আধুনিক ফুটবলে এমন একটি সময়ও ফুটবলবিশ্ব পার করেছে যখন ‘রোনালদো’ নামটির ছিল পুরোপুরি ভিন্ন একটি অর্থ। নামটি শুনলেই ফুটবলবিশ্ব একজন কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে চিনত তিনি হলেন দ্য ফেনোমেনোন রোনালদো । এই রোনালদো ছিলেন আজকের পর্তুগীজ প্রতিভাবান রোনালদো থেকে পুরোপুরিই ভিন্ন একজন । এক অনবদ্য ক্যারিয়ার উপভোগ করেছেন এই সাম্বা ফুটবল তারকা। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার মানা হয় এই ব্রাজিলিয়ান রোনালদোকে।
রোনালদো লুইস নাজারিও ডি লিমা নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের সূচনা করেন ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগের ক্লাব ক্রুজেইরোর হয়ে। তবে পরবর্তীতে তৎকালীন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোমারিও তাকে ডাচ ক্লাব পিএসভি আইন্ডহোভেনে যোগ দেওয়ার উপদেশ দেন। শুরু হয় রোনালদোর ইউরোপিয়ান ফুটবল দ্বৈরথ।
নেদারল্যান্ডসে মাত্র দুই মৌসুম খেলেই ৫৮ ম্যাচে মোট ৫৪ গোল নিজের ঝুলিতে পুরেন তিনি। তার ফুটবলশৈলী স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার দৃষ্টি এড়ায়নি। রেকর্ড দামে তাকে ক্যাম্প ন্যুতে ভিড়ায় বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবের হয়েও নিজের সাফল্য অব্যাহত রাখেন রোনালদো। ৩৭ ম্যাচে মোট গোল করেন ৩৪ টি।
অতঃপর পরের মৌসুমেই অপ্রত্যাশিতভাবে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানে যোগ দেন রোনালদো। সেখানে তিনি গুণে গুণে পার করেন পরপর ৫ টি মৌসুম। সান সিরোতেও এই গোলস্কোরিং মেশিন কোনভাবে থেমে থাকেননি। ১৯৯৮ সালে ইন্টার মিলানের হয়ে জিতেন উয়েফা কাপ।
তবে দুর্ভাগ্যবশত তার ক্যারিয়ারের শনি হয়ে আসে হাঁটুর ইনজুরি। ২০০২ সালে আরেকবার রেকর্ড ৪৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে স্পেনে ভিড়ায় আরেক ইতিহাস সমৃদ্ধ ক্লাব। ঠিকই ধরেছেন, স্প্যানিশ রাজধানীর জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের কথাই বলছি। বার্নাব্যুতেই ফুটবলের অনবদ্য রচনা করে যান রোনালদো। রিয়াল মাদ্রিদের এই নায়ক ১২৭ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান ৮৩ বার। রিয়াল মাদ্রিদকে এনে দেন দুইটি লা লিগা শিরোপা। ২০০৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে এসি মিলানে যোগ দেন যেখানে তিনি একটি মৌসুম পার করেন। অবশেষে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিনথিয়ান্সের হয়ে খেলার মধ্যে দিয়ে নিজের সাফল্যময় ক্লাব ক্যারিয়ারের ইতি টানেন রোনালদো।
শুধুমাত্র ক্লাব পর্যায়েই রোনালদো সাফল্যের ইতিহাস বুনে যাননি। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তিনি ছিলেন অতুলনীয়। ব্রাজিলের হয়ে মোট ৯৮ টি ম্যাচে অংশ নেন তিনি, গোল করেন মোট ৬২ টি।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ব্রাজিলিয়ান জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান রিও ডি জেনেইরো শহরের এই বালক। পরবর্তীতে এই ব্রাজিল দলই ইতালিকে পেনাল্টিতে হারিয়ে জিতে নিয়েছিল ১৯৯৪ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ। ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপেও ব্রাজিল দলে ডাক পান রোনালদো। ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ব্রাজিল হারার বেদনায় ভাসলেও রোনালদো এই বিশ্বকাপে অর্জন করেন গোল্ডেন বুট খেতাব। যাইহোক, ২০০২ সালের বিশ্বকাপই ছিল রোনালদোর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সাফল্য-ঘন মুহূর্ত। জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপেই ব্রাজিলিয়ান জার্সি গায়ে এই ফুটবলার নিজের আসল জাত চিনান পুরো ফুটবল বিশ্বকে।
ফুটবল বিশ্বকাপের ১৭তম অধ্যায় ছিল ২০০২ সালের আসর। এই প্রথমবার ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চলেছিল এশিয়ান কোন দেশ। গ্রুপ সি তে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষদের মধ্যে ছিল তুরস্ক, কোস্টারিকা এবং চীন। গ্রুপপর্বে পরপর ৩ টি ম্যাচ জিতেই সাম্বা তারকারা শুরু করে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা। রোনালদো রেখেছিল এই ম্যাচগুলোতে বিশাল ভূমিকা। এই ৩ ম্যাচেই গোল করেছিলেন ৪ টি।
পরবর্তী পর্বে ব্রাজিল বেলজিয়ামের মতো একটি কঠিন প্রতিপক্ষের সম্মুখীন হয় কিন্তু সাম্বা তারকাদের নৈপুণ্যতায় বেলজিয়ানরা পরাজিত হয় ২-০ ব্যবধানে। রোনালদিনহো এবং রিভালদোর দ্বৈত নৈপুণ্যে প্রথম গোলটি পায় ব্রাজিল। নিজের কারিশাম একটি অসাধারণ গোল করে দলকে দ্বিতীয় বারের মতো এগিয়ে নিয়ে যান রোনালদো।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিভাপূর্ণ এক ইংল্যান্ড দলের সাক্ষাত হয় ব্রাজিলের। অনেকে মনে করেছিল এই ম্যাচটিই হবে প্রতিযোগিতার সব গুলো ম্যাচ থেকে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ। চিরচেনা হলুদ জার্সির বদলে ব্রাজিল খেলতে নামে অচেনা নীল জার্সি পরে। তবে ম্যাচের শুরুটা বেশি ভাল যায়নি দক্ষিণ আমেরিকান জায়ান্টদের। প্রথমেই মাইকেল ওয়েনের গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে দলকে সমতায় ফেরান রিভালদো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আবার আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ব্রাজিল। ৫০ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে একটি অবিস্মরণীয় গোল করেন রোনালদিনহো যা কিনা ফুটবলপ্রেমী মানুষদের এখনও অবাক করে। এই ম্যাচে রোনালদো তেমন ভূমিকা পালন না করলেও প্রতিযোগিতার পরের ম্যাচগুলোতে তার ভূমিকা কখনই ভুলার নয়।
সেমিফাইনালে তুরস্কের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। গ্রুপপর্বে আগেই এই তুরস্ককে হারিয়েছিল দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্রাজিল দল। তাই ম্যাচের শুরুতেই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিল ব্রাজিলিয়ানরা। তবে কৌশলী তুরস্ক দল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলায় ব্রাজিল এই ম্যাচে বেশি সুবিধা করতে পারেনি। যাই হোক, দেশের হয়ে আবার ফুটবলনায়কের ভূমিকা নেন রোনালদো। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে বল পায়ে নেন রোনালদো। এরপর তুর্কি পরাক্রমশালী ডিফেন্সকে কাটিয়ে গোলপোস্টের ডান কোণায় চতুরতার সাথে বল জড়ান তিনি। তার করা একমাত্র গোলেই জয় পায় শক্তিশালী ব্রাজিল। ফলে পরপর তৃতীয় বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠার কৃতিত্ব দেখাতে সামর্থ্য হয় ব্রাজিলিয়ানরা।
ফাইনালে ব্রাজিল একটি শক্তিশালী জার্মান দলের মুখোমুখি হয়। জার্মান এই দলে ছিল ক্লোসা, নেউভিলে, কান, স্নাইডার এবং হামানের মতো কৌশলী ফুটবলারেরা। আরেকবারের মতো দলের ত্রাণকর্তা হয়ে আবির্ভূত হন রোনালদো। জার্মান গোলরক্ষক অলিভার কানকে অনেকটা নাকানি চুবানি খাইয়ে খেলার ৬৭ ও ৭৯ মিনিটে দুইটি ঐতিহাসিক গোল করেন। ৬৭ মিনিটের গোলটি আসে ব্রাজিলিয়ান একটি শট কান সেভ করার পর রিবাউন্ড থেকে। অন্যদিকে দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি বক্স লাইনের একেবারে বাম কোণা থেকে। জাপানের ইয়োকোহমার ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে প্রায় ৬৯,০০০ মানুষ জ্বলন্ত সাক্ষী থাকল রোনালদোর এই কীর্তির। রোনালদোর বদৌলতে দক্ষিণ আমেরিকান সাম্বা ফুটবল জিতে নেয় তাদের ৫ম বিশ্বকাপ শিরোপা।
জাপান/কোরিয়া বিশ্বকাপে রোনালদো নিজের চুল কাটার ধরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হন। এ ব্যাপারটি তিনি পরবর্তীতে নিজেই খোলাসা করেন। তিনি এ সম্পর্কে বলেন, ‘কুঁচকিতে ইনজুরি সমস্যা চলছিল। আমি ৬০% সুস্থ ছিলাম বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে। তাই আমি আমার মাথা ন্যাড়া করে ফেলি। প্রত্যেকেই শুধু আমার ইনজুরি সমস্যা নিয়ে কথা বলছিল। কিন্তু যখন আমি এই চুলের ভঙ্গি নিয়ে অনুশীলনে গেলাম তখন সবাই আমার ইনজুরিকে দূরে রেখে আমার চুল কাটার ভঙ্গি নিয়ে কথা বলতে আরম্ভ করল’।
সাবেক ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার থিয়েরি হেনরি রোনালদো সম্পর্কে বলেন, ‘রোনালদো এমন এমন কৌশল দেখাতো যা আগে কেউ কখনও দেখেনি। সে, রোমারিও এবং জর্জ উইয়া মিলে ফুটবলে সেন্টার-ফরওয়ার্ড পজিশনটিকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে। তারাই প্রথম স্ট্রাইকার পজিশন থেকে মাঠের মধ্যভাগ এবং অন্যান্য স্থান বদলের প্রথাটি চালু করেছে’।
ডিফেন্ডার সিজার গোমেজ রোনালদোকে মার্কিং করা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি তার পায়ে বল থাকে এবং সে এক মিটারের মতোও মাঠে জায়গা পায়…তাহলে আপনি ডিফেন্ডার হিসেবে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। সে ডিফেন্ডারদের ঘিরে ড্রিবলিং করতে শুরু করবে আর আপনার সাথে ছেলেখেলা করতে থাকবে। সে আপনাকে কাটিয়ে চলে যাবে এবং অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে’।
তৎকালীন বার্সেলোনা কোচ ববি রবসন রোনালদো সম্পর্কে বলেন, ‘সে আমার দেখা ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন একজন’।
indian pharmacy paypal: Cheapest online pharmacy – india pharmacy mail order
https://mexicoph24.life/# mexico pharmacy
top 10 pharmacies in india: indian pharmacy fast delivery – world pharmacy india
medicine in mexico pharmacies: Mexican Pharmacy Online – reputable mexican pharmacies online
buy canadian drugs: Licensed Canadian Pharmacy – canadian online pharmacy reviews
http://mexicoph24.life/# mexican pharmaceuticals online
order metformin sale – glycomet sale precose 50mg usa