বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন ১০ টি বুলেট ট্রেন

4

বর্তমানে বাস-প্রাইভেট কার থেকেও স্থলপথে সহজে ও নিরাপদে যাতায়াতের জন্য ট্রেনের বিকল্প নেই। যদিও আমাদের দেশে ট্রেন বলতে আমরা যা বুঝি তার সাথে বাইরের দেশের তুলনা চলে না। সেখানে ট্রেন মানে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু। কম খরচে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য সেখানে ট্রেনের বিকল্প নেই। এসব গতিদানব গুলো অনায়াসেই পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশের সাধারণ জনগণের মন জয় করে নিয়েছে। চলুন তাহলে পৃথিবীর এমনই কিছু গতিদানব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১. Shanghai Maglev : 267 mph  

পৃথিবীর সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনটি কিন্তু একদম আধুনিকতম নয়। বরং তুলনামূলকভাবে এর ডিজাইন কিছুটা পুরনোই বলা যায়। হিসাবমতে এর টিকেটের দামও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রতি রাইডে পার পার্সন প্রায় ৮ ইউএস ডলার করে খরচ পড়ে। আর তারপর এত টাকা ব্যয় করে আপনি পাড়ি দিবেন মাত্র ১৯ মাইল।

Shanghai Maglev
Shanghai Maglev Source: flickr.com

হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এই ট্রেন সাংহাই পুডং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে লং-ইয়াং মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াতের সুবিধা প্রদান করে থাকে। আর এই দূরত্ব অতিক্রম করতে এটির লাগে মাত্র ৭ মিনিট। এটি ম্যাগনেটিক ল্যাভিয়েশনকে কাজে লাগিয়ে গতি সঞ্চার করে। যার কারণে এর নাম হয়েছে ম্যাগলেভ।

২. Fuxing Hao CR400 AF/BF: 249 mph

অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনটিও চায়নার দখলে। এটি বিশ্বের দ্রুততম নন-ম্যাগলেভ ট্রেন, যা কিনা ম্যাগনেটিক ল্যাভিয়েশনকে কাজে না লাগিয়েই এমন তুমুল গতি সঞ্চার করতে সক্ষম। এই ট্রেনটির চাইনিজ নাম হলো, ‘ফুক্সিং হাও’। যেটির অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘নবজীবন’।

Fuxing Hao CR400 AF/BF
Fuxing Hao CR400 AF/BF source: scmp.com

এই ট্রেনটির দুইটি ভার্সন আছে। একটির কোডনেম হলো CR400AF এবং ডাকনাম হলো ‘ডলফিন ব্লু’ এবং অপরটির কোডনেম হলো CR400BF এবং ডাকনাম হলো ‘গোল্ডেন ফিনিক্স’। CR দ্বারা এখানে চায়না রেলওয়ে বুঝানো হয়েছে। প্রতিটি ট্রেন ৫৫৬ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম এবং বেইজিং সাউথ থেকে সাংহাই হং কিয়াও স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করে।

৩. Shinkansen H5 and E5: 224 Shinkansen H5 and E5

জাপান এই বছর হাই স্পীড ট্রেন ট্রাভেলের ৫৪ বছর পূর্তি উৎযাপন করছে। ১৯৬৪ সালে হিকারি হাই স্পীড ট্রেন চালু করার মাধ্যমে টোকিও এবং ওসাকার মধ্যেকার ট্রাভেলিং টাইম অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

Shinkansen H5 and E5
Shinkansen H5 and E5 source: railwaygazette.com

H5 এবং E5 শিংকানসেন(Shinkansen) সিরিজের দুইটি দ্রুতগামী নতুন বুলেট ট্রেন। যেগুলোর নাম যথাক্রমে তোহোকু এবং হোক্কাইদো।

৪. The Italo and Frecciarossa: 220 mph

ইতালির দুই ট্রেন অপারেটর কোম্পানি ‘NTV’ এবং ‘Trenitalia’ এই ট্রেনটির ডিজাইন করে। যেটি ইউরোপের সর্বোচ্চ গতিশীল ট্রেন হিসেবে বিবেচিত।

The Italo and Frecciarossa
The Italo and Frecciarossa source: youtube.com

এই ট্রেন মিলান থেকে ফ্লোরেন্স এবং রোম পর্যন্ত যাতায়াতের সময় অনেক কমিয়ে ফেলেছে। The Frecciarossa অথবা ‘রেড এরো’ সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে মিলানের এক এক্সিবিশনে প্রদর্শিত হয়।

৫. Renfe AVE: 217 mph

এই ট্রেনটি স্পেনের সর্বোচ্চ গতিশীল ট্রেন। এটি দূর-পাল্লার পথ অতিক্রমের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

Renfe AVE
Renfe AVE source: forums.dovetailgames.com

সাধারণত বার্সেলোনা থেকে প্যারিস পর্যন্ত যাতায়াত করতে এটি ব্যবহৃত হয়। যাতে সময় লাগে মাত্র ৬ ঘণ্টা।

৬. Haramain Western Railway: 217 mph

মক্কা-মদিনা হাই-স্পীড ট্রেন লাইন ২৮১ মাইল জুড়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন পবিত্র শহরে বিস্তৃত। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের দিকে এই ট্রেন চালু হয় এবং এবছরের গ্রীষ্মকালে পুরোদমে এর সার্ভিস প্রদান করা শুরু করে।

Haramain Western
Haramain Western source: arrab.com.sa

পুরো রুট অতিক্রম করতে এই ট্রেনের লাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা, যেখানে গাড়িতে গেলে লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। আশা করা যাচ্ছে যে এই ট্রেনটি বছরে হজ-যাত্রী সহ প্রায় ত্রিশ লক্ষ যাত্রী পরিবহণ করতে সক্ষম হবে।

৭. Deutsche Bahn ICE: 205 mph

ICE শব্দটির পূর্ণরূপ হচ্ছে, ইন্টার সিটি এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি বার্লিন এবং মিউনিখ এর মাঝে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ রুটের উপর চলাচল করে। স্পেনের Renfe AVE ট্রেনের মত, জার্মানির সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন এই ট্রেনটিও Siemens এর দ্বারা ডিজাইন করা।

Deutsche Bahn ICE
Deutsche Bahn ICE source: bahn.com

এই ট্রেনটির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যেন অনায়াসেই এটি চ্যানেল টানেলের ভিতর দিয়ে চলাচল করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ভবিষ্যতে এই ধরণের ট্রেন ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে লন্ডন পর্যন্ত অপারেট করা সম্ভব হবে।

৮. Korail KTX: 205 mph

যদিও সাউথ-কোরিয়ার হাই-স্পীড রেল নেটওয়ার্ক এতটাও নতুন নয়, কিন্তু তবুও এটি বিশ্বের দ্রুতগতিসম্পন্ন ট্রেনের মাঝে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের সময় তৈরি হওয়া রুটটি ইঞ্চেওন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের সাথে সংযুক্ত।

Korail KTX
Korail KTX source: englishspectrum.com

এই ট্রেনের কল্যাণে ‘স্কি স্লোপস অফ পিওংচাং’ তে পৌঁছাতে ছয় ঘণ্টার পরিবর্তে কেবল মাত্র দুই ঘণ্টা খরচ হয়।

৯. Eurostar e320 and TGV: 200 mph

গতির দিক দিয়ে এই দুইটি ট্রেন একদম এক। ইউরোস্টার কোম্পানির ২২ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যে, e320 সিরিজ হলো এই কোম্পানির সর্বপ্রথম টিপ টু টেইল রিডিজাইন মডেল। এই নতুন ডিজাইনের ট্রেন আগের ডিজাইন e300 থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার বেশি দ্রুতগামী। এর দ্রুতগামীতা এবং দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের জন্য এই ট্রেন গ্রাহকদের মনে অন্যরকম জায়গা করে নিয়েছে।

১০. Thalys: 186 mph

আমস্টারডাম, ব্রাসেলস এবং প্যারিস কে একসাথে সংযুক্ত করার জন্য এই ট্রেন লাইনটি ব্যবসা এবং ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রেনলাইন হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০১৫ সালে জার্মানির রুটটি ডরমুন্ড পর্যন্ত প্রসারিত করা হয়।

Thalys
Thalys source: happyrail.com

গতির দিক থেকে অন্যান্য ট্রেনের কাছে পিছিয়ে থাকলেও উন্নতমানের রুটের সহায়তা নিয়ে এই ট্রেনটি গ্রাহক মনে জায়গা করে নিয়েছে। যার ফলে, গ্রাহকের সময় যেমন বাঁচে তেমনি যাতায়াতও আরামপ্রদ হয়।

Source Feature Image
Leave A Reply
4 Comments
  1. Rohtrq says

    cheap prandin – repaglinide order buy jardiance paypal

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More