বিশ্বকাপের প্রাইজ মানি, কার ভাগে কত!

0

বর্তমানে মানুষে মৌলিক চাহিদার একটি হচ্ছে বিনোদন। আর এই বিনোদনের হাজারো মাধ্যম রয়েছে এবং এই মাধ্যম গুলোর অন্যতম হচ্ছে খেলাধুলা। তাই ত পৃথিবীর সমস্ত খেলার মাঠগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভীর! আজকাল পুরো-বিশ্ব বুদ হয়ে আছে ফুটবলে। আর থাকবেই না কেন! এই কদিন আগেই ত পর্দা নামল ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মানের লড়াই বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮। প্রতিটি ফুটবল-প্রেমী থেকে শুরু করে ফুটবলার, কোচ, দেশ, জাতী সবারই একই জল্পনা-কল্পনা ছিল কে হচ্ছে সেরা ফুটবলার, কে পাচ্ছে সর্বোচ্চ গোল দাতার পুরস্কার!, কোন দেশ পাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সম্মান! এরকম শত শত সমীকরণ সামনে চলে এসেছে। আর এসব পুরস্কার নিয়ে রয়েছে মানুষের মাঝে নানা কৌতূহল।\

কারণ এসব পুরস্কারের মূল্যও যে কোটি কোটি টাকা। যেমন যিনি গোল্ডেন বল পাবেন তিনি আসলে কত টাকার সমমানের পুরস্কার পাবেন?  আবার যিনি গোল্ডেন বুট অর্জন করে তিনিই বা কত? আবার যে দেশ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে সেই দেশ কি কোন টাকা পাবে না? এছাড়া যেই দেশগুলো কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলল সেই দেশগুলোই বা কত পাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর বিশ্বকাপ শুরু হবার আগেই প্রকাশ করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। তবে চলুন জেনে নিই- কে পাচ্ছে কত টাকা!

বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮
বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮
Source: www.totalsportek.com

ফিফা-এর ঘোষণা করা প্রাইজ মানি

বিগত ৪টি বিশ্বকাপের ন্যায় এবারও ফিফা বিশ্বকাপের বরাদ্দ কৃত টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে। আর এই বরাদ্দকৃত টাকার মাঝে অন্তর্ভুক্ত প্রাইজ মানি, দেশ গুলোর বিশ্বকাপ খেলার খরচ, প্লেয়ারদের ইনস্যুরেন্স, ক্লাব প্রোটেকশন মানি। গত বিশ্বকাপ অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১৪ তে এই টাকার পরিমাণ ছিল ৫৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮ তে ফিফা এই টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ আর এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ৮৪০ কোটি টাকা প্রায়। এর মাঝে প্রাইজ মানি ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এবারের বিশ্বকাপ সহ গত পাঁচ বিশ্বকাপে ফিফার প্রাইজ মানি

ফিফা গত পাঁচ বিশ্বকাপের প্রাইজ মানির পরিমাণ ক্রমানুসারে বাড়িয়েই চলেছে। আমরা যদি লক্ষ করি ২০০২ সালের বিশ্বকাপে তাহলে দেখা যায় সেই বিশ্বকাপে ফিফার বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ১৫৪ মিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে ফিফা এই টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছিল ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ এই টাকার অংক বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৬২ মিলিয়ন ডলার। ২০১০ সালে ৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গত পাঁচ বিশ্বকাপে ফিফার প্রাইজ মানি
গত পাঁচ বিশ্বকাপে ফিফার প্রাইজ মানি
Source: totalsportek.com

এরপর ২০১৪ সালে ৩৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৮ বিশ্বকাপে বেড়েছে ৪০ শতাংশ, যা ৭৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ফিফা আগাম জানান দিয়েছে এই বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ আগামী ৪ বিশ্বকাপেও বাড়তে পারে। তাহলে চলুন জেনে আসি ফিফার এই বরাদ্দকৃত প্রাইজমানি কে কত পাবে।

বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলের জন্য যা থাকছে

বিশ্বকাপ ২০১৮-তে অংশগ্রহণকারী কোন দলকেই নিরাশ করবেনা ফিফা আর এটা জানিয়েছিলেন ২০১৭ সালের অক্টোবরে। এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল পাবে কমপক্ষে ৯.৫ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এর মাঝে ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা টুর্নামেন্টের খরচ বাবদ দলটিকে দেওয়া হবে। আর যদি কোন দল সেরা ১৬ তে জায়গা করে নিতে পারে তাহলে তাদের জন্য রয়েছে এরচেয়েও বড় সুখবর। এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া দল গুলোর মাঝে রয়েছে- সৌদি-আরব, মিশর, ইরান, মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া, পেরু, নাইজেরিয়া, আইসল্যান্ড, সার্বিয়া, কোস্টারিকা, সাউথ কোরিয়া, জার্মানি,  তিউনিসিয়া, পানামা, সেনেগাল, পোল্যান্ড। আর এই দল গুলো প্রত্যেকেই পাবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা।

সেরা ১৬ তে যা থাকছে

ফিফা জানিয়েছে এবারের বিশ্বকাপে সেরা ১৬ হয়ে যে দল গুলো বিশ্বকাপ শেষ করবে তারা পাবে আরও ৪ মিলিয়ন ডলার বেশী। মোট ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা। শেষ ১৬ তে শেষ করা ৮ টি দল হচ্ছে- আর্জেন্টিনা,  মেক্সিকো, স্পেন, জাপান, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, কলোম্বিয়া, পর্তুগাল। এই দল গুলো পাবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়া দল পাবে

কোয়ার্টার ফাইনাল অর্থাৎ সেরা ৮-এ খেলে বিদায় নেওয়া প্রতিটি দল পাবে সেরা ১৬-তে খেলা দল গুলোর চেয়ে আরও ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি। যা বাংলাদেশী টাকায় দাড়ায় প্রায় ১ শত চৌত্রিশ কোটি টাকা। আর বর্তমানে যে ৪টি দল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে এদের মাঝে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া,  উরুগুয়ে, সুইডেন।

চতুর্থস্থান অধিকারী ইংল্যান্ড
চতুর্থস্থান অধিকারী ইংল্যান্ড Source: www.fifa.com

সেমিফাইনাল খেকে বিদায় নেওয়া দল দুটি পাবে

তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান অধিকারী দল দুটির জন্য ফিফার বাজেট রয়েছে মোট ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই টাকার মাঝে ২৪ মিলিয়ন ডলার (২০১ কোটি টাকা) পাবে তৃতীয় স্থান অধিকারী বেলজিয়াম। এবং চতুর্থ স্থান অধিকারী ইংল্যান্ড পাবে ২২ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ১৮৫ কোটি টাকা প্রায়।

তৃতীয় স্থান অধিকারী বেলজিয়াম
তৃতীয় স্থান অধিকারী বেলজিয়াম
Source: www.fifa.com

ফাইনাল খেলা দল ক্রোয়েশিয়া এবং ফ্রান্সের জন্য ফিফার বাজেট

রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দুটি দলের জন্য যে বাজেট রয়েছে সেটা ফিফা প্রকাশ করেছে গত বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে। এই খেলায় ২টি দলের জন্য ফিফার বাজেট ৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ৬৬ মিলিয়ন ডলারের মাঝে বিজয়ী দল ফ্রান্স পাবে ৩৮ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশী টাকায় ৩২০ কোটি টাকা। এবং রানার-আপ দল ক্রোয়েশিয়া পাবে ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ২৩৫ কোটি টাকা।

রানার-আপ ক্রোয়েশিয়া
রানার-আপ ক্রোয়েশিয়া
source: www.fifa.com

ফিফার আয়ের উৎস

ফিফার আয়ের উৎস গুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হল

  • টিভি স্বত্ব বিক্রি,  মার্কেটিং স্বত্ব,
  • টিকেট বিক্রির টাকা,
  • লাইসেন্স এবং
  • হসপিটালটি স্বত্ব।

এসব খাত থেকে ফিফা প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। ফিফা গত বিশ্বকাপে তাদের আয়ের পরিমাণ প্রকাশ করেছিলো আর সেখানে আমরা দেখেতে পাই যে ২০১১২০১৪ অর্থবছরে প্রায় ৪৮২৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। আর এই আয়ের সিংহ ভাগ টাকা আসে এই সব খাত থেকে।

বিশ্ব বিজয়ী ফ্রান্স
বিশ্ব বিজয়ী ফ্রান্স source: www.fifa.com

ফিফার খরচের খাত

ফিফা যে সকল খাতে খচর করে থাকে তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য খাত গুলো হচ্ছে

  • লোকাল আয়োজক কমিটি,
  • টিভি প্রডাকশন,
  • প্রাইজ মানি, টিকেটিং,
  • লিগাসি ফান্ড,
  • ক্লাব বেনিফিট,
  • প্রিপারেশন খরচ,
  • মার্কেটিং ,
  • লিগ্যাল ফাইনান্সিয়াল,
  • ইনস্যুরেন্স,
  • প্রিলিমিনারি কম্পিটিশন,
  • ফিফা ফ্যান ফেস্ট,
  • রেফারী খরচ ইত্যাদি।  

Source Feature Image
Leave A Reply

Your email address will not be published.

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More