ফরাসী কবি শার্ল বোদলেয়ারের “লা ফ্ল্যর দ্যু মাল” (Les fleurs du mal) বইয়ের একখানা কবিতার নাম “L’Héautontimorouménos – To Self-Tormenter”। মানে যে নিজেই নিজকে শাস্তি দেয়। প্রথম কয়েকখানা লাইন হল এরকম-
I shall strike you without anger
And without hate, like a butcher,
As Moses struck the rock!
And from your eyelids I shall make
The waters of suffering gush forth
To inundate my Sahara.
এই লাইনগুলোর মর্মার্থ হল, আমি তোমাকে আঘাত করব রাগে নয় বিদ্বেষে নয়। তাহলে কেমন করে? যেমন করে কসাই মাংস কাটে। কসাই কি গরুকে বিদ্বেষ করে, না; সেতো তার পেশাগত কাজ করে। নবী মূসা যেমন পাথরে আঘাত করে পানির ফোয়ারা বের করে আনে, তেমনি আমিও তোমার চোখের পাপড়ির নিচ থেকে ঝর্ণাধারা বের করে আনব। কিসের? বেদনার ঝর্ণাধারা। কারণ আমার আত্মা সাহারা মরুভূমির মতো শুকিয়ে আছে। সেই ধারায় আমার আত্মা পরিতৃপ্ত হবে।
এমন মানুষকে সিনেমার ভাষায় বলে ভিলেন, ডাক্তারি ভাষায় Insane আর ধর্মের ভাষায় বলে শয়তান। ব্ল্যাক মেটালের পুরো থিমটাই হচ্ছে এই শয়তানি নিয়ে। ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লবের পর যে নতুন জীবনধারা বা যুগের সূত্রপাত, তাকে আমরা বলি আধুনিক যুগ বা আলোকিত যুগ। এরপর থেকে বিজ্ঞানের নিরন্তর প্রগতির ফলে পৃথিবীও নিরন্তর প্রগতির দিকে এগিয়ে চলছে। প্রগতির এই যে গল্প এটাকেই আক্রমণ করেছেন বোদলেয়ার এই কবিতার মাধ্যমে। বুদ্ধদেব বসু বোদলেয়ারকে একদম রোম্যান্টিক কবিতে পরিণত করেছেন। আমার মতে বোদলেয়ার একজন স্যাটানিক পোয়েট। কিন্তু শয়তানটা কে সেটাই হচ্ছে আসল কথা। সেটা কি কবি নিজে নাকি অন্য কেউ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে ভলতেয়ার, হিউম এবং ক্যান্টের পরে আর কেউ কি শয়তানের কথা বলে? জর্জ সেন্ট ছদ্মনামে এক বড় খ্রিস্টান লেখিকা বলেন, “এখন আর খ্রিস্টানদের শয়তানে বিশ্বাস করার প্রয়োজন নাই। খ্রিস্টানদের মধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত চালু আছে। একদল বিশ্বাস করে শয়তানকে ঈশ্বর পুরোপুরি পরাস্ত করেছে। একদল মনে করে এটা পুরনোকালের মানুষকে বুঝাতে বলা হয়েছে, এখন আর এসবের দরকার নাই। পৃথিবী এখন নিরন্তর প্রগতির দিকে এগিয়ে চলছে।
প্রদীপের নিচেও অন্ধকার থাকে। আর অন্ধকার মানেই কালো। এখান থেকেই আসছে ব্ল্যাক মেটালের “ব্ল্যাক” কথাটা। আর শয়তানেরও কোনো বাহ্যিক অবয়ব নাই। থাকলেও অন্তত আমারা দেখতে পাই না। বিজ্ঞানের এই যুগে আমার সকলেই জানি যে আমাদের চোখের নিজস্ব কোনো আলো নেই। বস্তুর আলো চোখে পড়লেই কেবল আমরা দেখতে পাই । শয়তানকে যেহেতু দেখা যায় না সেহেতু শয়তানের রং কি কালো নয়? প্রগতির অন্তরালে যা আমারা দেখতে পাই না তা কি কালো নয় । আর কালো মানেই তো শয়তান।

যাইহোক, ব্ল্যাক মেটাল হচ্ছে একপ্রকার এক্সট্রীম হেভি মেটাল। ১৯৮০ দশকের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইউরোপে ব্ল্যাক মেটালের প্রথম ধারাটার সূত্রপাত ইংল্যান্ডের venom, ডেনমার্কের Mercyful Fate, সুইজারল্যান্ডের Hellhammer, Celtic Frost এবং সুইডেনের Bathory এই ব্যান্ডগুলোর হাতে। এই দশকেরই শেষের দিকে Mayhem ও Burzum নামে নরওয়ের দুটি ব্যান্ড আরেকটি নতুন ধারার ব্ল্যাক মেটালের সূত্রপাত করে। এই ব্যান্ডগুলোর মধ্যে প্রথম ব্ল্যাক মেটাল শুরু করে Venom। আর সেটা সমৃদ্ধ হয় Mayhem-এর হাতে। ১৯৯০ দশকে স্ক্যানন্ডিনেভিয়ান দেশের ব্যান্ডগুলো চার্চ পোড়ানোর মতো সহিংসতার সাথে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালের ৮ এপ্রিল Mayhem-এর লিড ভোকালিস্ট Per Yngve Ohlin আত্মহত্যা করে। ব্যান্ডের অন্য মেম্বাররা তাকে অনেক অন্তর্মুখী ও হতাশাগ্রস্ত বলে আখ্যায়িত করে। Per Yngve Ohlin-এর সুইসাইড নোটে লিখা ছিল, “Excuse All the Blood”। Euronymous নামে ব্যান্ডের অন্য আরেকজন মেম্বার তার মাথার খুলির একাংশ দিয়ে নেকলেস তৈরি করে। গুজব আছে যে, Euronymous নাকি তার মাথার মগজ দিয়ে স্টু (Stew) রান্না করে খেয়েছিল। প্রথম যে চার্চটি পোড়ানো হয় সেটি হচ্ছে নরওয়েয়ের Fantoft Stave Church। পুলিশের বিশ্বাস Burzum এর Varg Vikernes এজন্য দায়ী। কারণ Burzum এর Aske (“Ashes”) নামক এ্যালবামের কভার ফটোটি ছিল ঐ ধ্বংসপ্রাপ্ত চার্চের ছবি।
১৯৯৪ সালের মে মাসে আদালত Holmenkollen Chapel, Skjold Church এবং Asane Church গুলো পোড়ানোর জন্য Vikernes কে অভিযুক্ত ঘোষণা করে। যখন Mayhem-এর De Mysteriis Dom Sathanas এ্যালবামটি প্রকাশিত হয় ঠিক তখনই Vikernes এবং Euronymous দুজনে মিলে Nidaros Cathedral চার্চে বোমা মারে বলে অভিযোগ আনা হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে Mayhem-এর ঐ এ্যালবামটির কভার ফটো ছিল ঐ চার্চের ছবি।

তাছাড়া Emperor-এর Faust, Samoth এবং Hades Almighty এর Jørn Inge Tunsberg, এদেরকে আদালত ঐ সময় চার্চ পোড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত ঘোষণা করে। এক পরিসংখ্যান মতে, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে নরওয়েতে মোট পঞ্চাশটি চার্চে আগুন দেওয়া হয়। সুইডিশ ব্যান্ডগুলো তাঁদের নিজ দেশের চার্চগুলোতে আগুন দেওয়া শুরু করে ১৯৯৩ সালে। ইতিমধ্যে ১৯৯৩ সালে Vikernes এর হাতে খুন হন Euronymous। ১৯৯৩ সালের ১৯ আগস্ট ভিকারনেসকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৯৪ সালের মে মাসে Euronymous কে হত্যা, চারটি চার্চ পোড়ানো এবং ১৫০ কেজি ওজোনের বিস্ফোরক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য ভিকারনেসের নরওয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি ২৫ বছরের সাজা হয়। এইসব ঘটনার জন্য ব্ল্যাক মেটাল মিডিয়া কাভারেজ পায় এবং অতিদ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আরও জানতে আগ্রহীরা ইউটিউবে গিয়ে Satan Rides the Media (১৯৯৮) নামক ডকুমেন্টারি ফিল্মটি দেখতে পারেন। নরওয়ের Dimmu Borgir এবং ইংল্যান্ডের Cradle of Filth হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ড। নরওয়ের এইসব ব্যান্ডগুলো চার্চে আক্রমণের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে জোরপূর্বক খ্রিস্টান ধর্ম তাঁদের উপর চাপিয়ে দেওয়াকে। তাই তাঁরা খ্রিস্টান ধর্মের যাবতীয় চিহ্ন নরওয়ের বুক থেকে মুছে ফেলে খ্রিস্টানধর্ম পূর্ব মূল্যবোধে বা পেগানিজমে ফিরে যেতে চায়।
পাঠিকা পূর্বেই বোদলেয়ারের কবিতা আলোচনা করে শয়তানের স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে। তবে আসল শয়তানটা কে তা অধরাই ছিল। আসুন একই কবিতার আরও কয়েকটি লাইন পড়ে ফেলা যাক। যদি কোনো আলোর দেখা মিলে।
I am the wound and the dagger!
I am the blow and the cheek!
I am the members and the wheel,
Victim and executioner!
উক্ত কবিতাটিকে তাত্ত্বিকেরা ফরাসী বিপ্লবের রূপক হিসেবে উল্লেখ করেছেন । বিপ্লব আপন সন্তানকে খেয়ে ফেলে । এই লেখায় এসবের আলোচনার সুযোগ নাই । প্রবন্ধটি শেষ করতে চাই Rainbow এর Long Live Rock ‘n’ Roll এ্যালবামের “Gates of Babylon” গানটির শেষ কয়েকটা লাইন দিয়ে ।
The devil is me
And I`m holding the key
To the gates of sweet hell
Babylon
dutasteride online buy buy ondansetron 4mg without prescription order zofran 8mg for sale
buy levaquin 250mg generic order levofloxacin
levaquin without prescription purchase levofloxacin generic