মায়া সভ্যতা হল মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার আদিবাসী মায়া গোষ্ঠীর স্থাপিত সভ্যতা। এই সভ্যতা সুপরিচিত এর হায়ারোগ্লিফিক পুথিগুলোর কারণে- যেগুলো ছিল প্রাক-কলোম্বিয়ান আমেরিকার একমাত্র সম্পূর্ণ রূপান্তরিত লিখিত পদ্ধতি। এছাড়াও শিল্প, স্থাপত্যশৈলী, গাণিতিকশাস্ত্র, ক্যালেন্ডার এবং জ্যোতির্বিদ্যাতেও মায়া সভ্যতা ছিল সকলের থেকে এগিয়ে। সময়ের আগে আগে চলা মায়ানদের নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
মায়া কারা?
মায়া শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে ‘মায়াপান’ এর প্রাচীন শহর ইউকাতান থেকে। ইউকাতান ছিল পোস্ট-ক্লাসিক সময়ে (খ্রিস্টপূর্ব ২০০০- ২৫০ খ্রিস্টাব্দ) মায়ান সাম্রাজ্যের শেষ রাজধানী। ‘মায়া’রা জাতিগত বৈশিষ্ট্য এবং ভাষা অনুযায়ী নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকে- দক্ষিণের কিচ (Quiche in the South) বা উত্তরের ইউকেটেক (Yucatec in the North) । ১৮৪০ সালে জন লয়েড স্টিফেনস এবং ফ্রেডরিক ক্যাথারউড যখন “রহস্যময় মায়া”দের ‘আবিষ্কার’ করে, তখন পুরো পৃথিবী কিছুটা বিভ্রান্ত হয়। কিন্তু বাস্তবে, মায়া সংস্কৃতি ততটা রহস্যময় নয় যতটা শুরুতে সবাই ধারণা করেছিল। মায়াদের সম্পর্কে জনপ্রিয় একটি ভুল ধারণা আছে যে, তারা হারানো জাতি। মায়ারা হারিয়ে যায়নি, বরং, তাদের বংশধরেরা চিচেন ইত্জা, বোনামপাক, উক্সমাল এবং আলতুন হা নামের বিখ্যাত যে শহরগুলো স্থাপন করেছিল, সেগুলো এখনো সেই একই স্থানে বিদ্যমান এবং একহাজার বছর আগে যে রীতি-নীতির চল ছিল, সেগুলোর পরিবর্তিত রূপ এখনো সেখানকার স্থানীয়রা অনুশীলন করে থাকে।

মায়ান কোথায়?
মেসোআমেরিকান ইন্ডিয়ানস বা মায়া জনগণ মূলত বসবাস করতো বিশাল এলাকা জুড়ে যার মধ্যে ছিল দক্ষিণ পূর্ব মেক্সিকো এবং উত্তরের কেন্দ্রীয় আমেরিকা। এই এলাকাগুলোর অংশ ছিল সম্পূর্ণ ইউকাতান উপদ্বীপ, গুয়াতেমালা, বেলিজ, হন্ডুরাসের পশ্চিমাংশ এবং এল সালভাদর। উপদ্বীপগুলোর বেশিরভাগেরই উৎপত্তি ঘটেছিল পর্বত বেষ্টিত এবং নিচু সমুদ্র রেখা বরাবর বিশাল সমভূমি দিয়ে।
মায়া সভ্যতার ইতিহাস
মায়া সভ্যতার ইতিহাস মূলত তিনটি প্রধান যুগে বিভক্ত- প্রি- ক্লাসিক, ক্লাসিক এবং পোস্ট-ক্লাসিক যুগ। এই তিন যুগের উপর ভিত্তি করে মায়া সংস্কৃতির ক্রমবিকাশ, আবির্ভাব এবং তাদের আচার-আচরণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আর এই তিনটি যুগের শুরুতে ছিল আর্কাইক যুগ, যখন মায়ান জনগোষ্ঠী প্রথম বসতি স্থাপন করে এবং কৃষিক্ষেত্রে প্রাথমিক উন্নয়ন ঘটে।
খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০-২০০০ সময়কালকে আর্কাইক যুগ বলা হয়। এই যুগে একটি শিকারি-সংগ্রাহক কৃষ্টি অনুশীলন করা দল ভুট্টা, বীন এবং অন্যান্য সবজির চাষ শুরু করে, এবং পশু-পাখি পালন শুরু করে- বিশেষত কুকুর এবং টার্কি। এই যুগে প্রথম যে বসতিগুলো স্থাপিত হয়েছিল, সেখানে বিভিন্ন দেব-দেবীদের জন্য বিশেষ স্থান এবং মন্দির নির্দিষ্ট করা ছিল। এই বসতিগুলোর প্রসার ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সালের সময়।
ওলমেক যুগ বা প্রি-ক্লাসিক যুগের সূচনা ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সালে। এ যুগেই মেসোআমেরিকার সর্বপ্রাচীন ওলমেক সংস্কৃতির উদয় ঘটে। মেক্সিকো উপসাগর ঘেঁষা এলাকায় তারা বসতি স্থাপন করে এবং ইট-পাথরের বড় বড় শহর তৈরি করে। সেই শহরগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রাপ্ত বিখ্যাত ওলমেক মূর্তিগুলোর মাথা থেকে ভাস্কর্য শিল্পে ওলমেকদের বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। একই সাথে এই মূর্তিগুলো থেকেই সেই যুগে শামানিক ধর্মের চর্চার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়। ওলমেক ধ্বংসস্তূপের বিশালতার জন্য এই ধারণা জন্ম নেয় যে, ওলমেক ছিল দানবদের আবাসস্থল। ওলমেকরা কোথা থেকে এসেছে বা পরবর্তীতে তাদের কি হয়েছিল, সে বিষয়ে কারো কিছু জানা না থাকলেও এই বিষয়টি নিশ্চিত যে, তারাই মেসোআমেরিকাতে ভবিষ্যৎ সভ্যতার বীজ বপন করেছিল। প্রি-ক্লাসিক যুগের সমাপ্তি ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ২০০ শতাব্দীতে।

মায়া সভ্যতার ক্লাসিক যুগ সেই সময়টাকে ধরা হয় যখন নিম্ন ভূমির মায়ারা লং কোর্ট ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা শুরু করে। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০ থেকে শুরু করে ৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই যুগে ইউকাতেক মায়ার চিচেন, ইতজা এবং উক্সমাল এর মত শক্তিশালী শহরগুলোর শক্তি একত্রিত হয়। এই যুগেই মায়া সভ্যতার বড় আকারের নির্মাণ এবং নগরায়ন ঘটে, স্মারক শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ করণ এবং উল্লেখযোগ্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও শৈল্পিক বিকাশ ঘটে- বিশেষত দক্ষিণের নিম্নাঞ্চলে। ক্লাসিক যুগে মায়ান রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের সাথে রেনেসাঁ বা ক্লাসিক্যাল গ্রীসের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের তুলনা করা হয় মায়ানদের একাধিক নগর-রাজ্য এক জটিল শত্রুতা-মিত্রতায় জড়িত ছিল। সেই যুগের সবচেয়ে বড় শহরগুলোয় জনসংখ্যা ছিল ৫০,০০০ থেকে ১২০,০০০ পর্যন্ত।
ক্লাসিক যুগের প্রথম দিকে সমগ্র মায়া অঞ্চল জুড়ে প্রভাব বিস্তার করেছিল মেক্সিকো উপত্যকার শক্তিশালী শহর তিউতিহুয়াকান। ৩৭৮ খ্রিস্টাব্দে তিউতিহুয়াকান তিকাল এবং অন্যান্য নিকটবর্তী শহরের উপর হস্তক্ষেপ করে, যার ফলে শহরের শাসকরা পদত্যাগ করে এবং শহরে নতুন তিউতিহুয়াকান-সমর্থিত রাজশাসন শুরু হয়। আর নতুন রাজশাসন চালু হওয়ার পর তিলান হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় নিম্নভূমির সবচেয়ে শক্তিশালী শহর আর রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা ঘটে।
তিকালের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল পেটেন বেসিনের আরেকটি শক্তিশালী শহর চালাক্মুল। চালাক্মুল এবং তিকাল উভয় শহরেরই বেশ ভাল পরিমাণে সমর্থক দল ছিল এবং দলগুলো একটি সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হত। এই দুই শহর তাদের সমর্থকদের সাহায্যে একে অপরের বিরুদ্ধে চাল চালত আর ক্লাসিক যুগের বিভিন্ন সময়ে এই দুই শক্তির যে কোন একটি কৌশলে বিজয় লাভ করে এবং ফলাফল স্বরূপ উদ্দীপনা ও পতনের এক যুগের শুরু হয়। ক্লাসিক যুগ হচ্ছে সেই সময় যখন মায়া সভ্যতা তাদের গাণিতিক বিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা এবং শিল্পের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করে। এবং নিখুঁত ভাবে মায়ান ক্যালেন্ডার সংস্কার করে।

পোস্ট ক্লাসিক সময়ে মায়াদের শক্তিশালী শহরগুলো পরিত্যক্ত শহরে পরিণত হয়। শহরগুলোর হঠাৎ পরিত্যক্ত শহরে পরিণত হওয়ার পেছনে কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া না গেলেও সম্ভাব্য কারণ হিসেবে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনকে ধরে নেয়া যায়। খালি শহুরে অংশগুলো নতুন গোষ্ঠী টলটেক্সরা দখলে নেয় এবং পুনরায় বসতি স্থাপন করে। এই যুগে প্রভাবশালী শহরে পরিণত হয় তুলা এবং চিচেন-ইতজা শহর। কিচ মায়ানদের পরাজয় ঘটে ১৫২৪ সালের উতাতলান এর যুদ্ধে এবং এই সালকেই মায়া সভ্যতার শেষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মায়ান শিল্প ও সংস্কৃতি
মায়া সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে ক্লাসিক যুগে। মায়ারা বিশ্বাস করতো বৃত্তাকার জীবনে- কোন কিছুর জন্ম বা মৃত্যু নেই- আর এই বিশ্বাস থেকে ঈশ্বর এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে তাদের ধারণা জন্মে। তাদের মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান প্রভাব ফেলে তাদের স্থাপনা, গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যার উপর। তারা বিশ্বাস করতো, পৃথিবীর নিচে শিবাল্বা বা ‘আতংকের স্থান’ আছে যেখানে আছে জীবনের গাছ। সেই গাছ পাতাল থেকে স্বর্গ পর্যন্ত প্রসারী এবং তামোয়ানচান এর স্বর্গে পোঁছাতে পাড়ি দিতে হবে ১৩ টি ধাপ। মায়ানদের বিশ্বাস, কেউ মরে গিয়ে স্বর্গ বা নরকে যায় না, বরং তামোয়ানচান এর পথে যাত্রা করে আর এই যাত্রার শুরু হয় অন্ধকার শিবাল্বা থেকে যেখানে সবকিছু বিভ্রান্তিকর এবং ধ্বংসাত্মক।

মায়ান সভ্যতার পিরামিডগুলো দেবতাদের পাহাড় উইটজবের আদলে বিশালাকারে নির্মিত। মানব অস্তিত্বের চক্রাকার আবর্তন বর্ণিত হয় বিখ্যাত মায়ান ক্যালেন্ডার এ। কিচ মায়াদের ধর্মীয় বই পোপোল-ভু এই বিশ্বাস বর্ণনা করে বীর যমজ হুনাহপু এবং বালাঙ্কি এর শিবাল্বার প্রভুদের বিরুদ্ধে বীরত্বের কাহিনীর মধ্য দিয়ে। এছাড়া, এই বীর যমজের গল্পে পোক-আ-টক নামের যে খেলার কথা উল্লেখ আছে, সেটাও একই উদ্দেশ্যে দেয়া। পোক-আ-টক নামের এই খেলা মায়াদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিবেচ্য ছিল। এই খেলার মধ্য দিয়ে মানুষের জীবন সংগ্রাম ফুটিয়ে তোলা হত। দুই দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেয়ালে ঝুলানো চক্রের ভেতর দিয়ে রাবারের ছোট বল প্রবেশ করানোর চেষ্টা করার খেলা এই পোক-আ-টক, অনেকটা বাস্কেটবলের মত। এই খেলার সবচেয়ে মজার দিক হল, খেলোয়াড় তাদের হাত বা পা কোনটাই ব্যবহার করতে পারবেনা, কেবল কোমর, কাঁধ, মাথা এবং হাঁটু ব্যবহার করতে পারবে।
মায়ান শিল্প মূলত বিবেচ্য ছিল রাজ শিল্প হিসেবে। মায়ান শিল্পের মূল বিষয়বস্তুও ছিল উচ্চ বর্গের মায়ান এবং তাদের জীবনযাপন। মায়া শিল্প তৈরি হত ক্ষয়িষ্ণু এবং অক্ষয় ধাতু দিয়ে যা মায়াদের সাথে তাদের পূর্বপুরুষদের সংযোগের চিহ্ন হিসেবে হাজির করা হত। এলাকা ভেদে মায়াদের শিল্পের ধরন এবং লেখনীর ধরন ভিন্ন হত।
সবচেয়ে সুসংরক্ষিত ভাবে পাওয়া শিল্পটির নির্মাণকাল ক্লাসিক যুগের শেষ সময়কে নির্দেশ করে। মায়াদের শিল্পে নীল এবং সবুজ রঙের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষণীয় এবং এই দুই রঙের জন্য তারা একই শব্দ ব্যবহার করে থাকে। একই ভাবে সূর্য দেবতা কিনিচ আজাউ এর সাথে মিলিয়ে আপেল-রঙ্গা সবুজ জেড পাথর এবং অন্যান্য সবুজ পাথরের অন্যরকম কদর ছিল মায়ানদের কাছে। ভাস্কর্য তৈরির ক্ষেত্রেও মায়ানদের জুড়ি নেই। অপূর্ব সুন্দর, নিখুঁত কারুকার্যে পরিপূর্ণ ভাস্কর্য থেকে ধারণা করা যায় যে, অনেক আগে থেকেই মায়ান সভ্যতায় ভাস্কর্য চর্চার শুরু হয়। এমন অনেক কাঠের তৈরি ভাস্কর্য এবং হায়ারোগ্লিফিক প্যানেল আছে যা যুগ যুগ ধরে টিকে আছে। আবার কোন কোন শিল্পের অস্তিত্ব কালের স্রোতে বিলীনও হয়ে গেছে।

মায়ান সভ্যতায় ম্যুরাল চিত্রের অবদানও কম নয়। ম্যুরাল চিত্রের সাথে মায়ান সভ্যতার সম্পর্ক অনেক পুরনো। সান বারতোলোতে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ এবং ২০০ সালে নির্মিত বেশ কিছু ম্যুরাল চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। সুসংরক্ষিত এবং অক্ষত অবস্থায় পাওয়া ম্যুরাল চিত্রের মধ্যে বোনাম্পাক এ পাওয়া চিত্র উল্লেখযোগ্য।
মায়ান ক্যালেন্ডার
মায়ান ক্যালেন্ডার হল এক ধরনের ক্যালেন্ডার যেটা ব্যবহার করা হত প্রি-কলোম্বিয়ান মেসোআমেরিকাতে এবং গুয়েতেমালা, ভেরাক্রুজ, অয়াক্সাকা ও মেক্সিকোর চিয়াপাস এ এখনও এই ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়। মায়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তার চল কমপক্ষে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দী থেকে শুরু হয়েছিল। যাপোটেক, ওলমেক, মিক্সটেক এবং অ্যাজটেকদের মত অন্যান্য মেসোআমেরিকান সভ্যতার ক্যালেন্ডারের সাথে মায়ান ক্যালেন্ডার এর অনেক সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায়।

মায়ান ক্যালেন্ডার দুই ধরনের হয়ে থাকে- দ্য হাব বা সাধারণ ক্যালেন্ডার (৩৬৫ দিন, ১৮ মাস, মাসে ২০ দিন) এবং যোল্কিন বা পবিত্র ক্যালেন্ডার (২৬০ দিন, মাসগুলো ৩ টি ভাগে বিভক্ত, মাসে ২০ দিন)। হাব এবং যোল্কিন ক্যালেন্ডার একসাথে কাজ করে একই মেশিনের দুইটি অংশের মত। মায়ান ক্যালেন্ডারের মাসগুলোর দায়িত্ব ছিল আলাদা আলাদা দেবতাদের উপর। যেহেতু দেবতারা অমর, সেহেতু দেবতাদের কাজ ছিল তাদের নির্দিষ্ট মাসগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে শক্তির সঞ্চার করা। মায়ানদের এমন বিশ্বাস আর ক্যালেন্ডারগুলোর কারণেই হয়ত তাদেরকে রহস্যময় জাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথবা আসলেও মায়ানদের এমন কিছু রহস্য আছে যা তাদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে।
বর্তমান মায়া সভ্যতা
বর্তমান যুগে মায়ারা একই ভূমিতে বাস করছে এবং একই নদীতে যাতায়াত করে যে নদী দিয়ে এক সময় তাদের পূর্বপুরুষেরা ইউকাতান থেকে হন্ডুরাসে যাতায়াত করতো। মায়ারা এখনও তাদের পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছে এবং এখনও তাদের মধ্যে জীবনের চক্রাকার আবর্তনের বিশ্বাস বাঁচিয়ে রেখেছে।
