সময়টা বায়ান্নর শেষের দিকে, কলকাতার কাছেই বড়াল নামের একটি গ্রামে আস্তানা গেড়েছে চলচ্চিত্র বানানোর নেশায় উন্মত্ত এক অর্থনীতির ছাত্র নাম তার সত্যজিৎ রায়। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন পুরো এক অনভিজ্ঞ দল যাদের কারোরই চলচ্চিত্র জগতের কোন অভিজ্ঞতা নেই। আছে শুধু অদম্য ইচ্ছা। কিন্তু বর্তমানের বাজারে যে ইচ্ছাশক্তির সাথে বাস্তবতার যোগ থাকতে হয় । শুরুর দিকে অর্থসংকট এতটাই প্রবল আকার ধারণ করে যে পুরো চলচ্চিত্রটি শেষ করতে করতে তাদের তিন বছর লেগে যায়। কোন প্রযোজকই প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে রাজী ছিল না। কেই বা দিতে রাজী হবে। তখনকার সময়ের আট দশটা ছা পোষা মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে বানানো স্ক্রিপ্ট, নেই কোন বিখ্যাত স্টার। হ্যাঁ বাস্তবতা আমাদের এটাই বলে। কিন্তু কিছু মানুষ থাকে যারা এই পারিপার্শ্বিক টান গুলোকে উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের আপন গতিতে যেমনটা মহাকাশযান গুলো উঠতে থাকে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে অতিক্রম করে । আর এভাবেই শুরু হয় অস্কার জয়ী চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী এর নির্মাণ কাজ।

ধার করতে হয়েছে, সময়ে অসময়ে নিজের পছন্দের গ্রামোফোন রেকর্ডগুলো বিক্রি করতে হয়েছে, জমানো ইনস্যুরেন্স গুলো ভাঙতে হয়েছে কিন্তু বাস্তবতার কাছে স্বপ্নকে পরাজিত হতে দিতে পারেন নি। জীবনের পরবর্তী সময়ে অনেক সাফল্য পেলেও সেই সময়ের কষ্টের দিনগুলোর কথা কখনো ভুলে যান নি। সেই সময় অর্থসংকটের চাইতেও অপু, দুর্গার বয়স বেড়ে যাওয়া আর বয়স্ক চুনিবালা দেবীর মৃত্যু ভয় তার মধ্যে বেশি কাজ করত।
ভাগ্যও তখন তার সহায় ছিল না। পশ্চিম বাংলা সরকার প্রথমে তার এই কাজের জন্য সরকার থেকে কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করে কিন্তু এর জন্য তাকে ছবির কিছু রেকর্ড তাদের কাছে পাঠাতে হয় । তারা মনে করে যে এটি ছিল তথ্যচিত্র ধরনের কাজ সেই জন্য তারা সেই সাহায্য পাঠাতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং সেই সাহায্যকে পরবর্তীতে রাস্তার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। সেই সময় এগিয়ে আসে হুইলার নামের এক ভদ্রলোক। তিনি ছিলেন নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অফ মর্ডান আর্টের বিভাগীয় প্রধান। সত্যজিৎ রায়ের কাজ তার মনে ধরে এবং তাকে এটা চালিয়ে যেতে বলেন । পরবর্তীতে জন হুইস্টন তার ফিল্মের জায়গা নির্ধারণ করার জন্য যখন ভারতবর্ষ ভ্রমণ করেন তিনি তাকে সত্যজিৎ রায়ের কাজের তদারক করতে বলেন । মূলত তার প্রশংসার উপর ভিত্তি করে হুইলার পথের পাঁচালী ছবির জন্য সেই অর্থ সাহায্য প্রদান করেন ।
সত্যজিৎ রায় নিজেও চাচ্ছিলেন না তার চলচ্চিত্রে বড় কোন স্টার অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে নেয়ার জন্য। সে জন্য তিনি একদম থিয়েটার পর্যায়ে চলে গেলেন বাছাই করার জন্য । উমা দাস গুপ্ত (দুর্গা চরিত্র) এবং করুণা ব্যানার্জি (সর্বজয়া) কে নিয়ে আসেন থিয়েটার থেকে । কিন্তু মূল সমস্যায় পড়েন অপু চরিত্র আর চুনিবালা দেবীর জায়গায় । এত ছোট একটা ছেলেকে দিয়ে এত বড় একটা ভূমিকা পালন করাতে হলে যে তাকে সেভাবে তৈরি করে তুলতে হবে। কিছুতেই যেন কিছু মিলছে না। একদিন তার স্ত্রী খেয়াল করলেন তাদের বাসার পাশেই তো একটা ছেলেকে প্রতিদিন দেখা যায় তাকে পরীক্ষা করে নিলে কেমন হয় । সে ছেলেটিই ছিল সুবীর ব্যানার্জি (অপু চরিত্র)।
চুনিবালা দেবী (ইন্দিরা ঠাকুরুন) চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তোলাটা ছিল আরো মজার ব্যাপার। তিনি যখন এই চলচ্চিত্রটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হন তখন তিনি জীবনের শেষ অর্ধে পৌঁছে গেছেন প্রায়, থাকতেন কলকাতার এক অবহেলিত অঞ্চলে । এর আগেও চলচ্চিত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তার কিন্তু তাও প্রায় পনের বছর আগে। তিনি প্রতিদিন তার কাজের জন্য বিশ রুপি করে পেতেন।
একদিন বিকালে সবে তিনি ট্যাক্সি থেকে নেমেছেন মাত্র । হঠাৎ কিছু লোক কোন কিছু না বলেই তাকে দড়ি দিয়ে বাঁধা শুরু করে দেয় এবং চিতার উপর শুইয়ে দেয়। যখন দৃশ্যটি ধারণ করা শেষ হয়ে যায় তিনি চোখ খুলেন এবং তারপর একজন তার সাথে করমর্দন করতে এলে তিনি বলেন “ এটা কি শেষ হয়ে গেছে? তোমরা কেন আমাকে বল নি ? আমাকে কি এখনো মৃতের মত অভিনয় করতে হবে ?” ছবির শুটিং এর সময়েও প্রতিদিন তাকে আফিম খেতে হত যদি কোনদিন সেই আফিম খাওয়া বাদ পড়ত তিনি অচেতন হয়ে যেতেন । (তথ্যসূত্র: IN FOCUS: RAY AND THE TALE OF AN OLD ACTRESS)

পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রটিতে তিনি এক নিতান্ত দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের করুণ জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরেন, পরিবারের গৃহকর্তী সর্বজয়া সারাদিন ব্যস্ত থাকতেন কি করে কালকের খাবারের জোগান আসবে সেই নিয়ে । ঘরে ছিল বয়স্ক পিসশাশুড়ি চুনিবালা দেবী । তিনি ফলমূল খেতে পছন্দ করতেন কিন্তু সেগুলো কিনে দেয়ার মত সামর্থ্য তাদের ছিল না । পাশের বাগানটিও তাদের হারাতে হয় পূর্বের দেনার কারণে । মেয়ে দুর্গা প্রতিদিন সেই বাগান থেকে চুরি করে ফল কুড়িয়ে এনে ঠাকুরমাকে দিত কিন্তু এই নিয়ে প্রতিদিন পাশের বাড়ি থেকে অভিযোগ শুনতে হত গৃহকর্তীকে।
হরিহর ছিল বাড়ির গৃহকর্তা । পূজা কর্ম আর রায় খুড়ো মশাই দের বাড়িতে কাজ করেই তার দিন যেত । সেখান থেকে যেই মাসোয়ারা পেতেন সেই দিয়েই তার দিনযাপন করতে হত । অভাবে অনটনে চলে যাচ্ছিল দিন । কিন্তু শেষের দিকে এসে মন্ত্রদান আর বাড়তি কিছু টাকাপয়সা উপার্জনের আসায় বাড়ি ত্যাগ করে সে। বলেছিল অল্প কিছুদিন পরেই চলে আসবে কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে সেই বাড়ির দুইটি ছেলে কিছুদিন আগে মারা গিয়েছে । এমতাবস্থায় মন্ত্র নেয়ার কথা বলা যায় না । তাই সে কাজের সন্ধানে এখানে সেখানে ঘুরতে লাগল । এই দিকে আগের সেই দিন আনে দিন খায় অবস্থাটাও নেই তার পরিবারের । গৃহকর্তীরও সব গহনা বিক্রি করা শেষ। ঘরের অবস্থাও প্রচণ্ড খারাপ, এই ভেঙ্গে গেল বলে।
দুর্গা আর অপুর কাজ হল সারাদিন এইখানে সেইখানে ঘুরে বেড়ানো । দুর্গা ছিল অপুর জীবনে কম্পাসের মত, অনেকটা রাতের আকাশে তাঁরা গুলো যেমন আপন খেয়ালে ভুলিয়ে নিয়ে যায় নাবিককে সেইরকম । পুরো চলচ্চিত্রটিতে দুই ভাই বোনের ঘোরাফেরা কথাবার্তা একবারের জন্য হলেও আপনাকে আপনার শৈশব জীবনে নিয়ে যাবে ।
গ্রামীণ বর্ষার রূপ:
গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রকৃতি যখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে সেই সময়ে বর্ষা আমাদের জন্য ভরসার প্রতীক হয়ে উঠে । দারিদ্র্যের দাবানলে পুরো পরিবার যখন ক্ষতবিক্ষত হরিহরের চিঠিটি তাদের মধ্যে বর্ষার মত কোমলতা বয়ে আনে । পুরো পরিবার আশা করতে থাকে এইবার বোধহয় সুদিন আসতে চলল ।

বর্ষার শুরুতে একটি স্থিরচিত্রতে দেখা যায় দুর্গা তুলসী গাছের সামনে পুণ্যিপুকুর ব্রত মন্ত্র পাঠ করছে । হিন্দুধর্মীয় রীতি অনুসারে কুমারী মেয়েরা বর্ষার প্রারম্ভে এই মন্ত্র পাঠ করে থাকে যাতে বর্ষা তাদের জীবনে শুভ লক্ষণ বয়ে আনে ।
দ্রুত পূজা শেষ করেই দৌড় দেয় দুর্গা , খানিক দূরে আমগাছ তলায় দেখা হয় অপুর সাথে । তারপর দুই ভাইবোন মিলে মনের আনন্দে ভিজতে থাকে প্রকৃতির এই অপূর্ব বর্ষণে ।
প্রথম রেলগাড়ি দেখা:
যাত্রা দেখে আসার পর একটি স্থিরচিত্রতে অপূর্বকে দেখা যায় আয়নার সামনে সে যাত্রায় দেখা অভিনেতার মত সাজতে চেষ্টা করে , এই ক্ষেত্রে সে দুর্গার জিনিসপত্র ব্যাবহার করে । দুর্গাও এই জন্য তাকে তাড়া করতে থাকে । এই জায়গায় সত্যজিৎ রায়ের ক্যামেরার পিছনে কিছু নিপুণ কাজ দেখতে পারবেন। এক পর্যায়ে দুর্গা অপূর্বকে ধরে ফেলে তখন আবার সেটি দেখে ফেলে তাদের মা সর্বজয়া। অপু কে বাঁচাতে চলে আসে তাদের মা। এবার মা চলে গেলে অপুকে উদ্দেশ্য করে সে বলে “ রাজপুত্তুর সাজা হচ্ছে” । এই বলে সে দৌড় দেয় । পিছন পিছন তাকে তাড়া করতে থাকে অপু ।

চলতে চলতে অনেক দূর পর্যন্ত চলে আসে দুই ভাইবোন । এবার তারা নিজেদের আবিষ্কার করে কাশবনে। এর আগে তারা কখনো এখানে আসে নি । হঠাৎ দূর থাকে রেলগাড়ির শব্দ ভেসে আসতে থাকে । দৌড় দেয় দুইজন মিলে কাছে গিয়ে রেলগাড়ি দেখার জন্য। ছোটবেলার কৌতূহল গুলো যে এমনই, হোক না সে কোন প্রথম রেলগাড়ি দেখার দৃশ্য ।
দুর্গার মৃত্যু এবং বারানসি যাত্রা:
এই চলচ্চিত্রটিতে গ্রামীণ বর্ষার যে অপরূপ রূপ তুলে ধরা হয় সেই অপরূপ বর্ষায় ভিজতে ভিজতে নিজের জীবনের ইতি টেনে আনে দুর্গা । সেই রাতেই জ্বর আসে দুর্গার, একে অভাব অনটনে যায় যায় দিন সে মূহুর্তে জ্বর যেন বিলাসিতা । পরের দিন স্থানীয় এক ডাক্তার ডেকে আনা হয় । যদিও ডাক্তার আসস্ত করে যে এটা তেমন ভয়াবহ কোন রোগ নয় । অল্প কয়েকদিনে সুস্থ হয়ে যাবে সে । কিন্তু ঠাণ্ডা লাগাতে দেয়া যাবে না ।
কিন্তু অবস্থা আরো খারাপের দিকে যেতে থাকে । অপুকে সে কথা দেয় এইবার যদি জ্বর থেকে সেরে উঠে তবে আবার রেলগাড়ি দেখতে যাবে । সে রেলগাড়ি দেখা আর তার ভাগ্যে ছিল না । সেই রাতেই আসে প্রকৃতি বিদীর্ণকারী এক প্রলয়ঙ্কর ঝড়। সর্বজয়া সব চেষ্টা করেও পারল না মেয়েকে বাঁচাতে । দুর্গা পাড়ি জমাল না ফেরার দেশে । ঝড়ের পরে প্রকৃতি নীরবতা ভঙ্গ করতে পছন্দ করে না । চারপাশটা কেমন যেন চুপ হয়ে গেল মা এবং ছেলের জন্য ।
এবার বাড়ি ফেরার সময় হল হরিহরের । বাড়ির দরজায় পা রাখতেই বুঝল যে বাড়ি তো আর বাড়ি নেই যেন একটি ধ্বংসস্তূপ । কিন্তু সবচেয়ে বড় আঘাতটা পাওয়া যে এখনো বাকি । মেয়েকে খুঁজছেন তিনি । এইদিকে গৃহকর্তীও নীরব । তার বুঝতে বাকি রইল না যে আদরের মেয়েটি আর নেই ।
দুইজন মিলে এরপর ঠিক করল কি আর হবে ভিটে মাটির বাঁধনে জড়িয়ে । মাঝে মাঝে যে মানুষকে ভিটের টানও ছাড়তে হয় । তারাও সিদ্ধান্ত নিল বারানসি চলে যাবে ।

এই চলচ্চিত্রের একদম শেষের দিকে দেখানো হয়, অপু ঘরের মধ্যে হাটতে হাটতে আবিষ্কার করে তার দিদির অনেক আগে পাশের বাড়ি থেকে চুরি করে আনা মালা। কচুরিপানা ভর্তি পুকুরে ফেলে দিল সেটি। হঠাৎ কচুরিপানা ভর্তি পুকুরে একটি ঢিল ছুড়লে যে ছোট একটি ফাকা জায়গার সৃষ্টি হয় এতদিন দিদি থাকায় নিজের জীবনে সেই ফাকা জায়গার অস্তিত্ব বুঝতে পারে নি অপূর্ব। এখন কি দিয়ে পূরণ করবে এই ফাকা জায়গা সে ?
পুরো চলচ্চিত্রটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর দৃশ্য গুলো পরপর সাজালে মনে হবে যেন কোন এক আর্ট গ্যালারির সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কেউ । তাছাড়াও আমরা আজকের যেই সত্যজিৎ রায়কে চিনি সেই সত্যজিৎ রায়ের শুরুটাও ছিল এই পথের পাঁচালী দিয়েই । এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বের করেন অপরাজিত এবং অপুর সংসার। এই তিনটি মিলে অপু ট্রিলজি নামে পরিচিত যেখানে অপুর বাল্যকাল থেকে শুরু করে বয়ঃপ্রাপ্তি সবকটা অধ্যায় খুব সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়।
এবার জানা যাক পথের পাঁচালী চলচ্চিত্র সম্পর্কে সত্যজিৎ রায়ের নিজের অনুভূতি কেমন । বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার দেয়া সাক্ষাৎকার থেকেই সেটি দেখে নেয়া যাক
পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রটি কিভাবে আপনাকে পরিবর্তন করেছে? এটা কি আপনাকে বাংলাকে আবিষ্কার করতে সাহায্য করেছে?
- আমি অবশ্যই পথের পাঁচালীর মাঝে বাংলার গ্রামীণ জীবন আবিষ্কার করেছিলাম । এই ব্যাপারে প্রশ্ন থাকতে পারে না । আমি ছিলাম শহরে জন্ম নেয়া , শহরে বড় হওয়া মানুষ। আমি যখন গ্রামে ছবির জায়গা নির্ধারণের জন্য ঘুরছিলাম তখনই আমি এই সম্পর্কে প্রথম বুঝতে শুরু করেছিলাম ।
আপনার কাজের অন্য অনুপ্রেরণা গুলো কি ছিল ?
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল । আমি তার লেখার মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের সাথে সম্পর্ক খুঁজে পেতাম সেই কারণেই আমি পথের পাঁচালী তৈরি করতে চেয়েছিলাম।
আপনি পথের পাঁচালী সম্পর্কে এখন কি মনে করেন ?
- আমি একে পুনরায় সম্পাদনা করতাম । এটা আরো ভাল হত । আমরা দৃশ্য গুলো পরপর সাজিয়ে নিয়েছিলাম । এটা চলতে থাকার সাথে সাথে আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলাম । কিন্তু কাটিং এর ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই উন্নতি করতে পারতাম । কিন্তু অবশ্য কিছু জিনিশ আমরা কিছুই করতে পারতাম যেমন ক্যামেরার অবস্থান । আমি মনে করি না (যে তিনটি গৃহে অপু বড় হয়েছে) বাড়িগুলো খুব পরিষ্কার বোঝা যায় চলচ্চিত্রটিতে। যদি তুমি বারবার ক্যামেরার দিক পরিবর্তন করতে থাক এটা বিভ্রান্তিকর হয়ে যেতে থাকে । তোমার মাথায় প্ল্যানটা অনেক পরিষ্কার কিন্তু স্ক্রিনে সেটাকে পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরতে হলে তোমাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্র ব্যাবহার করতে হবে কিন্তু সেগুলো তখনো আমাদের জানা ছিল না ।