। এই গ্রামেই একটি ছোট কংক্রিটের ঘরে পাতলা কাঁচের বাক্সে সংরক্ষিত আছে ৫০০ বছর আগের মমি। পনেরশ শতাব্দীর বৌদ্ধ ভিক্ষু সাংহা তেনজিন এর মমিটি এতটাই সুসংরক্ষিত যে মমিটির চামড়া এবং মাথার চুল দুইই অবিচ্ছিন্ন। সম্ভবত সাংহা তেনজিন এর দেহ আশ্চর্যজনকভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে মমিতে পরিণত হয়েছে।
জয়গর কেল্লার রাজভাণ্ডার
জয়গর কেল্লার ইতিহাস ধনদৌলত আর ষড়যন্ত্রের গল্প কাহিনিতে পরিপূর্ণ। ধারনা করা হয় যে, সম্রাট আকবর এর সেনাপতি মান সিংহ আফগানিস্তান জয়ের পর লুটের সামগ্রী জয়গর কেল্লায় লুকিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যখন ভারতে “জরুরি অবস্থা” চলছিল, তখন জয়গর কেল্লা পুনরায় আলোচনায় আসে। ষে সময় গোপন তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে পুরো কেল্লায় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে লুকনো দৌলত এর খোঁজ করা হয়। কোন সম্পদ পাওয়া না গেলেও এই ঘটনা সকলের কাছে ব্যাপক ভাবে সাড়া জাগায়। মহারানী গায়েত্রি দেবীর এ প্রিন্সেস রিমেম্বারস এ এই ঘটনার উল্লেখ আছে।
নানা সাহেব এর অন্তর্ধান
১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক নানা সাহেব ব্রিটিশদের কাছে পরাজয়ের কিছুদিন পরেই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। পরবর্তীতে নানা সাহেব বা তাঁর কথিত সম্পদ যার বর্তমান মূল্য হত লক্ষাধিক, কোন কিছুরই খোঁজ পাওয়া যায় নি। ইতিহাসবিদদের মতে, নানা সাহেব কখনই বন্দী হননি, বরং তিনি তাঁর সম্পদের বেশ কিছু অংশ নিয়ে নেপালে পালিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও এই ধারনার কোন প্রমান নেই। আজ দেড়শ বছর পরেও নানা সাহেবের বা তাঁর সম্পদের গায়েব হওয়া রহস্যের কোন উত্তর পাওয়া যায় নি।
ভুতুরে গ্রাম কুল্ধারা
জয়সালমির থেকে ২০কিমি পশ্চিমে পলিওয়াল ব্রাম্মণদের কুল্ধারা গ্রাম কয়েকশ বছর আগে অত্যন্ত সমৃদ্ধিশালী এক গ্রাম ছিল। কিন্তু এক ভয়াল রাতে পুরো গ্রামের ১৫০০ জন মানুষ কোন চিহ্ন না রেখে উধাও হয়ে গেল। কথিত আছে, কুশাসক সেলিম সিংহের অন্যায্য খাজনার হাত থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের লোকজন গ্রাম ত্যাগ করে এবং যাবার সময় এলাকাটিকে অভিশপ্ত করে রেখে যায়। এ কথাও শোনা যায় যে, যারাই এই এলাকায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের সকলের ভাগ্যে জুটেছে নির্মম মৃত্যু। এই অভিশাপের ফলে আজ পর্যন্ত কুল্ধারাতে কোন জনবসতি নেই।
চাপাতি আন্দোলন
১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সময় পুরো দেশ জুড়ে চাপাতি বা রুটি বিতরণের ঘটনা কি কারণে ঘটেছিল সেই রহস্য আজ পর্যন্ত অমীমাংসিত। যদিও সাম্প্রতিক কিছু গবেষণামতে ধারনা করা হয় যে কলেরায় আক্রান্ত মানুষদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা ছিল এই রুটি বিতরণ। তবে যে বিষয়ে সকলে একমত তা হল, চাপাতি বিতরণের এই ঘটনা তৎকালীন ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতবর্ষে তুমুল সাড়া জাগিয়েছিল।
নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুর অন্তর্ধান
নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুর মৃত্যুর পেছনের চক্রান্ত এবং এর গোপনীয়তার আবরণ তাঁর মৃত্যুকে করে তুলেছে রহস্যজনক। নেতাজির ফ্লাইট তাইপেই থেকে টোকিও ছেড়ে যাবার পর কি ঘটেছিল ? নেতাজি নিখোঁজ হবার কয়েক বছর পর শোনা যায় যে তিনি উত্তর ভারতে সন্ন্যাসীর বেশে বাস করছেন। এই তথ্যের কোন ভিত্তি না থাকার পর ও পরবর্তীতে পুনরায় গুজব ছড়ায় যে, উত্তর প্রদেশের ফাইজাবাদ এর এক সাধু গুমনামি বাবা আসলে নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু।
লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর অকাল প্রয়াণ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের দুই বছরের মাথায় লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে টাসকেন্ট এ সন্দেহজনক পরিস্থিতির মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে বলে ধারনা করা হয়। মৃতদেহে কালশিটে আর কাটা দাগ অনেক প্রশ্ন জাগিয়েছিল তো বটেই, ময়নাতদন্ত না করায় তাঁর মৃত্যু রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে নিঃসন্দেহে।
শান্তি দেবীর পুনর্জন্ম
ভারতের প্রথম সর্বজন স্বীকৃত এবং তথ্যসমৃদ্ধ পুনর্জন্মের ঘটনা ঘটে দিল্লীর এক ছোট, অখ্যাত এলাকায়। পুনর্জন্ম গ্রহনকারীর নাম শান্তি দেবী। শান্তি দেবী নিজ পরিবারের কাছে আগের জন্মের বাড়ি এবং পরিবার সম্পর্কে যা তথ্য দিয়েছেন, সে সকল তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। পুনর্জন্মের এই ঘটনা মহাত্মা গান্ধীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তদন্ত করার জন্যে কমিটি গঠন করেন। পূর্বজন্মের বাসভূমে যাবার সময় শান্তি দেবীর সাথে মহাত্মা গান্ধী নিজেও গিয়েছিলেন।
এক যোগী যিনি অন্নজল ভোগ করেননা
আহমেদবাদ থেকে ২০০কিমি দূরে আম্বাজি নামক স্থানে এক সাধু বাস করেন যিনি চুনরিওয়ালা মাতাজি নামে বেশি পরিচিত। ১১ বছর বয়স থেকে প্রলাদ জানি দেবী আম্বার ভক্ত এবং দাবি করেন যে দেবী আম্বা তাকে না খেয়ে থাকার অতিমানবীয় ক্ষমতায় আশীর্বাদিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, ১৯৪০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এক দানা খাবার বা এক ফোঁটা জল তিনি মুখে তোলেননি। ২০০৩ সালে ২১ জন মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ ধারাবাহিক কিছু নিরীক্ষা চালিয়েছিল কিন্তু চুনরিওয়ালা মাতাজির না খেয়ে বেচে থাকার রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়।
rybelsus for sale online – cost rybelsus 14mg order DDAVP generic
lamisil 250mg us – order fulvicin 250 mg generic griseofulvin order