আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়ার জেলা শহর হলিউড। লস অ্যাঞ্জেলেস এর উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত এই শহর পূর্বে হাইপেরিয়ন এভিনিউ এবং রিভারসাইড ড্রাইভ, দক্ষিণে বেভারলি বুলিভার্ড, উত্তরে সান্তা মনিকা পর্বতমালার পাদদেশ এবং পশ্চিমে বেভারলি হিলস দিয়ে ঘেরা। হলিউডের মধ্যে যে সকল এলাকা অন্তর্ভুক্ত সেগুলো হল- ফ্র্যাঙ্কলিন ভিলেজ, লিটল আমেরিকা, স্পলডিং স্কয়ার, থাই টাউন এবং ইয়ুকা করিডোর।
ইতিহাস
১৮৫৩ সালের কথা। হলিউডের প্রথম বাড়িটি ছিল মাটির ইটের তৈরি। বাড়ি না বলে কুঁড়ে ঘর বলাই সঠিক হবে। বাড়িটি ছিল লস অ্যাঞ্জেলেস এর কাছে একটি এলাকায়। ১৮৭০ সালের মধ্যে হলিউডে কৃষিভিত্তিক সমাজের বিস্তার ঘটে। “হলিউডের পিতা” হিসেবে খ্যাত এইচ. জে. হোয়াইটলির ডায়রি থেকে জানা যায় যে, ১৮৮৬ সালে হানিমুনের সময় তিনি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে নিচের উপত্যকা দেখছিলেন। তখন এক চীনা লোক ঘোড়ার গাড়িতে কাঠ নিয়ে সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। তিনি সেই চীনা লোকের গন্তব্য কোথায় জিজ্ঞাসা করলেন। তখন লোকটি উত্তর দিল, “ I holly-wood” অর্থাৎ লোকটি কাঠ টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে হোয়াইটলির মাথায় নতুন শহরের জন্য নাম ঢুকে গেল। তিনি ঠিক করলেন নতুন শহরটির নাম দেবেন হলিউড, যেখানে ‘হলি’ প্রতিনিধিত্ব করবে ইংল্যান্ড এর এবং ‘উড’ প্রতিনিধিত্ব করবে তাঁর স্কটিশ ঐতিহ্যের।
হোয়াইটলি ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি হলিউডকে কৃষি এলাকা থেকে রাতারাতি ধনী এবং জনপ্রিয় একটি এলাকায় পরিণত করেন। ২০ শতকের শুরুতে তিনি নতুন শহর হলিউডে টেলিফোন, বিদ্যুৎ এবং গ্যাস লাইন নিয়ে আসেন। ১৯১০ সালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির উৎস না থাকার কারণে হলিউডের বাসিন্দারা লস অ্যাঞ্জেলেস এর সাথে একত্রিত হয়।

Source: cheapflightslab.com
হলিউডে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা
১৯০৮ সালে প্রথম দিকের সিনেমাগুলোর একটি, দ্য কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো এর কাজ শিকাগোতে শুরু হয়ে শেষ হয়েছিল হলিউডে। ১৯১১ সালে সানসেট বুলিভার্ডের একটি অংশে হলিউডের প্রথম স্টুডিও নির্মিত হয় আর তার পরপরই সেখানে প্রায় ২০ টি কোম্পানি সিনেমা প্রযোজনার কাজ শুরু করে। ১৯১৩ সালে সিসিল বি ডে মিল, জেস ল্যাস্কি, আর্থার ফ্রিড এবং স্যামুয়েল গোল্ডউইন মিলে জেস ল্যাস্কি ফিচার প্লে কোম্পানি (পরবর্তীতে প্যারামাউন্ট পিকচারস) গঠন করেন। ১৯১৫ সালের মধ্যে আমেরিকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় হলিউড। তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে ডি. ডব্লিউ. গ্রিফিথ, গোল্ডউইন, অ্যাডল্ফ জুকর, উইলিয়াম ফক্স, লুইস বি. মেয়ার, ডেরিল এফ. জেনাক এবং হ্যারি কোন এর মত ব্যক্তিবর্গ টুয়েনটিথ সেঞ্চুরি-ফক্স, মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার, প্যারামাউন্ট পিকচারস, ওয়ার্নার ব্রাদার্স এবং অন্যান্য বড় বড় ফিল্ম স্টুডিওর হর্তা-কর্তা ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর হলিউডের বাইরে ফিল্ম স্টুডিও গুলো কাজ করতে শুরু করে এবং “লোকেশনে” ফিল্মিং এর চল শুরু হয়। টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির উত্থানের পর ১৯৬০ সালের মধ্যে হলিউড হয়ে উঠে আমেরিকান নেটওয়ার্ক টেলিভিশন এন্টারটেইনমেন্ট এর রাজত্ব।

ফিল্ম স্টুডিওর বাইরে অন্যান্য আকর্ষণ
হলিউডের ফিল্ম স্টুডিওর বাইরে হলিউডের বৈশিষ্ট্যধারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলো হল- হলিউড বোল( ১৯১৯; প্রাকৃতিক মুক্তমঞ্চ, ১৯২২ সাল থেকে ব্যবহৃত), গ্রিফিথ পার্কের গ্রীক থিয়েটার, মান এর চাইনিজ থিয়েটার( সেলিব্রিটিদের হাত এবং পায়ের ছাপ সম্বিলিত ফোরকোর্ট এবং হলিউড ওয়েক্স মিউজিয়াম( ৩৫০ টির বেশি মোমের তৈরি বিখ্যাত শিল্পীদের মূর্তি)।

হলিউড সাইন
হলিউডের স্পষ্ট প্রতীক হিসেবে পাহাড় চূড়ার হলিউড সাইনকেই ধরা হয়। ১৯২৩ সালে হলিউড হিলসে সর্ব প্রথম এই সাইন তৈরি করা হয়, যা পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে পুনঃসংস্কার করা হয়। সাইনটির সম্পূর্ণ রূপ মূলত ছিল “হলিউডল্যান্ড”, প্রাথমিকভাবে যা দায়িত্ব পালন করতো এলাকার হাউজিং ডেভেলপমেন্টের বিজ্ঞপ্তি হিসেবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ১৯৪০ সালে সংস্কারের সময় “ল্যান্ড” অংশটি সরিয়ে ফেলা হয়। আর এভাবেই এই সাইনটি হলিউড জেলার নির্দেশক হিসেবে বর্তমানে বিবেচ্য।
হলিউডের জনসংখ্যা
হলিউডের আশেপাশে বড় পর্দা এবং ছোট পর্দার বহু তারকার বাস। তারকা ছাড়াও হলিউডে সাধারণ জনগণ বাস করে। ২০০০ সালের জরিপ অনুযায়ী, হলিউডের ৩.৫১ বর্গমাইল এলাকায় মোট ৭৭,৮১৮ জন মানুষ বাস করে এবং প্রতি বর্গমাইলে বাস করে ২২,১৯৩ জন মানুষ। ২০০৮ সালের জরিপ অনুযায়ী জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫,৪৮৯ জন। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক দিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরগুলোর মধ্যে ৭ম স্থান দখল করে আছে হলিউড। হলিউডে বিভিন্ন জাতির বসবাস। ২০০০ সালের জরিপ অনুযায়ী, হলিউডে ৪২.২% ল্যাটিনো, ৪১% নন-হিস্প্যানিক হোয়াইট, ৭.১% এশিয়ান, ৫.২% ব্ল্যাক এবং ৪.৫ % অন্যান্য জাতির বাস।
হলিউডে প্রযোজিত জনপ্রিয় কিছু চলচ্চিত্র
হলিউডের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই প্রযোজিত হয়েছে ওয়ার্নার ব্রাদার্স, সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট, ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ, প্যারামাউন্ট পিকচার্স, এন বি সি ইউনিভার্সাল এন্টারটেইনমেন্ট, ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স এর মত বড় বড় ফিল্ম স্টুডিও দ্বারা। এছাড়াও বেশ কিছু ছোট ছোট প্রযোজক কোম্পানি রয়েছে যারা বেশ ভাল ভাল সিনেমার প্রযোজনা করছে। এমন কয়েকটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের তালিকা দেয়া হল-
- স্কুল ডেইজ ( ১৯২১, ওয়ার্নার ব্রাদার্স, তৎকালীন ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র)
- টাইগার রোজ( ৯ ডিসেম্বর, ১৯২৩; ওয়ার্নার ব্রাদার্স, তৎকালীন সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র)
- এ মিড সামার নাইটস ড্রিম ( ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৫; ওয়ার্নার ব্রাদার্স, একাডেমি অ্যাওয়ার্ড এর জন্য মনোনীত)
- ক্যাসাব্লাঙ্কা ( ২৬ নভেম্বর, ১৯৪২; ওয়ার্নার ব্রাদার্স, একাডেমী অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত)
- আইস এজ (১৫ মার্চ,২০০২; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)
- আনফেইথফুল (১০ মার্চ, ২০০২; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)
- মি. এন্ড মিসেস স্মিথ (১০ জুন, ২০০৫; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)

- ট্রান্সপোর্টার ২ ( ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৫; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)
- আভাটার ( ১৮ ডিসেম্বর, ২০০৯; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)
- লাইফ অব পাই ( নভেম্বর ২৩, ২০১২; ফক্স এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ)
- হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন ( ২৬ মার্চ, ২০১০; প্যারামাউন্ট পিকচার্স)
- দ্য বিগ শর্ট ( ১১ ডিসেম্বর ২০১৫; প্যারামাউন্ট পিকচার্স)
- দ্য উলফ অব ওয়াল স্ট্রীট ( ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩; প্যারামাউন্ট পিকচার্স)
purchase dutasteride without prescription tamsulosin pill buy zofran 4mg generic
purchase levofloxacin online cheap order levaquin 250mg pill