বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর-‘রথসচাইল্ড পরিবার’ ( শেষ পর্ব)

2

প্রথম পর্বের পর

ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের মধ্যকার যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ইংরেজ সরকারের ভাগ্যকে যারা ২০০ বছর ধরে কয়েদ করে রেখেছিলো তারাই ব্রাজিলকে পর্তুগাল হতে আলাদা করতে এগিয়ে এসেছিলো। একদিকে পুরো ইংরেজদের ভাগ্যকে যারা হাতের পুতুল করে নাচিয়েছিলো সেই আবার ব্রিটিশ সরকারকে ঋণ খেলাপি হওয়ার মুখ হতে উদ্ধার করে এনেছিলো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আর সাথে ছিলো সুয়েজ খাল খরিদের জন্য আঠারো শতকে ব্রিটিশ সরকারকে দেয়া পুরো ৪ মিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তার অভূতপূর্ব কাহিনী। এমনই অজানা অনেক চমকপ্রদ বিষয়গুলো আসলেই বিস্ময়ের জন্ম দিবে, জানতে ইচ্ছে হবে এর পিছনে থাকা শক্তিধর অবয়ব কে যাদেরকে  বিশ্বের বহু যুদ্ধের পিছনে দাঁড়িয়ে কলকাঠি নাড়ানোর জন্যে দায়ী করা হয়। জ্বী, রথসচাইল্ড পরিবার সম্পর্কে এবারের শেষ পর্বে আরও কিছু  জানা যাক।

সময় ছিলো ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর।ব্রাজিল সাম্রাজ্য চাচ্ছিলো পর্তুগালের প্রভুত্ব হতে নিজেদের মুক্ত করতে। প্রায় দুশো বছর পূর্বে সেই নাথান মায়ের রথসচাইল্ড এগিয়ে এসেছিলেন ব্রাজিলের পক্ষে। বিভিন্ন ধরণের প্রচেষ্টার পর ব্রিটিশ সরকারের চাপে শেষমেশ পর্তুগাল সরকার ব্রাজিলকে স্বাধীনতা দিতে সম্মতি জানালো এই শর্তে যে ব্রাজিলের নতুন রাজ্য দ্বারা পর্তুগালের সাম্রাজ্যের যে সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং ক্ষতিসাধণ হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একদিকে স্বাধীনতার স্বাদ পেতে মরিয়া ব্রাজিল পড়ে গেলো দোটানায় কারণ ২ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেয়ার মতো অর্থ তাদের ছিলনা সেই মুহুর্তে তাছাড়া বাকি দেশের পরিপার্শ্বিক অবস্থা গুছিয়ে নিতেও বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন।

এইদিকে স্বাধীনতা লাভের পরেও পর্তুগালের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে ব্রাজিলের কারণ অন্যান্য ইউরোপীয়রা ইতিমধ্যেই পরিষ্কার বলে দিয়েছে তারা তখনই ব্রাজিলের পক্ষে সম্মতি দিবে যখন তাদের সাথে পর্তুগালের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে।

এ মুহুর্তে ত্রানকর্তা হিসেবে এগিয়ে এলেন নাথান রথসচাইল্ড। ১৮২৫ সালে তিনি  ঋণ সহায়তা গৃহীত করলেন ব্রাজিলকে তাদের স্বাধীনতা পর্তুগাল হতে সুরক্ষিত করতে। শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণের চুক্তির টাকাই নয় বরং রেলপথ এবং দেশের কাঠামো পুনর্গঠনেও সেই সময় এই অর্থ ব্যাপক সাহায্য করে।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর-‘রথসচাইল্ড পরিবার’
লিওনেল নাথান দে
Source: Fine Art America

এরই ভিত্তি ধরে এগিয়ে যায় নাথান রথসচাইল্ডের বড় পুত্র লিওনেল নাথান দে রথসচাইল্ডের সাফল্যগাঁথা। তার বাবার মতোই ব্যবসাকে বিস্তৃত করতে তার কর্মকান্ড ছিলো চোখে পড়ার মতো। তেমনই এক অভাবনীয় সাফল্য ছিলো সুয়েজ খাল খরিদের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারকে পাক্কা ৪ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা করে।

সময়টা ছিলো ১৮৭৫ সাল। ইতিমধ্যে ১৮৬৯ সালে চালু হওয়ার পর ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রিয়া এবং রাশিয়া সুয়েজ খালের শেয়ার কিনে নিই তবে ফ্রান্সের মধ্যে খালের শেয়ার অতিদ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। পরক্ষণে ব্রিটিশ সরকার পর্যবেক্ষণ করে সুয়েজ খালের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের চলমান প্রকল্প তাদের ভূরাজনৈতিক এবং আর্থিক সংকল্প ঝুঁকির শংকায় ফেলছে।

তৎকালীন মিশরের শাসক ইসমাইল পাশা অভ্যন্তরীণ ঋণের দায়ে নিজের দেশের ভাগে থাকা সুয়েজ খালের লোহিত সাগর এবং মেডিটেররানেয়ান সাগরের সংযোগস্থল হিসেবে চিহ্নিত ওই অংশটুকু বিক্রি করতে উদ্যত হয়। সুযোগ এটাকে কাজে লাগাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, ব্রিটিশ গভমেন্টের ভারপ্রাপ্ত বেঞ্জামিন ডিসরায়লিকে কোন ধরণের কাগজাদি চুক্তি ব্যতীত বন্ধু হিসেবে ৪ মিলিয়ন ডলার অগ্রীম ঋণ প্রদান করেন যার বর্তমান আর্থিক মূল্য প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন ডলার।
মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই সেই ঋণ যদিও পরিশোধ করা হয় কিন্তু উইলিয়ান গ্লাডস্টোন দ্বারা ডিসরায়লিকে অভিযুক্ত করা হয় ব্রিটেন শাসনতন্ত্রের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে কারণ তাঁর কাছে সুয়েজ খালের হিস্যা কেনার পক্ষে রথসচাইল্ড কোম্পানী থেকে অর্থ সহায়তা সম্পর্কে সভা হতে কোন ধরণের সম্মতির পক্ষেসুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায়। আজ অবধি যদিও সুয়েজ খালের অধিকাংশ শেয়ার ফ্রান্সের অধীনস্থ।

আরেকটি মজার তথ্য জেনে নেয়া যাক

সময় ১৮৯৫। পুরো আমেরিকা জুড়ে দেখা দিয়েছিলো ইতিহাসের অন্যতম অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা যার একমাত্র কারণ ছিলো বিদেশীরা মন্দার ভয়ে তাদের স্টক বিক্রি করে দিচ্ছিলো এবং তাদের রক্ষিত ডলারকে স্বর্ণে রুপান্তর করছিলো যা আমেরিকার বাইরে চলে যাচ্ছিলো যার ফলস্বরুপ ১৮৯০ – ১৮৯৪ এর মধ্যে বিদেশীরা প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মতো স্বর্ণে রুপান্তর করে ফেলে ফলশ্রুতিতে ১৮৯৩ এর শেষের দিকেকোষাগারে সংরক্ষিত স্বর্ণের পরিমাণ কমে ৬০ মিলিয়নে চলে আসে এবং দৈনিক ২ মিলিয়নেরও বেশি স্বর্ণ মুদ্রা দৈনিক খালাস হতে লাগলো। ১৮৯৪ এর ফেব্রুয়ারীর দিকে আমেরিকার সরকারের কাছে আর মাত্র ৩ সপ্তাহের স্বর্ণ সংরক্ষিত ছিলো। ঋণখেলাপি হওয়া সময়ের ব্যাপার। সরকার ভীতসন্ত্রস্ত ঋণখেলাপি হওয়ার আশংকায় কারণ ঋণের বিপরীতে থাকা সংরক্ষিতস্বর্ণের পরিমাণ কমে যেতে লাগলো। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লেভল্যান্ড ব্যাপারটা জানতো কিন্তু তবুও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন ঋণখেলাপি হতে বাঁচতে। শেষমেষ তিনি নাথানিয়েল মায়ের রথসচাইল্ডের সাহায্যের শরণাপন্ন হলেন জে.পি.মরগানের মাধ্যমে। প্রেসিডেন্ট ক্লেভল্যান্ডজে.পি.মরগান এবং নাথানিয়েল রথসচাইল্ডের বেইল-আউট টীমকে বললেন যেনো স্বর্ণ দেশের ভিতরেই রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়। সরকার ইতিমধ্যে সাড়ে ৩ মিলিয়ন আউন্স স্বর্ণ ১৭.৮০ ডলার প্রতি আউন্স বেইল-আউট টিম হতে কিনে নিতে সম্মত হয় যার বদলে ৬২.৩ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ৩০ বছর মেয়াদী বন্ড যার রাউন্ডিং ৪% হারে। ৬২.৩ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ৩০ বছর মেয়াদী বন্ডের পরিবর্তে তখন ৬৫.১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ হয়ে গিয়েছিলো রথসচাইল্ডের কাছে। মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে প্রস্তাবিত মূল্যে বন্ডগুলো ২০ মিনিটের ভিতরেই বিক্রি হয়ে যায়। এই বন্ড বিক্রির পরে প্রায় ১২৫ পর্যন্ত গিয়ে টেকে। এই ৩০ বছর মেয়াদী বন্ড ১৯২৫ সালেও ১০০ তে পুনরায় খরিদ করা হয় এর আসল মূল্যের চেয়ে বেশি দামে। এভাবেই মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই আমেরিকার ভাগ্য পরিবর্তিত হয়েছিলো রথসচাইল্ডের হাতে।

আর্থিক দিক বাদ দিয়ে তাদের পারিবারিক কিছু ঘটনা আছে যার কিছুটা রীতিনীতি, কিছুটা শখ

তেমনই এক রীতিনীতির মধ্যে পড়ে তাদের পরিবারের রক্তের সম্পর্কের ভেতরেই বিয়ে সম্পন্ন করার রীতিনীতি। এর একটা মাত্রই কারণ ছিলো যাতে তাদের বংশবৃদ্ধির সম্প্রসারণ একই পরিবারের ভেতরেই হয় যাতে করে ব্যবসার সম্প্রসারোণ শুধুমাত্র তাদের নিজেদের মধ্যেই হয়ে থাকে এবং অর্থবিত্তকে ধরে রাখার, বাইরের কারোও হাতে কুক্ষিগত না হওয়ার এর চেয়ে ভালো উপায় হয়তো আবিষ্কৃত হয় নিই তৎকালীন সময়ে।

শখ বলতে, রথসচাইল্ড সদস্যদের মধ্যে লর্ড ওয়াল্টার ছিলেন প্রাণীবিদ্যায় আসক্ত। শৈশবে তিনি বিভিন্ন প্রকার প্রাণী আর কীটপতঙ্গ সংগ্রহ করতেন। অনেকটা অনিচ্ছাসত্ত্বেও তিনি পারিবারিক ব্যবসায়ে যোগ দিলেও ১৯০৮ সালে তার মা-বাবা কর্তৃক স্থাপিত প্রাণীবিদ্যা বিষয়ক যাদুঘরের স্থাপনার পর তিনি ছিলেন মুক্ত, সে সময়ে তিনি বেরিয়ে পড়লেন পুরো বিশ্বের বিভিন্ন প্রাণীর প্রজাতির সম্পর্কে জানতে। এমনকি তিনি কমিশনভিত্তিক গবেষক নিয়োগ দিয়েছিলেন তার পক্ষ হয়ে এ কাজ করতে। তিনি বিখ্যাত ছিলেন তার জেব্রা কর্তৃক বাহিত যানবাহনের জন্যে কারণ তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন চাইলেই যেকোনো প্রাণীকেই শিক্ষায় দীক্ষিত করা যায়।

সাল ১৮৮০ সাল। রথসচাইল্ড কোম্পানী Rio Tinto নামক অস্ট্রেলিয়ান খনি খননকারী কোম্পানীর সাথে যোগ দেয় যে কোম্পানী গঠিত হয় ১৮৭৩ সালে। রথসচাইল্ড কোম্পানী যোগ দেয়ার পর তাদের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে তারা খনিজ মূল্যবান ধাতু, তামা, তেজস্ক্রিয় ধাতু, কয়লা, হিরেসহ আরো বহুকিছু উৎপাদন করে।

শুধুমাত্রই কি তারা আর্থিক লেনদেনে ন্যস্ত ছিলেন? ইতিমধ্যে তাদের খনি আহরণ ব্যবসায়ে সম্পৃক্ততা দেখেছি তবে এটা হয়তো অনেকেরই অজানা যে তারা মধ্য পানীয়ও প্রস্তুত করতো। প্রায় ১৫০ বছর ধরে বলতে গেলে। শুরুটা হয় নাথানিয়েল রথসচাইল্ডের হাত দিয়ে “Château Mouton Rothschild“ কোম্পানীর মাধ্যমে।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর-‘রথসচাইল্ড পরিবার’
Château Mouton Rothschild
Source: Bordeaux Investment Wines

এবার আসুন ইউনিভার্সিটি অফ প্যারিসের উৎপত্তি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই। ১৮৫৫ সালে ব্যারন ডে রথসচাইল্ড “ Château de Ferrières“ নির্মাণ করেন। প্রায় এক শতাব্দী এ বাড়ির মালিকানা পুরুষদের মধ্যে দিয়ে পার হচ্ছিলো।

জার্মান সম্রাট উইলিয়াম রথসচাইল্ড ম্যানশন সম্পর্কে বলেছিলেন, “ রাজারা পর্যন্ত এমন দালানের ব্যয় বহন করার ক্ষমতা রাখে না। শুধুমাত্র রথসচাইল্ডদের দ্বারায় এটা করা সম্ভব। “

১৯৭৫ সালে গায় দে রথসচাইল্ড এ বিশাল সাম্রাজ্য বাড়িটি ইউনিভার্সিটি অফ প্যারিসের নামে দান করে দেন।

রথসচাইল্ডদের মধ্যে ডেরেক ডে রথসচাইল্ড ছিলেন পরিবেশবাদী এবং এ হতে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রায় ১২ হাজার বোতল দিয়ে একটি “ক্যাটামারান” যা একধরণের জলযান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তিনি সেটা নিয়ে ৮ হাজার মাইল পাড়ি দিয়েছিলেন তার ক্রু’দের নিয়ে। রিসাইক্লিং জিনিসপাতি দিয়ে জলযান বানানো অসম্ভব বলে যারা মনে করতো ডেরেক রথসচাইল্ড তাদের ভুল প্রমাণ করেছিলেন।

হয়তো অনেকেরই অজানা বিষয়টা যে, সম্রাট ফ্রান্সিস আই কর্তৃক মায়ের আমশ্চেল রথসচাইল্ডের পাঁচ সন্তান – আমশ্চেল মায়ের, স্যালমন মায়ের, নাথান মায়ের, ক্যালম্যান মায়ের এবং জ্যাকব মায়ের “অভিজাত/বুনিয়াদি/সম্ভ্রান্ত” (Noble) পদবী লাভ করেছিলেন যার কারণে তাদের পরবর্তী বংশধরেরা “de” অথবা “von” পদবী ব্যবহার করতো “Rothschild” এর আগে তাদের পদবী বুঝানোর জন্যে।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর-‘রথসচাইল্ড পরিবার’
মায়ের আমশ্চেল রথসচাইল্ডের পাঁচ সন্তান
Source: Shut Racism

নাথান মায়ের রথসচাইল্ড দিয়ে যে পরিবারটার জন্ম হয়েছিলো তাঁরই মৃত্যুতে এতটুকু ম্লান হতে দেয় নিই তার পরিবার, তার বংশধরেরা। ততোধিক পরিশ্রম, মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে গড়ে তুলেছে এক বিশাল সাফল্যের ভিত, অবদান রেখেছেন পৃথিবীর অনেক দিকে পুনর্গঠনে, অবদান রেখেছে আর্থসামাজিক কল্যাণে, কারো ভাগ্যের পতন তাদের হাতে ঘটে থাকলেও তার চেয়ে বেশি গঠন হয়েছিলো এই পৃথিবীর অন্যতম বিত্তশালী এ পরিবারের মধ্য দিয়ে। যে শির একবার উঁচু করে দাঁড় করিয়েছে তা আর নুয়ানোর মতো নয় বরং আজন্ম উঁচু করেই থাকবে।

Leave A Reply
2 Comments
  1. Ktqqgf says

    buy glycomet 1000mg without prescription – order januvia 100 mg pills precose 50mg pill

  2. Teinze says

    buy repaglinide 1mg generic – order jardiance online cheap buy jardiance for sale

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More