গত কয়েক দশকের মধ্যে সময়ের সবচেয়ে বৈরী সম্পর্ক পার করছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রভাবশালী মুসলিম রাষ্ট্র ইরান ও সৌদি আরব। ১৯৭০ এর দশকের শেষ থেকে শুরু হওয়া এ বৈরিতা এখন যেকোন সময়ের চেয়ে তিক্ত হয়েছে অনেক। শিয়া রাষ্ট্র ইরানকে কোণঠাসা করে নিজেদেরকে মুসলিম বিশ্বের নেতারাষ্ট্রে পরিণত করার প্রয়াসের চেষ্টা হিসেবে রিয়াদ হাত মেলাতে দ্বিধা করেনি মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরায়েলের সাথেও। সাথে মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে আটঘাট বেধেছেন হালের সৌদি ক্রেজ যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনীকে হিটলার আখ্যা দিয়ে বক্তব্য পর্যন্ত প্রদান করেছেন যুবরাজ সালমান। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে সৌদি রাজপরিবারের দ্বন্দ্ব ধামাচাপা দেয়ার জন্য ইরানকে সর্বোচ্চ হুমকি হিসেবে দাঁড় করাতে চাচ্ছে রিয়াদ। সম্প্রতি সৌদি উদ্বেগের পালে হাওয়া লাগিয়েছে সিরিয়া ও ইয়েমেনে ইরানের সামরিক উপস্থিতি। এ অঞ্চলে ইরানের আধিপত্য ক্ষুণ্ণ করতে তাই রিয়াদ সর্বোচ্চ চেষ্টাই চালিয়ে যাবে এটা নিশ্চিত। ইরান আদতে সৌদি আরবের সাথে যুদ্ধে না জড়ালেও তারা ইতিপূর্বে হুমকি প্রদান করেছে যে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনা ছাড়া সৌদি আরবের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আঞ্চলিক প্রভাব কায়েমের প্রতিযোগিতার দরুন সৌদি আরব তার মিত্রদের নিয়ে গঠন করেছে সামরিক সৌদি জোট, ইয়েমেনে যাদের বিরুদ্ধে আছে শিশু হত্যার অভিযোগ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কে সাথে নিয়ে সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বসহকারে। জয়েন্ট কম্প্রেহেন্সিভ প্ল্যান অফ একশন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ায় স্বস্তিও প্রকাশ করছে দেশটি। দুই দেশের সাপেনেউলে সম্পর্কের প্রেক্ষাপট জানা দরকার।
সৌদি ও ইরান এর মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণ –
১৯৭০ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ইরান ও সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দৃশ্যমান ছিল। যদিও ভেতরে ভেতরে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু ১৯৭৯ সালে শিয়াপ্রধান ইরানে যখন আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে ধর্মভিত্তিক বিপ্লব বা থিওক্রেসির উত্থান হয় তখন সুন্নিপ্রধান সৌদি শংকিত হয়ে পড়ে। কেননা ইসলামি ইরান তার এই থিওক্রেসি মধ্যপ্রাচ্য সহ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে রফতানির চেষ্টা চালায়। এতে করে মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরবের প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ার সুযোগ ও শংকার সৃষ্টি হয়। আর এর মধ্য দিয়েই ইরানের সাথে সৌদি আরবের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় এবং রিয়াদের সাথে ওয়াশিংটনের সখ্যতা পাকাপোক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্র সৌদিকে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব খাটানোর একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে নেয়।

১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সাদ্দাম হোসেনের ইরাকি বাহিনী যখন কোনরূপ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ইরানে আক্রমণ করে বসে তখন ইরাককে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল সৌদি আরব। পাশাপাশি অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোকেও ইরানের বিরুদ্ধে প্রলুব্ধ করে উস্কানি প্রদান করে রিয়াদ। এই ঘটনার পর সৌদির সাথে ইরানের বিদ্বেষ আরো এক ধাপ এগিয়ে যায়।
১৯৮৭ সালের জুলাই মাসে মক্কায় ইরানি হাজীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করলে সে বিক্ষোভ দমানোর নামে সৌদি সরকার ৪০০ লোককে হত্যা করে। এর পরের বছর ইরানি জনগণ তেহরানের সৌদি দূতাবাস লুট করে। বিপরীতে রিয়াদ তেহরানের সাথে সব ধরণের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। ১৯৯১ সালের আগ পর্যন্ত কোন ইরানি হজ করতে মক্কায় যায়নি।
২০১১ সালের আরব বসন্তে বাহরাইনে শিয়া সংখ্যালঘুরা বিক্ষোভ করে বসে। রিয়াদের দাবি, ইরান পরোক্ষভাবে এ বিক্ষোভ উস্কে দিয়েছে। এ ঘটনায় বাহরাইনে সৌদি আরব সেনা পাঠায়। দু দেশের তিক্ততা নতুন রূপ নেয়।
২০১২ সালে শুরু হওয়া সিরিয়া সংকটের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বাশার আল আসাদের পক্ষে ইরানের সরব উপস্থিতি এবং সিরিয়ায় সামরিক ঘাটি নির্মাণে যারপরনাই চিন্তায় আছে সৌদি আরব। সিরিয়ায় ইরানি সেনাদের উপস্থিতিকে আগ্রাসন হিসেবেই দেখছে রিয়াদ।

২০১৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া ইয়েমেন সংকটে প্রেসিডেন্টের পক্ষ নেয় সৌদি আরব। আর শিয়া হুথি বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে সাহায্য দিতে থাকে ইরান। ইয়েমেনে ইরানের প্রভাব ঠেকাতে সৌদি তার মিত্রদের নিয়ে গঠন করে সামরিক সৌদি জোট যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ। ইয়েমেন সংকট ইরান-সৌদির তিক্ত সম্পর্কের নতুন মোড় নিয়েছে।
২০১৫ সালে মক্কায় ক্রেন দুর্ঘটনায় অনেক হাজী নিহত হত যেখানে অধিকাংশই ছিলেন ইরানি নাগরিক। খোমেনি এ ঘটনাকে সৌদি সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।
ইরান-সৌদির তিক্ত সম্পর্কের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল ২০১৬ সালের জানুয়ারির এই ঘটনা। শিয়া ধর্মীয় নেতা আল নিমরকে সৌদি সরকার মৃত্যুদণ্ড প্রদান করলে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে দুদেশের মধ্যে। ইরানি জনগণ ৩ জানুয়ারি তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ঐদিনই তেহরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় রিয়াদ। তার পরের দিন বাণিজ্যিক সম্পর্কেরও ইতি টানে সৌদি আরব। একই সাথে ইরানও ৭ জানুয়ারি, ২০১৬ সালে সব ধরণের সৌদি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরো প করে বসে।

ইরান-সৌদি দ্বন্ধে মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ কি হবে?
২০১৫ সালে ক্ষমতা পাওয়া সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং সদ্য অভিষিক্ত যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান যে সংস্কারের পথে সৌদি আরবকে ধাবিত করছেন তা মূলত ইরানি প্রভাব বলয় কমানোরও এক ধরণের ইঙ্গিত। সৌদি-ইরান দ্বন্দ্ব জিইয়ে থাকলে মধ্যপ্রাচ্য যেসব ক্ষতির সামনে দাঁড় হতে পারে তা হচ্ছে,
শিয়া সুন্নি বিরোধ
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি সরকার যে ৪৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে তার মধ্যে ধর্মীয় নেতা আল নিমর ছাড়াও ছিলেন আরো ৩ জন শিয়া। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও মূলত শিয়া-সুন্নি বিরোধের আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়া হয়। তাই ইরান-সৌদি দ্বন্দ্ব দীর্ঘায়ত হলে এ বিরোধ মধ্যপ্রাচ্যে প্রকট আকার ধারণ করার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
তেলের মূল্য হ্রাস
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতার সুযোগে ইতিমধ্যে তেলের রেকর্ড দরপতন প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব। যদি ইরান-সৌদি দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকে তবে তেলের বাজার আরো হ্রাস পাবে বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে কার্যত লাভবান হবে অপরাপর রাষ্ট্রগুলো, ক্ষতিগ্রস্ত হবে মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক অর্থনীতি।

মধ্যপ্রাচ্যে বিভক্তি
সৌদি আরবের সাথে সুর মিলিয়ে ইতিমধ্যে বাহরাইন, আরব আমিরাত, জর্ডান ও মিশর ইরানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে তুরস্ক ও কাতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ইরানের। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বিভক্তি খুব স্পষ্ট হয়ে গেছে।
বড় শক্তিগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্ব
সিরিয়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর সাথে রাশিয়ার একাট্টা হওয়ার কারণে সৌদি আরব বিপাকে পড়েছে, বিষয়টি রিয়াদকে বেশ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের চোখে ইরানকে হুমকি হিসেবে দাঁড় করানোয় ইহুদিবাদি ইসরায়েলকে সাথে নিয়ে তারা বেশ সফলও হয়েছে।
ইতিমধ্যে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্প বেরিয়ে যাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক ধরণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। যা মূলত পৃথিবীর বৃহৎ শক্তির বিভক্তিকেই নির্দেশ করে।
purchase avodart buy ondansetron pills zofran 8mg generic
cheap levofloxacin 250mg buy levofloxacin 500mg generic
Magnificent website. A lot of useful info here. I am sending it to several pals ans also sharing in delicious. And certainly, thank you in your effort!
I feel this is among the such a lot important info for me. And i’m glad studying your article. However wanna observation on some normal things, The web site taste is wonderful, the articles is in point of fact great : D. Excellent task, cheers
I am glad for commenting to make you be aware of what a cool discovery my friend’s girl went through viewing your site. She picked up a good number of issues, which include what it’s like to have a wonderful teaching nature to let many people without hassle learn selected impossible topics. You actually surpassed our own expectations. Thanks for delivering these effective, healthy, explanatory and easy guidance on your topic to Gloria.