‘ধনকুবের’ শব্দটা শোনার সাথে সাথেই বিলিয়ন বা ট্রিলিয়ন এর অঙ্কটাই আমাদের মাথায় প্রথম চলে আসে ৷ আসাটাই স্বাভাবিক ৷ বিভিন্ন ধরনের জরীপ বিশেষ করে ফোর্বস সাময়িকীর কল্যাণে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং তাঁদের সম্পদের পরিমাণ সম্পর্কে কমবেশি সবারই ধারণা রয়েছে ৷ কিন্তু ব্যক্তিগত সফলতা ছাড়িয়ে গোটা পরিবারকে নিয়েও সফল এমন কারও খোঁজ কি রাখি আমরা ! আজকে আমরা জানব বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী পরিবারের কথা যাদের মাঝে অনেকেরই হয়তো বিলিয়নিয়ার বা ট্রিলিয়নিয়ার হতে খুব একটা বেগ পোহাতে হয়নি ৷ শুধুমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রেই লাভ করেছেন অঢেল প্রভাব প্রতিপত্তি ৷ ২০১৬ সালে ইনভেস্টোপিডিয়া শীর্ষ ১০ ধনী পরিবারের একটি তালিকা প্রকাশ করে৷ তালিকার শেষ দিক থেকেই শুরু করা যাক ৷ শীর্ষ তালিকায় যেতে যেতে আপনার চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ ৷
১০. কক্স পরিবার, যুক্তরাষ্ট্র
সম্পদের পরিমাণ : ৩৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
৩৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ সম্পদের অধিকারী যুক্তরাষ্ট্রের কক্স পরিবার রয়েছে তালিকার দশম স্থানে ৷ বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যবসাই পরিবারটির আয়ের মূল উৎস । এগুলোর মধ্যে রয়েছে অটোমোবাইল, কেবল টিভি এবং সংবাদপত্র প্রকাশনা ৷ কক্স পরিবারের মালিকানাধীন কক্স মিডিয়া গ্রুপ ও কক্স কমিউনিকেশন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ গণমাধ্যম গোষ্ঠী ৷ আর সকল প্রতিষ্ঠানই পরিচালিত হয় “কক্স এন্টারপ্রাইজের” অধীনে ৷
জেমস মিডলটন কক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ৷ ১৮৯৮ সালে তিনি “ডেটন ইভিনিং নিউজ” নামে একটি পত্রিকা প্রতিষ্ঠান কিনে নিয়ে সেটার নাম পরিবর্তন করে “ডেটন ডেইলি নিউজ” রাখেন ৷ এভাবেই তিনি ধীরে ধীরে মিডিয়া গ্রুপ থেকে কক্স এন্টারপ্রাইজ গড়ে তুলেন ৷ তিনি দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রের ওহায়ো রাজ্যের গভর্নরও ছিলেন ৷ কক্স এন্টারপ্রাইজে কক্স পরিবারের ৯৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে ৷ জেমসের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটি তাঁর দুই পৌত্র এবং কন্যা অ্যান কক্স চেম্বার্স দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বর্তমানে ৷ কক্স পরিবারের চতুর্থ জেনারেশন রয়েছে বোর্ড অব ডিরেক্টরে ৷
৯. বার্নার্ড আরনল্ট এবং তাঁর পরিবার, ফ্রান্স
সম্পদের পরিমাণ : ৩৭.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
তালিকার নবম স্থানে থাকা ধনকুবের পরিবারটি ব্র্যান্ড প্রেমিক বা ফ্যাশন সচেতনদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু বটে৷ আরনল্ট পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য বার্নার্ড আরনল্ট ফ্রান্সের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি । বিশ্বখ্যাত এলভিএমএইচ মোয়েত হ্যানেসি লুই ভিটন বা সংক্ষেপে এলভিএমএইচ (LVMH) কোম্পানির কর্ণধার আরনল্ট পরিবার । কোম্পানিটি বিশ্বের সেরা বিলাসপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত ৷
এই কোম্পানির আওতাধীন প্রায় ৬০টিরও বেশি ব্র্যান্ডে তাঁদের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য বিস্তৃত ৷ ব্র্যান্ড গুলোর মাঝে ডম পেরিওনন(শ্যাম্পেন), মোয়েত এ শ্যানদন (শ্যাম্পেন), বোলগানি (জুয়েলরি), লুই ভিটন (ব্যাগ), ফেন্ডি(ফ্যাশন হাউস) , ট্যাগ হইয়্যার (ঘড়ি) , সেফোরা (প্রসাধনী) , মেকআপ ফর এভার (প্রসাধনী) অন্যতম ৷ সারা বিশ্বে ছড়ানো ছিটানো ৩ হাজার ৭০০টি রিটেইল স্টোরের মালিকও তারা । পণ্য উৎপাদন এবং কেনাবেচার মাধ্যমেই পরিবারটি ৩৭.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক হয়েছে ৷ তাছাড়া বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড “ক্রিশ্চিয়ান ডিওর” কোম্পানিতেও বড় অংশের শেয়ার আছে তাঁদের ৷ তাঁর পুত্র অ্যান্টনি আরনল্ট “বারলুটি” ব্র্যান্ডের সিইও৷ পরিবারের অন্য সদস্যরাও এলভিএমএইচ এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদে নিয়োজিত রয়েছে ৷
৮. লিলিয়ান বেটেনকোর্ট ও তাঁর পরিবার, ফ্রান্স
সম্পদের পরিমাণ : ৪২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
প্রসাধনী সামগ্রী সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকুক বা না থাকুক ল’রিয়াল ব্র্যান্ডের নাম শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার ৷ স্বনামধন্য ল’রিয়াল ব্র্যান্ডটির কর্ণধারই হচ্ছে বেটেনকোর্ট পরিবার ৷ জীবদ্দশায় ইউরোপের সবচেয়ে ধনী নারী ছিলেন এই পরিবারের সদস্য লিলিয়ান বেটেনকোর্ট ৷ প্রসাধনী ব্যবসায় তাঁর রাজকীয় অবস্থান বিশ্বের যে কোনো প্রসাধনী ব্যবসায়ীকে চমকে দিতে বাধ্য । লিলিয়ান ও তাঁর পরিবার ৪২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ সম্পদ নিয়ে তালিকার অষ্টম স্থানে অবস্থান করছে ৷ ১৯০৯ সালে ইউজিন শিলারের হাতে ল’রিয়ালের গোড়াপত্তন ঘটে ।
একমাত্র উত্তরাধিকার হিসেবে এই কোম্পানির মালিক হন লিলিয়ান বেটেনকোর্ট । তারপর নানা উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে তাঁরা । অনেক বছর ধরে লিলিয়ান নিজে ব্যবসা না সামলাচ্ছিলেন না তবুও উন্নতির গ্রাফ ঠিকই ঊর্ধ্বমুখী । ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সালে লিলিয়ান মৃত্যু বরণ করেন ৷ বর্তমানে তাঁর মেয়ে এবং পৌত্র ল’রিয়ালের ৩৩ শতাংশ শেয়ার দেখাশোনা করছেন ৷ ল’রিয়াল কোম্পানির অধীনেই এনওয়াইএক্স , ম্যাবিলিন , ল্যানকম ,গার্নিয়ার প্রসাধনী সামগ্রীর ব্র্যান্ড গুলো পরিচালিত হয় ৷
৭. কারগিল – ম্যাকমিলান পরিবার, যুক্তরাষ্ট্র
সম্পদের পরিমাণ : ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
সপ্তম স্থানে থাকা কারগিল-ম্যাকমিলান পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । “কারগিল ইনকর্পোরেটেড” এর অন্যতম কর্ণধার এই পরিবার ৷ ১৮৬৫ সালে উইলিয়াম ওয়ালেস কারগিল এটি প্রতিষ্ঠা করেন । কোম্পানিটি খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবসায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ৷ আর এর ৯০ শতাংশের মালিক এই পরিবার ৷ পরিবারের আয়ের প্রধান খাতই হচ্ছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবসা ।
তাছাড়া এখন কৃষি সম্প্রসারণ ব্যবসা , দানাশস্য উৎপাদন ও ‘ফাইনান্সিয়াল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’ তাদের ব্যবসার অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও মজবুত করেছে ৷ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিলিয়নিয়ার রয়েছে এই পরিবারে । মোট ১৪ জন বিলিয়নিয়ারের পরিবার কারগিল-ম্যাকমিলান পরিবার ৷
৬. কার্লোস স্লিম হেলু , মেক্সিকো
সম্পদের পরিমাণ : ৭৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা কার্লোস স্লিম হেলু এবং তাঁর পরিবার মেক্সিকোর সবচেয়ে ধনী পরিবার ৷ স্লিম হেলু মূলত হোটেল ব্যবসা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা দিয়ে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেন । এছাড়াও বর্তমানে রেস্তোরাঁ , এয়ারলাইনস , ব্যাংক ব্যবসার সাথেও সম্পৃক্ততা রয়েছে পরিবারটির ৷ তবে স্লিম পরিবারের মূল ব্যবসা হচ্ছে “টেলিকম” ব্যবসা ৷ লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় মোবাইল টেলিকম কোম্পানি ‘আমেরিকা মোবাইল’ এর মালিক পরিবারটি ।
১৯টি দেশে ৩০০ মিলিয়ন মানুষকে মোবাইল সেবা প্রদান করছে তারা। কার্লুস হেলুর তিন সন্তানের মেধা ও পরিশ্রমে বর্তমানে তারা বিশ্ববাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে । তাঁদের ব্যবসায়িক সাফল্য মেক্সিকো ছাড়িয়ে আমেরিকা, স্পেন, ব্রাজিল ইত্যাদি দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে । এছাড়া তেল ও খনি ব্যবসাতেও প্রসিদ্ধ কার্লোস পরিবার । যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনের ১৭% মালিকানাও তাঁদের ৷ আর এতেই হেলু ও তাঁর পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৭ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ৷ ব্যক্তি জীবনে ছয় সন্তানের জনক কার্লোস ছোটবড় দু’একটা ঘটনা ছাড়া খুব একটা সমালোচিত হননি ।
৫. মার্স পরিবার, যুক্তরাষ্ট্র
সম্পদের পরিমাণ: ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
চকলেট প্রেমিরা একটু নড়েচড়ে বসতে পারেন ৷ বিশ্বখ্যাত চকলেট প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান “মার্স ইনকর্পোরেটেড” হচ্ছে মার্স পরিবারের দখলে ৷ মার্স পরিবার না থাকলে হয়তো বিশ্বে মার্স বার, স্নিকারস, মিল্কি ওয়ে, এম এন এমের মত চকলেটই থাকত না । তাদের সম্পদের মূল উৎসই ক্যান্ডি ও চকলেট । ঘরে পোষা প্রাণীর খাবারের বিখ্যাত ব্র্যান্ড পেডিগ্রিও মার্স পরিবারের মালিকানাধীন। চকলেট প্রেমীদের ভালবাসায় এই পরিবারের মোট আয় ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং শীর্ষ ধনীদের তালিকায় অবস্থান পঞ্চম ৷
ফ্র্যাঙ্ক মার্স ১৯১১ সালে সর্বপ্রথম “মার্স কোম্পানী” থেকে চকলেট উৎপাদন এবং বিপণন শুরু করেন ৷ জ্যাকুলিন ও জন মার্সের পাশাপাশি ফরেস্ট জুনিয়রও এতদিন পারিবারিক ব্যবসার প্রতিনিধিত্ব করছিলেন ৷ তবে ২০১৬ সালে ফরেস্ট জুনিয়র মৃত্যুবরণ করেন ৷ বর্তমানে ফরেস্ট জুনিয়রের মেয়ে ভিক্টোরিয়া বোর্ড অফ ডিরেক্টরের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন ৷ ব্যবসার শতভাগ শেয়ারই মার্স পরিবারের ৷
৪. কচ পরিবার, যুক্তরাষ্ট্র
সম্পদের পরিমাণ : ৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
চতুর্থ স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান “কচ ইন্ডাস্ট্রিজ” এর মালিক কচ পরিবার ৷ মূলত কচ ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেড সি কচ এর উত্তরাধিকারীরাই সম্মিলিত ভাবে এটি চালাচ্ছে ৷ ফ্রেড ১৯৪০ সালে ভারী তেলকে পেট্রলে রূপান্তরের পদ্ধতি উদ্ভাবন করার পরে এই তেল শোধনাগার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন । কচ পরিবারের জীবিত সদস্য চার্লস জি কচ ও ডেভিড এইচ কচ “কচ ইন্ডাস্ট্রির” ৮৪% শেয়ারের মালিক ৷
কচ পরিবারের আয়ের উৎসের মধ্যে তেল , আবাসন , রিফাইনারি , উৎপাদন , বিনিয়োগ খাতগুলোও অন্যতম। কচ ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি এই পরিবারের “কচ ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন” নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আছে। যার শুরু হয়েছিলো ফ্রেড এবং মেরী কচ ফাউন্ডেশন নামে ১৯৫৩ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব সময়ই প্রার্থীদের বিশাল অঙ্কের চাঁদা দিয়ে থাকে কচ পরিবার ৷ পরিবারটি সম্মিলিতভাবে ৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক ।
৩. ওয়ালটন পরিবার, যুক্তরাষ্ট্র
সম্পদের পরিমাণ : ১৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ধনী পরিবার হিসেবে খ্যাত ওয়ালটন পরিবার রয়েছে বিশ্ব তালিকায় তৃতীয় স্থানে ৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ওয়ালটন নামটি শুনে হয়তো অনেকের মনে আসতে পারে বাংলাদেশের ওয়ালটন কোম্পানির কথা ৷ আসলে ওয়ালটন এর সাথে তাঁদের কোন সম্পৃক্ততা নেই ৷ ওয়ালটন পরিবারটি বিশ্ববিখ্যাত রিটেইল শপ ‘ওয়ালমার্ট’- এর মালিক ৷ ওয়ালমার্টই তাদের আয়ের মূল উৎস।
সারা বিশ্বের ২৭টি ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রে ১১ হাজারেরও বেশি রয়েছে ওয়ালমার্টের শাখা । জনাব স্যাম ওয়ালটন ১৯৬২ সালে আরকানসাসে প্রথম শপটি চালু করেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এটি ৷ ওয়ালমার্ট স্টোরস ইঙ্ক লিমিটেড কোম্পানির তত্ত্বাবধানে খুচরা স্টোর গুলো পরিচালিত হয় ৷ ওয়ালমার্টই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারী কর্মসংস্হান দাতা প্রতিষ্ঠান ৷ ২০১৬ সাল পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বে ওয়ালমার্টের নিয়োজিত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল প্রায় ২.৩ মিলিয়ন ৷ ওয়ালটন পরিবার এই সংস্থার প্রায় ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক । এতেই তাদের সম্পদের পরিমাণ হয়েছে পাহাড় সমান ৷
২. আল সৌদ রাজপরিবার , সৌদি আরব
সম্পদের পরিমাণ: ১. ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
বিলিয়নের হিসাব শেষ এবার ট্রিলিয়নে প্রবেশ করা যাক ৷ ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ সম্পদ নিয়েই তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরবের রাজ পরিবার ৷ অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে সৌদি আরব শাসন করা এই রাজপরিবারের শাসকেরা পরিচিত আল সৌদ নামে। এতে হাজারেরও বেশি সদস্য রয়েছে। মুহাম্মদ বিন সৌদ ও তার ভাইদের বংশধরদের নিয়ে পরিবারটি গঠিত। বর্তমানে কিং সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এই রাজবংশের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন ৷ তাঁদের আয়ের মূল উৎস হচ্ছে জ্বালানী তেলের খনি।
এছাড়া বড় বড় ব্যবসায়িক চুক্তি থেকে শুরু করে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সবকিছু থেকেই আয় করে রাজপরিবারটি । তথ্যটি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইনসাইডার মাংকি । প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, পুরো সৌদি আরব রাষ্ট্রটিই সৌদ পরিবারের আয়ের উৎস যেটিকে তাঁরা পারিবারিক সম্পদ বলে মনে করে । এছাড়া তাঁরা প্রতি বছর হজ থেকেও বিপুল অংকের অর্থ আয় করেন । সৌদি রাজপরিবারের সব সদস্যরাই বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন ৷ হীরাখচিত ও সোনা দিয়ে মোড়ানো গাড়িতে যাতায়াত করেন , স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো খাট-পালংক ও টয়লেট ব্যবহার করেন, ইউরোপ-আমেরিকার বিখ্যাত সমুদ্রবন্দর একাই ভাড়া করে অবসর যাপন করেন।
১. রথচাইল্ড পরিবার, জার্মানী
সম্পদের পরিমাণ : আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি
চমকের শেষ পালা ৷ পুঁজিবাদী বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ও বিশ্বের একমাত্র ট্রিলিয়নিয়ার পরিবার যেটি ইতিহাসে রহস্যময় পরিবারগুলোর মাঝে অন্যতম ৷ ফোর্বস সাময়িকী প্রতি বছর বিশ্বের সম্পদশালীদের যে তালিকা প্রকাশ করে থাকে ধনকুবের হওয়া সত্ত্বেও সেই তালিকায় থাকে না এই রথ্সচাইল্ড পরিবারের কারও নাম ৷ কারণ তাদের সম্পদের সঠিক হিসাব একমাত্র পরিবারের লোকেরা ছাড়া বাইরের কারো কাছে প্রকাশ পায় না । তবে বিশেষজ্ঞরা নানানভাবে তাদের সম্পদের পরিমাণ আন্দাজ করে থাকেন ৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ধরা হয় ২ ট্রিলিয়ন থেকে ৫০০ ট্রিলিয়নের ভেতরে ৷
প্রচলিত আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা এই পরিবারের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতে জার্মানীতে মায়ের আমশেল রথ্সচাইল্ড নতুন একটি ব্যাংকিং পদ্ধতি কোর্ট থেকে পাশ করিয়ে নিয়ে চালু করেন তাঁর নিজস্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থা ৷ তিনি ছিলেন জার্মানের রাজ পরিবারের অর্থ ব্যবস্থাপক ৷ তাঁর পাঁচ সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদেরকে পাঠিয়ে দেন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি অঞ্চলে । ফ্রাঙ্কফুর্ট (জার্মানের একটি রাজ্য), লন্ডন (ইংল্যান্ড), নেপলস (ইতালি), প্যারিস (ফ্রান্স) ও ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) – তে গিয়ে পাঁচ সন্তান এই ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নতি ঘটান । জনশ্রুতি আছে , পুরো বিশ্বের ব্যাংক ব্যবস্থা , সামরিক ব্যবস্থা , রাজনৈতিক ব্যবস্থা এই পরিবারের নিয়ন্ত্রণে । ডলার ও পাউন্ড-এর নোট ছাপানোর ক্ষমতাও তাদের হাতে। “ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক” যেটাকে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী ব্যাংক হিসেবে মনে করে তা আসলে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংক যার মালিক এই রথ্সচাইল্ড পরিবার । যা একে একে দুনিয়ার প্রায় সব কটি দেশের অর্থ ব্যবস্থার উপর নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে ।
পরিবারটির আধিপত্য এতই বেশি যে পরিবারের সদস্যদের সম্মানার্থে এখন পর্যন্ত ১৫৩টি পতঙ্গ, ৫৮টি পাখি, ১৮টি স্তন্যপায়ী, ১৪টি উদ্ভিদ , ৩টি মাছ , ৩টি মাকড়সা এবং ২টি সরীসৃপের বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সদস্যদের নামে ইসরাইলের অসংখ্য রাস্তাঘাট ও বেশ কিছু স্থানের নামকরণও করা হয়েছে । এমন কি এন্টার্কটিকায় রথ্সচাইল্ড আইল্যান্ড নামে একটি দ্বীপ পর্যন্ত আছে এই পরিবারের ৷
তথ্যসূত্র
https://www.investopedia.com/articles/insights/052416/top-10-wealthiest
http://gazettereview.com/2016/02/top-ten-richest-families-in-the-world/
Wikipedia
rybelsus sale – purchase DDAVP without prescription buy generic DDAVP
lamisil order online – buy generic griseofulvin online buy grifulvin v