ব্রাম স্টোকার তাঁর বিখ্যাত ভৌতিক উপন্যাস “ড্রাকুলা”-তে ভ্যাম্পায়ারদের সম্পর্কে লিখেছিলেন― “Listen to them, the children of the night. What music they make!” ইন্টারেস্টিং একটা অসুখ পড়তে গিয়ে এই কথাটা ভীষণভাবে মনে পড়লো। “ভ্যাম্পায়ার সিন্ড্রোম” নামে একটা অসুখ আছে, মেডিক্যাল পরিভাষায় যাকে বলা হয় “জেরোডার্মা পিগমেন্টোসাম” (Xeroderma pigmentosum)। ট্রান্সিলভানিয়ান উপকথার ভ্যাম্পায়ারদের মতোই এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে না। গায়ে সূর্যের আলো পড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ত্বক পুড়ে ঝলসে যায়। একারণে এরা স্বাভাবিক মানুষের মতো দিনের আলোয় বাইরে বের হতে পারে না। এটা একটা দুর্লভ জেনেটিক রোগ; প্রায় ১ মিলিওনে ১ জনের হয়।

Source: YouTube
আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর, এটা সবার-ই জানা আছে। এই রশ্মি আমাদের ত্বকের কোষ ড্যামেজ করে। কিন্তু স্বাভাবিক মানুষের দেহে “নিউক্লিওটাইড এক্সিশন রিপেয়ার” নামে একটা রিকভারি পাথওয়ের মাধ্যমে ত্বকের এই ড্যামেজ তাৎক্ষণিকভাবে রিপেয়ার হয়ে যায়। এই পাথওয়ে চালানোর জন্য একটা এনজাইম দরকার হয়, যার নাম “নিউক্লিওটাইড এক্সিশন রিপেয়ার এনজাইম”। ক্রোমোজোমের যে জিনটি এই এনজাইম তৈরির জন্য সিগনাল পাঠায়, সেই জিনে মিউটেশন ঘটলে এই এনজাইমটি আর তৈরি হতে পারে না। ফলে ত্বকের কোষের রিকভারি পাথওয়ে চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। একারণে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসামাত্রই এদের ত্বক ঝলসে যায় এবং ফোস্কা পড়ে। তাছাড়া মিউটেশনের কারণে এরা উচ্চমাত্রায় ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে।

Source: HealthPrep
জেরোডার্মা পিগমেন্টোসাম একটা অটোজোমাল রিসেসিভ ডিজর্ডার। এই অসুখ বাচ্চাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়, কারণ বড় হওয়ার সুযোগ এরা সাধারণতঃ পায় না। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিকার না থাকায় ত্বকের ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিলতায় অল্প বয়সেই মারা যায় বাস্তবের এইসব “children of the night”.
