জিম্বাবুয়ে, আফ্রিকার অতি পরিচিত একটি দেশ। ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে জড়িত একটি নক্ষত্র, রবার্ট গ্যাব্রিয়েল মুগাবে। ব্রিটিশ থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু সময়ের পালাবদলে ক্ষমতার মসনদে বসে সেই নেতা রূপান্তরিত হলেন একজন স্বৈর শাসকে। দম্ভ করে বলেছিলেন, “কেবল ঈশ্বরই আমাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে”।
জন্ম ও বাল্যকালঃ
তৎকালীন দক্ষিণ রোডেশিয়ার উত্তর-পশ্চিমের শহর হারারের জিম্বা জেলার, কুতামা মিশনারি গ্রামে ১৯২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন রবার্ট মুগাবে। পিতামাতা উভয়েই ক্যাথলিক রোমান ছিলেন। তার পিতা পেশায় ছিলেন ছুতার মিস্ত্রী। তার মা ছিলেন স্থানীয় মিশনারি স্কুলের শিক্ষক। ছয় ভাই বোনের মধ্যে মুগাবে তৃতীয়। বাল্যকালেই বড় দুই ভাইকে হারায় মুগাবে পরিবার। পরিবারের দায়িত্ব ভার সামলাতে, ১৯৩৪ সালে পরিবার সহ বুলাওয়ে গমন করেন। বাল্যকালেই যুক্ত হতে হয় কাজের সাথে।
শিক্ষা জীবনঃ
ব্রিটিশ কলোনির অন্তর্গত রোডেশিয়ার (জিম্বাবুয়ে) শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই নাজুক ছিল। রবার্ট মুগাবে ভাগ্যবান ছিল যে, তার মা একজন শিক্ষক ছিলেন। ফলশ্রুতিতে অন্যান্য বালকদের চেয়ে মুগাবের শিক্ষা জীবন বেশ সমৃদ্ধ ছিল। মিশনারি স্কুলেই তার পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়। মিশনারি স্কুলের ফাদার ও হায়া মুগাবে পড়াশোনার বিষয়ে তাগিদ দিতেন। ফাদার তাকে “চালাক বালক” বলে ডাকতেন। ফাদারের অনুপ্রেরণায় মুগাবে পড়াশোনা চলমান রেখে ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় ভর্তি হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই মুগাবে ১৯৫১ সালে ইতিহাস ও ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তারপর তিনি নিজ শহরে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। শিক্ষকতা করার মধ্যেই, ১৯৫৩ সালে তিনি শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৫৫ সালে মুগাবে রোডেশিয়ার উত্তরাঞ্চলে গমন করেন এবং স্থানীয় ট্রেনিং কলেজে চার বছর অতিবাহিত করেন। তারপর তিনি মনোনিবেশ করেন অর্থনীতির উপর ডিগ্রী অর্জন করবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রথমে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ও পরে ঘানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি ঘানার সেন্ট মারিজ ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং এখানে তার প্রথম স্ত্রী সলি হেফ্রনের সাথে পরিচিত হন। ঘানায় অবস্থান কালে তিনি মার্ক্সবাদী হয়ে উঠেন।
তাছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে দূরশিক্ষন প্রকল্পের মাধ্যমে বহু ডিগ্রী অর্জন করেন। এমনকি তিনি কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আইন বিষয়ে দুইটি ডিগ্রী অর্জন করেন।
পরবর্তীতে তিনি আরো বহু সম্মান সূচক ডিগ্রী অর্জন করেন যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ডিগ্রী ধারী রাষ্ট্র প্রধানের মর্যাদা দেয়।

রাজনৈতিক জীবনঃ
১৯৬০ সালে মুগাবে ছুটিতে দেশে ফিরে আসেন এবং তার মাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার ব্রত গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন, হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারকে বাসস্থান চ্যুত করছে ব্রিটিশ সরকার। একই সাথে চালাচ্ছে নির্মম অত্যাচার। কৃষ্ণাঙ্গদের পরিবর্তে শ্বেতাঙ্গ জাতিকে সরকার স্থানান্তরিত করছে। সরকার ক্ষমতা থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের অবাঞ্ছিত করে এবং তাদের অধিকার হরণ করে। স্বজাতির অধিকার হরণ মুগাবেকে চরমভাবে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তিনি এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার মনস্থির করেন। হারারে টাউন হলে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায়, মুগাবে জ্বালাময়ী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তাদের বলেন, কীভাবে মার্ক্সবাদের মাধ্যমে ঘানার জন-সাধারণ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এটিই ছিল রাজনীতির মাঠে মুগাবের পদার্পণের প্রথম ধাপ।
মুগাবে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। মুগাবে ন্যাশনাল ডেমোক্রেট পার্টির সম্পাদক নির্বাচিত হন। পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন জসুয়া নিকোমো। স্বাধীনতার দাবিকে জোরালো করতে মুগাবে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করেন। কিন্তু ১৯৬১ সালে সরকার ডেমোক্রেট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ততদিনে ডেমোক্রেট পার্টির বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী সৃষ্ট হয়ে যায়। দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান পিপলস ইউনিয়ন’। নিকোমোকে জাতিসংঘ আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, নিকোমো সংবিধান পরিবর্তন করার অনুরোধ করেন এবং সংখ্যা গরিষ্ঠদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। সময় চলে যায়, কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন না দেখে মুগাবে হতাশ হয়ে পড়েন।
এপ্রিল ১৯৬১, রবার্ট মুগাবে গঠন করেন গেরিলা বাহিনী। তিনি গেরিলা আন্দোলন করার মনস্থির করেন। তিনি ঘোষণা করেন, “আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করব, আমরা আমাদের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।”

ZANU গঠনঃ
১৯৬৩ সালে, মুগাবে ও নিকোমোর সাবেক কিছু সমর্থক মিলে তানজানিয়াতে গঠন করে “জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন” (ZANU) । রোডেশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে মুগাবে ও তার সহযোগীদের। এরপর টানা দশ বছর জেলে কাটাতে হয় মুগাবে কে।
জেলে থাকা অবস্থায় মুগাবে গেরিলা বাহিনীর সাথে গোপনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন এবং তাদের রোডেশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল মুক্ত করার নির্দেশ দেন। ১৯৭৪ সালে নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইয়ান স্মিথ মুগাবেকে মুক্তি দেন এবং তাকে উত্তরাঞ্চলে প্রস্থান করেন। কিন্তু মুগাবে গোপনে বর্ডার ক্রস করে গেরিলা বাহিনীর সাথে মিলিত হন। শুরু হয় গোপনে গেরিলা ট্রেনিং এবং মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি। ১৯৭৯ সালে জিম্বাবুয়ের অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে যায়, গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর মধ্যেই ইয়ান স্মিথ মুগাবের সাথে সমঝোতার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন।

১৯৮০ সালে গেরিলা সংগ্রাম সফল হয়, দক্ষিণ রোডেশিয়া মুক্ত হয় ব্রিটিশ শাসন থেকে। রবার্ট মুগাবে নতুন স্বাধীন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়ে রবার্ট মুগাবে ও জসুয়া নিকোমো। ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ১৯৮৫ সালে মুগাবে আবার নির্বাচিত হন। মুগাবের সমর্থকেরা শরণার্থীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। অবশেষে সমঝোতা হয় মুগাবে ও নিকোমোর মধ্যে। তারা গঠন করেন নতুন জোট ZANU-Patriotic Front (ZANU-PF); মনোযোগ দেন দেশের অর্থনীতি বিনির্মাণে।
রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণঃ

সমঝোতা চুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জসুয়া নিকোমোকে তিনি তার সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
কৃষকদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করতে থাকেন। পাঁচ বছর পূর্ণ হবার পর দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাড়াতে শুরু করে। মুগাবে বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, নির্মাণ করেন স্কুল প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল সহ বহু প্রতিষ্ঠান।

এরই মাঝে তার প্রথম স্ত্রী সলি হেফ্রন পরলোক গমন করেন। তিনি মর্মাহত হন, পরে আবার দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রেস মারুফুকে বিয়ে করেন।
সাল ১৯৯৬, জিম্বাবুয়ের জনগণ তার বিভিন্ন সিদ্ধান্তে অসন্তোষটি প্রকাশ করে। তারা তাকে দুর্নীতি বাজ বলে অভিহিত করে। শ্বেতাঙ্গদের জমি জোর পূর্বক দখল ও তাদের অধিকার হরণকে জনগণ মেনে নেয় না। শ্বেতাঙ্গদের প্রতি তার বিরূপ মনোভাব জনগণকে বিব্রত করে। মুগাবের একক পার্টির ক্ষমতায়ন নিয়ে সংবিধান পরিবর্তন না করার ঘোষণা জন মনে তাকে স্বৈরাচারী রূপে চিহ্নিত করে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে ধর্মঘট মুগাবেকে বিব্রত করে। জিম্বাবুয়ের মুদ্রার মান ইতিহাসের সবচেয়ে নিম্নমানে পৌঁছায়। মুগাবের অনুগত সরকারী কর্মকর্তাদের উচ্চ বেতনও জনগণকে তীব্র ভাবে ক্ষিপ্ত করে। ১৯৯৮ সালে মুগাবে অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর কাছে জমি অধিগ্রহণ করার উদ্দেশ্যে অর্থ সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু উন্নত রাষ্ট্রগুলো তাকে গ্রাম্য অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেয়, কিন্তু মুগাবে তা প্রত্যাখ্যান করলে অর্থ প্রাপ্তি বন্ধ হয়ে যায়।

২০০০ সালে মুগাবে একটি আইন পাশ করে যে ব্রিটিশ সরকার কৃষ্ণাঙ্গদের যে জমি অধিগ্রহণ করেছিল তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তার এই বিশেষ আইন পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ২০০২ সালে আয়োজিত নির্বাচনে তিনি আবার জয় লাভ করেন, তবে আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনে। মুগাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জিম্বাবুয়েতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। একইসাথে জিম্বাবুয়ের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে গিয়ে পৌঁছায়।
দুর্ভিক্ষ, মহামারী, এইডস ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয় জিম্বাবুয়ে। বেকারের সংখ্যা দাড়ায় শতকরা ৭০ ভাগে। এত কিছুর পরও মুগাবে তার ক্ষমতা ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর। শিক্ষার হার নেমে দাড়ায় ১০ ভাগে।
শ্বেতাঙ্গদের প্রতি তার চরম ক্ষোভ ছিল। তার এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, “বর্ণ বাদ ততদিন শেষ হবেনা, যতদিন সাদা গাড়িগুলো কালো চাকা ব্যবহার করবে। বর্ণ বাদ ততদিন শেষ হবেনা, যতদিন মানুষ কালোকে মন্দ ভাগ্য আর সাদাকে শান্তির প্রতীক বলে গণ্য করবে। বর্ণ বাদ ততদিন শেষ হবেনা, যতদিন মানুষ বিয়েতে সাদা পোশাক আর শেষ কৃত্যে কালো পোশাক পড়বে। বর্ণ বাদ ততদিন শেষ হবেনা, যতদিন বিলখেলাপীরা কালো তালিকাভুক্ত হবে, সাদা নয়। এমনকি স্নুকার খেলার সময়, আপনি ততক্ষণ জিতবেন না, যতক্ষণ আপনি কালো বলটিকে না ফেলবেন, আর সাদা বলটাকে অবশ্যই টেবিলে থাকতে হবে। কিন্তু আমি থোড়াই পরোয়া করিনা। যতক্ষণ আমি আমার কালো পশ্চাৎ দেশটা সাদা টয়লেট টিস্যু দিয়ে মুছতে পারছি, ততক্ষণ আমার কোন সমস্যা নেই!”
২০০৫ সালের সংসদীয় নির্বাচনেও কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখেন। অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় বিরোধী সমর্থকদের। মুদ্রাস্ফীতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।
প্রচলন হয় শত বিলিয়ন ডলারের মুদ্রা।

২০০৮ সালের আয়োজিত নির্বাচনে মুগাবে পরাজিত হলেও নাটকীয়ভাবে তিনি পুনরায় ভোট গ্রহণের আহবান করেন। জুনে আয়োজিত নির্বাচনে মুগাবে বিজয়ী হয়। তবে মুগাবে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনের পূর্বেই বিরোধী নেতা ও কর্মীদের হত্যা ও বন্দি করেন। যা বিরোধী নেতা কর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভীতি সঞ্চার করে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মুগাবে বিরোধী দলীয় নেতা মর্গান সভানজিরাই এর সাথে সমঝোতা চুক্তি করেন। তারা ক্ষমতা ভাগাভাগিতে একমত হয়। মুগাবে অন্যায়ভাবে সব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখে। গোপনে চলতে থাকে তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কাজ। কিছুদিন পরই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তবে তা গোপন করে রাখে মুগাবে প্রশাসন।

প্রহসনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০১৩ সালে আয়োজন করেন জাতীয় নির্বাচন। অনুমিত ফলাফল অনুযায়ী মুগাবে ক্ষমতা দখল করো। নির্বাচনের পূর্বেই পোষ্য প্রশাসনের লোক নিয়োগ করে তৈরি করে সাজানো নাটক। নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, মুগাবে ৭০,০০০ ভোট আগেই ব্যালট বাক্সে ভর্তি করে রাখে। বিরোধী নেতা মর্গান সভানজিরাই নির্বাচনকে বয়কট করে এবং তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে জনগণের মতামত প্রতিষ্ঠিত হয় নি।’

আমেরিকান নাগরিক আটকঃ
২০১৭ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ে পুলিশ একজন আমেরিকান নাগরিককে আটক করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি রাষ্ট্রপ্রধানকে অপমান করেছেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। নারীবাদী, আমেরিকান নাগরিককে আদালত ২০ বছরের সাজা প্রদান করে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জিম্বাবুয়ের নারী অধিকার নিয়ে লিখেছিলেন। পরে অবশ্য তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সরকার। সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ শুরু করে।

সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও পদত্যাগঃ
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, মুগাবে তার পার্টি থেকে উপ রাষ্ট্রপতি এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত করে। এতে তার স্ত্রীর ইন্ধন ছিল বলে জানা যায়। তার এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত, দলীয় কোন্দলের সৃষ্ট করে। সেনাবাহিনী তাকে সতর্ক করলেও তিনি কর্ণপাত করেন নি। তার পার্টি জানু-এফ তাকে বহিষ্কার করে। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে এবং তাকে গৃহবন্দি করে। বাধ্য হয়ে, অবশেষে পদত্যাগ করেন ৯৪ বছর বয়সী স্বৈরশাসক। তার পদত্যাগে জিম্বাবুয়ের জনগণ উল্লাসে ফেটে পড়ে। শেষ হয় ৩৭ বছরের দীর্ঘ দুঃশাসনের।

তথ্যসুত্রঃ