আপনার হয়তো কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার আইলিন ওয়ারনোসের নামটির সাথে পরিচিত ২০০৩ সালের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সিনেমা “মনস্টার” এর মাধ্যমে অথবা “আমেরিকান হরর স্টোরিঃ হোটেল” এর বর্তমান সিজন টি দেখে। কিন্তু যাই হোক, এই খুনি সম্পর্কে এমন আরও অসংখ্য দিক আছে যা এই সিনেমা বা সিরিজে দেখানো হয়নি। যদিও মনস্টার সিনেমায় শার্লিজ থেরন আইলিনের চরিত্রে তার অত্যন্ত নিখুঁত এবং শক্তিশালী অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে একাডেমী এ্যাওয়ার্ড জিতেছেন, তবুও আইলিনের বিষাদময় আর ঝামেলাপূর্ণ জীবনের অনেক অংশই রয়ে গেছে পর্দার অন্তরালে। আইলিনের জীবনের সম্পূর্ণ গল্পের শুরু এবং শেষ দুটোই খুব কষ্টের এবং অনেক ঘটনাই সিনেমার পর্দায় তুলে ধরা হয়নি। বাস্তব জীবনে তার অনেক ঘটনা রয়েছে যেগুলো একই সাথে অবাক করে দেয়ার মত এবং হৃদয়বিদারকও।
সত্যি কথা বলতে কেউ যদি আইলিনের জীবনের পুরো ঘটনা শুরু থেকে জানতে শুরু করে তবে খুব সহজেই বুঝতে পারবে কেন সে জীবনে এই রাস্তা বেছে নিয়েছিল। আসলে আইলিনের জন্মটাই তার জন্য ছিল একটা বিরাট শাস্তি। ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেয়া আইলিনের শৈশব কেটেছে দুঃস্বপ্নের মত, তার কাছে শৈশব ছিল অস্থিতিশীল, যৌন নির্যাতন বা গৃহহীন এর সমার্থক শব্দ। যদিও এটা তার করা অপরাধ গুলোকে মাফ করে দেয়ার মত কোন যুক্তি না, তবুও অন্তত এইটুকু বুঝা যায় কেন পরবর্তী জীবনে আইলিন পতিতাবৃত্তি এবং অপরাধের পথে পা বাড়ায়। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সাল, এই এক বছরের মধ্যে সে ৭ জন পুরুষ কে হত্যা করে এবং তার শাস্তিস্বরুপ ২০০২ সালে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এবং এরই মাধ্যমে তার নাম পরিচিতি পায় বিশ্বের অন্যতম কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার হিসেবে।
এমন একটি ভয়ানক জীবন কাহিনী যার, তাকে নিয়ে কম বেশি অনেক সিনেমা বা তথ্যচিত্র বা সিরিজ বানানো হবে সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু পর্দায় তুলে ধরা কাহিনীর বাইরেও যে অজানা বিষয় গুলো রয়েছে আইলিনের জীবনের সেগুলোর দিকে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো এই লেখায়।
আইলিনের যখন জন্ম হয় তখন তার বাবা মা ও টিনেজার ছিল। তার মা ডিয়ান ওয়ারনোসের বয়স যখন সবে ১৫ বা ১৬ বছর তখন জন্ম হয় তার। তার বাবা লিও ডেল পিটম্যানের বয়স ও তখন খুব বেশি ছিলনা, তার মায়ের চেয়ে হয়তো ২ বা ১ বছরের বড় ছিল। আইলিনের বাবা মার বিয়ের ২ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই এবং তার জন্মের ২ মাস আগেই তালাক হয়ে যায় তার বাবা মার মাঝে। সে কখনও তার বাবাকে দেখেনি, তার জন্মের সময় তার বাবা জেলে বন্দি ছিল বলে জানা যায়, লিও একজন স্কিজফ্রেনিয়ার রুগী ছিল এবং শিশুকামি ছিল। অবশেষে ১৯৬৯ সালে লিও ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছিল। আইলিনের একটি বড় ভাই ও ছিল, যার নাম কিথ। আইলিনের বয়স যখন মাত্র ৪ বছর তখন তাকে আর তার ভাই কে তাদের নানা নানীর কাছে রেখে চলে যায় তাদের মা।
মাত্র ১১ বছর বয়সে যৌন কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে আইলিন, স্কুলে সিগারেট, মাদক এবং খাদ্যের বিনিময়ে যৌন কাজে জড়িয়ে পড়ে। আইলিনের অভিযোগ ছিল যে সে তার মাতাল নানার দ্বারা যৌন নির্যাতন ও মারধরের শিকার হয়েছিল শিশুবয়সে। এছাড়াও ১৯৭০ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে সে তার নানার এক বন্ধু দ্বারাও ধর্ষিত হয়েছিল এবং যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় যাকে পরবর্তীতে দত্তক দিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার ছেলের জন্মের কিছুদিন পরই সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ঐ সময়েই তার নানীও মারা যান। মাত্র ১৫ বছর বয়সী আইলিন কে ঘর থেকে বের করে দেয় তার নানা, তখন থেকেই গৃহহীন সেই কিশোরী পতিতাবৃত্তি শুরু করে এবং তার বাড়ির কাছেই একটি জঙ্গলে বাস করা আরম্ভ করে।
সিরিয়াল কিলার হয়ে উঠার অনেক আগে থেকেই অপরাধ জগতের পথে চলা শুরু করেছিল আইলিন। ১৯৭৪ সালে ১৮ বছর বয়সে তাকে গ্রেফতার করা হয় কলোরাডোর জেফারসন কাউন্টি থেকে তার আপত্তিকর আচরণের জন্য এবং চলন্ত যানবাহন থেকে ২২ ক্যালিবারের পিস্তল থেকে গুলি ছোঁড়ার অপরাধে। ২০ মে ১৯৮১ সালে ফ্লোরিডার এজওয়াটার থেকে গ্রেফতার করা হয় একটি মুদি দোকানে সশস্ত্র ডাকাতির অপরাধে যেখান থেকে সে চুরি করেছিল ৩৫ ডলার ও ২ টি সিগারেটের প্যাকেট। ৪ঠা মে, ১৯৮২ সালে তাকে জেলে দেয়া হয় এবং ৩০ জুন ১৯৮৩ সালে সে মুক্তি পায়। ১লা মে, ১৯৮৪ সালে “কি ওয়েস্ট” ব্যাংকে জাল চেক দিয়ে টাকা তুলার চেষ্টা করার অপরাধে আবারও গ্রেফতার করা হয়। ১৯৮৫ সালে পাস্কো কাউন্টি থেকে একটি রিভলভার ও গুলি ডাকাতির কেইসে তাকে সন্দেহভাজন ধরা হয়। ৪ঠা জানুয়ারি, ১৯৮৬ সালে তাকে মায়ামি থেকে গ্রেফতার করা হয় গাড়ি চুরি এবং গ্রেফতারে বাধা প্রদান করার অপরাধে। মায়ামি পুলিশ তার চুরি করা গাড়িতে একটি ৩৮-ক্যালিবারের রিভলভার ও কিছু গুলি খুঁজে পায়।
এই সময়ের আশেপাশেই কোন এক সময় “ডেইটোনা বিচ গে বার” এ আইলিনের দেখা হয় টাইরিয়া মোর নামে এক হোটেল কর্মীর সাথে যে কিনা পরবর্তীতে তার প্রেমিকা তে পরিণত হয়। আইলিন ও মোর একসাথে বসবাস করা শুরু করে, আইলিন পতিতাবৃত্তি করেই দুইজনের খরচ যোগাত। ১৯৮৭ সালে ডেইটোনা বিচ পুলিশ তাকে ও মোর কে জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি হামলা সম্পর্কে যেখানে অভিযোগ ছিল যে তারা দুইজন বিয়ারের বোতল দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। এরপর ১২ই মে, ১৯৮৮ সালে আইলিন ডেইটোনা বিচের এক বাস ড্রাইভারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে ঐ ড্রাইভার নাকি তাকে ঝগড়ার সূত্র ধরে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করেছিল এবং এই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে দাবি করে মোর কে। মৃত্যুদণ্ডের আগ পর্যন্ত আইলিন মোর কে ভালবেসে যাওয়ার কথা দাবি করতে থাকে।
আইলিন যে ৭ জন পুরুষকে হত্যা করেছিল তারা ছিলেন পর্যায়ক্রমে রিচার্ড ম্যালোরি,বয়স ৫১ বছর এবং পেশায় একজন ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্রের দোকানের মালিক; ডেভিড স্পিয়ার, বয়স ৪৩ বছর; পেশায় একজন নির্মাণ কর্মী, চার্লস কারকাড্ডন; বয়স ৪০ বছর এবং পেশায় খন্ডকালিন রেডিও কর্মী; পিটার সিমস, বয়স ৬৫ বছর, অবসরপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী; ট্রয় বুরেজ, বয়স ৫০ বছর, পেশায় সসেজ বিক্রেতা; চার্লস হ্যাম্পফ্রে, বয়স ৫৬ বছর, অবসরপ্রাপ্ত আমেরিকান বিমান বাহিনীর মেজর; ওয়ালাটার জেনো, বয়স ৬২ বছর, পেশায় সিকিউরিটি গার্ড। আইলিন যাদের কে হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে সবার প্রথম জন তাকে ধর্ষণ করেছিল বলে তাকে আত্মরক্ষার জন্য ম্যালরি কে হত্যা করতে হয়েছিল বলে সে দাবি করে। ম্যালরি কে হত্যা করার সময় অনেক গুলো গুলি করা হয় যার মধ্যে ২ টি গুলি তার বাম ফুসফুস ভেদ করে বেরিয়ে যায় এবং মৃত্যু হয়।
সিমস কে হত্যা করার পর তার গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আইলিন ও মোর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, সেখানে তারা গাড়ি রেখেই পালিয়ে যায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী তাদের কে সিমসের গাড়ি চালাতে দেখে পুলিশ কে খবর দেয় তাদের নাম ও বর্ণনা সহ এবং তা পরে মিডিয়া তেও প্রচার করা হয়। পুলিশ বিভিন্ন বন্দুকের দোকানে সিমসের কিছু জিনিসপত্র খুঁজে পায় এবং তাতে যে আঙ্গুলের ছাপ ছিল তার সাথে তার গাড়িতে পাওয়া আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে দেখে একি। আর যেহেতু ফ্লোরিডা পুলিশ ডিপার্টমেন্টে আইলিনের আঙ্গুলের ছাপ অপরাধী হিসেবে আগেই জমা ছিল তাই সিমসের খুনি হিসেবে তাকে ধরা টা বেশি কঠিন হয়নি তাদের জন্য।
১৯৯১ সালে ৯ই জানুয়ারি, ভলুসিয়া কাউন্টির “দ্য লাস্ট রিসোর্ট” থেকে আইলিন কে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং তারপর দিন পেনসিলভানিয়ার স্ক্রান্টোন থেকে মোর কে গ্রেফতার করে পুলিশ। মোর পুলিশের কাছে নিজের মুক্তির আবেদন করে বিনিময়ে সে আইলিনের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নিয়ে দিবে বলে জানায়। পুলিশ মোর কে ফ্লোরিডায় এনে একটি মোটেলে রাখে যেখান থেকে সে আইলিনের কাছে অসংখ্যবার ফোন কল করে সব অপরাধ স্বীকার করে মোর কে মুক্ত হতে সাহায্য করার জন্য। অবশেষে ১৬ জানুয়ারি, ১৯৯১ সালে আইলিন সব স্বীকার করে নেয়। সে দাবি করে সে যাদের কে হত্যা করেছে তারা সবাই তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল তাই সে আত্ম-রক্ষার্থে তাদের কে হত্যা করেছে। এরপর একে একে তার সব হত্যার কথা সে স্বীকার করতে থাকে এবং ৬ বার তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়, ৭ নম্বর খুন টির জন্য তার কোন শাস্তি হয়নি কারণ সিমসের লাশ কখনও খুঁজেই পাওয়া যায়নি।
আইলিন তার হত্যা কাণ্ড গুলো সম্পর্কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম তথ্য দিয়েছে। শুরুর দিকে সে বলেছিল যাদের কে সে হত্যা করেছে তারা তাকে ধর্ষণ করেছে যখন সে একজন পতিতা ছিল, পরবর্তীতে সে বলে যে সে শুধু মাত্র আত্মরক্ষার জন্য তাদের হত্যা করেছে এবং এটাকে খুন মনে না হয়ে যেন ডাকাতি মনে হয় সেজন্য সে তাদের কাছ থেকে জিনিসপত্র চুরি করেছে। নিক ব্রুমফিল্ড, যিনি পরবর্তীতে আইলিনের জীবনের উপর চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন তার কাছে একটি সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় সে ক্যামেরা বন্ধ ভেবে বলে যে সে হত্যা গুলো আত্মরক্ষার জন্যই করেছিল কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সে বিরক্ত, সে মৃত্যু চায়। বিভিন্ন পরীক্ষা ও গবেষণা করে দেখা যায় যে আইলিন একজন সাইকোপ্যাথ।
২০০১ সালে একটি পিটিশনে সে আবেদন জানায় তার পক্ষে সরকারি উকিল বাতিল করতে এবং সকল প্রকার আপিল বাতিল করতে। সেই পিটিশনে সে লিখেছিল “ আমিই ঐ লোক গুলোকে হত্যা করেছি, একদম ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছি এবং আবারও তাই করবো। আমাকে বাঁচিয়ে রেখে কোন লাভ নেই, কারণ আমি আবারও মানুষ হত্যা করব। আমার পুরোটা জুড়ে মানব জাতির জন্য শুধু ঘৃণা রয়েছে, আর কিছু না। “মেয়েটি পাগল” এই কথা শুনতে শুনতে আমি বিরক্ত। আমাকে অনেকবার পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে, আমি সুস্থ মস্তিষ্কে, সজ্ঞানে কথা গুলো বলছি এবং সত্যি বলছি। আমি এমন একজন মানুষ যে সত্যিই মানুষ ঘৃণা করি এবং ছাড়া পেলে আবারও মানুষ হত্যা করবো”।
২০০২ সালে আইলিন অভিযোগ করেন যে তার জেল মেট্রন তার খাবারে আবর্জনা, থুতু ও প্রস্রাব মেশায়, এবং সে তাদের কে বলতে শুনেছে যে তারা তাকে এতো বেশি অত্যাচার করবে যেন সে নিজেই আত্মহত্যা করে, আর যদি না করে তবে মৃত্যুদণ্ডের আগে তাকে তারা ধর্ষণ করবে। সে আরও অভিযোগ করে যে তার সকল জামা কাপড় খুলে তাকে সার্চ করা হতো, হাতে টাইট হ্যান্ডকাফ পরানো হতো, বিনা কারণে বার বার দরজায় লাথি দিয়ে শব্দ করতো ইত্যাদি।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ব্রুম ফিল্ড কে দেয়া তার সকল সাক্ষাৎকারে সে জেলে তার উপর হওয়া অত্যাচার গুলোর কথা বলতে থাকে।
তার উকিল তার এইসব কথা কে তার মানসিক সমস্যার ফল হিসেবে দেখিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে চাইলেও ফ্লোরিডার গভর্নর জেব বুশ তার মৃত্যুদণ্ডের উপর থাকা সাময়িক স্থগিতাদেশ তুলে দেন এবং তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।
২০০২ সালের ৯ই অক্টোবর আইলিনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় লিথাল ইনজেকশনের মাধ্যমে। মৃত্যুর আগে শেষ খাবার সে খায়নি, নিয়ম অনুযায়ী ২০ ডলারের নিচে দামি যেকোনো খাবার সেদিন সে খেতে পারত। কিন্তু আইলিন মৃত্যুর আগে শুধু এক কাপ কফি খেয়েছিল। তার অনুরোধ ছিল তার শেষ কৃত্যানুষ্ঠানে যেন নাটালি মারচেন্ট এর “কার্নিভাল” গান টি বাজানো হয়।
আইলিনের অন্ধকার জীবনে একটি আলোকিত দিক হল একবার সে বিয়ে করেছিল। ১৯৭৬ সালে ফ্লোরিডার ৬৯ বছর বয়সী লিউইস গ্রাটজ ফেলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। লিউইস একজন ধনি ইয়ট ক্লাব প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এমন কি তাদের বিয়ের খবর স্থানীয় পত্রিকার সোসাইটি পাতায় ও ছাপা হয়েছিল। কিন্তু এখানেও আইলিন লোকজনের সাথে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে এবং জেলেও যায়, এমন কি লিউইস কেও সে মারে তার এ কেইন দিয়ে। যার ফলে দুইজনের তালাক হয়ে যায় বিয়ের মাত্র ৯ সপ্তাহ পরই। আইলিনের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে ‘মন্সটার’ সিনেমা টি তৈরি করা হয়। ব্রুম ফিল্ড তার উপর ২ টি তথ্যচিত্র বানান। তার মধ্যে একটি ১৯৯৩ সালে প্রচারিত হয় যার নাম ছিল “ Aileen Wuornos: the selling of a serial killer” এবং ২০০৩ সালে প্রচারিত হয় “Aileen: life and death of a serial killer”। এ ছাড়া অন্যান্য মিডিয়াতেও তার জীবনের উপর ভিত্তি করে আরও অনেক অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছিল।
আইলিনের জীবন কাহিনী হার মানায় অনেক রোমহর্ষক গল্প উপন্যাস বা সিনেমার কাহিনীকেও। অপরাধী তো ছিলই কিন্তু তার এমন ভয়ানক অপরাধী হয়ে উঠার পিছনের গল্পটাও কিন্তু আমাদের মনে দাগ কাটে কেননা আর পাঁচ টা সাধারণ মানুষের মত জীবন পেলে হয়তো আইলিন হয়ে উঠতোনা কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার।
তথ্যসূত্রঃ
https://en.wikipedia.org/wiki/Aileen_Wuornos
https://www.biography.com/people/aileen-wuornos-11735792