ধর্মীয়, জাতীয়, বর্ণবাদী ও উপজাতি গোষ্ঠীকে ইচ্ছাকৃতভাবে কৌশলে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াকে গণহত্যা বলে। শুধু শাসকগোষ্ঠী নিজের ইচ্ছেমত ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে হাজার হাজার মানুষ কে ইচ্ছা করে মেরে ফেলে। গণহত্যা বিশ্বের প্রতিটি কোনায় প্রাচীন ও আধুনিক সমাজে বিচিত্র সম্পদ আর ভূমি অর্জনের জন্য একজন ঘৃণিত নির্দয় ব্যক্তির আদেশেই পরিচালিত হতো। যুগে যুগে এই কুখ্যাত ব্যক্তিরা চলে গেলেও ইতিহাসে রয়ে যায় তাদের বর্বরোচিত গণহত্যার ইতিহাস। বিশ্বের অন্যতম বর্বরোচিত দশটি গণহত্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আপনাদের সামনে আজ তুলে ধরা হলো :
বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানি নাগরিকদের গণহত্যা :
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা কার্যক্রম অপারেশন সার্চ লাইটের অধীনে মার্চ ১৯৭১ থেকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পরিচালিত হয়েছিল। তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের স্বাধিকার আন্দোলন কে চিরতরে নির্মূল করতে পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই নারকীয় কাজে জড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহায়তাকারী দলগুলো আনুমানিক ত্রিশ লক্ষ মানুষ হত্যা করে। এছাড়াও লক্ষ বাঙালী নারীদের নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। আর এই গণহত্যাটি স্বীকৃতি পায় বিশ্বের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা হিসেবে।

সোভিয়েত রাশিয়ার স্ট্যালিন যুগ :
জোসেফ স্ট্যালিন কে বলা হয় বিংশ শতাব্দীর কুখ্যাত গণহত্যা কারী। যে তালিকায় রয়েছেন বিশ্বের আরও দুজন যারা হলেন হিটলার ও মাওসেতুং। তার এই অপকর্ম করেছিলেন কারাগারে বন্দি থেকে তার প্রতিষ্ঠিত এক্সটারমিনেশন ক্যাম্পের মাধ্যমে। ধারনা করা হয় স্ট্যালিন তার শাসনামলে আনুমানিক ২০ লক্ষ লোকদের হত্যা করেন। আর এই ২০ লক্ষ লোকের মধ্যে ২ লক্ষ লোক হলো ইউক্রেনীয়ান কৃষক। এছাড়াও তিনি রাশিয়ার সেনা কর্মকর্তা ও বুদ্ধিজীবীদের নির্বাসনে পাঠিয়ে হত্যা করেছিলেন। ১৯৩৭ সালে ০০৪৪৭ অধ্যাদেশ দ্বারা অসংখ্য মানুষ কে হত্যা করেছিলেন সামাজিকভাবে ক্ষতিকর আখ্যা দিয়ে।
আল-আনফাল গণহত্যা :
আল-আনফাল অভিযান কুর্দি গণহত্যা বা অপারেশন আনফাল নামে পরিচিত। ইরান-ইরাক যুদ্ধের শেষের দিকে আলী আহসান আল মাজিদের নেতৃত্বে ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলে এই অভিযান চালানো হয়। তৎকালীন ইরাকের শাসক সাদ্দাম হোসাইনের বাথ পার্টি সরকার কৌশলে কুর্দিদের উপর একের পর এক অভিযান চালিয়েছিল। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এই গণহত্যা চলছিলো। এছাড়াও এই অভিযান অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর চালানো হয়েছিলো। আলী আহসান আল মাজিদ কুর্দি সম্প্রদায়ের উপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যাবহার করতেন বলে লোকে তাকে ক্যামিকেল আলীও ডাকতো। তাদের এই গণহত্যায় ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ লোক নিহত হয়েছিলো। এই গণহত্যার মাধ্যমে তাদের শতকরা ৯০ ভাগ লক্ষ পূরণ হয়।

আইরিশ আলু দুর্ভিক্ষ:
যখন ব্রিটিশরা সরাসরি আইরিশদের নিশ্চিহ্ন করতে পারছে না তখন তাদের প্রধান ফসল আলু তে একধরনের ছত্রাক দ্বারা রোগ ছড়িয়ে দিলো। আর যার ফলে আইরিশদের আলু দুর্ভিক্ষ সংঘটিত হলো। শত বছর ধরে ব্রিটিশ ও আইরিশ ক্যাথলিকদের মধ্যে মতবিরোধ ও খারাপ সম্পর্ক চলছিলো। আয়ারল্যান্ড ছিল উর্বর ভূমি। অনেক বছর ধরে তাদের ফলিত খাদ্য ও শস্য দ্রব্য ইংল্যান্ডে রফতানি করে আসছে। হঠাৎ যখন আইরিশদের শস্যতে ক্ষয়রোগের প্রকোপ দেখা দিল তখন ইংল্যান্ডে আইরিশদের জন্য তাদের বন্দর বন্ধ করে দিলো যার ফলে আইরিশরা আরও হুমকির মুখে পড়লো। আইরিশরা তখন তাদের শস্য রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য আইন জারি করে। কিন্তু সেই সময় ১৮৪৬ সাল থেকে ১৮৫২ সাল পর্যন্ত প্রায় হাজার হাজার মানুষ অনাহারে ও রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেল। আর সঠিক সময়ে আইরিশ এই কৃষকরা ধনী ব্রিটিশ ভূমি মালিকদের খাজনা না দিতে পারায় অনেক অত্যাচার, নির্যাতন শুরু করে। আর এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় দশ লক্ষ লোক মারা যায় আর অসংখ্য লোক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।

মরিওরী গণহত্যা :
প্রায় ১ হাজার সালের দিকে কিছু পলিনেশিয়ান কৃষক এসে নিউজিল্যান্ডে বসতি গড়ে। আর এরাই মাওরি ও মরিওরীদের পূর্বপুরুষ। একসময় এদের একটা অংশ আলাদা হয়ে চ্যাটাম দ্বীপপুঞ্জে বসতি গড়ে। সেখানে তারা শুরু করে তাদের নিজেদের সমাজ যেটার লক্ষ্য ছিল শান্তিতে বাস করা। আর তারা নিজেদেরকে মরিওরী নামে ডাকতো। চ্যাটাম দ্বীপপুঞ্জ কৃষি কাজের জন্য অনুপযুক্ত থাকায় তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য আদি যুগের মতো শিকার করতে শুরু করলো।

একসময় তাদের স্বজাতি মাওরিরা জানতে পারলো এখানে কিছু শান্তিপ্রিয় ও অস্ত্র ধরতে জানেনা কিছু লোক বাস করে। তখন তারা ১৮৩৫ সালের নভেম্বর মাসে ৫০০ জনের একটি বড় মাওরি দল বন্দুক ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে মরিওরীদের আবাস্থল চ্যাটাম দ্বীপপুঞ্জে আক্রমণ চালায়। ডিসেম্বর মাসে আসে আরও ৪০০ মাওরি। এরা বীর দর্পে মরিওরীদের বাসভূমিকে নিজেদের এলাকা বলে ঘোষণা করে। আর মরিওরী হয় তাদের দাস, যারা দাস হতে অস্বীকার করে তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করতে শুরু করে। যা ইতিহাসে অন্যতম স্বজাতি গণহত্যা হিসেবে পরিচিত।
হিরোশিমা ও নাগাসাকি গণহত্যা :
১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে দুইটি দুঃখপূর্ণ দিন। কারণ এই দিনই জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়। বিংশ শতাব্দীতে এটা ছিল গগনবিদারী গণহত্যা। ৬ঈ আগস্ট হিরোশিমাতে ফেলা হয় লিটল বয় নামক পারমাণবিক বোমা। সেদিন কেউ পালাতে পারেনি এই বোমার হাত থেকে; ট্রেন, গাড়ি এমনকি পাখি ও ডানা মেলাতে পারেনি সেদিনের কালো আকাশে।

আর এই লিটল বয় এর আঘাতে মারা যায় প্রায় ২ লক্ষ লোক। অনেকের তো হদিশই পাওয়া যায় নি। ১ম বোমা বিস্ফোরণের ঠিক দুই দিন পরেই অর্থাৎ ৯ আগস্ট নাগাসাকির একটি শিপইয়ার্ডে ফেলা হয় ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বোমা “ফ্যাটম্যান”। সেদিন প্রায় সত্তর হাজার লোক প্রাণ হারায় ঐ বোমার বিস্ফোরণের ফলে। আর ইতিহাসে রয়ে যায় এই জঘন্যতম পারমানবিক বোমা হামলার ইতিবৃত্ত।
রুয়ান্ডা গণহত্যা :
রুয়ান্ডায় যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিলো সেটাতে রাজনৈতিক কোন হাত ছিল না। বরং তাদের চরম পর্যায়ে বৃদ্ধি পেতে থাকা উপজাতীয় বিভেদের ফলে সংঘটিত হয় এই পাশবিক গণহত্যা। এই গণহত্যার কারণে মরতে হয় প্রায় ৫ লাখ লোক থেকে ১০ লাখ লোকের। তুসি সম্প্রদায় শতাব্দী ধরে দমিয়ে রেখেছিল আরেকটি উপজাতি হুতু সম্প্রদায়কে শুধু তাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে।

১৯৬২ সালের কথা তখন হুতু সম্প্রদায় বিদ্রোহ শুরু করে ক্ষমতাসীন তুশি সম্প্রদায়ের উপর। তাদের তীব্র উত্তেজনা ও বিদ্রোহ একপর্যায়ে যুদ্ধে মোড় নেয়। আর সেই সময় হুতু সম্প্রদায় তুশি সম্প্রদায়কে হত্যা করতে শুরু করে। এই গণহত্যায় কতজন প্রাণ হারান তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় নি।
আর্মেনীয় গণহত্যা :
তুরস্কের অটোম্যান শাসনামলে তৎকালীন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা আনোয়ার পাশার নেতৃত্বে বিংশ শতাব্দীর সর্ববৃহৎ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিলো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ও তৎপরবর্তী সময়ে তুরস্ক শুধু ১.৮ মিলিয়নের অধিক আর্মেনীয় ও অ-তুর্কিদের সরাসরি হত্যা ও বিতাড়িতই করেননি বরং হাজার হাজার আর্মেনীয় ও অ-তুর্কী দের খাদ্যাভাবে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য করে। স্বাভাবিক ভাবেই আধুনিক তুর্কিরা এটাকে গণহত্যা বলে স্বীকার করে না। বরং তারা বলেন, এটা শুধু সে সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি গণবিতাড়ন প্রক্রিয়া যারা রাশিয়ার সাথে যুক্ত ছিল।

দ্যা হলোকাস্ট গণহত্যা :
এই গণহত্যাটি পৃথিবীর অন্যতম গণহত্যা হিসেবে পরিচিত। এই গণহত্যার ইতিহাসটি সবচেয়ে বেশি সতর্কতার সাথে লেখা হয়েছে। হিটলারের নাৎসি বাহিনী কর্তৃক ইহুদিদের ইউরোপ মহাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণার প্রেক্ষিতে প্রায় ১১ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয়েছিল। আর যার অর্ধেকই ছিল ইহুদী। এই সংখ্যাটা হিটলার যখন বার্লিনে নিজের বাঙ্কারে নিজেকে গুলিবিদ্ধ করেন সেই সময়কার। এই গণহত্যা বিভিন্নভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল। সরাসরি হত্যা, অনাহারে হত্যা , অতিরিক্ত কষ্টসাধ্য কাজের বোঝা চাপিয়ে হত্যা, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা। হিটলারের এই জঘন্যতম হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নিষ্ঠুর গণহত্যা হিসেবে পরিচিত।

বসনিয়া গণহত্যা :
১৯৯২ সালের এপ্রিল মাসে যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের বসনিয়া হার্জেগোভিনা সরকার যোগোস্লোভিয়া থেকে তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। স্বাধীনতা ঘোষণার পরবর্তী কয়েক বছর সার্ব বাহিনী যুগোস্লাভিয়ার সার্ব অধ্যুষিত সেনাবাহিনীর সহায়তায় বসনিয়ার বেসামরিক বসনিয়ান মুসলিম ও ক্রোয়েশীয় নাগরিকদের লক্ষ করে বর্বর হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত করে।

যার ফলে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ১ লক্ষ লোক নিহত হয়। যার মধ্যে শতকরা আশি ভাগ লোকই ছিলেন বসনিয়ান মুসলমান। জঘন্য সার্বিয়ারা শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা অনেক শিশুদের ও নারীদের শারীরিক নির্যাতন ও করেছিলো। আর যেটা ইতিহাসে বসনিয়া গণহত্যা নামে পরিচিত।
buy dutasteride generic flomax pill order ondansetron online cheap
generic avodart 0.5mg celebrex brand ondansetron 4mg pills
order levaquin 500mg online buy levaquin 250mg generic
order levaquin without prescription buy levaquin 500mg for sale
Thank you a bunch for sharing this with all folks you really know what you are talking approximately! Bookmarked. Please additionally consult with my web site =). We will have a hyperlink exchange agreement between us!
You got a very excellent website, Glad I observed it through yahoo.
I truly appreciate this post. I¦ve been looking everywhere for this! Thank goodness I found it on Bing. You have made my day! Thank you again