প্রকৃতি বরাবরের মতোই বিস্ময় জাগানিয়ার জন্ম দেয় প্রতিনিয়ত এবং তাঁরই কিছু নমুনা আমাদের চোখে ধরা পড়ে যার অনেক কিছুই আমাদের কাছে নাটকীয় মনে হয়। তেমনই এক বিস্ময়কর সৃষ্টি হলো কেনিয়া সীমানার কাছাকাছি উত্তর তাঞ্জানিয়ার আউশ অঞ্চলে অবস্থিত একটি লবণ ও খনিজ সোডাসমৃদ্ধ “নাট্রন হ্রদ” (Lake Natron) যার সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে কেউ সংস্পর্শে গেলে বা সাতার কাটলে খুব অল্প সময়েই মাত্রাতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত লবণের ক্রিয়ায় মৃত্যু অনিবার্যিত।
যার কারণে উক্ত লেকে সাতার কাঁটা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কেনো এতোটা বিপদজনক এই ক্ষারযুক্ত লবণ তার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে জানানো যায়, শুষ্ক মৌসুমে যখন হ্রদের পানি শুকিয়ে যায় তখনই বৃদ্ধি পেতে শুরু করে লবণাক্ততার মাত্রা। এ সময়ে হ্রদটির জলের গভীর অংশটুকু লাল বর্ণের এবং অগভীর অংশটুকু থাকে কমলা বর্ণের যার কারণ হলো “হ্যালোফিল” নামক এক প্রকার জীবাণু। এই হ্যালোফিল ক্ষারযুক্ত লবণের উপরে জন্মানো একপ্রকার সুগন্ধি ফুল উদ্ভিদের সাথে উৎপন্ন করে সাইনোব্যাক্টেরিয়া যা উদ্ভিদ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। এই হ্রদটির উপরের আবরণ ক্ষারযুক্ত লবণের দ্বারা তৈরি এবং প্রায় লাল বা গোলাপী রঙের হয়।
বলাবাহুল্য, এই হ্রদটির ক্ষারযুক্ত লবণের আস্তরণ এতোটাই বিপদজনক যে এর সংস্পর্শে আসা প্রাণী মুহূর্তেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাছাড়া এই লেকের ভূপৃষ্ঠ হতে নির্গত হয় শক্তিশালী বিষাক্ত গ্যাস “হাইড্রোজেন সালফাইড”। এই গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
কথা হচ্ছিলো পৃথিবীর প্রায় ৭৫ ভাগ ফ্লামিংগের (পাখিবিশেষ) জন্মস্থান এই নাট্রন হ্রদকে নিয়ে, যার আয়তন প্রায় ১০৪০ বর্গ কিঃমিঃ এবং উচ্চতা ৬০০ মিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এবং জলের স্তরের উপর নির্ভর করে এর প্রশস্ততার বিস্তার ঘটে (দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই হ্রদ)।
বিশেষজ্ঞদের মতে এই হ্রদটির উৎপত্তি দক্ষিণ ইয়াভা নেভিরো নদী হতে। উক্ত স্থান হতে আসা স্বল্পমাত্রায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কার্বোনেট সমৃদ্ধ “গেলাও” আগ্নেয়গিরির লাভা জমাট হয়ে থাকে। মাত্র তিন মিটার গভীরতা সম্পন্ন এই হ্রদটি বেশ উষ্ণ, যার তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৬০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে এবং এই হ্রদটি খনিজ সমৃদ্ধ এবং পার্শ্ববর্তী স্থান জুড়ে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হয়। উচ্চমাত্রার ন্যাট্রন (সোডিয়াম কার্বোনেট ডায়াহাইড্রেট) এবং ট্রোনা (সোডিয়াম সেসিকোকার্টাউটি ডায়াডরেট) এর কারণে এই হ্রদের ক্ষারীয়তার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যার মাত্রা ১০.৫ হতে ১২ পিএইচ যা সমুদ্রের লবণাক্ততাকেও হার মানায়। এই প্রতিকূল অবস্থায় অ্যালকাপিয়া গ্রামারি, অ্যালকাপিয়া লাতিলাব্রিস, ন্ডালালানী প্রজাতির মাছের বসবাস এই হ্রদে এবং পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ ফ্লামিংগ পাখির প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবেও এই হ্রদটি সুপরিচিত।
এবার আসি এই হ্রদের বেশকিছু অবাক করা তথ্য সম্পর্কে-
এই হ্রদটির কোনো সীমা নাই অর্থাৎ এই হ্রদটির সাথে কোন নদী বা সাগরের সংযোগস্থল নাই যার ফলে বাইরের কোন নদী বা সাগরের পানি এতে মেশে না।
ফ্লামিংগ প্রজাতির পাখিদের এই হ্রদকে নিজেদের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে নির্দিষ্ট করার পিছে রয়েছে আরেক কারণ যা হলো নাট্রন হ্রদের পরিবেশ যথেষ্ট প্রতিকুল আর অন্যান্য শিকারী প্রাণীদের এখানে বেঁচে থাকার অনুপযোগী। যার ফলে ফ্লামিংগরা থাকে নিরাপদ। তাছাড়া উচ্চমাত্রার লবণ এবং তাপমাত্রা থাকা সত্ত্বেও এই পানি তারা অনায়াসে পান করতে পারে। ঠিক এ কারণগুলোর জন্যেই এমন একটা স্থানকেই ফ্লামিংগ পাখিদের প্রজননের জন্য বেছে নেয়ার মূল কারণ।
কথিত আছে এই হ্রদটির লবণাক্ততা এতোই তীব্র যার কারণে এর সংস্পর্শে কোন প্রাণী আসামাত্রই পাথরে পরিণত হয়ে যায়। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে ধুসর রঙের ফ্লামিংগ পাখি, বাদুরসহ বেশকিছু প্রাণীর জমে যাওয়া দেহাবশেষ, যা হয়তো পানিতে ভাসছে বা ডালে বসে আছে, হেটে চলছে এ হতে অনেকেই ধারণা করে বসেন এসব প্রাণী যখনই লবণাক্ত পানির সংস্পর্শে এসেছে তখনই মারা গিয়েছে এবং পাথরে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
কিছু মিডিয়া রিপোর্ট ব্যতীত এটা সত্য যে, এসব প্রাণীর মৃত্যু হ্রদের লবণাক্ত পানির সংস্পর্শে আসা নয় বরং এর কিছু যৌক্তিক কারণ হিসেবে বলা যায়, নাট্রন হ্রদের পিএইচের মাত্রা প্রায় ১০.৫ বা এর কিছু বেশি আর এই পানির সাথে অভ্যস্ত নয় এমন কেউ এর সংস্পর্শে আসা মাত্র চোখ এবং চামড়া মুহূর্তেই ঝলসে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। হ্রদের ক্ষারযুক্ত পদার্থ মূলত সোডিয়াম কার্বোনেট এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ হতে উৎপন্ন হয় যা আসে হ্রদের চারপাশের ঘেরাও করা পাহাড়-পর্বত হতে। সোডিয়াম কার্বোনেট – যা মিশরের মমি তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো – এক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে সেসব পশুপাখির মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য যারা অসাবধানতা এবং দুর্ভাগ্যবশত নাট্রন হ্রদে মারা যায়। এই নাট্রন হ্রদের ক্ষারীয়তা বরঞ্চ এটা জীবনদান করে লবণাক্ত জলাভূমি, স্বচ্ছ পানির জলাভূমি, ফ্লামিংগ এবং জলাভূমির পাখিদের প্রজনন ও খাদ্য উৎপন্ন করত: ইকোসিস্টেমের ব্যালেন্স রক্ষার্থে সহায়তা করে।
তবে, ইন্টারনেটে পাওয়া সেসব ধূসর প্রাণীগুলোর কিভাবে কি হলো তাদের?
বিখ্যাত ফটোগ্রাফার Nick Brandt তার “Across the Ravaged Land“ বইয়ের জন্য তোলা বেশকিছু চিত্রকর্ম ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে। তার ভাষ্যমতে, ওই এলাকার বিরাজমান জীবন্ত প্রাণীরা অত্র পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তবে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু প্রজাতির পাখি এবং বাদুড়ের মৃতদেহের দেখা পান যা নাট্রন হ্রদের পাড় ধরে ধুয়ে পানির সহিত চলে আসছিলো।
কেউই জানতো না আসলে কিভাবে তারা মারা যায়, তবে তার মতে পানির ক্ষারীয়তা এতো বেশি যা তার এক বাক্স কোডেক ফিল্ম রীলের কালি পুরোপুরি নষ্ট করে দিতে মাত্র ২-৩ সেকেন্ড এর মতো সময় নিবে। তিনি ওইসব প্রাণীদের মৃতদেহ হ্রদের পাড়ে খুঁজে পান এবং তাদের এমন অবস্থানে বসান যেগুলো দেখে মনে হয় এখনো তারা জীবিত আছে আর তাদের স্বস্থানে বিরাজ করছে।
সাদাকালো ফিল্টারে ছেঁকে তোলা ছবিগুলো দেখলে আপনারও উৎসুক মনে নানাধরনের প্রশ্নের জন্ম নিবে, আসলেই কি এভাবে ফুটিয়ে তোলা আদৌ সম্ভব?
তার বইয়ে ব্যাপারটাকে তিনি ফুটিয়ে তুলেন, “Reanimated, Alive Again in Death” শব্দ যুগলের মাধ্যমে।
মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের করাল গ্রাস আজ তাঞ্জানিয়ার নাট্রন হ্রদকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
বর্তমানে কেনিয়া ইয়াসো নাইগ্রো নদীর ধারে হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে পাওয়ার প্লান্ট হতে প্রচুর পরিমাণে নির্গত কেমিক্যালের ফলে নাট্রন হ্রদের লবণাক্ততার ভারসাম্য রক্ষায় মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করবে এবং এ কারণে নাট্রন হ্রদ পড়বে হুমকির মুখে।
তাছাড়া অন্যদিকে সোডিয়াম সালফেটের মিশ্রণে তৈরি “সোডা এ্যাশ প্লান্ট” যা তাঞ্জানিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এবং ইন্ডিয়ার টাটা কেমিক্যাল লিমিটেড এর যৌথ উদ্যোগে ওয়াশিং পাউডার তৈরি করবে যা হ্রদের সোডিয়াম কার্বোনেট হতে সংগ্রহ করা হবে এবং প্লান্টটি হ্রদটির কূলেই স্থাপিত হওয়ার অপেক্ষায়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই পদক্ষেপ নাট্রন হ্রদের জন্য অন্যতম আরেকটি বিপদের হাতছানি।
সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো, এইসব পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নাই যার কারণে নাট্রন হ্রদের জীববৈচিত্রতায় বিপর্যয় ঘটবে। বিশেষত পূর্ব আফ্রিকার ফ্ল্যামিংগ যাদের প্রজনন ক্ষেত্র এই হ্রদটি। এমন বৈরি সিদ্ধান্তের ফলে জীব বৈচিত্র্য অচিরেই বিলুপ্ত হবে।
পৃথিবীর বুকে নাট্রন হ্রদ সবচেয়ে নিষ্ঠুর প্রকৃতির এক স্থান যা তীব্র মাত্রার ক্ষারীয়তা এবং উচ্চ তাপমাত্রার দরুন তার ভূপৃষ্ঠে অভ্যস্ত প্রাণী ব্যতীত অন্য কারও বেঁচে থাকা বেশ দুষ্কর। গভীর লাল এবং আলতো কমলা রঙের পানির মোহে পড়ে উক্ত হ্রদকে অতিথিপরায়ণ মনে করে সাঁতার কাটতে নামলেই মৃত্যু অবধারিত। যার জন্যে নাট্রন হ্রদে সাঁতার কাঁটা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক জনবসতি নদী-হ্রদের ধারে, বন্ধ্যা-অনুর্বর, পাথুরে ভূমিতে গড়ে উঠার উদাহরণ রয়েছে তবে নাট্রন হ্রদের ইতিহাস পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দেয়, কেউ কখনো নাট্রন হ্রদের পাড়ে বাস করতে চায় নাই, চাইবেও না।
নাট্রন হ্রদের টিকে থাকাটা পৃথিবীর ইকোব্যালেন্সের জন্য অত্যন্ত জরুরী। কারণ সাইনোব্যাক্টেরিয়া হ্রদকে কিছু প্রজাতির প্রাণীকে উক্ত স্থানে বসবাসে অভ্যস্ত করে তুলেছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক ফ্লামিংগ এবং বহু প্রজাতির মাছ যারা স্বচ্ছ পানিতে কখনোই বাঁচতে পারবে না। তাছাড়া, উক্ত হ্রদে স্বচ্ছ পানি প্রবাহিত হলে হ্রদের ব্যালেন্সিং নষ্ট হয়ে পড়বে এবং তাঞ্জানিয়ার অনেকেই বর্তমানে সোচ্চার এই হ্রদে নদী হতে স্বচ্ছ পানি সরবরাহের বিপক্ষে। যদি এই হ্রদের লবণাক্ততা কমতে শুরু করে তবে সাইনোব্যাক্টেরিয়ার উৎপাদন কমে যাবে এবং তা বসবাসরত লক্ষাধিক ফ্লামিংগের জীবন বিপন্ন করে তুলবে। পাশাপাশি পাখিদের বসবাস বিনষ্ট করার কুফল ভালো কিছু বয়ে আনবে না পৃথিবীর প্রাত্যহিক নিয়মে। যার ফলাফল, বিশ্ব হারাবে অনিন্দ্য ভয়ংকর সুন্দর এক লবণাক্ত এই আশ্চর্য হ্রদ যার নাম “নাট্রন হ্রদ”।
canadian drugs Prescription Drugs from Canada canada pharmacy online legit
http://indiaph24.store/# buy prescription drugs from india
https://mexicoph24.life/# best online pharmacies in mexico
best rated canadian pharmacy canadian pharmacies online canadian pharmacy
buying from online mexican pharmacy: Mexican Pharmacy Online – buying prescription drugs in mexico
http://indiaph24.store/# indian pharmacy paypal
top online pharmacy india Generic Medicine India to USA best online pharmacy india
https://indiaph24.store/# top 10 online pharmacy in india
https://canadaph24.pro/# rate canadian pharmacies
buying prescription drugs in mexico Online Pharmacies in Mexico mexican rx online
Online medicine home delivery: buy medicines from India – reputable indian online pharmacy
legitimate canadian pharmacies Licensed Canadian Pharmacy my canadian pharmacy
medication from mexico pharmacy mexican pharmacy buying prescription drugs in mexico online
http://canadaph24.pro/# best mail order pharmacy canada
mail order pharmacy india Cheapest online pharmacy best india pharmacy
india pharmacy mail order: indian pharmacy fast delivery – reputable indian pharmacies
indian pharmacy paypal indian pharmacy fast delivery online shopping pharmacy india
http://canadaph24.pro/# best canadian pharmacy online
http://indiaph24.store/# reputable indian online pharmacy
mexico pharmacy Online Pharmacies in Mexico purple pharmacy mexico price list
https://mexicoph24.life/# mexican pharmacy
best online pharmacy india: reputable indian online pharmacy – reputable indian online pharmacy
https://canadaph24.pro/# canadian world pharmacy
canadian drug canada drugs reviews canadian drugs pharmacy
http://indiaph24.store/# legitimate online pharmacies india
rate canadian pharmacies Licensed Canadian Pharmacy legitimate canadian mail order pharmacy
https://mexicoph24.life/# mexican mail order pharmacies
buying prescription drugs in mexico mexican pharmacy buying prescription drugs in mexico
safe reliable canadian pharmacy Licensed Canadian Pharmacy reputable canadian pharmacy
world pharmacy india top 10 online pharmacy in india indian pharmacy online
https://indiaph24.store/# online pharmacy india
mexico pharmacies prescription drugs Online Pharmacies in Mexico buying prescription drugs in mexico
buying from canadian pharmacies Certified Canadian Pharmacies canadian pharmacy online reviews
http://mexicoph24.life/# buying from online mexican pharmacy
https://canadaph24.pro/# escrow pharmacy canada