জুরাসিক যুগ ও ডায়নোসর-বৃত্তান্ত! (শেষ পর্ব)

0

প্রথম পর্ব পড়তে – এখানে ক্লিক করুন 

দ্বিতীয় পর্ব পড়তে – এখানে ক্লিক করুন 

মায়াসরা

মায়াসরা
মায়াসরা
Source: dreamstime.com

এরা ছিলো অত্যন্ত বিশালদেহী ডাইনোসর। কিন্তু দেহের আকৃতি ছিলো অনেকটা রাজহাঁসের মতো। অনন্য ডাইনোসর থেকে এরা স্বভাবেও কিছুটা ভিন্ন ছিলো। এরা সন্তানদের খুব যত্ন নিতো। মায়াসরা শব্দের অর্থই হচ্ছে “সন্তানবৎসল।“ সন্তানদের প্রতি  অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ ছিলো বিধায় এদের এই নাম দেয়া হয়েছে। মায়াসরা ছিলো তৃণভোজী। এদের দাঁত খুব শক্ত থাকার কারণে ছোটবেলা থেকেই বেশ শক্ত উদ্ভিদ খেতে পারতো। এরা চার পায়ে হাঁটতো এবং ডিম পেড়ে বংশবিস্তার করতো।

সরোপডস (sauropod)

সরোপডস
সরোপডস
Source: ThoughtCo

ডাইনোসরের আরো একটি বিশালদেহী প্রজাতি হলো সরোপডস। এরা দেখতে ছিলো কিছুটা বিচিত্র আকৃতির। দেহের তুলনায় মাথা বেশ ছোট ছিলো এবং লেজ ও গলার আকার ছিলো অতিশয় দীর্ঘ। এদের চারটি পা-ই ছিলো বেশ ভারি এবং সুগঠিত। তবে সামনের পা দুটো পেছনের পা থেকে একটু উঁচুতে থাকতো। এরা ছিলো স্থলজ ডাইনোসর। গাছের লতাপাতাই ছিলো এদের প্রধান খাদ্য। এরা ৪৬ ফুট থেকে ৫৯ ফুট পর্যন্ত লম্বা ছিলো।

প্যাচিকেফালোসোরাস (pachycephalosaurus)

প্যাচিকেফালোসোরাস
প্যাচিকেফালোসোরাস
Source: ArtStation

এরা দেখতে ছিলো বেশ অদ্ভুত। এদের সাথে অন্য কোনো ডাইনোসরের মিল খুঁজে পাওয়া যায় নি। “প্যাচিকেফালন” শব্দের অর্থ হচ্ছে “গম্বুজাকৃতির মাথা”। এদের মাথার খুলির উপরের অংশ দেখতে গম্বুজের মতো বলে এরকম নামকরণ করা হয়েছে। বিশাল এই গম্বুজটি হাড় দিয়ে তৈরি। তাছাড়া খুলির চারপাশে সাজানো ছিলো মালার মতো হাড়ের সারি।  এদের পেছনের পা দুটি সুগঠিত থাকলেও সামনের পাগুলো ছিল হাতের মতোই ছোট। ফলে এরা দুই পায়ের উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করতো।

স্ট্রুথিওমিমাস (Struthiomimus)

স্ট্রুথিওমিমাস
স্ট্রুথিওমিমাস
Source: es.prehistorico.wikia.com

এরা দেখতে ছিলো অনেকটা উটপাখির মতো। এদের পেছনের পাগুলো সুগঠিত হলেও সামনের পা দুটি ছিলো বেশ ছোট, দেখতে অনেকটা হাতের মতো। ফলে এরা দুইপায়ে ভর দিয়ে হাঁটতো। এছাড়া লম্বা গলা ও লেজের কারণে এদেরকে অবিকল উটপাখির মতোই দেখাতো। পেছনের পা দুটো শক্তিশালী হওয়ায় এরা খুব দ্রুত দৌড়াতে পারতো। আর সামনের পা দুটিকে হাতের মতো কোনো কিছু আঁকড়ে ধরতে ব্যবহার করতো। এদের হাত ও পায়ে তিনটি করে আঙুল ছিলো। আঙুলের নখ ছিলো প্রচণ্ড ধারালো। কিন্তু এদের কোনো দাঁত ছিলো না। ফলে এরা অন্যান্য ডাইনোসরদের ডিম চুরি করে খেয়ে জীবনধারণ করতো। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এদের আবাসস্থল ছিলো উত্তর আমেরিকা।

আর্কিকোটেরিক্স (archaeopteryx)

আর্কিকোটেরিক্স
আর্কিকোটেরিক্স
Source: TurboSquid

জুরাসিক যুগের ডাইনোসর পাখি নামে পরিচিত প্রথম পাখিটির নাম আর্কিকোটেরিক্স। এদের দুইটি পা ছিলো। প্রত্যেক পায়ে ছিলো তিনটি করে ধারালো নখ। তাছাড়া পাখা আর লেজ তো ছিলোই! পাখা দুটি ছিলো পাখির মতোই অসংখ্য পালকবিশিষ্ট। পাখি হলে কি হবে, এদের স্বভাব ছিলো ভয়ানক। এরা মূলত: মাংসাশী ছিলো। বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রায় ১৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে এরা পৃথিবীতে উড়ে বেড়াতো।

টেরোসর (pterosaur)

টেরোসর
টেরোসর
Source: DinoAnimals.com

টেরোসর শব্দের অর্থ হচ্ছে “উড়ন্ত গিরগিটি।“ আর্কিকোটেরিক্সের মতো এরাও আকাশে উড়তে পারতো। টেরোসর দেখতে ছিলো অনেকটা বাদুড়ের মতো, তবে বাদুড় নয়। এদের গলা ছিলো সরু এবং দেহের তুলনায় লম্বা। এছাড়া ঠোঁটও ছিলো অনেক লম্বা এবং সারসের ঠোঁটের মতো সরু। এদের চামড়া ছিলো পাতলা ঝিল্লী দিয়ে আবৃত। আর পাখা ছিলো দেহের তুলনায় বেশ বড়। পাখা দুটি ঘাড়ের কাছে দুই বাহু থেকে শুরু করে পেছনের পায়ের হাঁটু পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। এদের দুই পায়ে চারটি করে আঙুল ছিলো। প্রথম তিন আঙুলের অগ্রভাগে ছিলো ধারালো নখর।  আর চতুর্থ আঙুলের সাথে পাখা যুক্ত ছিলো। টেরোসরের ঘ্রাণশক্তি ছিলো অত্যন্ত প্রখর। কিন্তু সে তুলনায় দৃষ্টিশক্তি বেশ ক্ষীণ ছিলো। এরা ছিলো মাংসাশী।

(সমাপ্ত….)

 

তথ্যসূত্রঃ

বই- ডাইনোসরের পৃথিবী,

ম্যাগাজিন- বিজ্ঞানপত্রিকা,

Source Featured Image
Leave A Reply

Your email address will not be published.

sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More