১৪৯ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার (৫৭.৫ মিলিয়ন বর্গমাইল) বেশ বিশাল পরিমাণের জায়গা এবং পুরো পৃথিবীর মোট ভূমির পরিমাণ । তবে বিশাল এই পরিমাণের ভাগীদার গ্রহে বসবাসকারী ৭,১২৫,০০০,০০০ জন মানুষ এবং হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে গড়ে ৪৮ জন করে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ঠিক তার উল্টো। পৃথিবীর কিছু অংশে প্রচুর মানুষের বসবাস আর কিছু অংশ ধু ধু মরুভূমি। নিউইয়র্ক এ প্রতি বর্গকিলোমিটার এ বাস করে ১০,৭২৫ জন মানুষ, সিঙ্গাপুর এ বাস করে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৭,৩০০ এর কিছু বেশি এবং হংকং এ এই সংখ্যা ৬,৪০০- যার ফলে এই স্থানগুলোকে নিরবিচ্ছিন্ন সাবওয়ে যাত্রার মত বিরক্তিকর মনে হতে পারে। তবে পৃথিবীতে ওয়েস্টার্ন সাহারা এর মতও কিছু স্থান রয়েছে যেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রশান্তিদায়ক পর্যায়ে (যদি একাকীত্বের প্রতি ভালবাসা থাকে) – প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২.২ জন মানুষ। তাহলে এমন কোন কোন জায়গা আছে পৃথিবীতে যেখানে সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে চলে গেলেও কোন আক্ষেপ থাকবেনা? ঝটপট গুছিয়ে নিন বাইনোকুলার কারণ এখন আমরা যে ১০ টি জায়গার ব্যাপারে জানবো, সেই জায়গাগুলোতে সবথেকে নিকটতম মানুষ খুঁজতে হলেও বাইনোকুলার এর দরকার পরতে পারে!
১০. অস্ট্রেলিয়া(Australia)- প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩ জন মানুষ
ভ্রমণ পিপাসুদের ভ্রমণের তালিকায় উপরের দিকে যে সকল স্থানের নাম খুঁজে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আরেকটি দিক দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সেরা ১০ এর তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায় তা হল কম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে। ৭.৬৯ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই দ্বীপে মাত্র ২৩,৭৬৬,৫০০ জন মানুষের বসবাস; অর্থাৎ প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩.০৯ জন মানুষ বাস করে। তবে, এই পরিসংখ্যানটি অন্যান্য অধিবাসীদের পরিসংখ্যানের মতই বিভ্রান্তিকর। বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ান বাস করে উপকূল ঘেঁষা শহরে যার ফলে অংকিত বৃত্তের মত সুবিশাল এলাকা জুড়ে লোকালয় সৃষ্টি হয়েছে- অস্ট্রেলিয়ান আউট ব্যাক- যার বেশিরভাগ অংশ মরুভূমি এবং যার কদর ভ্রমণের স্থান হিসেবেই বেশি। এই মরু অঞ্চল অস্ট্রেলিয়াকে পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক, সমতল এবং চাষবাসের অনুপযুক্ত মহাদেশ যদিও দেশের অপর প্রান্তে ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল বিদ্যমান।
৯. ফ্রেঞ্চ গিয়ানা (French Guiana) – প্রতি বর্গকিলোমিটার এ ২.৮ জন মানুষ
ফ্রেঞ্চ গিয়ানা, যার পশ্চিমে অবস্থিত সুরিনাম, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এবং প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ২.৮ জন নিয়ে আমাদের তালিকায় ৯ নম্বরে রয়েছে। যদিও ফ্রেঞ্চ গিয়ানা মূলত ফ্রান্স এবং ইউরপিয়ান ইউনিয়ন এর অংশ, এই এলাকা ফ্রান্স অধ্যুষিত জনবহুল এলাকা থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন এবং স্বাধীন। এর অর্ধেক জনসংখ্যা বাস করে কায়েন (Cayenne) শহরে, যে শহর আটলান্টিক উপকূলের উত্তরে অবস্থিত। জনবিরল এই এলাকার বেশিরভাগ অংশে রয়েছে ক্রান্তীয় এবং প্রাচীন বন, ম্যানগ্রোভ বন, নিষ্পাদপ প্রান্তর এবং জলাভূমি। এর ফলে ফ্রেঞ্চ গিয়ানা জীব-বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ এবং সৌভাগ্যক্রমে, এলাকাটি যেন প্রকৃতি দিয়েই সুরক্ষিত।
৮. নামিবিয়া (Namibia) – প্রতি বর্গ কিলোমিটার এ ২.৬ জন মানুষ
ফ্রেঞ্চ গিয়ানা থেকে জনসংখ্যার তফাৎ খুবই সামান্য হলেও নামিবিয়ার জনমানব বিহীন এলাকার সাথে দক্ষিণ আমেরিকার নামিব মরুভূমির পার্থক্য হল অনুর্বর, শুষ্ক মাটি যুক্ত এলাকা যা দেশের বেশিরভাগ অংশ দখল করে আছে। দক্ষিণ পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশ আটলান্টিকের উপরে অবস্থিত এবং প্রায় কাছাকাছি জনসংখ্যা যুক্ত দেশ বোতসওয়ানা এর পূর্ব সীমানায় অবস্থিত। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশটিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২.৬ জন। দেশের বেশিরভাগ অংশ মরুভূমি এবং ভৌগলিক ভাবে শুষ্ক হওয়া সত্বেও মোটামুটি উন্নত একটি দেশ নামিবিয়া।
৭. ওয়েস্টার্ন সাহারা (Western sahara) – প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২.২ জন মানুষ
মাগ্রেবের বিতর্কিত এক এলাকা ওয়েস্টার্ন সাহারা। পৃথিবীর কম জনসংখ্যার যে কয়টি এলাকা আছে তাদের মধ্যে এই এলাকা অন্যতম আর এর পেছনে যে কারণ কাজ করছে তা হল এর ভূখণ্ডের বেশিরভাগই রুক্ষ মরুভূমি। ২৬৬,০০০ বর্গকিলোমিটারের বালির বিশাল এই রাজ্যের জনসংখ্যা প্রায় অর্ধ মিলিয়নের কাছাকাছি। জনসংখ্যার সাথে এর জায়গার পরিমাণ হিসাব করলে দেখা যায় যে, প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ২.২ জন মানুষ বাস করে ওয়েস্টার্ন সাহারার এই সোনালি সাম্রাজ্যে।
৬. মঙ্গোলিয়া (Mongolia) – প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১.৯ জন মানুষ
চেংগিস খানের দেশ অথবা উৎকৃষ্ট ঘোড়ার দেশ ছাড়াও মঙ্গোলিয়া আরেকটি কারণে পরিচিত তা হল কম জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর অন্যতম দেশ: বিশাল ভূখণ্ডের প্রতি কিলোমিটারে বাস করে মাত্র ১.৯২ জন মানুষ। ভূমিগুলোতে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হবার পিছনে কারণ হল মঙ্গোলিয়ার চারপাশে রাশিয়া এবং চীন এর সীমান্ত। তবে জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে র্যাঙ্ক পরিবর্তন হতে পারে এই জাতির। সাইবেরিয়া থেকে বায়ুপ্রবাহের ফলে মঙ্গোলিয়ায় শীতকালে প্রচুর ঠাণ্ডা পরে এবং গড় তাপমাত্রা -১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ নামে। এ কারণে পৃথিবীর শীতলতম রাজধানীর খেতাব মঙ্গোলিয়ার দখলে।
৫. ট্রিস্টান দা কুন্হা (Tirtan da Cunha) – প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১.৩ জন মানুষ
দক্ষিণ আটলান্টিকে অবস্থিত অনেকগুলো আগ্নেয়-দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে ট্রিস্টান দা কুনহা কে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম দ্বীপপুঞ্জ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জে বসবাস করে মাত্র ২৬২ জন মানুষ, যাদের বেশিরভাগই বাস করে মূল দ্বীপে। দ্বীপটি যদিও মাত্র ২০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, ট্রিস্টান দা কুনহা তারপরও পৃথিবীর কম জনসংখ্যার দ্বীপগুলোর মধ্যে অন্যতম।
৪. পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জ (Pitcairn Island) – প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১.২ জন মানুষ
পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম এবং কম জনসংখ্যা যুক্ত এলাকার তালিকায় পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জ অন্যতম। প্রশান্ত সাগরের দক্ষিণে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ৪ টি আগ্নেয়-দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে একটি হল পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জ যার মোট জনসংখ্যা ৫৬ এবং প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে মাত্র ১.১৯ জন মানুষ। মূলত, এই ৫৬ জন মানুষ সেই সব পরিবারের উত্তরাধিকারী যারা পূর্বে ঔপনিবেশিক পরিবার ছিল। তীক্ষ্ণ প্রবালে আচ্ছাদিত চুনাপাথরের সুউচ্চ ক্লিফের কারণে পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ অংশে যাওয়া যায় না। যার ফলে সেই অংশগুলোতে কোন লোকালয় গড়ে উঠতে পারেনি। তবে পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জ মানুষের বসবাসের জন্যে মোটামুটি উর্বর এবং অনুকূল একটি জায়গা। কম জনসংখ্যার পেছনে আরেকটি কারণ হল পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জে এখনও পর্যন্ত বিমান অবতরণের কোন ল্যান্ডিং স্ট্রিপ নেই , যদিও সমুদ্র পথে জাহাজ এবং জাহাজ ভিড়ানোর জন্যে ইয়ট রয়েছে।
৩. ফকল্যান্ড আইল্যান্ড (Falkland Ilyand) – ০.২১ জন মানুষ প্রতি বর্গ কিলোমিটারে
প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ০.২১ জন মানুষ নিয়ে আমাদের তালিকায় ৩য় স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের আরেকটি জায়গা যার নাম ফকল্যান্ড আইল্যান্ড। ফকল্যান্ড আইল্যান্ড মূলত ৭৭৮ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দ্বীপপুঞ্জ এবং এর জনসংখ্যা ২৯৩২। ফকল্যান্ড এর প্রধান দুই দ্বীপ, পশ্চিম এবং পূর্ব ফকল্যান্ডে মানুষের পদচারণা নেই যার ফলে সেই দুই জায়গায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের পাখিদের অভয়ারণ্য। দ্বীপ গুলো অনেকটা পাহাড়ি দ্বীপের মত এবং দ্বীপটিতে বয় শীতল বাতাস। যদিও কম জনসংখ্যা হওয়ার কারণে জি ডি পি এর উৎপাদন অনেক কম, তারপরও, জন প্রতি জি ডি পি বেশ উচ্চ এবং এর ফলে তাদের জীবন যাত্রার মান ভাল।
২. স্ভালবার্ড এবং জান মায়েন (Svalbard and Jan mayen) – প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ০.০৪ জন মানুষ
স্ভালবার্ড এবং জান মায়েন হল নরওয়ে এর উত্তরে অবস্থিত দুইটি দ্বীপ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এবং দুর্গম দ্বীপ দুটি রয়েছে তালিকায় ২য় স্থানে। ৬০০০০ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপে জনসংখ্যা মাত্র ২৬৬৭ জন। জান মায়েন তুলনায় ছোট এবং এর আয়তন ৩৭৭ বর্গ কিলোমিটার। তবে জান মায়েন এ কোন মানুষ বাস করেনা।
১. গ্রীনল্যান্ড (Green Liturature- প্রতি কিলোমিটারে ০.০৩ জন মানুষ
প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ০.০৩ জন মানুষ নিয়ে আমাদের আজকের তালিকায় ১ম স্থানে আছে গ্রিনল্যান্ড। দেশটি ডেনমার্কের অংশ এবং প্রায় ৪৫০০ বছর ধরে এই এলাকায় মানুষ বসতি স্থাপন করে আসছে। গ্রীনল্যান্ড এর বেশিরভাগ অংশ বরফে ঢাকা থাকে এবং জনসংখ্যার বেশির ভাগ বাস করে পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে । গ্রিনল্যান্ড এর সকল বরফ যদি গলে যায়, তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে প্রায় ৭ মিটার। মোট জনসংখ্যা ৫৬০০০ জন নিয়ে ১ম স্থানে থাকা গ্রীনল্যান্ড হতে পারে সেই জায়গা যে জায়গায় লোকালয় ছেড়ে চলে আসার স্বপ্ন হতে পারে সত্যি।
order lamisil 250mg for sale – order grifulvin v without prescription how to buy griseofulvin