ইতিহাসের একটা স্বাভাবিক ধারায় সবসময় বলা হয়ে থাকে, একটা রাজবংশের শাসনের গৌরবোজ্জ্বল সময় সর্বোচ্চ এক শতাব্দীকাল। কম বেশি সবসময় হয়েছে। অথচ শাহ বংশ আড়াই হাজার বছর ধরে প্রভাব প্রতিপত্তি সহকারে রাজত্ব করে আসছিলো ইরানে। ইরানের সেই একচ্ছত্র শাসন করা রাজবংশের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর হাতে। যে বিপ্লবের মাধ্যমে শাহ বংশের পতন ঘটেছিলো, তা ইতিহাসে ইরানের ইসলামি বিপ্লব নামে পরিচিত। ফরাসি বিপ্লব আর রুশ বিপ্লবের পর পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম যুগান্তকারী বিপ্লব হয়েছিলো ১৯৭৯ সালে, ইরানের তেহরানে।
বিপ্লবের কারণ:
রেজা শাহ পাহলভী শাহ বংশের সর্বশেষ শাসক। ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ সালে ইরানের শাসক হিসেবে শাহ বংশের সিংহাসনে বসেন। পৃথিবীতে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন বংশের শাসক তৎকালীন রেজা শাহ পাহলভী। বিপ্লবের শুরুটা হয়েছিলো মূলত ইরানের ভূখণ্ডে আবিষ্কৃত তেলের খনি গুলোর মালিকানা থেকে। শাহ ইরানের এসব মূল্যবান সম্পদ মার্কিন ও ব্রিটিশদের মালিকানায় রেখে বিলাস বহুল জীবন যাপনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
বিপ্লবের প্রাথমিক সূচনা:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর ইরানের ভূখণ্ডে প্রচুর তেল সম্পদ আবিষ্কার হয়। যা পরবর্তীতে ইরানের প্রধান সম্পদের একটিতে গিয়ে দাড়ায়। ইরানের ভূখণ্ডের এত এত তেল সম্পদ আবিষ্কারের মূলে ছিল ব্রিটিশ বিভিন্ন কোম্পানি। যার ফলে যত তেলের খনি আবিষ্কার হয়েছে, তার অধিকাংশের মালিকানা ব্রিটিশদের হাতে ছিল।
এদিকে ইরানের শাহ বংশের শাসকগোষ্ঠী ব্রিটিশদের থেকে সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছে। রেজা শাহ পাহলভী অত্যন্ত অহংকারী হয়ে উঠেছিলেন তখন। বিশেষ করে তখনকার শাহ বংশ পরিচালনার মূল কাঠি হয়ে রয়েছে ব্রিটিশরা। কথিত আছে, শাহ বংশের শাসকগণ অত্যন্ত বিলাস বহুল জীবন যাপন করতো, রাজপরিবারের স্ত্রীরা দুধের পানিতে গোসল করতো। ব্যক্তিগত রাজ কর্মচারী ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।
এমন সময়ে ইরানে জনপ্রিয় এক রাজনৈতিক নেতার আবির্ভাব ঘটে। মোসাদ্দেক হোসেন। মোসাদ্দেক শাহের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে চেষ্টা করেন। মোসাদ্দেকের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল তেল সম্পদ জাতীয়করণের। এমন জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ইরানি জনগণকে খুব দ্রুত আকর্ষণ করে। ফলে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে মোসাদ্দেক হোসেন।
মোসাদ্দেকের জয়ের ফলে হুমকির মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ইরান থেকে স্বল্প দামে তেল আমদানি। মোসাদ্দেকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইরানের তেল সম্পদ জাতীয়করণ করলে তেল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে প্রচুর অর্থ গুনতে হবে। তাই মোসাদ্দেকের এ জয় কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি তৎকালীন ক্ষমতাশালী যুক্তরাজ্যের উইন্সটন চার্চিল ও যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি ট্রুম্যান। তাদের উদ্যোগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা CIA ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা SIS অপারেশন ‘এজক্স’ নামে একটি সেনা বিপ্লবের নীল নকশা তৈরি করে।
CIA ও SIS লন্ডনে বসে অপারেশন ‘এজক্স’ এর নীল নকশা তৈরি করে। যার ফলশ্রুতিতে কয়েকদিনের মধ্যেই ইরানে এক সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। সেনাপতি ফজলুল্লাহ জাহেদী মোসাদ্দেক কে পদত্যাগ করিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তখনো মূল শাসন ক্ষমতা ইরানের রাষ্ট্রপ্রধান রেজা শাহ পাহলভীর হাতে। মোসাদ্দেক কে আটক করা হয়। ইরানের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন একরকম স্থগিত হয়ে যাচ্ছিলো তখনই।
ঠিক সেই মুহূর্তে, সেনা অভ্যুত্থানের পরদিনই সেনাবাহিনীতে আরেকটি কাউন্টার অভ্যুত্থান করে মোসাদ্দেক কে উদ্ধার করা হয়। রেজা শাহ পাহলভী তখন ইতালিতে পালিয়ে যায়।
তখনো CIA ও SIS এর পরিকল্পনা অনুযায়ী আবারো উত্থানের চেষ্টা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। দু’দিন পর আবারো সেনাবাহিনীতে বিপরীত অভ্যুত্থান ঘটাতে সক্ষম হয় CIA ও SIS। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সহায়তায় শাহ পাহলভী আবার ফিরে আসে ইরানে। এভাবে ইরানের পার্লামেন্টারি নিয়মে দেশের সম্পদ জাতীয়করণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় শাহ পাহলভীর শাসন আবারো সুদৃঢ় হয়।
চূড়ান্ত বিপ্লবের দিকে ইরান:
ইরানের তেল সম্পদ জাতীয়করণের জন্য মোসাদ্দেকের উত্থান ব্যর্থ করে দিয়ে শাহ পাহলভী আবারো ক্ষমতায় বসে। ক্ষমতা নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় শাহ এবার ইরানের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে ইরানে শাহ বংশের প্রভাব প্রতিপত্তি আবারো বাড়াতে চেষ্টা করেন। কিন্তু শাহ পুরোপুরি ভাবে হয়ে উঠেছিলেন পশ্চিমা সংস্কৃতি ভাবধারার। সেসময় ইরানে ধীরে ধীরে পশ্চিমা সংস্কৃতি, আচার আচরণ, অভ্যাস এসব প্রভাব ফেলতে শুরু করে। মুসলিম ভাবধারার ইরানে যা হয়ে উঠেছিলো বিভীষিকাময়।
মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম ভাবে আঘাত হানতে শুরু করে রেজা শাহ পাহলভী ও তাদের পরিবারের পশ্চিমা সংস্কৃতি চর্চার। তারা সবসময় পশ্চিমা ভাবধারার পোশাক পরে চলাফেরা করতেন। পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সকল ধরণের অনুষ্ঠানে পশ্চিমা নিয়মনীতি ব্যাবহার করা শুরু হলে মুসলমানরা তার প্রতিবাদ করতে আবার রাস্তায় ফিরে আসে শাহ পাহলভীর বিরুদ্ধে।
১৯৭৯ সালে ইরানের মুসলিম বিপ্লবের অন্যতম কারণ ইরানে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব। ধীরে ধীরে এ আন্দোলন হয়ে উঠে পশ্চিমা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে মুসলিম ধর্মীয় সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলন।
আয়াতুল্লাহ খোমেনী:
এমন সময় ইরান থেকে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনীর পুনরায় আবির্ভাব ঘটে। ইরানের এক স্বনামধন্য মসজিদের ইমাম ছিলেন। শাহ পাহলভী পশ্চিমা নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় ১৯৬৩ সালে ‘হোয়াইট রিভ্যুলেশানের’ মাধ্যমে খোমেনীকে তাকে শাহ পাহলভী গ্রেপ্তার করে নির্বাসনে প্রেরণ করে।
দীর্ঘ পনের বছর নির্বাসনে থাকার পর খোমেনী আবার ইরানে ফিরে আসেন শাহ পাহলভীর বিরুদ্ধে বিপ্লবের ডাক দিয়ে। আয়াতুল্লাহ খোমেনী শাহ পাহলভীর বিরুদ্ধে ১৯৭৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সমাবেশের ডাক দেন ইরানের তেহরানে।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে:
রেজা শাহ পাহলভী ভাবতেই পারেনি বিপ্লব এমন আকার ধারণ করতে পারে। আয়াতুল্লাহ খোমেনী নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন ৮ সেপ্টেম্বর। দিনটি ছিল শুক্রবার। জুমার নামাজের পর তেহরানে একত্রিত হয় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ মানুষ। খোমেনী শিয়া মতাবলম্বী হলেও এই সমাবেশে শিয়া সুন্নি সকলে শাহ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর নেতৃত্বে জড়ো হয় ইরানের তেহরানে। পাহলভী দিশেহারা হয়ে পড়ে। বিশাল জনসমাবেশ কে প্রতিহত করতে শাহ পাহলভীর বাহিনী নির্বিচারে গুলি শুরু করে বিপ্লবী কর্মীদের উপর। অসংখ্য মানুষ হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের জন্যে ইরানের ইতিহাসে এ দিনটি কুখ্যাত Black Friday নামে আজো স্মরণ করা হয়।
সেদিনের মত শাহ বিপ্লবীদের দমন করতে সক্ষম হন। প্রাথমিক ভাবে বিপ্লব স্তিমিত হয়ে যায়। সম্পূর্ণ ইরানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করতে শুরু করে। আয়াতুল্লাহ খোমেনী অভ্যন্তরে চূড়ান্ত বিপ্লবের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। দীর্ঘকালের চলমান রাজতন্ত্রের অবসান করার পক্ষে, ইরানে পশ্চিমা সংস্কৃতির বিপক্ষে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রভাব মুক্ত করে ইরানকে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র তৈরির পক্ষে জনমত সৃষ্টি করে। শাহ পাহলভী মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন বিপ্লব আর সম্ভব নয়। খোমেনী ৩ মাস অভ্যন্তরীণ প্রচারণা চালান। খোমেনী ইরান থেকে বের হয়ে প্যারিসের এক গ্রামে অবস্থান করেছিলেন তখন। এ সময় শাহ খোমেনীকে দমন করতে, তাকে আবার গ্রেপ্তার করতে অনেক চেষ্টা চালায়, কিন্তু সক্ষম হয়নি।
১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯। আয়াতুল্লাহ খোমেনী আবার শাহের বিরুদ্ধে এক গণ অভ্যুত্থানের ডাক দেন। ইতিহাসে এমন গণ অভ্যুত্থানের খুব একটা নজির নেই। লক্ষ লক্ষ জনতা ইরানের রাস্তায় চলে আসে।
শাহ পাহলভী তার সেনাবাহিনী দিয়ে এদের দমন করতে চেষ্টা করেন, কিন্তু সেনাবাহিনীর পক্ষে এত সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব ছিলো না। ১৬ জানুয়ারির মাত্র এক দিনের গণ অভ্যুত্থানে শাহ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। শাহের বন্ধুপ্রিয় রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও তখন শাহ পাহলভীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। শাহ পাহলভী আশ্রয়ের জন্য এদেশ ওদেশ করতে থাকে। ইতালিতে আশ্রয় চাইলেও তারা ফেরত দেয় তাকে। পরবর্তীতে শাহ মিশয়ে আশ্রয় নেন। মিশরে আশ্রিত অবস্থায় মাত্র ৬০ বছর বয়সে রেজা শাহ পাহলভীর মৃত্যু ঘটে।
ইসলামি বিপ্লবের ফলাফল:
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের শাসনের পূজারী, বিলাসবহুল জীবন যাপনে অভ্যস্ত, অত্যন্ত দাম্ভিক অহংকারী শাহ পাহলভীর পতনের সাথে ইরানে আড়াই হাজার বছরের শাহ রাজ বংশের পারিবারিক রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। আয়াতুল্লাহ খোমেনী ইরানের প্রাকৃতিক সম্পদ মার্কিন ও ব্রিটিশদের থেকে মুক্ত করে জাতীয়করণ করেন। এতে ইরান অর্থনৈতিক ভাবে আরো দ্রুত সচ্ছল হয়ে উঠে। তার নেতৃত্বে ইরান আধুনিক বিশ্বের শক্তিশালী মুসলিম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আয়াতুল্লাহ খোমেনী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
https://indiaph24.store/# indianpharmacy com
canadian pharmacy prices canadian pharmacies rate canadian pharmacies
mexican drugstore online: mexico pharmacy – mexican mail order pharmacies
https://canadaph24.pro/# best canadian pharmacy online
п»їbest mexican online pharmacies mexico pharmacy reputable mexican pharmacies online
http://mexicoph24.life/# mexican drugstore online
https://indiaph24.store/# indian pharmacy
canadianpharmacyworld com Certified Canadian Pharmacies canada discount pharmacy
https://indiaph24.store/# cheapest online pharmacy india
india pharmacy: Cheapest online pharmacy – reputable indian pharmacies
canadian pharmacy price checker canadian online pharmacy reviews medication canadian pharmacy
http://indiaph24.store/# top 10 pharmacies in india
top 10 online pharmacy in india Generic Medicine India to USA indian pharmacy online
mexican pharmaceuticals online cheapest mexico drugs mexican pharmacy
online canadian pharmacy review Prescription Drugs from Canada safe reliable canadian pharmacy
https://indiaph24.store/# reputable indian pharmacies
canadian world pharmacy: Large Selection of Medications from Canada – canadian online drugstore
the canadian pharmacy Prescription Drugs from Canada best canadian pharmacy to buy from
https://indiaph24.store/# india pharmacy mail order
https://canadaph24.pro/# canada drugs online reviews
best india pharmacy india online pharmacy top 10 pharmacies in india
https://indiaph24.store/# top 10 pharmacies in india
canadian pharmacy ltd canadian pharmacies canadian mail order pharmacy
https://indiaph24.store/# buy prescription drugs from india
cheapest pharmacy canada Large Selection of Medications from Canada safe canadian pharmacy
https://indiaph24.store/# top 10 online pharmacy in india
reputable mexican pharmacies online cheapest mexico drugs п»їbest mexican online pharmacies
http://canadaph24.pro/# canadian pharmacy reviews
online pharmacy india indian pharmacy india pharmacy mail order
mexican rx online pharmacies in mexico that ship to usa medicine in mexico pharmacies
canadapharmacyonline legit Large Selection of Medications from Canada canadian drug stores
http://mexicoph24.life/# pharmacies in mexico that ship to usa
http://canadaph24.pro/# legal canadian pharmacy online
indianpharmacy com buy medicines from India indian pharmacy paypal
http://indiaph24.store/# india pharmacy