ভারত এবং চীন পৃথিবীর সবথেকে বেশি জনবহুল দুটি দেশ। এক হিসেবে দেখা গেছে যে ভারত আগামী ২০২২ সালের মধ্য পৃথিবীর মধ্য সবথেকে বেশি জনসংখ্যার দেশ হিসেবে নাম লেখাবে । বলা হয়ে থাকে আগামীর বিশ্ব যদি কোন নতুন সুপার পাওয়ার এর উত্থান দেখে তবে এ দুটি দেশের মধ্য যে কোন একটি হবে সেই সুপার পাওয়ার। আজকের এই লেখায় আমি ভারত এবং চীনের সামরিক শক্তির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরার চেস্টা করব। এর পিছনের কারণ হল, বিশ্বে সুপার পাওয়ার হতে হলে সামরিক শক্তিতে এবং অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে থাকা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । চীন এবং ভারত এই দুই দেশই তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে ক্রমাগত একে আরেককে টেক্কা দিচ্ছে। সামরিক শক্তির তুলনামূলক চিত্র দেখার আগে চলুন আগে দেখে আসি দেশ দুইটির অর্থনৈতিক উন্নতির তুলনামূলক কিছু চিত্র। কেননা সামরিক শক্তিতে শক্তিশালী হওয়া এবং অর্থনৈতিক উন্নতি এই দুই একে অপরের পরিপূরক ।
ভারত বনাম চীন এর অর্থনৈতিক উন্নতির কিছু চিত্রঃ
বর্তমানে চীন এর ইকোনমি বিশ্বের মাঝে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, যেখানে আমেরিকা প্রথম। তবে Fortune এর মতে আমেরিকার ইকোনমি খুব বেশিদিন প্রথম অবস্থা ধরে রাখতে পারবে না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে কে হবে বিশ্বের সবথেকে বড় ইকনোমিক পাওয়ার । কিছু কিছু অর্থনীতিবিদের মতে ভারত হয়ে যেতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইকোনমিক পাওয়ার হাউজ। যদিও বর্তমানে চীন এর ইকোনমি ভারত এর থেকে বেশি শক্তিশালী কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির চিত্র অতটা উর্ধগামী নয়, যতটা ভারতের । ২০১৬ সালে যেখানে চীন এর জিডিপি ১১ ট্রিলিয়ন ডলার এবং ভারতের জিডিপি ২.২৩ ট্রিলিয়ন ডলার। সবথেকে বেশি জিডিপি আছে আমেরিকার আর সেটা ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু অর্থনীতিবিদের মতে ২০২৮ সালের মাঝেই চীন এর জিডিপি আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে এবং তা হবে বিশ্বের মাঝে সবথেকে বেশি। এখন একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে তাহলে ভারত কিভাবে সবথেকে বড় ইকনোমিক পাওয়ার হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে চলুন আমরা দেখে আসি ভারত এবং চীন এর অর্থনৈতিক উন্নতির একটি চিত্র –
এখানে একটু খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতির রেখা ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং তা ২০১৭ সালে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। অর্থনীতিবিদের মতে ভারত যদি এই ক্রমবর্ধমান উন্নতি ধরে রাখতে পারে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে ভারত চীনকে ও ছাড়িয়ে যাবে।
সে যাই হোক আজকের বিষয় ছিল ভারত এবং চীন এর সামরিক শক্তির তুলনা । তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক এই দুইটি দেশের মাঝে সামরিক শক্তির তুলনামূলক চিত্র –
ভারত এবং চীন এর সামরিক শক্তির তুলনা মূলক চিত্র –
ভারতঃ
রাজধানী ঃ নয়াদিল্লী , জনসংখ্যাঃ ১.২৭ বিলিয়ন, আয়তনঃ ৩২৮৭৫৯০ বর্গকিলোমিটার ।
চীনঃ
রাজধানী ঃ বেইজিং , জনসংখ্যাঃ ১.৩৭ বিলিয়ন, আয়তনঃ ৯৫৯৬৯৬১ বর্গকিলোমিটার ।

মিলিটারী বাজেট এবং সেনা সংখ্যা –
ভারতঃ
ভারত এর মিলিটারী বাজেট – ৫৫.৯ বিলিয়ন ডলার যা কিনা তাদের মোট জিডিপির ২.৫% । তাদের সক্রিয় সেনা সংখ্যা ২১.৪০ লক্ষ এবং রিজার্ভ সেনা সংখ্যা ১১.৫৫ লক্ষ ।
চীনঃ
চীন এর মিলিটারী বাজেট – ২১৫ বিলিয়ন ডলার যা কিনা তাদের মোট জিডিপির ১.৯% । তাদের সক্রিয় সেনা সংখ্যা ২৩.০০ লক্ষ এবং রিজার্ভ সেনা সংখ্যা ৫.১০ লক্ষ ।
চীন ও ভারত এর স্থলবাহিনীর তুলনামূলক চিত্রঃ
ট্যাংকঃ চীনের আছে ৯১৫০ টি এবং ভারতের আছে ৪৪২৬টি । আবার, আর্মড ফাইটিং যুদ্ধযান এর ক্ষেত্রে চীনের আছে ৪৭৮৮ টি যেখানে ভারতের আছে ৫৬৮১ টি । অপরদিকে স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারী এর ক্ষেত্রে চীনের আছে ১৭১০ টি, ভারতের আছে মাত্র ২৯০ টি। চীনের রকেট আর্টিলারী আছে ১৭৭০ টি, আবার ভারতের আছে মাত্র ২৯২ টি।
চীন ও ভারত এর বিমানবাহিনীর তুলনামূলক চিত্রঃ
চীনের সর্বমোট যুদ্ধ বিমানের সংখ্যা ৩৭২৯ টি, যেখানে Fighter aircraft আছে ১১৯৯ টি, Multirole aircraft আছে ৫৬৭ টি , Attack aircraft আছে ৩০০ টি এবং হেলিকপ্টার আছে ১৬২৭ টি। অপরদিকে ভারতের সর্বমোট যুদ্ধ বিমানের সংখ্যা ২২১৬ টি, যেখানে Fighter aircraft আছে ৩২৩ টি, Multirole aircraf আছে ৩২৯ টি , Attack aircraft আছে ২২০ টি এবং হেলিকপ্টার আছে ৭২৫ টি।
চীন ও ভারত এর নৌবাহিনীর তুলনামূলক চিত্রঃ
চীনের সর্বমোট যুদ্ধ জাহাজের সংখ্যা ৭৪৯ টি, যার মাঝে Aircraftcarriers আছে ০১ টি, Destroyers আছে ৩২ টি, Frigates আছে ৫১ টি, Corvettes আছে ৩২ টি এবং সাব-মেরিন আছে ৭৩ টি। অপরদিকে ভারতের সর্বমোট যুদ্ধ জাহাজের সংখ্যা ২১৪ টি, যার মাঝে Aircraftcarriers আছে ০২ টি, Destroyers আছে ১১ টি, Frigates আছে ১৫ টি, Corvettes আছে ২৪ টি এবং সাব-মেরিন আছে ১৫ টি।