ফুটবল হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা।এখন শুরু হয়েছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সম্মানের আসর বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮। আর এখানে বাছাই পর্বের এক বিশাল পরীক্ষায় পাশ করেই আসতে হয়েছে প্রতিটি দলকে। এখানে এসেছে সেরা ৩২টি দল আবার এখান থেকে বাছাই করা হবে বিশ্ব সেরা কে!। আর তার হাতেই তুলে দেওয়া হবে বিশ্বসেরার পুরষ্কার বিশ্বকাপ। পৃথিবীর সবাই ব্যস্ত নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে নিজের অবস্থানকে এগিয়ে নিতে। ঠিক তেমনি প্রতিটি ফুটবল মাঠও তার বিভিন্ন সমীকরণে দাঁড়িয়ে থাকে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান নিয়ে। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ধারন ক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের বড় বড় ১০টি ফুটবল মাঠের নাম এবং তাদের কিছু সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
০১. রানগ্রেডো মে ডে স্টেডিয়াম
অবস্থান: উত্তর কোরিয়া
ধারণ ক্ষমতা: ১১৪০০০
এই স্টেডিয়ামটির নাম করন করা হয় রানগ্রেডো দ্বীপের নাম অনুসারে। যা উত্তর কোরিয়ার টেই-ডং নদীর মাঝে অবস্থিত। রানগ্রেডো মে ডে স্টেডিয়ামটি উন্মুক্ত করা হয় ১ই মে ১৯৮৯ সালে। আর এই স্টেডিয়ামটি তার ধরন ক্ষমতার কারণে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের ১ নম্বর অবস্থান। এই সংখ্যা ১১৪০০০( একলক্ষ চৌদ্দ হাজার)। স্টেডিয়ামটি মোট ৫১ একর জায়গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক অনন্য বিস্ময়কর স্থাপনা হিসেবে।
০২. ক্যাম্প নু
অবস্থান: বার্সেলোনা, স্পেন
ধারণ ক্ষমতা: ৯৯৩৫৪
ক্যাম্প নু স্টেডিয়ামটি ১৯৫৪ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় এবং ১৯৫৭ সালে উন্মুক্ত করা হয়।উদ্বোধনের সময় এর ধারণ ক্ষমতা ছিল ১০৬,১৪৬ । এরপর বহুবার সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এই স্টেডিয়ামটিকে আর তাই এর ধারণ ক্ষমতাও পরিবর্তন হয় বারবার ।তবে ক্যাম্প নু স্টেডিয়ামটিতে ১৯৮২ সালের সংস্কারের আগে সর্বচ্চ দর্শক গণনা করা হয়েছিলো ১২১৭৫৯। কিন্তু বর্তমানে কমে ৯৯৩৫৪ (নিরানব্বই হাজার তিনশত চুয়ান্ন) তে দাঁড়িয়েছে।শুধু দর্শক ধারণের দিক থেকে নয় বহু ইতিহাস এবং সৌন্দর্যের দিক দিয়েও পৃথিবীর অনন্য।
০৩. এফ,এন,বি স্টেডিয়াম
ধারণ ক্ষমতা: ৯৪৭৩৬
অবস্থান: সাউথ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘ফাস্ট ন্যাশনাল ব্যাংক’ স্টেডিয়ামটি ১৯৮৯ সালে উদ্বোধন করা হয়। এর পর এই দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামটি লিখতে থাকে নতুন নতুন ইতিহাস। এফ এন বি স্টেডিয়ামটি ২০১০ সালে বিশ্ব ফুটবলের সব চেয়ে বড় আসর ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করেছিলো। সেই ফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হয়েছিলো নেদারল্যান্ডস। এছাড়াও আফ্রিকান ফুটবলের সব চেয়ে সম্মানের আসর ‘আফ্রিকান কাপ অব নেশন’ এর দুইটি ফাইনাল ম্যাচ সহ কয়েকটি কোয়ার্টার ফাইনাল আরো বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আয়োজন করেছিলো এই স্টেডিয়ামটি। ১৯৯০ সালে আফ্রিকার গন-মানুষের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা প্রিজন থেকে বের হয়ে প্রথম ভাষণটি প্রদান করেন। পরিশেষে জানাতে চাই এই স্টেডিয়ামটির আরও একটি ডাকনাম রয়েছে আর সেটা হল ‘The calabash’’।
০৪. রোজ বোল স্টেডিয়াম
অবস্থান: ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
ধারণ ক্ষমতা: ৯০৮৮৮
এই স্টেডিয়ামটি ১৯২২ সালে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকে নানা ইতিহাসের সঙ্গী হতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের এই মাঠটি । এই মাঠে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল সহ মোট ৮ টি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিলো আর এই ফাইনাল ম্যাচে ব্রাজিলের মুখোমুখি হয় ইতালি খেলার নির্ধারিত সময়ে কোন দলই গোল না করতে পারায় খেলা শেষ হয় পেনাল্টিতে। আর ৩-২ গোলে জয়ী হয় ব্রাজিল। রোজ বোল মাঠটিতে সর্বচ্চ দর্শক গণনা করা হয় ১০৬৮৬৯জন ১৯৭৩ সালে।
০৫. উইম্বিলি স্টেডিয়াম
অবস্থান: লন্ডন, ইংল্যান্ড
ধারণ ক্ষমতা: ৯০০০০(নব্বই হাজার)
লন্ডনের এই স্টেডিয়ামটি দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বোধন করা হয়েছিলো আজ থেকে ১১ বছর আগে ২০০৭ সালে। ১০৫ বাই ৬৮ মিটারের মাঝ মাঠ সহ পুরো স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে খরচ করতে হয়েছে ৭৮৯ মিলিয়ন ইউরো। উইম্বিলি স্টেডিয়ামটি দর্শক ধারণ ক্ষমতার সাথে রয়েছে তার নজরকারা সৌন্দর্য। রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। ফুটবল, রাগবি সহ বক্সিং এর মতো জনপ্রিয় খেলাও আয়োজন করা হয়ে থাকে এই মাঠে।
০৬. বুকিত জলিল ন্যাশনাল স্টেডিয়াম
অবস্থান: কুয়ালামপুর, মালয়েশিয়া
ধারণ ক্ষমতা: ৮৭৪১১
মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় এই বুকিত জলিল স্টেডিয়ামটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে। এরপর ১৯৯৮ সালে এর সংস্কার করা আর এতেকরে ঠাই হয় বিশ্বের বড় বড় স্টেডিয়ামের সংক্ষিপ্ত তালিকার ২১তম স্থানে এবং ফুটবল স্টেডিয়ামের তালিকায় ৯ম স্থানে।এই স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৮৭৪১১ জন। আর এই বুকিত জলিল ন্যাশনাল স্টেডিয়ামটি ১৯৯৮ সালের কমনওয়েলথ গেম সহ সাউথ এশিয়ান গেম এবং অসংখ্য কালচারাল প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়েছে এই মাঠে।
০৭. স্তাদিও এ্যাজতেকা
অবস্থান: মেক্সিকো সিটি , মেক্সিকো
ধারণ ক্ষমতা: ৮৭৫২৩ জন
এস্তাদিও আজতেকা নাম করন করা হয়ে থাকে মেক্সিকোর দর্শনীয় স্থান আক্তেচ এর নাম অনুসারে। এই স্টেডিয়ামটির সর্বচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৫০০০ হলেও বর্তমান তথ্য অনুযায়ী এর ধারণ ক্ষমতা ৮৭৫২৩ জন।এই স্টেডিয়ামটিতে ২ টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যা পৃথিবীর আর কোন স্টেডিয়ামে হয়নি। আর এই স্টেডিয়ামেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দিয়াগো ম্যারাদোনা বিখ্যাত গোল দুটি করেছিলেন যার প্রথমটি ‘হ্যান্ড অফ গড’ নামে পরিচিত এবং দ্বিতীয়টি শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত হয়।এছাড়াও শতাব্দীর সেরা খেলা হিসেবে বিবেচিত ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ইতালি বনাম জার্মানির মধ্যকার খেলাটিও এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঠটি আর বহু ইতিহাসে সাথে জড়িয়ে আছে এই বিখ্যাত মাঠটি।
০৮. বর্গ এল আরব স্টেডিয়াম
অবস্থান: আলেক্সান্দ্রিয়া, মিশর
ধারণ ক্ষমতা: ৮৬০০০
মিশরের এই স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করে ২০০৭ সালে। এর বিপুল দর্শক ধারণ ক্ষমতার অধিকারে জায়গা করে নিয়েছে বড় বড় ফুটবল স্টেডিয়ামের ছোট্ট তালিকায় ৮ম অবস্থান। এই স্টেডিয়ামটি মিশরের সব চেয়ে বড় স্টেডিয়াম এবং সমগ্র আফ্রিকার দ্বিতীয় বড় স্টেডিয়াম। এর সর্বচ্চ দর্শক গণনা করা হয় মিশর এবং কঙ্গোর মধ্যকার ম্যাচটিতে। যে ম্যাচে মিশর ২-১ গোলে জিতে রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলার টিকেট অর্জন করেছিলো।
০৯. সল্ট-লেক স্টেডিয়াম
অবস্থান: কোলকাতা, ভারত
ধারণ ক্ষমতা: ৮৫০০০ জন
২০১১ সালের সংস্কারের পূর্বে এই স্টেডিয়ামটির ধারণ ক্ষমতা ১২০০০০ হাজার জন ছিল। বর্তমানে ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী এই মাঠের ধারণ ক্ষমতা ৮৫০০০ হাজার। এটাই দর্শক ধারণ ক্ষমতার দিক দিয়ে সমগ্র ভারতের সবচেয়ে বড় ফুটবল মাঠ। আর এই মাঠটির সর্বচ্চ রেকর্ড পরিমাণ দর্শক উপস্থিত হয় ১৯৯৭ সালে মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের মধ্যকার খেলাটিতে। সংখ্যাটি প্রায় ১,৩১,৭৮১জন।
১০. স্তাদে দি ফ্রান্স
অবস্থান: সেইন্ট ডেনিশ, ফ্রান্স
ধারণ ক্ষমতা: ৮১৩৩৮
স্তাদে দি ফ্রান্স স্টেডিয়ামটি পুরো ইউরোপের সব চেয়ে বড় বড় স্টেডিয়াম গুলোর মাঝে ৬তম। এই স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করে ২৮ জানুয়ারি ১৯৯৮ সালে। এর ধারণ ক্ষমতা ৮১৩৩৮ জন। স্টেডিয়ামটি আয়োজন করেছে বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এর মাঝে অন্যতম হল ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ সহ মোট নয়টি ম্যাচ। ফাইনাল খেলাটিতে ফ্রান্স মুখোমুখি হয়েছিলো ব্রাজিলের সাথে। যেখানে ৩-০ ব্যবধানে জিতে অর্জন করে বিশ্ব ফুটবলের সর্বচ্চ শিরোপা বিশ্বকাপ! এছাড়া ২০০৩ সালে ফিফা কনফেডারেশন কাপ সহ আরও শত শত ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে এই মাঠটিতে।
order rybelsus pills – order rybelsus sale buy cheap generic DDAVP