টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দলীয় ইনিংস এবং সেসব ম্যাচ সম্পর্কিত জানা-অজানা কিছু তথ্য

3

ক্রিকেট শব্দটা শুনলেই মাথায় আসে মারমার কাটকাট বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি, ক্লাসিক বা এগ্রেসিভ যত শট। ছোট ফরমেটের ক্রিকেটে যেন চার ছয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যাটসম্যানরা। বিনোদনে ছোট ফরমেট এগিয়ে থাকলেও আভিজাত্যের দিক থেকে এখনো এগিয়ে টেস্ট ক্রিকেট। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া কে কোন দলের জন্য এখনো পূর্ণাঙ্গ সম্মাননা হিসেবে দেখা হয়। ধৈর্য আর একাগ্রতা কে টেস্ট ক্রিকেটের মূল মন্ত্র বলা হয়। এই ধৈর্য আর একাগ্রতাকে কাজে লাগিয়ে কোন দল এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করতে সক্ষম হয়েছে সেই তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে আর সাথে থাকছে সেসব ম্যাচ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।

৫। পাকিস্তান ৭৬৫/৬ ডিক্লে – প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ২০০৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি করাচীতে শুরু হওয়া সিরিজের ১ম টেস্টে নিজেদের ১ম ইনিংসে ৬ উইকেট খরচায় ৭৬৫ রান তুলতে পাকিস্তান খেলেছিল ২৪৮.৫ বল। এই ম্যাচে ইউনুস খানের খেলা ৫৬৮ বলে ৩১৩ খেলা ইনিংসটি পাকিস্তানের হয়ে খেলা ৩য় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

৩১৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হওয়ার পর ইউনুস খান

প্রসঙ্গত, এই সিরিজের ২য় টেস্টের ৩য় দিনে, ৩ মার্চ, ২০০৯, লাহোরের গাদ্দাফি স্ট্যাডিয়ামের পাশে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের বহন করা গাড়ীতে বন্দুক হামলা করা হয়।

৪। ওয়েস্ট-ইন্ডিজ ৭৯০/২ ডিক্লে – প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ১৯৫৮ সালে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের ৪৫০তম ম্যাচে নিজেদের ১ম ইনিংসে ২০৮.১ বল খেলে ৭৯০ রানের বিশাল ইনিংস গড়ে ওয়েস্টিন্ডিজ। ৭৯০ রানের মধ্যে স্যার গ্যারি সোবার্স একাই করেন অপরাজিত ৩৬৫ রান। এটি ছিল তখনকার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের রেকর্ড যা ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ থাকে।

স্যার গ্যারি সোবার্স- নট আউট ৩৬৫

১৯৯৩ সালে স্বদেশী ব্রায়ান লারা ৩৭৫ রানের ইনিংসের মাধ্যমে সোবার্সের রেকর্ডটি ভেঙ্গে দেন। ৬ দিনের টেস্ট ম্যাচ টি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ও ১৭৪ রানে জিতে নেয়।

৩। ইংল্যান্ড ৮৪৯/১০ – প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট-ইন্ডিজ। ১৯৩০ সালের ৩ এপ্রিল শুরু হওয়া সিরিজের ৪র্থ ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিং নেয় ইংল্যান্ড। সেই ১ম ইনিংসে ২৫৮.২ ওভার ব্যাট করে এই বিশাল রানের পাহাড় গড়েন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ৬৪০ বলে ৩২৫ রানের বিশাল এক ইনিংস খেলেন এন্ডি স্যান্ডহাম।

 

৪র্থ ম্যাচের ১ম ইনিংসের স্কোর-কার্ড

প্রসঙ্গত, এই ম্যাচটি ছিল টাইম-লেস ম্যাচ। এপ্রিলের ৩ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই ম্যাচের খেলা চলে। যদিও সূত্রমতে শেষ দুইদিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ এপ্রিল খেলা মাঠে গড়ায় নি। শেষ ইনিংসে ওয়েস্ট-ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৮৩৬ রানের ম্যাচের ৭ম দিনে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ ১৬৪.৩ বলে ৫ উইকেটে ৪০৮ রান করে। পরে এই ম্যাচ সমঝোতার মাধ্যমে ড্র ঘোষণা করা হয়।

 

২। ইংল্যান্ড ৯০৩/৭ ডিক্লেঃ – প্রতিপক্ষঃ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া। ১৯৩৮ সালের ২০ এ আগস্ট, ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগে শেষ এসেজ সিরিজের ৫ম এবং শেষ টেস্টে খেলতে নেমে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ইংল্যান্ড। ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত কে সঠিক প্রমাণ করে নিজেদের ১ম ইনিংসে ৩৩৫.২ ওভার ব্যাট করে ৯০৩ রান করে ইংল্যান্ড।

টসে ডন ব্র্যাডমেন এবং ওয়ালি হ্যামন্ড সাথে গ্রাউন্ডস-ম্যান বসার মার্টিন, ১৯৩৮

এল. হাটসন নামের ভদ্রলোক একাই করেন ৩৬৪ রান। এই রান করতে উনি খরচ করেছিলেন মাত্র ৮৪৭ বল। এটাই এখন পর্যন্ত এক ইনিংসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ব্যাটিং করার রেকর্ড। উনার ধৈর্য্যের তারিফ করতেই হয়। এই ম্যাচটি ইংল্যান্ড ইনিংস ও ৫৭৯ রানে জিতে নেয় এবং এটাই টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।

স্কোরকার্ডের সাথে গ্রাউন্ডস-ম্যান বসার মার্টিন

১। শ্রীলঙ্কা ৯৫২/৬ ডিক্লেঃ – প্রতিপক্ষঃ ভারত। ১৯৯৭ সালের ২ আগস্ট টেস্ট ইতিহাসের ১৩৭৪ তম ম্যাচে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ভারত-শ্রীলঙ্কা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ভারত। ভারত তাদের ১ম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৩৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে।

ভারত-শ্রীলঙ্কা, কলম্বো টেস্ট ১৯৯৭

জবাবে শ্রীলঙ্কা তাদের ১ম ইনিংসে খেলতে নেমে টেস্টের ৫ম দিনে ৬ উইকেটে ৯৫২ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার করলে কোন দলই তাদের ২য় ইনিংস না খেলেই ‘ড্র’ ঘোষণা করা হয়। এই ম্যাচে সানাথ জয়সুরিয়া প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবে ত্রিপল-সেঞ্চুরি করেন। তার খেলা ৫৭৮ বলে ৩৪০ রানের ইনিংস টি ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান স্কোরের রেকর্ড।

 

তথ্যসূত্রঃ ক্রিকিনফো।
ছবিঃ সংগৃহীত।

Leave A Reply
sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More