ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এর সম্পৃক্ততার ব্যবচ্ছেদ

1

একজন আগন্তুক ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখে সামনে এগিয়ে চলছে উদ্দেশ্য ভারতীয় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা। চার দিকে ঘুট-ঘুটে অন্ধকার, অল্প দূরত্বের কিছু জায়গা পর পর বসানো আছে সীমান্ত-রক্ষীদের চৌকি। তাছাড়া ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে সীমান্তরক্ষীদের কড়া নজর চারদিকে। সুতরাং ধরা পরলে আর রক্ষা নাই, নির্ঘাত মৃত্যু! তাই মরণকে হাতের মুঠোয় নিয়ে চলতে হচ্ছে সামনের দিকে। তার পিছনেও তীক্ষ্ণ নজর আছে কয়েক জনের কিন্তু তা তার অজানা। ঘন অরণ্য আর প্রতিকূল দুর্গম স্থান অবলম্বন করে প্রায় কাঁটা-তার অতিক্রম করে ফেলবার উপক্রম, ঠিক তখনি বিএসএফ চার দিক থেকে পাকরাও করে তাকে। এখন পালাবার চেষ্টা করা মানে নির্ঘাত মৃত্যু। তাই বাধ্য হয়ে ধরা পরতে হয় সীমান্ত রক্ষীর হাতে। এতক্ষণে আপনারা হয়ত অনেকেই ধরে নিয়েছেন আমি কোন সীমান্ত ব্যবসায়ীর সীমান্ত অতিক্রম করার কথা বর্ণনা করছি। আসলে কিন্তু তা নয় আমি যা বর্ণনা করলাম তা হল একটি গোয়েন্দা বাহিনীর প্রশিক্ষণ মহড়া। অন্য সামরিক মহড়াতে সকল সেট আগে থেকে সাজানো থাকলেও এখানে কিন্তু তা নয়, মহড়া রিয়েল সেটে। অর্থাৎ আগন্তুক ব্যতীত অন্য কেউ তা জানতে পারে না। বলছিলাম ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র”এর কথা।

আজকের পর্বে থাকছে গোয়েন্দা সংস্থা “র”এর গোপন ও দুর্ধর্ষ সব অপারেশন এবং তাদের সকল জানা অজানা তথ্যসমূহ।

“র” এর পরিচয় ও গঠন

পৃথিবীর যে সকল বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে “র” তাদের মধ্যে অন্যতম। “র” (RAW: Research and Analysis Wing) হল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। যা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ইতিহাসকে বিশ্ব গোয়েন্দাদের ইতিহাসে স্থান লাভ করার মর্যাদা এনে দিয়েছে।

“র” এর প্রতীক
“র” এর প্রতীক, source: Council on Foreign Relations

ভারতীয়দের আধুনিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের ইতিহাস শুরু হয় ব্রিটিশদের হাত ধরে। ১৯৩৩ সালে প্রথম ভারতের ইতিহাসে আধুনিক গোয়েন্দা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হবার পর থেকে তা অনেকটা ক্লান্ত মান্ধাতার আমলে হয়ে যায়। তার প্রমাণ হিসেবে বলা যায় ১৯৬২ সালে চীনের সাথে যুদ্ধ ও ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ। উভয় যুদ্ধের কোনটিতেই আইবি তাদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারে নি , বরং বার বার ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে ভারতীয় গোয়েন্দা-বৃত্তিকে আরও চৌকশ করার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আর.এন কাও কে প্রধান করে গঠন করা হয় “র”।এটি গঠন করার সময় মডেল হিসেবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাকে গ্রহণ করা হয়।

গঠনের সময় থেকেই এই সংস্থা কে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয় এবং তাদের সকল  কাজ-কর্মের জন্য শুধু প্রধানমন্ত্রীর নিকট দায়বদ্ধ থাকার বিধান প্রণয়ন করা হয়। ১৯৬৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকেই ভারতে সামরিক ও পররাষ্ট্র খাতে বেশ কিছু পরিবর্তন সাধন করেন এবং এর অংশ হিসেবে গোয়েন্দা বাহিনী তে হাত দেন। ফলে তারই পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৬৮ সালে গঠিত হয় “র”। পরবর্তী সময়ে এ সংস্থাটি তাদের দুর্দান্ত সব কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব-ইতিহাসে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র এর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। সংস্থা তাদের প্রয়োজনে নিজের দেশ বা দেশের বাইরের যে কাওকে নিয়োগ দিতে পারে। তারা ভারতীয় সেনা বাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ,  আই এ এস ক্যাডার, আইবি, সিবিয়াই অথবা মেধার বিচারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্রদেরও নিয়োগ করা হয়। এর বাহিরে অন্য দেশের এজেন্ট তৈরির জন্য ঐ দেশের নাগরিক,  ঐ দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অন্যদেশের গোয়েন্দাদেরও তথ্য সরবারের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। আর একে ডাবল এজেন্ট হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ এই সংস্থায় নিয়োগের ক্ষেত্র কোন গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করেই তাদের নিজেদের প্রয়োজনে যাকে খুশি তাকে দিয়ে তারা কাজ করাতে সক্ষম। এজন্য যদি ঘুষের মত অনৈতিক পথও গ্রহণ করতে হয় তা তারা নির্দ্বিধায় করে যায়।

“র” এর প্রতিষ্ঠাতা আর.এন কাও
“র” এর প্রতিষ্ঠাতা আর.এন কাও , source: Name-list.net

“র” তাদের নিয়োগ-কৃত কর্মকর্তাদের অত্যন্ত কঠিন ও বুদ্ধি-ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজের উপযোগী করে গড়ে তোলে। এজন্য প্রথমে দশ দিনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয় এখানে উৎসাহ মূলক ও মনোবল বাড়ানোর উপযোগী স্পিচ দিয়ে তাদের উদ্যমী করা হয় এবং গোয়েন্দা-বৃত্তির সকল নিয়ম-কানুন, বাস্তব গোয়েন্দাদের অভিজ্ঞতা, নানা প্রকার প্রযুক্তি, নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ও বিভিন্ন দেশের ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান দিয়ে তাদের প্রাথমিক ভিত্তি গড়ে তোলা হয়। তাছাড়াও এসময় তাদেরকে সিআইএ, মোসাদ, কেজেবি ও এমআই৬ এর মত বড় গোয়েন্দাদের নিয়ে কেস স্টাডি করানো হয় এবং মানি লন্ডারিংয়ের মত অপরাধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

প্রাথমিক প্রশিক্ষণ সমাপ্তির পর এজেন্টরা ফিল্ড ইনট্যালিজেন্স ব্যুরো (সংক্ষেপে: এফআইবি)-এর অধীনে প্রশিক্ষিত হতে থাকে। এখানে সময়কাল ১/২ বছর হয়ে থাকে। এ সময় এজেন্টদের প্রতিকূল পরিবেশে কি করতে হবে এবং কাজ করার সময় কিভাবে ধরা না পরা যায়,  আর ধরা পরলেই কি করতে হবে এসকল বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রধান করা হয়।

রাতের আধারে কিভাবে অনুপ্রবেশ করা যায় এবং কিভাবে সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দেয়া যায় এ বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সহিত বাস্তব সম্মত উপায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এজন্য তাদের কে কখনো কখনো ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় মহড়া হিসেবে সীমান্ত-রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে হয়। যেখানে সীমান্ত রক্ষীরা আগে থেকে এর কিছুই জানতে পারে না। তবে এই শিক্ষানবিশের পেছনে একদল পর্যবেক্ষক সর্বদা নজর রাখে তবে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তারা সাধারণত সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে না। এমনও কাহিনী আছে যে তাদের সদস্য প্রশিক্ষণকালে সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে জেলে চলে গেছে কিন্তু তাদের কেউ তাকে ছাড়াতে আসেনি এবং বেশ কয়েকদিন জেলে কাটানোর পর তাকে মুক্ত করা হয়েছে।

‘’র’’ এর নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে
‘’র’’ এর নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, source: https://www.indiatimes.com

এই সময়ে তাদের আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান দান করা হয়। এই ফিল্ড প্রশিক্ষণের পর তাদের কে নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দেরাদুনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে গুপ্তচরবৃত্তির নানা ধরনের প্রযুক্তি ডিভাইস ব্যাবহার,  নিয়মানুবর্তিতা, অস্র চালনা প্রভৃতি প্রশিক্ষণ দান করা হয়। সকলের সন্দেহের নজরকে কিভাবে পাশ কাটিয়ে লক্ষের দিকে এগিয়ে যেতে হয় সে সম্পর্কেও জ্ঞান দান করা হয়। তারপর পরই শুরু হয় তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

সকল গোয়েন্দা সংস্থাই কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। “র”এর ব্যতিক্রম নয়। তারা যে সকল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে সে গুলো যদিও সরাসরি সামনে আসে না তবে বিভিন্ন উৎস থেকে বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা যায়।

প্রথমত ভারতের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র সমূহের রাজনৈতিক ও সামরিক ঘটনাবলীর উপর নজর রাখা ও ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

দ্বিতীয়ত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র রাশিয়া ও চীনের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখা।

তৃতীয়ত পাকিস্তানের সকল প্রকার আমদানিকৃত ও নিজেদের তৈরি অস্ত্রের উপর নজর রাখা এবং তথ্য সরবরাহ করা, কারণ পাকিস্তানের সকল সামরিক তৎপরতা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

সর্বশেষ উদ্দেশ্য হল প্রবাসী ভারতীয়দের উপর নজর রাখা কারণ ভারতে বিভিন্ন গোত্রের লোকজন বসবাস করে তারা কখনো কখনো বিদেশী চক্রান্তে ভারতের অনিষ্ঠ সাধন করতে পারে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র এর অপারেশন সমূহ

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাদের দুর্দান্ত সব অপারেশনের মাধ্যমে কোন কোন ক্ষেত্রে ইতিহাসে তাদের নামকে বিশ্বের প্রথম সারির গোয়েন্দা তালিকায় নিয়ে গেছে। সংস্থাটি তার জন্মের পর থেকেই যে সব অপারেশনের মাধ্যমে সফলতা লাভ করেছে সে গুলো ছিল অত্যন্ত আলোচিত ও গা শিউরে উঠার মত।

প্রতিষ্ঠা হবার পর প্রথম যে অপারেশন পরিচালনা করে তা হল হিমালয় ELINT। এটি ছিল মূলত “সিআইএ” ও “র”এর যৌথ অভিযান। এই অভিযানের মাধ্যমে চীন যে পারমাণবিক পরীক্ষা করে তার মিসাইল ও বিস্ফোরণের স্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।

“র” এর সদর দপ্তর নয়া দিল্লি,
source: ListAmaze

এর পর “র” সবচাইতে যে বড় অপারেশনের কৃতিত্ব দাবি করে তা হল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, যা তাদের সংস্থায় ‘অপারেশন বাংলাদেশ’ হিসেবে পরিচিত। তারা বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার নীতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি সহায়তা দান করে। সর্বশেষ যে কাজটি করে পাকিস্তান কে অনেকটা কোণঠাসা করে ফেলে তা হল  ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমান কৌশলে পাকিস্তান নিয়ে যায়। এর ফলে ভারত এই কারণটি দেখিয়ে ভারতের উপর দিয়ে পাকিস্তানের সকল ধরনের বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যে কারণে পাকিস্তান নতুন করে বাংলাদেশের উপর তাদের সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করতে বেগ পেতে হয়। এবং ভারতীয়-মুক্তিবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাকিস্তান সহজে পরাজয় বরন করে।

অপারেশন বাংলাদেশের পর যে কাজটি করে সেটি হল, ভারত পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে যাত্রা করলেও তাদের এই কাজ ছিল অত্যন্ত গোপন আর এই গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব ছিল “র”। যা তারা খুব ভালভাবে করতে সক্ষম হয়েছে। কেননা তাদের সতর্ক নজর ও রক্ষণশীল নীতির জন্য তাদের প্রকল্প এলাকায় অন্য কোন গোয়েন্দা প্রবেশ করতে পারে নি এবং তার ফলস্বরূপ ১৯৭৪ সালে পরীক্ষা চালানোর আগ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি। তাদের এই অপারেশনের নাম ছিল ‘অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধা’।

‘অপারেশন সিকিম’ তাদের আরেকটি সফলতম অপারেশন। ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান সৃষ্টি হবার পরও সিকিম প্রায় একটি আলাদা স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলের মর্যাদা নিয়ে বীর-দর্পে টিকে ছিল। এবং সেখানে স্থানীয় গোত্রদের দ্বারা শাসনকার্য পরিচালিত হত। সিকিম কে অত্যন্ত নাজুক স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হত। কারণ ভারত কে ভাগ করার জন্য সিকিম ছিল অন্যতম একটি সঠিক জায়গা। চীনের সজাগ দৃষ্টিও ছিল এদিকে। কিন্তু “র” কৌশলে ১৯৭৫ সালে সেখানকার স্বায়ত্ত শাসনকে উড়িয়ে দিয়ে ভারতের একটি স্থায়ী প্রদেশ হিসেবে সিকিম কে একীভূত করে নেয়।

‘কাহুটা ব্লু প্রিন্ট’ ফাঁস ছিল ভারত-পাকিস্তানের গোয়েন্দা ইতিহাসে অন্যতম একটি সফলতম অপারেশন। ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাওলপিণ্ডিতে কাহুটা এলাকার খান রিসার্চ ল্যাবরেটরি হতে পাকিস্তানের পারমাণবিক নথি ফাঁস করে “র” যা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার উপর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিপত্য প্রকাশ করে। এবং ল্যাবরেটরির নিকট একটি স্যালুন হতে গবেষকদের চুল নিয়ে তা হতে রেডিয়েশন পরীক্ষা করে পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্প ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে কিনত পরবর্তীতে ভারতীয় নেতাদের অনুরোধে তা হতে বিরত হয়।

তাছাড়াও তাদের যে অপারেশনগুলো আলোচনার দাবি রাখে সেগুলা হল-‘অপারেশন মেঘদূত’ যা ১৯৮২ সালে পরিচালিত হয়। যার মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে ট্যাক্কা দিয়ে সিয়াচল অঞ্চল দখল করে নেয়। তারপর আছে ‘অপারেশন ক্যাকটাস’ এটি ১৯৮৮ সালে তামিল টাইগারদের কে মালদ্বীপ হতে বিতাড়িত করে। তাছাড়াও ‘অপারেশন চাণক্য’, ‘অপারেশন মেহেরান’ ও পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বিদ্রোহীদের অস্র প্রদান ছিল “র” এর ইতিহাসে বড় অপারেশন যা তাদেরকে প্রবল খ্যাতি এনে দেয়।

বর্তমান বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র এর প্রভাব

বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এই সংস্থাটির সাথে বাংলাদেশের যোগসাজশ রয়েছে। আর এই দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভারত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে তাই বর্তমানেও বাংলাদেশ “র” এর নিয়ন্ত্রণমুক্ত নয়। ধারনা করা হয় বাংলাদেশে “র” এর মোট ৩০/৪০ হাজার এজেন্ট রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেখা যায় যে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এনজিও, সরকারী প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে “র” এর এজেন্ট রয়েছে। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ‘ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টারের’ মাধ্যমেও এজেন্ট সংগ্রহ করা হয়। তাই অনেকেই বলে থাকেন যে “র” বাংলাদেশের রাজনীতি ও শাসন কে অনেকটা প্রভাবিত করে থাকে। তবে এই বিষয়টির যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্রমাণ ও স্বীকৃতি নেই তাই এই বিষয়ে অনেকেই খোলাখুলি ভাবে বলতে চায় না এবং বলাটা অনেকটা রূপকথা হিসেবে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।

প্রাচীনকাল থেকেই গোয়েন্দা-বৃত্তিকে রাষ্ট্রের একটি শক্তি হিসেবে কল্পনা করা হয়ে থাকে। আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে এসেও এর গুরুত্ব হ্রাস পায়নি। বরং আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতেও গোয়েন্দাদের গুরুত্ব বজায় থাকবে। তবে তাদের কাজের ধরনের মধ্যে হয়ত পরিবর্তন আসবে। তবে গোয়েন্দাদের রাজনৈতিক হত্যা ও বিভিন্ন দেশে সরকার পতনের মত অনৈতিক কাজের মধ্যে পরিবর্তন আসার আশা আমরা করতেই পারি।

 

তথ্যসূত্র:

১. ইনসাইড “র”-অশোকা রায়না

২. http://www.somewhereinblog.net/blog/shovan13/29739101

৩. http://www.somewhereinblog.net/blog/wellcomejuwel/29959845

৪. http://archive.shampratikdeshkal.com/data-storage/2016/04/25/22833

Source Featured Image
Leave A Reply
1 Comment
  1. Fnvvdy says

    buy lamisil 250mg – buy grifulvin v online cost griseofulvin

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More