দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ ফুটবল, “দি গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ”। প্রতিটি বিশ্বকাপ জন্ম দেয় নানা ঘটন-অঘটনের। কখনো দেখা যায় শক্তিশালী দল হেরে যায় পুচকে কোন দলের কাছ, আবার কখনো দেখা যায় ফেভারিটের তকমা নিয়ে শুরু বিশ্বকাপ শুরু করা প্রভাবশালী দলগুলো বাদ পড়ে যায় গ্রুপ পর্বেই। প্রতিটি ম্যাচেই উত্তেজনার পারদ থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তেমনই উত্তেজনা ও রোমাঞ্চকর কিছু ম্যাচ নিয়ে আজকের আয়োজন।
★ আর্জেন্টিনা ২-২ ইংল্যান্ড ( ১৯৯৮ বিশ্বকাপ)
ম্যারাডোনার হ্যান্ড অফ গড বিতর্কের পর, পুনরায় ১৯৯৮ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা আর ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের জন্য ম্যাচটি ছিল প্রতিশোধের, অপরদিকে আর্জেন্টিনার জন্য ছিল ফেভারিটের তকমা ধরে রেখে বিশ্বকাপের ফাইনালে যাবার স্বপ্ন। ম্যাচ শুরুর প্রথম ১৬ মিনিটের মধ্যেই স্কোর লিস্টে ৩ টি গোল যোগ হয়ে যায়। ম্যাচের ৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে লিড এনে দেয় বাতিস্ততা। মাত্র ৪ মিনিট পরেই সমতায় ফিরে ইংল্যান্ড, পেনাল্টি থেকে গোল করেন এ্যালন শেরার। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে দু’ দল। ১৬ মিনিটে মাইকেল ওয়েনের গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড, সমতার নেশায় থাকা আর্জেন্টিনা একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। মধ্য বিরতির শেষ মিনিটে জেনিত্তির গোলে ম্যাচে সমতায় ফিরে আর্জেন্টিনা। মধ্য বিরতির পর ম্যাচ আরো উত্তেজনা পূর্ন হয়ে উঠে। খেলোয়াড়েরা আগের চেয়ে বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠে। ম্যাচের ৪৭ মিনিটের সময় ডিয়াগো সিমিয়নোর সাথে সংঘর্ষের ফলে লাল কার্ড পায় ইংল্যান্ডের সুপার স্টার ডেভিড বেকহাম।
১০ জনের দল নিয়েও সমতালে লড়ে যায় ইংল্যান্ড। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে। অতিরিক্ত মিনিটে খেলার গতি আরো বেড়ে যায়। খেলোয়াড়েরাও মেজাজ হারাতে থাকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ডেনমার্কের রেফারি নিলসন কে। অতিরিক্ত মিনিটেও অমীমাংসিত থাকায় সিদ্ধান্ত হয় পেনাল্টি শুট আউটের। এখানেই কপাল পুড়ে ইংল্যান্ডের, অতীতের মত এবারও ভাগ্য দেবী বিমুখ ছিল তাদের প্রতি। ফলাফল স্বরূপ ৪-৩ গোলে পেনাল্টি জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যায় আর্জেন্টিনা আর বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। ইংল্যাডের হয়ে ইন্স ও বেট্টি পেনাল্টি মিস করে আর আর্জেন্টিনার কিসপো মিস করে একমাত্র পেনাল্টি।
★ জার্মানি ০-২ ইতালি (২০০৬ বিশ্বকাপ)
২০০৬ সালে স্বাগতিক জার্মানির মুখোমুখি হয় বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট ইতালি। ম্যাচটি যে চরম উত্তেজনা পূর্ণ হবে তা আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। ইউরোপের দুই জায়ান্টের লড়াই, ম্যাচ শুরুর মিনিট থেকেই জামার্নির আক্রমণ শুরু। ইতালির বিখ্যাত ডিফেন্স বেশ দক্ষতার সাথে লড়ে যাচ্ছিল। ইতালির গোল কিপার জিয়ানলুজি বুফন অতিমানবীয় খেলা প্রদর্শন করেছিল। স্নাইডার ও পোডলস্কির দুটি শট মারাত্মক দক্ষতায় সেইভ করে বুফন। অপরদিকে ইতালিও বেশ কয়েকবার আক্রমণ করে। তাদের শট দুইবার গোলবার আঘাত করে। নির্ধারিত সময়ে কোন দলই গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে। অতিরিক্ত মিনিটেও কোন গোলের দেখা মিলছিল না।
আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে লড়ে যাচ্ছিল দুই দল। মনে হচ্ছিল পেনাল্টি শুট আউটে খেলা নির্ধারিত হবে। কিন্তু ১১৯ মিনিটে ঘটল সেই মহারণ, কর্নার শট থেকে গোল করে ফেবিও গ্রোস্সো। স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো স্টেডিয়ামের ৬৫ হাজার দর্শক, স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ার আভাস পায় জার্মানি। দুই মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে বদলি হিসেবে নামা ইতালিয়ান খেলোয়াড় ডেল পিরো। ইতালি চলে যায় ফাইনালে, আর জামার্নি ছিটকে পড়ে বিশ্বকাপ থেকে।
★ হাঙ্গেরি ২-৩ পশ্চিম জার্মানি (১৯৫৪ বিশ্বকাপ)
বিশ্বকাপ ফাইনাল ১৯৫৪, মুখোমুখি হট ফেভারিট হাঙ্গেরি আর আন্ডার ডগ পশ্চিম জার্মানি। গ্রুপ পর্বেই মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল, পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে হারায় হাঙ্গেরি। বুঝাই যাচ্ছিল ম্যাচটি হবে এক পেশে। সর্ব কালের অন্যতম সেরা দল ছিল হাঙ্গেরির দলটি। শুরুটাও এমনই বলে, প্রথম আট মিনিটেই ২-০ তে এগিয়ে যায় পুশকাসের হাঙ্গেরি। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই ১৭ গোল করে। টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত ছিল হাঙ্গেরি। জার্মানিও প্রতি আক্রমণ শুরু করে। ম্যাচের ১০ মিনিটেই তারা একটি গোল পরিশোধ করে।
জার্মানির খেলার গতি বেড়ে যায়, অপর দিকে হাঙ্গেরি একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে জার্মানির গোলবার অভিমুখে। প্রথম গোলের আট মিনিট পর আবারও গোলের দেখা পায় জার্মানি, ম্যাচে সমতায় ফিরে তারা। বাতাসে তখন অঘটনের গন্ধ ছড়াচ্ছে, মনে হচ্ছিল কোন রূপ কথা রচিত হচ্ছে যাচ্ছে। দ্বিতীয় অর্ধে পুশকাসের হাঙ্গেরির একচেটিয়া আক্রমণ একে একে ফিরিয়ে দিল জার্মান গোলকিপার টনি টুরেক। একইসাথে গোল পোস্টে লেগে ফিরে গেল অনেকগুলো শট। শেষের দিকে বাঁ পায়ের জাদুতে দুই জন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে খেলার ৮৪ মিনিটে জয় সূচক গোলটি করলেন হেলমুট রাহন। জার্মানি প্রথম বারের মতন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! রচিত হল “ মিরাক্কেল অফ বার্ন”।
★ উত্তর কোরিয়া ৩-৫ পর্তুগাল (১৯৬৬ বিশ্বকাপ)
কোয়ার্টার ফাইনাল, ১৯৬৬ বিশ্বকাপে মুখোমুখি এশিয়ার উত্তর কোরিয়া, অপরদিকে চমক জাগানো পর্তুগাল। পর্তুগাল গ্রুপ পর্বের সব কয়টি ম্যাচে জয় লাভ করে। গ্রুপ পর্বেই ৯ গোল করে ইউসেবিও এর পর্তুগাল। গ্রুপ পর্বেই তারা হারায় শক্তিশালী ব্রাজিলকে। উত্তর কোরিয়া ইতালিকে হারিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছে।
শুরুতেই চমক দেখায় উত্তর কোরিয়া। ম্যাচ শুরুর প্রথম ২৫ মিনিটেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। সবাই ভেবেছিল উত্তর কোরিয়াই সেমি ফাইনালে যাবে, কিন্তু তখনও অনেক কিছু দেখার বাকী ছিল। ইউসেবিও নামক ম্যাজিক শুরু হল একটু পরই। সমান তালে আক্রমণ করে আদায় করে নিল ২ গোল। ২৭ ও ৪৩ মিনিটে গোল দুটি আসে ইউসেবিওর কাছ থেকে। বিরতির পর আবারও ম্যাজিক দেখাতে শুরু করে পর্তুগাল। ৫৬ মিনিটেই সমতায় ফিরে পর্তুগাল। তখন ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে পর্তুগাল। ৪ মিনিট পর আবার গোল করেন ইউসেবিও। জন্ম দেয় নতুন রূপ কথার। একাই চার গোল করে, উত্তর কোরিয়াকে বিধ্বস্ত করে দেয় পর্তুগাল তারকা ইউসেবিও। ম্যাচ শেষের মুহূর্তে আরও একটি গোল করে পর্তুগাল। ৫-৩ গোলের হার নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় উত্তর কোরিয়াকে। পর্তুগাল ১৯৬৬ বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান লাভ করেছিল।
★ ব্রাজিল ২-৩ ইতালি (১৯৮২ বিশ্বকাপ)
ব্রাজিলে ১৯৮২ বিশ্বকাপের দলটিকে সর্বকালের অন্যতম সেরা দলের মর্যাদা দেওয়া হয়। প্রতিটি পজিশনে চমৎকার খেলোয়াড় দিয়ে গঠিত দলটি চরমভাবে ব্যর্থ হয়। কোচ টেলে সান্তানার দলে ছিল সাদা পেলে খ্যাত জিকো, জুনিয়র, ফ্যালকাও আর সক্রেটিসের মত তারকা খ্যাত খেলোয়াড়েরা। গ্রুপ পর্বে দারুন খেলে এসেছে ব্রাজিল, অপরদিকে ইতালি প্রথম ৩ টি ম্যাচ ড্র করে, শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে আসে।
অনেকেই ধরে নিয়েছিল ইতালি ভাল ব্যবধানেই হারবে। ম্যাচ শুরুর পাচঁ মিনিটেই ইতালিয়ান স্ট্রাইকার পাউলো রসি লিড এনে দিলেন ইতালিকে। ১২ মিনিটে গোল পরিশোধ করে সমতায় ফিরল ব্রাজিল। ম্যাচের ২৫ মিনিটে আবারও ইতালিকে এগিয়ে নিয়ে গেল রসি। ব্রাজিল যদিও ভালো আক্রমণ করছিল কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না। প্রথমার্ধেই ২-১ লিড নিয়েই বিরতিতে যায় ইতালি, বিরতির পর ম্যাচ শুরুর পর আক্রমন বজায় রাখে ব্রাজিল। ৬৯ মিনিটে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। যদিও আক্রমণ করে খেলছিল ব্রাজিল তবুও তাদের ডিফেন্স বরাবরের মতই ভুল করে যাচ্ছিল। ৭৫ মিনিটে ইতিহাস রচনা করে পাউলো রসি। তার করা তৃতীয় গোলই সর্বকালের অন্যতম সেরা দলটি বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে যায়। খেলায় আর ফিরতে পারে নি ব্রাজিল। ঐ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবার কৃতিত্বও অর্জন করেও ইতালি।
terbinafine 250mg cost – order fluconazole 200mg for sale where can i buy grifulvin v
rybelsus brand – buy desmopressin without prescription purchase DDAVP spray