দক্ষিণ চীন সাগর : চীনের একক দখলদারিত্ব এবং ভবিষ্যৎ বিশ্ব রাজনীতিতে এর প্রভাব
এইচ-৬ কে মডেলের চীনা বোমারু বিমান দ্বারা সর্বদা পরিবেষ্টিত থাকা প্রশান্ত মহাসাগরের একটি অংশ যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মৎস্য সম্পদ, বিলিয়ন ব্যারেল খনিজ তেল আর ট্রিলিয়ন কিউবিক প্রাকৃতিক গ্যাস। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ পণ্যবাহী জাহাজ যার বুকের উপর দিয়ে বয়ে যায় তার নাম হলো দক্ষিণ চীন সাগর যার উৎপত্তি ৪৫ মিলিয়ন বছর আগে বলে ধারণা করা হয়।
দক্ষিণ চীন সাগরঃ
১৫০০ শতাব্দীর দিকে চম্পা সাম্রাজ্যের নামানুসারে দক্ষিণ চীন সাগর কে বলা হতো চম্পা সাগর বা চামের সাগর। চীনে এটি চায়না সাগর, ফিলিপাইনে এটিকে পশ্চিম ফিলিপাইন সাগর এবং ভিয়েতনামে এটি পূর্ব সাগর নামে পরিচিত। ১৪ লক্ষ বর্গ মাইল আয়তনের এই সাগরটিতে এসে মিশেছে প্যাসিগ, পামপাঙ্গা, পাহাং, রাজাং, মেকোং, জিউলং, মিন এবং পেয়ার্ল নামক বহু শাখা নদী। লোকমুখে শোনা যায় প্রায় সাড়ে চার কোটি বছর পূর্বে ভূমির মধ্যকার এক বিশাল ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং এই বৃহৎ সাগরের উৎপত্তি হয়। চীন সাগর মূলত ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের প্রধান সংযোগ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং পূর্ব এশিয়ার জাহাজ চলাচলের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এর চারপাশে কয়েক শতাধিক দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর, বালুকা প্রাচীর যা জোয়ারের সময় পানির নিচে নিমজ্জিত অবস্থায় থাকে। বলে রাখা ভালো, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবাল দক্ষিণ চীন সাগরেই পাওয়া যায়। তাছাড়া বিশ্বের সামুদ্রিক মাছের ১০ শতাংশের জোগান দেয় দক্ষিণ চীন সাগর যা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আশেপাশের লক্ষাধিক জনগণ। বলাই চলে, এই সাগর ব্যবসা বাণিজ্যের এক বিশাল সম্ভার যার মধ্য দিয়ে বছরে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য যাওয়া-আসা করে।
বিরোধের শুরুঃ
বিশ্বের মোট জাহাজের এক-তৃতীয়াংশ চলাচল করা দক্ষিণ চীন সাগরের চারপাশে তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনাম দ্বারা পরিবেষ্টিত যার আয়তন প্রায় ৩৫ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। আইনে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে, আন্তর্জাতিক জলসীমানায় থাকা এই সাগরটির দাবী কারোও একার অধিকারে হতে পারে না কিন্তু তেল, খনিজ সম্পদ, গ্যাসসহ বিভিন্ন মূল্যবান উপাদান সম্বলিত সাগরটিতে প্রায় শতাব্দী ধরে চীন সরকার একলাই ২৯১ টি প্রবাল দ্বীপ নিজেদের বলে দাবী করেছে। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রবাল প্রাচীরের উপর অসংখ্য কৃত্রিম দ্বীপ গড়ে তুলে তাতে সামরিক স্থাপনা গঠন করেছে চীন সরকার। আয়তনে ছোট অন্যান্য দেশগুলো দখলদারীত্বের ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিলো না। এরইপ্রেক্ষিতে ফিলিপিন মামলা টুকে দেয় আন্তর্জাতিক আদালতে। “এককভাবে কর্তৃত্ব ফলানোর কোনও অধিকার চীনের নাই” বলে আদালতে রায় দিলেও চীন সরকার এই আদেশ মানতে নারাজি প্রকাশ করলেই বিরোধের সূত্রপাত হয়।
সময়কাল ১৯৭৪ সাল। সমুদ্রের অংশ নিয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনাম নেভী বাহিনী এবং চায়না বাহিনীর মধ্যে প্রথম যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ফলাফল, ৫০ জন ভিয়েতনামী সেনা নিহত হয় যুদ্ধে।
পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয়বারের মত দুই পক্ষ মুখোমুখি হয় তবে বিধিবাম, এই যুদ্ধেও প্রায় ৭০ জন ভিয়েতনামী সৈন্য নিহত হয়। এতেই শেষ নয় বরং পরবর্তী সময়ে চীনা সৈন্য বিভিন্ন সময়ে ভিয়েতনামী মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালিয়েছে।
ফিলিপাইনের সাথে কৌশলগত সামরিক সম্পর্কের কারণে মার্কিন রণতরী বেশ সক্রিয় ছিলো দক্ষিণ চীন সাগরে। পরবর্তীতে চীন সরকার তাঁর ২০০ নটিক্যাল মাইল সীমানার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর তার মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন দক্ষিণ চীন সাগরে নির্মিত কৃত্রিম দ্বীপগুলোতে চীনের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। এতেই চটে যায় চীন সরকার এবং এমন কিছু হলে তা “ভয়ংকর সংঘাতে” রুপ নিবে বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয়। এরইমধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের চতুর্দিকে সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এইচ-৬ কে মডেলের বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে চীন সরকার যা দিয়ে উডি দ্বীপ হতে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেকোনো স্থানে হামলা চালানো সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বর্তমানে ভারতও চীনের এমন আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ব্যর্থ কূটনীতিঃ
২০০২ সালে চীনের বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহবানে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সংঘের (ASEAN) দশ সদস্যের একটি দলের সাথে চীন সরকার একটি ঘোষণা চুক্তি করতে সম্মত হয়। দাবী আদায়ে কোন ধরণের জোরজবরদস্তি বা হুমকি প্রদান না করার ক্ষেত্রে দুই পক্ষই সম্মতি জ্ঞাপন করে। তবে চীন সরকার প্রথম হতেই এই ঘোষণা চুক্তিকে কোনধরণে আইনত রুপ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এশিয়ান সংঘাতের দিকে না গিয়ে ঐক্য গঠনের দিকেই মনোনিবেশ করার পক্ষপাতী ছিলো কিন্তু চীনের বিরুদ্ধে ফিলিপাইন শক্ত অবস্থান গ্রহণের জন্য এশিয়ানকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অপরদিকে চীনের বন্ধুদেশ এবং এশিয়ানের সদস্য দেশ লাউস এবং কম্বোডিয়া এই ধরণের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। এভাবেই অভ্যন্তরীণ বিতর্কের জের ধরে উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
বৈধ আইনী ব্যবস্থাঃ
সময়কাল ২০১৩ সাল। চীনের আগ্রাসী কর্মকান্ড বন্ধের নিমিত্তে প্রথম এবং একমাত্র দেশ হিসেবে ফিলিপাইন নেদারল্যান্ডের পিসিএ’তে (পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আরবিট্রেশন) মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ভিয়েতনাম একই দায়েরকৃত মামলায় মতপ্রকাশ করে চীনের বিরুদ্ধে। তবে পরবর্তীতে চীন সরকার জানায় উক্ত মামলায় আদালতের হস্তক্ষেপের কোন এখতিয়ার নেই এবং তাদের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসু হবে না।
জ্যামাইকায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন সংস্থা UNCLOS এ ফিলিপাইন পুনরায় মামলা দায়ের করে। ২০১৬ সালে ফিলিপাইন মামলা জিতে যায়। আদালত এই মর্মে জানিয়ে দেয়, চীন সরকারের কোন বৈধ ভিত্তি নেই এককভাবে দক্ষিণ সাগর কর্তৃত্ব দাবী করার এবং তা ফিলিপাইনের সার্বভৌম অধিকার চরমমাত্রায় ক্ষুণ্ণ করেছে। তবে এখানেও চীন উক্ত শুনানীতে অংশ না নিয়ে উক্ত শুণানীকে দুর্ণীতিগ্রস্থ বলে আখ্যায়িত করে।
বিশেষজ্ঞের মতে দক্ষিণ চীন সাগরে বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানী মজুদ আছে তবে কতটুকু পরিমাণ আছে তা নির্ভর করে কোন দেশের পর্যবেক্ষকের তথ্য গ্রহণ কওরা হবে তাঁর উপর।
প্রায় ১১ বিলিয়ন ব্যারেল তেল এবং ১৯০ ট্রিলিয়ন কিউবিক প্রাকৃতিক গ্যাস গর্ভে ধারণ করা সমুদ্রটিতে পৃথিবীর ১০ শতাংশ মাছের বসবাস। যুক্তরাষ্ট্রের বাধার সম্মুখীন হয়েও চীন সরকার এখনোও অবধি তাদের সিদ্ধান্ত হতে এক পা পিছপা হয় নিই বরং তারা ব্যস্ত নতুন সব স্থাপনা নির্মানের দিকে। ইতিমধ্যে সমুদ্র সীমান্তে চীন দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশের মাছ ধরার ট্রলারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে সামরিক মহড়া চালু করেছে।
এ যাবতকালের মামলার শুনানিতে চীন সরকার হয়তো অনুপস্থিত ছিলো নয়তো ক্ষমতার দাম্ভিকতায় এড়িয়ে গিয়েছে। তবে এভাবে দাবি নিয়ে পাল্টা ঘাতপ্রতিঘাতে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দেশগুলোই নয় বরং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও হুমকির মুখে পতিত করবে। যুক্তরাষ্ট বর্তমানে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে চীনের কার্যকলাপের উপর, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার হস্তক্ষেপও কামনা করেছে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও অর্থনৈতিক উত্থানকে প্রতিহত করার জন্য যা অশনি সংকেত বহন করে। তাছাড়া বর্তমানের অস্থিরতা সাগরপথে নির্বিঘ্নে জাহাজ চলাচলের বিষয়টিকেও ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির আধুনিকীকরণ দক্ষিণ চীন সাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে হলেও চীনের নেতারা দাবিকৃত অঞ্চলের দখল নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাদের এমন কর্মকান্ড মার্কিন বাহিনীকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে যার ফলে ভবিষ্যতে মার্কিন বাহিনী কোনরূপ বাধার সম্মুখীন হলেই সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে। আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সম্পর্কে সৃষ্টি হচ্ছে ফাটল। গ্লোবাল টাইমস বার্তায় কমিউনিস্ট পার্টি আশংকা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই এমন কিছু করে বসে তবে তা বড় ধরণের যুদ্ধের জন্ম দিবে। সবকিছু মিলিয়ে যে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পুর্বাভাসের ইঙ্গিত বহন করছে?
- https://www.bbc.com/bengali/news-38609614
- https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A3_%E0%A6%9A%E0%A7%80%E0%A6%A8_%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%B0
- http://www.softschools.com/facts/seas/south_china_sea_facts/3334/
- https://www.encyclopedia.com/places/oceans-continents-and-polar-regions/oceans-and-continents/south-china-sea
http://canadaph24.pro/# is canadian pharmacy legit
https://mexicoph24.life/# mexico drug stores pharmacies
http://canadaph24.pro/# cheap canadian pharmacy online
Online medicine home delivery: indian pharmacy fast delivery – reputable indian online pharmacy
http://canadaph24.pro/# canadian drugstore online
https://mexicoph24.life/# mexico pharmacy
http://mexicoph24.life/# best mexican online pharmacies
mexican drugstore online: Online Pharmacies in Mexico – mexican pharmaceuticals online
http://canadaph24.pro/# canadian 24 hour pharmacy
http://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
https://indiaph24.store/# indian pharmacy online
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy online store
http://canadaph24.pro/# vipps canadian pharmacy
http://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
purple pharmacy mexico price list: mexican pharmacy – mexican rx online
semaglutide 14mg drug – glucovance without prescription purchase DDAVP online
https://mexicoph24.life/# mexican border pharmacies shipping to usa
http://indiaph24.store/# india pharmacy
http://mexicoph24.life/# mexico pharmacies prescription drugs
top 10 online pharmacy in india: indian pharmacy – п»їlegitimate online pharmacies india
medication from mexico pharmacy buying prescription drugs in mexico online mexico pharmacies prescription drugs
https://canadaph24.pro/# is canadian pharmacy legit
https://mexicoph24.life/# mexico pharmacies prescription drugs
https://indiaph24.store/# india pharmacy mail order
http://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
http://indiaph24.store/# cheapest online pharmacy india
http://mexicoph24.life/# mexican mail order pharmacies
https://mexicoph24.life/# mexican border pharmacies shipping to usa
cost prandin – buy empagliflozin online buy generic jardiance 25mg