মসলিন, বাংলাদেশের একটা ঐতিহ্যের বাহকের নাম। ঔপনিবেশিক বাংলার বুনন শিল্পের একটি অনবদ্য অংশ এই মসলিন কাপড় যা কয়েক শত বছর ধরে চলে আসছে দাপটের সাথে আজ অবধি এতটুকু কদর কমেনি।
চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশে আসেন বিশ্বখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা। দিল্লীর সুলতান মুহাম্মদ ইবনে তুঘলকের পক্ষ হতে ইয়েনের সম্রাটের কাছে উপহার স্বরূপ পাঠানো ৫ ধরণের কাপড়ের ১০০ পিচ কাপড়ের মধ্যে চার ধরণের কাপড় ছিলো মসলিনের তৈরী। এই বস্ত্রকে অতি মূল্যবান বলে অভিহিত করেন।
চীনা পর্যটক ইয়ান চং মসলিনের বর্ণনা দেন ঠিক এভাবে,“ কাপড়টি দেখতে ঠিক ভোরের সেই হালকা বাষ্পের মতোই মসৃণ। “
পঞ্চদশ শতাব্দীতে দেখা মিলে আরে খ্যাত চীনা পর্যটক মাহুয়ান। তিনিও সরাসরি সোনারগাঁয়ের মলমল ও অন্যান্য মসলিন তৈরীর সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন। এরপর বাইরের মানুষ আসলো আর গেলো এবং প্রশংসায় ভাসালো মসলিন কাপড়কে। ষোড়শ শতাব্দীতে ইংরেজ পর্যটক রলফ ফিচ, পর্তুগীজ পর্যটক ডুয়ার্টে বারবোসা এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ডাচ পর্যটক স্ট্যাভোরিনাস বেশ কয়েকটি স্থান ঘুরেফিরে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মসলিন বানানোর কার্যাদি এবং তারা সবাই একই সাথে এমন সূক্ষ্ণ ও মিহি বুনন প্রক্রিয়ার ভূয়সী প্রশংসায় মগ্ন হোন।
পর্তুগীজ পর্যটক ডুয়ার্টে বারবোসার বর্ণনামতে ১৬ দশকের দিকেও বাংলাদেশে প্রচলিত কিছু কাপড়ের নামের সন্ধান পাওয়া যায় যা তিনি নামাঙ্কিত করেছিলেন ‘সারবান্দ’, ‘মামোনা’, ‘ফোগজা’, ‘চৌতারা’ এবং ‘সিনাবাকা’ নামে।
বাংলার প্রাচীনকালের গর্ব করার মতো ঐতিহ্যের একমাত্র নিদর্শন হলো এই মসলিন। মূলত এই মসলিন তৈরী হতো ঢাকা শহরে এবং এটা তৈরীতে ব্যবহার করা হতো দেশীয় জনশক্তি, তুলা এবং এর জনপ্রিয়তা ছিলো সারা বিশ্বব্যাপী। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, জর্জ ওয়াশিংটনের পুরো পরিবার এবং নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী জোসেফিনের গায়ের পরিধেয় বস্ত্রটি ছিলো আমাদের দেশের গর্ব মসলিন কাপড়ের তৈরী। ১৭ এবং ১৮ দশকে মসলিন কাপড়ের খ্যাতি দেশ পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য বাণিজ্য উন্নত দেশে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাস বহু প্রাচীন। বাংলাদেশের বুনন শিল্পের মালামাল মূলত রপ্তানী করা হতো রোমান এবং চীন সাম্রাজ্যে যা বিভিন্ন ইতিহাস এবং চীনের বিখ্যাত পর্যটকদের বর্ণনায় উঠে আসে। তবে মসলিন ব্যাপক পরিচিত লাভ করে ঢাকার অভ্যন্তরে মোঘল রাজধানী স্থাপনের পরে এবং এরই মধ্যে বিদেশী এবং তাসমেরিয়ান ক্রেতাদের নজর কাঁড়ে এই মসলিন কাপড়। পরবর্তীতে মোঘল সম্রাট এবং তাঁদের আভিজাত্যের স্বরূপ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সম্রাটদের জন্য প্রচুর পরিমাণে উন্নতমানের মসলিন কাপড় উৎপন্ন করা হতো।
সময়কাল ১৮৫১ সালে লন্ডনের এক প্রদর্শনীতে মসলিন কাপড়ের সম্মানজনক স্থান লাভ করে যার ফলে এই কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা বৃদ্ধি পেলো অকল্পনীয়ভাবে। ব্রিটিশ বক্তাদের মুখে মসলিন কাপড়ের প্রশংসার ফুলঝুরি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
মসলিন কাপড়ের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কিছু অংশ দেখে নেয়া যাক।
মসলিন ছিলো তৎকালীন সময়ের ঐতিহ্যের ধারাবাহক। তখনকার মোঘল সাম্রাজ্যে এর প্রচলন ছিলো অবাক করার মতো। বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদ কুলি খান প্রায়সময় মোঘল সম্রাটদের মসলিন দ্বারা তৈরী এক বিশেষ পোশাক যাকে বলা হতো ‘মালবাস খাস’ এবং এই পোশাক নবাব বাদশাহ এবং আমিরেরা গ্রীষ্মকালীন সময়ে পরিধান করতো।
মসলিন শব্দটি পারসিয়ান, সংস্কৃত বা বাংলা কোনটাই নয় বরং এটা ইউরোপীয়ানদের সৃষ্টি। এর পুর্বের ইতিহাস দেখতে গেলে জানা যায়, সে সময়ে ইউরোপীয়নরা ইরাক (মসোল) এবং অন্যান্য পূর্ব দেশ হতে প্রচুর পরিমাণে তুলায় বোনা কাপড় আমদানী করতো এবং পরবর্তীতে যখন তারা ঢাকায় উৎকৃষ্ট মানের কাপড়ের সন্ধান পেলো তখন সেটাকে তারা নাম দিলো ঢাকা ফেব্রিকস নামে এবং ধারণা করা হয় এ থেকেই মসলিন নামের উৎপত্তি। তবে এ ব্যাপারে কিছুটা সন্দেহ আছে কারণ ইউরোপীয়ানরা যেসব বস্ত্রাদি ভারতের গুজরাট, গোলকান্দ হতে আমদানী করতো ওইগুলোকেও মসলিন কাপড় নামেই অভিহিত করা হতো। তবে মার্কো পোলোর “দ্যা ট্রাভেলস” বইয়ে উল্লেখিত মসলিনের বর্ণনায় বুঝা যায় এই কাপড়ের উৎপত্তি ছিলো ইরাকেই (মসোল) এবং আরো সুস্পষ্টভাবে জানা যায় ফ্যাশন গবেষক সুসান গ্রিনই থেকে যে, ১৮ দশকের দিকে মসলিন শব্দটি পরিচিত হয় মোওসে (Mousse) যার উৎপত্তি ফ্রেঞ্চ। মোঘল সাম্রাজ্য চলাকালীন সময়ে মসলিনের প্রচল ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ার পিছে কারণ ছিলো সম্রাজ্ঞী নুরজাহান কর্তৃক মসলিনকে মোঘলে হারেমের জন্য নির্বাচিত করায়।
সময়কাল ১৮৭৫ সাল। ওয়েলসের রাজপুত্র এডওয়ার্ড VI বঙ্গদেশ পরিদর্শনে আসেন। তৎকালীন নবাব স্যার আবদুল গণি ত্রিশ গজ মসলিন কাপড় উপহার হিসেবে দেন রাজপুত্রকে। জেনে রাখার স্বার্থে বলা যায়, প্রতি গজ মসলিনের ওজন ছিলো শুধুমাত্র ১০ গ্রাম প্রায়। ধারণা করা হতো, ৫০ মিটা দৈর্ঘ্যের মসলিন কাপড়কে একটি দিয়াশলাই কাঠির বাক্সে ধারণ করা যেতো।
তথ্যসূত্রে বিভিন্ন প্রকার মসলিন সম্পর্কে জানা যায়। নিম্নে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো এ সম্পর্কে।
মল-মল খাসঃ মাল-বোস খাস নামক এক বিশেষ ধরণের হতে উৎপত্তি এবং তৈরী করা হতো সম্রাট এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য।
ঝুনাঃ এ ধরণের মসলিনের কদর স্ত্রীলোক আর হারেমদের কাছে অনেক বেশি। ঝুনা শব্দটি হিন্দি ভাষা হতে আগত যার অর্থ হলো পাতলা।
রঙ্গঃ এটি ঝুনার মতোই তবে মসলিন গজ হিসেবে বহুল স্বীকৃত। মূলত মলমল খাস হতে দেড় গুণ ভারী এবং বেশ সূক্ষ্ণ।
আব্রাওয়ানঃ ফার্সি শব্দ আব্রাওয়ানের অর্থ পানি এবং প্রবাহ। এ প্রকৃতির মসলিন অতি সূক্ষ্ম এবং পাতলা যার কারণে একে পানিপ্রবাহের সাথে তুলনা করা হয়।
খাসসাঃ পাতলা বুনন এবং মসৃণতার কারণে খাসসা ছিলো বিখ্যাত। বাদশাহ আকবরের প্রশাসনের লোক আবুল ফজল ইবনে মোবারক তাঁর আইন-ই-আকবারীতে খাসসা’র বর্ণনা দেন।
শাবনামঃ ‘ভোরের শিশির’ হিসেবে আখ্যায়িত এই কাপড়টি এতোই মসৃণ ছিলো যে ঘাসের উপর বিছিয়ে দেয়া হলে অনেকেই শিশির বলে দৃষ্টিভ্রম হবে।
আলাবাল্লেঃ অন্যান্য মসলিন হতে আলাবাল্লে অপেক্ষাকৃত ভারী এবং বুননশিল্পীদের মতে এ কাপড় অত্যন্ত উৎকৃষ্ট মানের।
তানজীবঃ ফারসী শব্দ হতে এই কাপড়ের নামকরণ করা হয় যার অর্থ শরীর এবং অলঙ্কার। এটি অত্যন্ত পাতলা এবং মসৃণ প্রকৃতির মসলিন।
তারান্দামঃ আরবী শব্দ ‘তুরুহ’ এবং ফারসী শব্দ ‘আন্দাম’ এই দুটো মিলে এ কাপড়ের নামকরণ করা হয়েছে যার অর্থ হলো “শরীরে পরিধেয় বস্ত্র”।
নয়নসুখঃ ‘চোখের শান্তি’ অর্থের এই কাপড়টি সম্পর্কেও আইন-ই-আকবরী বইতে উল্লেখ করা রয়েছে।
বুদ্দুন-খাসঃ ‘বুদ্দুন’ শব্দের অর্থ শরীর এবং ‘খাস’ শব্দের অর্থ বিশেষ। সাধারণত কাপড় তৈরীতে ব্যবহৃত হতো।
সারবান্দঃ ‘সার’ অর্থ মাথা এবং ‘বান্দ’ শব্দের অর্থ বেঁধে রাখা। এটি মূলত মাথায় বেঁধে রাখার জন্য প্রস্তুতে ব্যবহৃত হতো।
কামিজঃ কামিজ শব্দটি আরবী এবং যার অর্থ হলো জামা যা মূলত ব্যবহৃত হতো কুর্তা তৈরীতে।
ডোরিয়াঃ শব্দটি ডোরাকাটা হতে উৎপত্তি ঘটেছে যার অর্থ হলো নানা ধরণের আকারে অঙ্কিত যা হতে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য জামা তৈরী হতো।
চারকোণাঃ চারকোণা অর্থ হলো বর্গাকৃতির আদলে তৈরী মসলিন। ডোরিয়া এবং চারকোণা দুটিই দৈর্ঘ্য, প্রস্থে একই মাপের।
আরেক দিকে জেনে নেয়া যাক, ডেভনশায়ারের সর্দার পত্নী জর্জিয়ানার সম্পর্কে যাকে ব্রিটিশদের কাছে মসলিনের পরিচিতি করিয়ে দেয়ার কৃতিত্ব দেয়া যায়। তাঁর ভাইঝি ক্যারোলিন ল্যাম্বের বিয়ে ঠিক হয়েছিলো যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম ল্যাম্বের সাথে এবং জর্জিয়ানা সে বিয়েতে কনের জন্য উপহার হিসেবে পাঠান জরি কারুকার্য খচিত একটি পোশাক যা ছিলো মসলিন দ্বারা তৈরী। এরই মাধ্যমে এর প্রচার ঘটে এবং ব্রিটিশ নারীরা একধরণের মসলিনের প্রচলন শুরু করেন যাকে বলা হতো ‘শোরবন্দ’ যা স্কার্ফ এবং রুমাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
প্রায় ১৭ দশকের দিকে বণিকেরা আমেরিকায় মসলিন বস্ত্রের আমদানী শুরু করেন ইন্ডিয়া হতে এবং ব্যবসা আরম্ভ করেন। রাতারাতি এই বস্ত্রের চাহিদা বেড়ে গেলো এবং বিয়েশাদী আর অনুষ্ঠানে এর ব্যবহার বেড়েই চলতে লাগলো।
মসলিন বিশেষ এক প্রকার তুলার আঁশ দিয়ে বানানো অবিনব কায়দায় বানানো সুতা দিয়ে প্রস্তুত করা এক কাপড় যা সূক্ষ্ম হতে অতি সূক্ষ্মাকৃতির। তথ্যসূত্র হতে জানা যায়, ফুটি কার্পাস নামক তুলে হতে প্রস্তুতকৃত এক প্রকার অতি চিকন প্রকৃতির সুতা দিয়ে তৈরী করা হতো এই মসলিন কাপড়।
গত ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারীর ৬ হতে ৮ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় “মসলিন ফেস্টিভ্যাল ২০১৬” যেখানে সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন কার্যাদির সাথে মোড়ক উন্মোচিত হয় “মসলিনঃ আমাদের গল্প” শিরোনামের একটি বইয়ের এবং “লেজেন্ড অফ দ্যা লোম” নামের একটি তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী হয়।
মসলিন প্রায় ২৮ রকমের হয়ে থাকে যার মধ্যে জামদানী বর্তমানে বেশি জনপ্রিয়। ইউনেসকো সাম্প্রতিক বছরে মসলিন হতে তৈরী বাংলাদেশী বস্ত্র শিল্পের আরেক অতুলনীয় চমকপ্রদ সৃষ্টি “জামদানী শাড়ি”কে ‘ইন্টেনজিবল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
বাংলাদেশের গর্ব করার মতো একটি নিদর্শন হলো মসলিন। বর্তমানে এর প্রচারণা, জনশক্তি ও বিভিন্ন ধরণের অসহযোগীতার কারণে এ শিল্প প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে হারাচ্ছে এর স্বকীয়তা। হঠাৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ১৭৭২ সালে বিখ্যাত ব্যবসায়ী উইলিয়াম বোল্টস কিছু হতবাক করা তথ্য দিয়েছিলেন। তাঁর মতানুসারে,
‘ এমনও ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে ছিলো মসলিন কাপড় উৎপাদনকারী শিল্পীদের হাতের আঙ্গুল কেটে দেয়া যাতে পরবর্তীতে তাঁরা এ কাপড় উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে। ‘
আশা করি এমন সব পদক্ষেপের যা এককালে দাপটের সাথে নিজ দেশ পেরিয়ে বহির্বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মসলিনের যুগ আবার ফিরে নিয়ে আসবে।
https://canadaph24.pro/# reliable canadian online pharmacy
http://mexicoph24.life/# mexican mail order pharmacies
https://canadaph24.pro/# canadian pharmacy online store
mexican pharmaceuticals online: mexican drugstore online – buying from online mexican pharmacy
https://indiaph24.store/# Online medicine home delivery
http://indiaph24.store/# buy medicines online in india
http://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
http://indiaph24.store/# online shopping pharmacy india
canadian pharmacy world reviews: Certified Canadian Pharmacies – cross border pharmacy canada
https://canadaph24.pro/# buy canadian drugs
http://canadaph24.pro/# safe reliable canadian pharmacy
http://mexicoph24.life/# buying from online mexican pharmacy
http://mexicoph24.life/# best online pharmacies in mexico
world pharmacy india: indian pharmacy online – indianpharmacy com
https://mexicoph24.life/# purple pharmacy mexico price list
http://indiaph24.store/# world pharmacy india
http://indiaph24.store/# india online pharmacy
indian pharmacy paypal: buy medicines from India – indian pharmacy online
http://indiaph24.store/# india online pharmacy
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy service
https://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
buying prescription drugs in mexico Online Pharmacies in Mexico mexican border pharmacies shipping to usa
http://indiaph24.store/# indian pharmacy online
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy ed medications
https://mexicoph24.life/# medication from mexico pharmacy
https://mexicoph24.life/# mexican pharmacy
http://mexicoph24.life/# medicine in mexico pharmacies
repaglinide 2mg over the counter – jardiance 25mg cheap order empagliflozin 10mg sale
http://canadaph24.pro/# canadian online pharmacy