১৯৮০ সালের সময় ক্রিস গার্ডনার যখন তার ছোট একটি ছেলেকে নিয়ে একটি পাবলিক টয়লেটের মেঝেতে শুয়ে ছিলেন তিনি তখন হয়ত ভাবতে পারেন নি তার জীবন যুদ্ধের এই ঘটনাগুলো কোন একদিন হলিউডের রঙিন পর্দায় চিত্রায়িত হবে। তার জীবন সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত “পারসুইট অব হ্যাপিনেস” মুভি টি দেখে চোখের পানি ফেলেন নি এমন মানুষ একটি পাওয়াও দুষ্কর। ক্রিস্টোফার পল গার্ডনার সানফ্রানসিসকো তে ১ বছর যাবত তার ছেলে ক্রিস্টোফার জুনিয়র কে নিয়ে গৃহহীন অবস্থায় ছিলেন। তাকে এবং তার ছেলেকে রাত কাটাতে হচ্ছে রেলস্টেশনের টয়লেটের মেঝে থেকে শুরু করে পার্ক, চার্চের আশ্রয় শিবির ইত্যাদি স্থানে। এমনকি তার অফিসের সব সহকর্মী অফিস শেষ চলে যাওয়ার পর তিনি তার ছেলেকে নিয়ে ডেস্কের নিচে রাত কাটিয়েছেন। জীবন সংগ্রামী এই মানুষ গৃহহীন অবস্থা থেকে আজ পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সফল এক ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ তিনি আমেরিকার বড় এক ব্যবসায়ী। হাজার হাজার হতাশ ব্যক্তির জন্য এক অসাধারণ উদাহরণ হচ্ছেন ক্রিস গার্ডনার। ক্রিস গার্ডনারের চমকপ্রদ এই উত্থান নিয়েই আজকের আয়োজন।

শৈশব
ক্রিস গার্ডনার ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকন্সিনের মিলওয়াওকি তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার আসল বাবা কে চিনতেন না। তার বাবা ছিলেন থমাস টার্নার এবং মা ছিলেন বেটিয়ে জিন গার্ডনার। তার জীবনে তার বাবার তেমন কোন প্রভাব নই। তার মা ছিলেন ক্রিস গার্ডনারের সব। ছোট বেলায় গার্ডনার তার পরিবারের কোন পুরুষ সদস্য পান নি যাকে তিনি অনুসরণ করে বড় হবে কারণ তার যখন জন্ম হয় তখন তার বাবা থমাস টার্নার লুইজিয়ানাতে বসবাস করত এবং তার সৎ বাবা ফ্রেডি ট্রিপলেট তার মা এবং তার দুই সৎ বোন শেরন এবং কিম্বারলি কে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করত। তিনি এবং তার বোনেরা সব সময় তার বাবার ক্রোধের কারণে ভয়ে থাকতেন।
একবার ক্রিস গার্ডনারের বিরুদ্ধে তার সৎ বাবা মিথ্যা এক অভিযোগে জেলে পাঠান। তখন তাদের কে লালন -পালন করার জন্য একটি শিশু হোম কেয়ারে পাঠানো হয়। ক্রিস গার্ডনারের বয়স যখন আট বছর তখন তিনি ও তার বোনদের কে পুনরায় শিশু হোম কেয়ারে রাখা হয় কারণ তার মা কে তার সৎ বাবা ট্রিপলেট কে ঘুমন্ত অবস্থায় পুরিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু তার মা কোথায় আছেন সেটা ক্রিস গার্ডনার জানতেন না। তিনি যখন শিশু কেয়ার সেন্টারে ছিলেন তখন তার তিন জন মামার দেখা পান। তাদের মধ্যে হেনরি নামের এক মামার ক্রিস গার্ডনারের উপর প্রভাব ছিল অর্থাৎ তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। হেনরি ছিলেন ক্রিসের জীবনে একজন পজিটিভ বাবার চরিত্রের মত। কিন্তু ক্রিসের বয়স ৯ বছর তখন হেনরি মিসিসিপি নদীতে ডুবে মারা যান। যখন কারারক্ষীদের দ্বারা বন্দী অবস্থায় হেনরির কবর দেখতে আসেন তখন তিনি জানতে পারেন তার মা কারাবন্দী।
কর্মজীবনের প্রথম দিক
তার মামা হেনরি তাকে নেভি তে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেন। এডভেঞ্চার ও গৌরবময় পেশা হিসেবে হেনরি তাকে ইউএস নেভিতে যোগ দেওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দেন। পরবর্তীতে ক্রিস গার্ডনার তার উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে নেভিতে যোগ দেন। তিনি নর্থ ক্যারোলিনার ক্যাম্প লেজেওনে তে চার বছর ধরে দায়িত্বরত ছিলেন। সেখানে তিনি হাসপাতালে কর্পসম্যান হিসেবে ছিলেন। তিনি সানফ্রানসিসকোর ডা. রবার্ট এলিস নামে একজন কার্ডিয়াক সার্জনের সাথে পরিচিত হন। ডা. রবার্ট এলিস গার্ডনার কে তার সাথে থেকে ক্যালিফোর্নিয়া মেডিকেল সেন্টার এবং সানফ্রানসিসকো ভেটেরান্স এডমিনিস্ট্রেশন হসপিটালে উদ্ভাবনী ক্লিনিক্যাল রিসার্চে সহায়তা করার প্রস্তাব দেন। গার্ডনার প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং ১৯৭৪ সালে ইউএস নেভি থেকে অবসর গ্রহণ করে সানফ্রানসিসকো তে চলে আসেন। দুই বছরেরও বেশী সময় ধরে চলা কোর্স থেকে তিনি কিভাবে একটি ল্যাবরেটরি পরিচালনা করতে হয় এবং বিভিন্ন অস্ত্রোপচার সম্পর্কিত কৌশল শিখেছিলেন। ১৯৭৬ সালে ক্রিস গার্ডনার কে একটি ল্যাবরেটরি পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া তিনি ডা. রবার্ট এলিসের সাথে যৌথ ভাবে অনেক গুলো আর্টিকেল লেখেন যেগুলো বিভিন্ন মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।

বিয়ে এবং সমস্যার শুরু
১৯৭৭ সালের ১৮ জনু ক্রিস গার্ডনার ভার্জিনিয়ার শেরী ডাইসন নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ক্রিস গার্ডনারের ১০ বছরের অভিজ্ঞতা,জ্ঞান এবং মেডিকেল ফিল্ডের সাথে ভালো যোগাযোগ থাকার কারণে তিনি মেডিকেল ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তাকে অনেকে আরও লাভজনক কিছু করার পরামর্শ দেন। ক্রিস গার্ডনার তার ২৬ তম জন্মদিনের কিছুদিন পূর্বে তার স্ত্রী কে চিকিৎসক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার কথা জানান। কিন্তু মেডিকেল সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা এবং তাদের মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতি থেকে তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে থাকে। শেরি ডাইসনের সাথে বিবাহিত জীবন কাটানোর সময় ই ক্রিস গার্ডনার জ্যাকি মেডিনা নামের এক ডেন্টাল ছাত্রীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং জ্যাকি সম্পর্কের কিছুদিন পরেই গর্ভধারণ করেন। শেরির সাথে বিয়ের তিন বছর পর ক্রিস তাকে ছেড়ে জ্যাকির সাথে থাকতে শুরু করেন এবং বাবা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন। বিয়ের ৯ বছর পর শেরি ও ক্রিসের আইনগত ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। জ্যাকি এবং ক্রিসেরএকমাত্র ছেলে ক্রিস্টোফার জ্যারেট গার্ডনার জুনিয়র ১৯৮১ সালে জন্মগ্রহণ করে। ক্রিস ইউসিএসএফ (UCSF) এ ল্যাব গবেষক হিসেবে ছিলেন। তার সারা বছরের বেতন ছিল মাত্র ৮ হাজার ডলার, যা দিয়ে তার নিজের সন্তান এবং গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে চলার জন্য খুব ই কম ছিল। সে কারণে চার বছর পর এই চাকরি ছেড়ে দিয়ে মেডিকেল যন্ত্রের সেলসম্যান হিসেবে চাকরি নেন।
একদিনের একটি ঘটনা তার জীবন কে পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেয়। তিনি রাস্তায় একজন কে লাল ফেরারি পার্ক করতে দেখে তাকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি কি করেন? উত্তরে বব ব্রিজেস নামের সেই ব্যক্তি বলেন তিনি একজন স্টকব্রোকার। তখন গার্ডনার তাকে জানান তিনি স্টকব্রোকার হিসেবে কাজ করতে চান। বব ব্রিজেস পুনরায় দেখা করে গার্ডনার কে একটি নামকরা স্টকব্রোকার ফার্মের ম্যানেজারের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন যাতে তিনি ইন্টার্নশিপ হিসেবে ঐ ফার্মে কাজ করতে পারেন। সাক্ষাতের আগের দিন পার্কিং টিকেট না থাকা সত্ত্বেও গাড়ী পার্কিং করার অপরাধে তাকে আটক করে ১২০০ ডলার জরিমানা করে কিন্তু জরিমানা দেওয়ার মত এত টাকা তার কাছে ছিল না। সে কারণে তাকে জেলে রাখা হয়। অবশ্য তিনি পরের দিন তার ইন্টারভিউ দিতে পারলেও তার পরনে ছিল আটক হওয়ার সময়ের পোশাক। তার পরনে নোংরা পোশাক থাকা সত্ত্বেও তার উদ্যমের জন্য তিনি ডিন রাইটার ডেনোল্ডে চাকরি টি পেয়ে যান।
এরপর তিনি জেল থেকে এসে বাসায় এসে দেখেন তার বাড়ি খালি। তাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। স্টকব্রোকারের কাজে মনোনিবেশ করার জন্য তিনি তার সেলসম্যানের চাকরটি ছেড়ে দিয়েছিলেন যা থেকে তিনি ৩০০-৪০০ ডলার প্রতি মাসে আয় করতে পারতেন। এদিকে স্টকব্রোকারের চাকরি টি ছিল বিনা বেতনের ট্রেনিং কোর্স,যার ফলে তার স্বাভাবিক চালানোর যে খরচ সেটা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়ে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে পড়েন।
গৃহহীন এক বাবা
ক্রিস গার্ডনার প্রচুর পরিশ্রম করতেন যাতে করে তিনি ডিন রাইটার রেনোল্ডে টপ ট্রেইনি হতে পারেন। তিনি সবার আগে অফিসে আসতেন এবং সবার পরে অফিস থেকে বের হতেন। প্রতিদিন তিনি ২০০ জন ক্লায়েন্ট কে কল করতেন। ১৯৮২ সালে ৭ টি ধারাবাহিক পরীক্ষার পর ক্রিস গার্ডনার ফুল টাইম চাকরির সুযোগ পান ঐ ফার্মে। ক্রিস গার্ডনার বিয়ার স্ট্রিনস এন্ড কোম্পানিতে নিয়োগ পান। এর চারমাস পরে জ্যাকি তার সন্তান কে নিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি ফিরে এসে সন্তান কে দিয়ে ক্রিস গার্ডনার কে ছেড়ে চলে যান। তখন তিনি সামান্য যে আয় করতেন সেটা দিয়ে তিনি তার ছেলে কে নিয়ে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি যে বাসায় থাকতেন সেখানে বাচ্চাদের নিয়ে বসবাসের অনুমতি ছিল না। তিনি চাকরি করে আয় করলেও তিনি ও তার ছেলে নীরবে গৃহহীন অবস্থায় জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

গার্ডনার ও তার ছেলে যে গৃহহীন অবস্থায় এক বছর যাবত জীবন কাটাচ্ছিলেন সেটা তার কোন সহকর্মী জানত না। তিনি তার ছেলে কে মাঝেমাঝে ডেয়ারকেয়ার সেন্টারে রেখে আসতেন। তিনি ও তার সন্তান যেখানে নিরাপদ বোধ করতেন সেখানে ই রাত কাটাতেন। তিনি তার সন্তান কে সাথে করে অফিসের ডেস্কের তলায়,ধ্বংস হওয়া পুরাতন কোন বাড়ি,মোটেল,এয়ারপোর্ট,পাবলিক বাস থেকে শুরু করে স্টেশনের বাথরুমের ভিতরেও রাত কাটিয়েছেন।
ক্রিস গার্ডনার তার ছেলের ভালো ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য রেভাএন্ড সেসিল উইলিয়াম কে গৃহহীন নারীদের আশ্রয়ের স্থান গ্লাইড মেমোরিয়াল মেথোডিস্ট চার্চে থাকার অনুমতি প্রার্থনা করেন। তখন উইলিয়াম বিনা দ্বিধায় তাকে থাকার অনুমতি দেন। পরে তিনি যখন একটি বাসা ভাড়া করতে পারেন তখন তিনি পুনরায় জ্যাকির সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাদের দ্বিতীয় একটি কন্যা সন্তান হয়।
স্টকব্রোকার ক্যারিয়ার
১৯৮৭ সালে ক্রিস গার্ডনার গার্ডনার রিচ এন্ড কো( Gardner Rich & Co) নামে শিকাগো তে একটি ব্রোকারেজ ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠান টি তার প্রেসিডেন্টশিয়াল টাওয়ারে ছোট একটি এপার্টমেন্টে মাত্র ১০০০০ হাজার ডলার নিয়ে যাত্রা শুরু করে। তার অফিসে একটি মাত্র ফার্নিচার ছিল। তার কোম্পানির নামের রিচ অংশ টি মার্ক রিচ কে সম্মান করে ব্যবহার করেন যার সাথে গার্ডনারের কোন সম্পর্ক ছিল না এবং কখনো তাদের দেখাও হয় নাই। কিন্তু গার্ডনার মনে করতেন তিনি বিশ্বের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী। তার কোম্পানি ছোট একটি স্টেক বিক্রির পর ২০০৬ সালে কয়েক মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি পায়।তিনি ক্রিস্টোফার গার্ডনার হোল্ডিংস নামের একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন এবং তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসবে নিয়োগ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতিগত বিদ্বেষের অবসানের ১০ বছর পর নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে দেখা করেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। পরে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বিনিয়োগ করেন যার ফলে শত শত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই সাথে তিনি কয়েক মিলিয়ন বৈদেশিক অর্থ আয় করেন। তবে সিকিউরিটিজ আইনের কারণে তিনি তার এই প্রজেক্ট সম্পর্কে কোন তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানান। বর্তমানে তিনি ৬০ মিলিয়ন ডলারের মালিক।

মানব সেবামূলক কাজ
বর্তমানে ক্রিস গার্ডনার একজন মানবদরদী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন চ্যারিটিতে অনেক অর্থ দান করেছেন বিশেষ করে কারা প্রোগ্রাম এবং গ্লাইড মেমোরিয়াল ইউনাইটেড মেথোডিস্ট চার্চে, যেখানে তিনি ও তার ছেলে গৃহহীন অবস্থায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি সানফ্রানসিসকো তে ৫০ মিলিয়নের একটি ফান্ড গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করেছেন যার মাধ্যমে এই শহরের নিম্ন আয়ের মানুষেরা হাউজিং সুবিধা পায়। তিনি স্থায়ী চাকরি পেতে সহায়তা,ক্যারিয়ার পরামর্শ এবং যেসব নাগরিক ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দিতে সাহায্য করছে। তিনি ন্যাশনাল ফাদারহুড ইনিশিয়াটিভ এর বোর্ড মেম্বার হিসেবে আছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের বোর্ড মেম্বার হিসেবেও আছেন এবং তিনি শিক্ষামূলক দুইটি পুরস্কারের স্পন্সর করছেন।

হলিউডে তার জীবনী
ক্রিস গার্ডনার তার জীবন সংগ্রাম নিয়ে একটি অটোবায়োগ্রাফি প্রকাশ করেন যার নাম দেন ” পারসুইট অব হ্যাপিনেস” (Pursuit of Happyness). ২০০৬ সালে তার জীবনী নিয়ে হলিউডে মুভি তৈরি করেন গ্যাব্রিয়েল মুচিনো। তার অটোবায়োগ্রাফির নামে তৈরি মুভিতে ক্রিস গার্ডনার চরিত্রে অভিনয় করেন উইল স্মিথ এবং ক্রিস্টোফার জুনিয়রের চরিত্রে অভিনয় করেন উইন স্মিথের ছেলে জাডেন স্মিথ। এই মুভি টি বক্স অফিসে ঝড় তুলে বিশ্বব্যাপী ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে। এই মুভিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য উইল স্মিথ সেরা অভিনেতা হিসেবে অস্কার পেয়েছেন।

এছাড়াও গার্ডনারের জীবনী নিয়ে Come on Down : Searching for the American Dream নামে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেন। এই ডকুমেন্টারি তে তিনি তার অফিসে বসে তার স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেন। এছাড়াও Start Where You Are: Life Lessons in Getting from Where You Are to Where You Want to Be নামে একটি বায়োগ্রাফিতেও তার জীবনী তুলে ধরা হয়।বর্তমানে তিনি মোটিভেশাল স্পিকার হিসেবে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।
পুরস্কার এবং সম্মাননা
ক্রিস গার্ডনার ২০০২ সালে ন্যাশনাল ফাদারহুড ইনিশিয়েটিভের পক্ষ থেকে ফাদার অব ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া তিনি লস এঞ্জেলস কমিশন অন অ্যাসাল্ট এ্যাগেনিস্ট ওমেন এর পক্ষ থেকে ২৫ তম হিউমেরিটিয়ান পদক পান।
২০০৬ সালে কন্টিনেন্টাল আফ্রিকা চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে ফ্রেন্ডস অব আফ্রিকা অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া ২০০৮ সালে তার মেয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেওয়ার গৌরব অর্জন করেন।