আফ্রোদিতি হলো ভালোবাসা, সৌন্দর্য, চিরযৌবনের দেবী৷ হেসিয়ডের ‘THEOGONY’ অনুসারে তাঁর জন্ম সাইপ্রাস দ্বীপের পেফোসের জলের ফেনা থেকে৷ কল্পনা করা হয় তাঁর জন্ম জলের ফেনা থেকে হয়েছে যখন দানব ক্রোনাস তার পিতা ইউরেনাসকে হত্যা করে এবং জননতন্ত্র কেটে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে৷
আবার, হোমারের ‘ইলিয়াড’ অনুসারে আফ্রোদিতি জিউস এবং ডিয়নের কন্যা৷ এমন অনেক গ্রীক দেবদেবী আছে যাদের উৎপত্তির বহু গল্প পাওয়া যায়৷ অনেক দেবতারা বিশ্বাস করতো আফ্রোদিতির সৌন্দর্য এতই মোহনীয় ছিলো যে দেবতাগন নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়তো তাঁকে নিয়ে৷ তাঁর সৌন্দর্যের আভা দেবতাদের মধ্যে যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ তৈরী করতো৷ ঠিক এই কারনেই জিউস আফ্রোদিতিকে বিয়ে দিয়েছিল হেপাইসটাসের সাথে, কারন হেপাইসটাসের কোন প্রতিদ্বন্দী ছিলো না তার অসুন্দর মুখাবয়ব ও বিকলাঙ্গতার জন্য৷

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, হেপাইসটাসের সাথে বিয়ে হওয়া সত্ত্বেও তাঁর অনেক প্রেমিক ছিলো৷ সে তালিকায় মানুষ ও দেবতা উভয়ই ছিলো, যেমন যুদ্ধের দেবতা এরেস৷ সে আরো ভূমিকা রেখেছিলো ঈরোস এবং সাইকি এর গল্পে, যেখানে সাইকি এর প্রশংসাকারিরা দেবী আফ্রোদিতির আরাধনা করার পরিবর্তে তাঁকে ভর্ৎসনা করতো৷ এতে প্রতিহিংসায় সে ঈরোসকে দিয়ে তার প্রতিশোধ নেয়ার ছক কষেছিলো৷ কিন্তু ভালবাসার দেবতা ঈরোস উল্টো সাইকির প্রেমে পড়ে গেল৷
অতঃপর, আফ্রোদিতি ছিলেন একই সাথে এডোনিসের প্রেমিকা এবং সৎ মা৷ এই ঘটনা একটা বিবাদের সৃষ্টি করলো পারসিফোনির সাথে, যাতে জিউস হুকুম দিলো এডোনিসকে এক বছরের অর্ধেক সময় অতিবাহিত করতে হবে আফ্রোদিতির সাথে বাকি অর্ধেক অতিবাহিত করতে হবে পারসিফোনির সাথে৷
আফ্রোদিতি সম্পর্কে কিছু তথ্য:
১. আফ্রোদিতি ছিলেন ভালবাসা, সৌন্দর্য ও জননের দেবী৷
২.আফ্রোদিতির জন্মের দুইটি গল্প আছে৷ প্রথমটি খুবই সহজ, সে জিউস এবং ডিয়ন এর কন্যা৷ দ্বিতীয় গল্প অনুসারে তাঁর জন্ম হয়েছে সমুদ্রের জলের ফেনা থেকে৷
৩. হেপাইসটাসের সাথে আফ্রোদিতির বিয়ে হলেও তাঁর মনের ইচ্ছের সাথে কখনো হেপাইসটাসের সংকল্প মিলেনি ৷
৪. সে এবং এরেস জন্ম দিয়েছিলো হারমোনিয়াকে, যে অবশেষে বিবাহ করেছিলো হেরেডোটাসকে ৷
৫. সে ছিলো হারমাফ্রোদিতাসের মা, এই সন্তানের পিতা ছিলো হেরমেস৷
৬. আফ্রোদিতি এবং তাঁর পুত্র ঈরেস সম্মিলিত হয়ে জিউসের ইউরোপা নামে একজন মানুষের প্রেমে পড়ার কারন সৃষ্টি করেছিলো৷
৭. আফ্রোদিতি ভালবেসেছিলো এডোনিসকে৷ সে তাকে দেখেছিলো যখন তার জন্ম হয় এবং মনে মনে বাসনা রেখেছিলো যে এডোনিস তাঁর হবে৷ সে পারসিফোনিকে এডোনিসের দেখভালের দ্বায়িত্ব দিয়েছিলো কিন্তু পারসিফোনি নিজেও এডোনিসের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো, এবং তাকে ফেরত দিতে চাইছিলো না৷ এমতাবস্থায়, জিউস মধ্যস্থতায় এগিয়ে এলেন এবং দরবার করে রায় দিলেন এডোনিস দুই জনের সাথেই থাকবে, বছরের অর্ধেক সময় অতিবাহিত করবে একজনের সাথে, বাকি অর্ধেক সময় আরেকজনের সাথে৷
৮. আফ্রোদিতি রাজহাঁস অঙ্কিত এক ধরনের বাহন ব্যবহার করতেন যেটা হাওয়ায় ভেসে চলে৷

৯. আফ্রোদিতি, হেরা, এথেনা এই তিন জন শীর্ষ প্রতিযোগী ছিলো একটি স্বর্ণের আপেলের জন্যে যেটিতে খোদাই করে লেখা ছিলো “সবচেয়ে সুন্দরীর জন্য”৷ জিউসকে বললো এই প্রতিযোগীতার বিচারকার্য পরিচালনা করতে কিন্তু তিনি অপারগতা প্রকাশ করলেন৷ তারপর, ট্রয় নগরের রাজার পুত্র প্যারিস এই প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব নিলেন৷ প্রত্যেক দেবীই তাকে প্রতিদানে অনেক কিছু দেবার অঙ্গিকার করলেন, কিন্তু প্যারিস আফ্রোদিতির পক্ষে রায় দিলেন৷ প্যারিসের এই বিচারকার্যের গল্পকে বিবেচনা করা হয় ট্রোজান যুদ্ধের পিছনে প্রধান কারন হিসেবে৷
১০. ট্রোজান যুদ্ধের সময় আফ্রোদিতি প্যারিসের পক্ষে লড়াই করে ৷
১১. আফ্রোদিতি প্যারিসকে রক্ষা করেছিলো মেনেলাউসের কাছ থেকে, সে মেঘ দিয়ে তাকে ঢেকে ফেলেছিলো এবং ট্রয় নগরীতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো৷

Source: Wix.com
১২. আফ্রোদিতি কোমরে বাঁধা এক জাদুর পেটি অর্জন করেছিলো, একদা হেরা সেটা ধার নিয়েছিলো জিউসকে প্রলুব্ধ করতে যাতে সে ট্রোজান যুদ্ধে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে৷
১৩. আফ্রোদিতি হারমোনিয়াকে একটি গলার হার দিয়েছিলো যেটি পরবর্তী প্রজন্মের বিপর্যয় বহন করে৷
১৪. পতিতারা ভালবাসার দেবীকে তাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিবেচনা করতো৷ কেননা দেবীর একাধিক প্রেমিক ছিলো৷
১৫. আদি গ্রীক শিল্প দেবীকে নগ্নরূপে অঙ্কিত করেছিলো৷
১৬. আফ্রোদিতি ছিলো বিখ্যাত ভাস্কর্য “ভেনাস ডি মেলো” এর মডেল৷
তথ্যসূত্রঃ
http://www.majorolympians.com/aphrodite.html
avodart without prescription order tamsulosin 0.4mg generic buy zofran 4mg online cheap
buy levaquin 250mg levofloxacin 250mg cost
[…] আফ্রোদিতি-প্রতিশ্রুত সুন্দরীর সন্ধানে প্যারিস সাগর পাড়ি দেবে। বোন ক্যাসান্ড্রা তাকে সতর্ক করল এবং অনুনয় করে বলল, এ যাত্রা ট্রোজানদের জন্য দুঃখ বয়ে আনবে। বোনের কথা অগ্রাহ্য করে খ্রিস্টপূর্ব ১১৯৪ সালে ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস ও বড় ভাই হেক্টর ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি করার জন্য স্পার্টায় আসেন।প্রাচীন গ্রিস ও ট্রয় (বর্তমান তুরস্ক) ছিল পাশাপাশি দুই রাষ্ট্র।তবে এর মাঝে ছিল বিখ্যাত এজিয়ান সাগর। স্পার্টার রাজা মেনিলাস দুই রাজপুত্রকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে বরণ করে নেন। তাদের আগমনে রাজ্যকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। যুবরাজদের সম্মানে নৈশভোজেরও আয়োজন করা হয়। আর এই নৈশভোজের সময়ই যুবরাজ প্যারিসের সঙ্গে পরিচয় ঘটে অনিন্দ্যসুন্দরী হেলেনে র। মেনিলাস নিজেই স্ত্রী হেলেন কে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। কিন্তু কে জানত এই পরিচয়ই জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলে পরিণত হবে মেনিলাসের। ব্যবসায়িক আলোচনার জন্য স্পার্টায় প্রায় ২০ দিন অবস্থান করেন প্যারিস ও হেক্টর। বড় ভাই হওয়ার ফলে বাণিজ্যসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হেক্টরের ঘাড়েই ন্যস্ত থাকত। রাজা মেনিলাস আর হেক্টরেরর বানিজ্য-সংক্রান ্ত ব্যস্ত সময় কাটাতেন আর প্যারিস গোপনে দেখা করতেন হেলেনের সঙ্গে। প্রথম দেখাতেই হেলেনের রূপ বিমোহিত করেছিল প্যারিসকে। হেলেনের প্রেমে পাগল ট্রয় রাজপুত্র প্যারিসও ছিলেন সুপুরুষ। প্যারিসের চেহারা, শরীরী গঠন সবকিছুই আকর্ষণ করতে শুরু করে হেলেনকে। অল্প সময়ের মধ্যেই হেলেনও প্যারিসের প্রতি প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েন। এদিকে হেক্টরও বানিজ্য-সংক্রান্ত কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন। এবার বিদায়ের পালা। ভোর হলেই তারা রওনা দেবেন ট্রয়ের উদ্দেশ্যে। রাজা মেনিলাসের আপ্যায়নেরও কোনো কমতি ছিল না। রাজকীয় খাবার-পানীয় আয়োজনের পাশাপাশি ছিল সুন্দরী রমণীদের আতিথেয়তা। নর-নারী, প্রহরী-রাজা, হেক্টর ও ট্রয়ের অতিথিরা যখন আমোদ-প্রমোদ আর নাচ-গানে বুঁদ, প্যারিস তখন চুপিসারে চলে গেলেন হেলেনের ঘরে। হেলেনও যেন প্যারিসের অপেক্ষায়ই প্রহর গুনছিলেন। প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়ে দুজনেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন।অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর পর হেলেনকে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলেন প্যারিস। ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা থাকলেও প্রেমের টানে হেলেনও রাজি হলেন যেতে। হেক্টর এসবের কিছুই জানতেন না। যথারীতি অতিথিদের বিদায় জানাল স্পার্টাবাসী। তখনো কেউ জানত না তাদের প্রিয় রানীকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন ট্রয়ের রাজকুমার প্যারিস। এজিয়ান সাগরের মাঝপথে এসে প্যারিস হেক্টরকে বলেন, হেলেন তাদের সঙ্গে এসেছেন। প্যারিসের কথা শুনে হতবাক হেক্টর! রাগে, ক্ষোভে জাহাজ স্পার্টার দিকে ঘোরানোর নির্দেশ দিলেন নাবিকদের।কিন্তু প্যারিসের অনুরোধ আর কান্নায় হেক্টর নিজের মত পরিবর্তনে বাধ্য হন। এদিকে স্পার্টায় ছড়িয়ে পড়ে প্যারিস হেলেনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন ট্রয়ে। […]