প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মোবাইল ফোনগুলোও তালে তাল মিলিয়ে উন্নত হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে মোবাইল থাকাটা বেশ বড়সড় ব্যাপার ছিল! এর কারণ ছিল মোবাইলের দাম এবং এর পাশাপাশি বেশি মানুষ ব্যাবহারও করতো না। বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে যেমন এর দাম কমেছে, ঠিক তেমনি পৌঁছে গেছে সবার হাতে হাতে।
বর্তমানে বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে নানান রকমের স্মার্টফোন। এর মাঝে কিছু আছে দেশীয় ব্রান্ড আবার কিছু আছে বিদেশী। বিদেশী ব্রান্ডগুলো বেশি ফিচার দিলেও পিছিয়ে নেই দেশী ব্রান্ডগুলোও। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় কম হওয়ার ফলে দামি ফোন থেকে বাজেট ফোনের দিকেই ক্রেতাসাধারণের আকর্ষণ বেশি। তবে প্রশ্ন হল ২০ হাজারের মধ্যে ফোন কেনার ক্ষেত্রে কোন স্মার্টফোনটি কিনবেন? এই প্রশ্নেই সমাধান পেতে হলে পড়তে হবে সম্পূর্ণ আর্টিকেল। তবে হ্যাঁ, এখানে ফোনগুলোর দাম অনুযায়ী পারফরমেন্স, ক্যামেরা, ডিসপ্লে, ডিজাইন, ব্যাটারি সব বিবেচনা করে স্থান দেয়া হয়েছে।
এতক্ষণে বুঝেই গেছেন আজকের বিষয় কি। চলুন দেখে নেয়া যাক ২০ হাজার টাকার নিচে সেরা ১০টি স্মার্টফোন –
১০. ওয়াল্টন প্রিমো এস৬ ইনফিনিটি
এক নজরে ওয়াল্টন প্রিমো এস৬ ইনফিনিটি এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫.৫ ইঞ্চি এইচডি+ ও ২.৫ডি আই.পি.এস ডিসপ্লে। (২৮২.৪৫ পিপিআই)
- ১.৩ গিগাহার্জ ৬৪ বিট কোয়াড কোর
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৬
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট (আরো ৬৪ জিবি এক্সপান্ডেবল মেমোরি)
- ডুয়াল সিম (ন্যানো)
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট অপারেটিং সিস্টেম
- পেছনে থাকছে প্রাইমারী ১৩ মেগাপিক্সেল (f/২.২ অ্যাপারচার) সাথে বুকেহ মুড, ফেস বিউটি, এসএলও-এমও, টাইম ল্যান্স, ওয়াটারমার্ক, প্রফেশনাল মুড, এইচডিআর, প্যানারোমা, জিইও ট্যাগিং এবং ডুয়াল ফ্ল্যাশ। আবার সামনে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল, f/২.০ অ্যাপারচার সেলফি ক্যামেরা
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর
- ৪০০০ এমএএইচ লি-পলিমার ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা রিমুভেবল
রিভিউ
দেশীয় বাজারে বিভিন্ন চাইনিজ ফোন চলে আসায় দেশী ব্র্যান্ড গুলো যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। অধিক ফিচার এবং টেকসই বডি সহ নানান সুবিধা দিচ্ছে এই চাইনিজ ব্র্যান্ডগুলো। তাইতো ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকছে বিদেশী ব্র্যান্ড। তবে এর মাঝেও আমাদের দেশীয় ব্র্যান্ড কিছু চমৎকার স্মার্টফোন উপহার দিচ্ছে। এর মধ্যে সিম্ফনি এর ১৮:৯ রেশিও সমৃদ্ধ পি১১ অন্যতম।
প্রথমেই এর ডিজাইন নিয়ে বলছি, এক কথায় ডিজাইনে সিম্ফনি কোনো কম্প্রোমাইজ করেনি। হাতে নিলে প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যায়। পাশাপাশি এর ওজন অনেক কম, যাদের হাল্কা ফোন পছন্দ তারা ফোনটি দেখতে পারেন।
ডিসপ্লে সেকশনে ফোনটি ছিল দুর্বল । ১৮:৯ রেশিও এই ডিসপ্লের কর্নারে রাউন্ড যা দেখতে বেশ ভালোই লাগে এবং ৫.৭ ইঞ্চি ২.৫ ডি এইচডি প্লাস যার পিপিআই ২৮২। খালি চোখে পিপিআই এর ঘাটতি না দেখা গেলেও ভালো করে খেয়াল করলে ডিসপ্লে তে হাল্কা ঘাটতি দেখা যাবে কিন্তু সেটা ডেইলি ইউজে তেমন কোনো সমস্যা করবেনা। এছাড়াও এই স্মার্টফোনটির গ্লাস প্রটেকশন হিসেবে আছে এন ই জি (নিপ্পন ইলেকট্রিক গ্লাস) যা একই সাথে স্ক্র্যাচ পড়া থেকেও রক্ষা করবে। এছাড়াও সিম্ফনির ৩৬০ ওএস ইন্টারফেসের কারণে পাওয়া যাবে এ্যাপ ফ্রিজার এর মত দারুণ সব ফিচার।
অপারেটিং সিস্টেমে এন্ড্রয়েড নোগাট ৭.০ চলছে ফোনটি । ১.৩ গিগাহার্জ ৬৪ বিট কোয়াড কোর প্রসেসর এ চলবে এই স্মার্টফোনটি যার সাথে থাকছে ৩জিবি র্যাম। ফলে পাচ্ছেন গেম খেলা, মুভি দেখা এবং মাল্টিটাস্কিং এর সুবিধা। এতে ব্যাবহার করা হচ্ছে মিডিয়াটেক এমটি৬৭৩৫ চিপসেট এবং সাথে জিপিউ থাকছে মালি টি৭২০। যার গেমিং পারফরমেন্স ছিল বেশ ভালো। তবে হেভি গেমগুলোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট র্যাম ফাকা না থাকলে তা ল্যাগ করবে এবং ডে-টু-ডে ব্যাবহারে ব্যাঘাত ঘটাবে। এর আনটুটু বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ডিভাইসটির স্কোর ৩৯৫৯৯। আমার মতে দাম অনুযায়ী খারাপ না। বেশি হেবি ইউজার ছাড়া বাকিরা নিতে পারেন।
ফোনটির ক্যামেরা নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। ১৩ মেগাপিক্সেল এর ব্যাক ক্যামেরায় ব্যাবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক ক্যামেরা সেন্সর যা আপনাকে দিবে হাই রেজ্যুলেশন এর ছবি, তবে ছবিতে ডিটেইলস এর হাল্কা ঘাটতি ছিল। লো লাইট পারফরমেন্স একদমই ভাল না। সামনে ৮ মেগাপিক্সেল এর ফ্রন্ট ক্যামেরা তো আছে সুন্দর সেলফি তোলার জন্য যা কেবল লাইটেই সুন্দর ছবি তুলতে সক্ষম। বোকেহ মোড থাকায় ছবিতে পাওয়া যাবে বোকেহ ইফেক্ট, এছাড়া স্লো মোশন, টাইম ল্যাপস, প্রোফেসনাল মোড ইত্যাদি ফাংশন থাকছে। সুন্দর ছবি তোলার জন্য দুই সাইডের ক্যামেরাতেই আছে ফ্ল্যাশ সুবিধা।
এতে ব্যবহৃত হয়েছে ৪০০০ এমএএইচ ব্যাটারি, যা বেশি ব্যাবহার করলে ৮-১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দেবে। এছাড়াও, থাকবে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত টকটাইম।
মূল্য: ১৩,৯৯০ টাকা
ভালো দিক –
- র্যাম
- পারফরমেন্স (গেমিং)
খারাপ দিক –
- ডিসপ্লে
- প্রসেসর, ১.৩ গিগাহার্জ এর বদলে এই দামে আরও ভালো দেয়া যেত
৯. সিম্ফনি পি১১
এক নজরে সিম্ফনি পি১১ এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫.৭ ইঞ্চি এইচডি+ ও ২.৫ডি আই.পি.এস ডিসপ্লে। (২৮২.৪৫ পিপিআই)
- ১.৩ গিগাহার্জ ৬৪ বিট কোয়াড কোর
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৬।
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট। (আরও ৬৪ জিবি এক্সপান্ডেবল মেমোরি)
- ডুয়াল সিম (ন্যানো)
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে থাকছে প্রাইমারী ১৩ মেগাপিক্সেল (f/২.২ অ্যাপারচার) সাথে বুকেহ মুড, ফেস বিউটি, এসএলও-এমও, টাইম ল্যান্স, ওয়াটারমার্ক, প্রফেশনাল মুড, এইচডিআর, প্যানারোমা, জিইও ট্যাগিং এবং ডুয়াল ফ্ল্যাশ। আবার সামনে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল, f/২.০ অ্যাপারচার সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৪০০০ এমএএইচ লি-পলিমার ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই এর ডিজাইন নিয়ে বলছি, ১৮:৯ রেশিও এর এই ফোমে ডিজাইনে সিম্ফনি কোনো কম্প্রোমাইজ করেনি। হাতে নিলে প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যায়। পাশাপাশি এর ওজন অনেকটা কম। যারা হাল্কা ফোন পছন্দ করেন, তারা এই ফোনটিও দেখতে পারেন।
ডিসপ্লে সেকশনে ফোনটি ছিল দুর্বল। ১৮:৯ রেশিও এই ডিসপ্লের কর্নারে রাউন্ড যা দেখতে বেশ ভালোই লাগে এবং ৫.৭ ইঞ্চি ২.৫ ডি এইচডি প্লাস যার পিপিআই ২৮২। ডিসপ্লে এর কালার টোন কিছুটা ওয়ার্ম, কিন্তু কোনে নেগেটিভিটি খুঁজে পাইনি। ফোনটিকে ভালোভাবে না দেখলে বুঝতেই পারবেন না এর পিক্সেল ডেনসিটি কম। মানে ডিসপ্লে এতটাও খারাপ না, আবার বেশি ভালোও না!
অপারেটিং সিস্টেমে এন্ড্রয়েড নোগাট ৭.০ চলছে ফোনটি। ১.৩ গিগাহার্জ ৬৪ বিট কোয়াড কোর প্রসেসর এ চলবে এই স্মার্টফোনটি যার সাথে থাকছে ৩জিবি র্যাম ফলে মাল্টিটাস্কিং এর সুবিধা পাচ্ছেন। এতে ব্যাবহার করা হচ্ছে মিডিয়াটেক এমটি৬৭৩৫ চিপসেট এবং সাথে জিপিউ থাকছে মালি টি৭২০। যা গেমিং পারফরমেন্স ছিল বেশ ভালো সাথে অ্যাপ ওপেনিং স্পিডও ছিল ভালো। তবে বেশি হেভি ব্যাবহার করলে ল্যাগ এর দেখা পাবেন। মোটকথা এর গেমিং পারফরমেন্স ভালোই ছিল। এর আনটুটু বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ডিভাইসটির স্কোর ৩৯৫৯৯। দাম হিসেবে বলবো এর প্রসেসরটি আরও ভালো দিতে পারতো।
ফোনটির ক্যামেরা সেকশন নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। ১৩ মেগাপিক্সেল এর ব্যাক ক্যামেরা ব্যাবহার করে মোটামুটি ভালো ছবি তুলতে পারবেন। তবে শার্পনেস এর ঘাটতি লক্ষ্য করেছি, মানে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন দিনের বেলা কিন্তু কম আলোতে এর ক্যামেরার অবস্থা ভালো না। লো লাইটে ছবিতে অনেক নয়েজ পাবেন। সামনের ৮ মেগাপিক্সেল এর ফ্রন্ট ক্যামেরাও একই হাল, মানে দিনের বেলা মোটামুটি ভালোই ছবি পাবেন। তাই বলবো ক্যামেরাটা খুব বেশি ভালোনা আবার খুব একটা খারাপও না।
এতে ব্যবহৃত হয়েছে ৪০০০ এমএএইচ ব্যাটারি, যা হেভি ব্যাবহারে ৮-১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিবে। সাউন্ড কোয়ালিটি ছিল মোটামুটি তাই এটা নিয়ে কথা বললাম না। আমার মতে যারা মাঝারি ধরনের ইউজার মানে ফেসবুক, ইউটিউব চালান এবং হাল্কা গেমস খেলেন তাদের জন্য বেশ ভালো পছন্দ।
মূল্য: ১৩,৯৯০ টাকা
ভালো দিক –
- র্যাম
- ক্যামেরা
- ডিসপ্লে
- গেমিং
খারাপ দিক –
- প্রসেসর (কোয়াড কোর এর বদলে এই দামে অক্টাকোর দেয়া যেত)
৮. নোকিয়া ২
এক নজরে রেডমি নোট নোকিয়া ২ এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫ ইঞ্চি এলটিপিএস এইচডি টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে যার রেজুলেশন ১২৮০×৭২০ পিক্সেল।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ২১২ যা ১. ২ গিগাহার্জ গতির কোয়াড কোর প্রসেসর।
- জিপিউ হলো অ্যাড্রিনো ৩০৪।
- ১ গিগাবাইট র্যাম এবং ৮ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ৮ মেগাপিক্সেল সাথে থাকছে অটোফোকাস। আবার সামনে থাকছে ৫ মেগাপিক্সেল এর সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক।
- ৪১০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই আশা যাক এর ডিজাইন নিয়ে, নোকিয়া ২ এর ব্যাক পার্ট তৈরি করা হয়েছে পলিকারবোনেট বা প্লাস্টিক দিয়ে। নোকিয়ার অন্যান্য ফোনগুলোর মতো এটির গঠন কাঠামোও অত্যন্ত চমৎকার। দেখতে সিম্পল এর মধ্যে বেশ ভালোই লাগে তবে ফোনটি হাল্কা মোটা, যার কারণ হচ্ছে মূলত এর বড় ব্যাটারি । এছাড়াও আছে আইপি-৫২ ফ্ল্যাশ রেজিস্টেন্স রেটিং তাই বলে কেউ ভাববেন না ওয়াটার প্রুফ।
ফোনটিতে রয়েছে ৫ ইঞ্চি এলটিপিএস এইচডি টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে যার রেজুলেশন ১২৮০×৭২০ সাথে আছে ২৮৩ পিপিআই। স্ক্র্যাচ প্রতিরোধে ডিসপ্লেতে ৩টি সুরক্ষা বিশিষ্ট কর্ণিং গোরিলা গ্লাস ব্যাবহার করা হয়েছে। এই কর্ণিং গোরিলা গ্লাস ফোনটিকে দিনের পর দিন ব্যাবহারের জন্য দারুণ মজবুত করে তুলেছে। এছাড়াও ডিসপ্লে তে কোনো নেগেটিভিটি নেই। বলা যায় এই দামে বেশ ভালো ডিসপ্লে দিচ্ছে নোকিয়া। বর্তমানে নোকিয়ার ডিসপ্লে বেষ্ট গুলোর মধ্যে একটি, সাথে আছে হাই কনট্রাস্ট রেশিও এবং এতে মান উন্নয়নের জন্য ইন-সেল ডিসপ্লে টেকনোলোজিও ব্যাবহার করা হয়েছে।
নোকিয়া ২ ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ২১২ যা ১.২ গিগা হার্জ কোয়াড কোর। স্ন্যাপড্রাগন ২১২ কিছুটা পুরনো মডেলের এবং এর পারফরমেন্স আহামরি কিছুনা। এই দামে চাইনিজ কোম্পানিগুলো এর চেয়ে ভালো প্রসেসর দিচ্ছে। কিন্তু নোকিয়া বলে কথা! তাই পারফরমেন্স নিয়ে বললে বলা যায় হাল্কা পাতলা ফেসবুক, ইউটিউব ব্যবহার করলে ঠিক আছে কিন্তু এর বেশি যারা ব্যবহার করেন তাদের জন্য এই ফোন নয়। ফোনটিতে মাত্র ১ জিবি র্যাম দেয়া হয়েছে, এত অল্প র্যাম থাকায় এন্ড্রয়েড খুব একটা স্মুথ ভাবে কাজ করতে পারবে না। এতে এন্ড্রয়েড নুগাট ৭.১.১ পরীক্ষামূলক ভাবে দেয়া হয়েছে যেটা পরে এন্ড্রয়েড অরিও ৮.০ এ আপডেট হবে। অল্প বাজেটের ফোনগুলোর মধ্যে গুগল এসিস্ট্যান্ট প্রথম নোকিয়া ২ তেই দেয়া হয়েছে। ফোনটিতে অল্প র্যামের পাশাপাশি ইন্টারনাল স্টোরেজও অন্যান্য ফোনের তুলনায় খুব কম, মাত্র ৮ জিবি। তবে মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে স্টোরেজ ১২৮ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
ফোনটিতে থাকছে ৮ মেগা পিক্সেল রেয়ার ক্যামেরার সাথে এলইডি ফ্ল্যাশ রয়েছে সাথে অটোফোকাস। ফ্রন্টে ৫ মেগা পিক্সেল সেলফি ক্যামেরা আছে। বলা যায় ক্যামেরা বেশ ভালো দাম অনুযায়ী। এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের তেমন একটা ঘাটতি চোখে পড়েনি। আমার কাছে দুটি ক্যামেরাই ভালো লেগেছে।
নোকিয়া তাদের এই ফোনটিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪১০০ এমএএইচ নন রিমুভেবল ব্যাটারি ব্যবহার করেছে। এক কথায় অসাধারণ ব্যাটারি ব্যাকআপ। মানে এক কথায় বাবা-চাচাদের জন্য পারফেক্ট।
পরিশেষে বলা যায় এই ফোন আজকালের ছেলেমেয়ের জন্য না, এটা হচ্ছে বাবা-মা দের জন্য যাদের বিল্ড কোয়ালিটি, ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি দরকার।
দাম – ৯,৬০০ টাকা
ভালো দিক –
- ডিসপ্লে
- ডিজাইন
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ক্যামেরা
খারাপ দিক –
- প্রসেসর
- র্যাম ও রম
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার নেই
৭. রেডমি নোট ৫এ প্রাইম
এক নজরে রেডমি নোট ৫এ প্রাইম এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫.৫ ইঞ্চি এইচডি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার পিক্সেল রেজুলেশন ৭২০×১২৮০।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৩৫ যা ১.৪ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩ প্রসেসর।
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৫।
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট এর ওপর তৈরি এমআই-ইউআই ৯.৫ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১৩ মেগাপিক্সেল, f/২.২ অ্যাপারচার ক্যামেরা এবং সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও এলইডি ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ১৬ মেগাপিক্সেল, f/২.০ অ্যাপারচার সেলফি ক্যামেরা যা ১০৮০পি ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ইনফ্রারেড ব্লাস্টার বা আইআর (রিমোট কন্ট্রোলের জন্য),ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৩০৮০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই ফোনটির ডিজাইন নিয়ে আলোচনা করবো। রেডমি নোট সিরিজের বাকি সকল ফোনের মতোই এর ডিজাইন। তবে সাদামাটা প্লাস্টিক বডি সমৃদ্ধ ডিজাইন যা দেখতে মোটেও ভালো লাগেনি আমার, কেমন যেন চিপ ফিল দিচ্ছিল। বাকিটা আপনি নিজের মতো করে দেখে নিন কেননা ডিজাইন ব্যক্তির পছন্দের উপর নির্ভর করে।
ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। কালার রিপ্রোডাকশন খুবই ভালো ছিল, কোনো নেগেটিভিটি চোখে পড়েনি। কিছুটা ওয়ার্ম তবে তা পরিবর্তনের সুবিধাও পাচ্ছেন। ফোনটির ডিসপ্লে বলা যায় বাজেট অনুযায়ী আমার কাছে ভালোই লেগেছে ।
এখন চলে আসা যাক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যা হলো এর পারফরমেন্স সেক্টর। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৩৫ মূলত লো বাজেট প্রসেসর। তাই এর পারফরমেন্স মিডিয়াটেক প্রসেসর এর থেকে বেশি বলা যাবেনা সাথে থাকছে অ্যাড্রিনো ৫০৫ জিপিউ যার ফলে কিছুটা ভাল গেইমিং বা স্মুথ অপারেশন পাওয়া যাবে। তার সাথে আছে ৩ জিবি র্যাম। আনটুটু বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ডিভাইসটির স্কোর ৪৫,৭১৪। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স মোটামুটি ।
ক্যামেরা নিয়ে কথা বললে বলা যায় এভারেজ ক্যামেরা মানে খারাপ না আবার আহামরি কিছুও না। f/২.২ অ্যাপারচার থাকায় উজ্জ্বল ও পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায় দিনের বেলা, রাতে বেলা ছবিতে নয়েজ অনেক বেশি আসে যা স্বাভাবিক । এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের বেশ ঘাটতি রয়েছে। সেলফি ক্যামেরাটি ছিল বেশ ভালো। ভালো বলছি দাম অনুযায়ী। দিনের বেলা বেশ ভালো ছবি পাবেন কিন্তু রাতের বেলা সেই ব্যাক ক্যামেরার কাহিনী। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর ক্যামেরা চলে আরকি!
এছাড়াও ৩০৮০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যবহারে ব্যাকআপ পাবেন । সাউন্ড কোয়ালিটি মোটামুটি। তাই এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই।
দাম – ১২,৭৯০ টাকা (৩/৩২)
ভালো দিক –
- পারফরমেন্স (দাম অনুযায়ী)
- ডিসপ্লে
- ক্যামেরা
- র্যাম এবং স্টোরেজ
খারাপ দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ব্যাটারি
৬. নোকিয়া ৫
এক নজরে নোকিয়া ৫ এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫.২ ইঞ্চি ৭২০পি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ৭২০ x ১২৮০ পিক্সেল। ২৮২ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি। সাথে আছে গরিলা গ্লাস প্রটেকশন।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৩০ যা ১.৪ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩ প্রসেসর।
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৫।
- ২ গিগাবাইট র্যাম এবং ১৬ গিগাবাইট স্টোরেজ। (২৫৬ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে)
- ডুয়াল সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১৩ মেগাপিক্সেল, f/২.০ অ্যাপারচার ক্যামেরা এবং সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও ডুয়াল টোন ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা যা ১০৮০পি ভিডিও করতে সক্ষম।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৩০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
নোকিয়ার নাম শোনেনি বা নোকিয়ার ফোন কখনো ব্যাবহার করেনি এমন মানুষ বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া কঠিন। এখনো হয়তো আমাদের সকলের বাসায় পাওয়া যাবে নোকিয়া কোম্পানির যেকোনো একটি মডেল, নস্টালজিয়া ব্যাপার স্যাপার! যদিও বর্তমানে নোকিয়া যেসব ফোন মার্কেটে বিক্রি করছে সেসব আসলে এইচএমডি গ্লোবাল এর ম্যানুফ্যাকচার করা। আচ্ছা এসব কথা বাদ দিয়ে রিভিউতে আশা যাক। প্রথমেই বলি এর ডিজাইন নিয়ে, এক কথায় অস্থির মিনিমালিস্টিক ডিজাইন! এক নজরে আমি এর প্রেমে পড়ে যাই এবং এর অ্যালুমিনিয়াম বডির কারণে একদম প্রিমিয়াম লুক দেয়!
অ্যালুমিনিয়াম ইউনিবডির নোকিয়া ৫ স্মার্টফোনে থাকছে ৫.২ ইঞ্চির ৭২০ পি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল কিন্তু এর ভিউয়িং এঙ্গেলে গিয়ে ধরা খেলো নোকিয়া। মানে তেরা-বেঁকা এঙ্গেলে তাকালে ডিসপ্লে কিছুটা নেগেটিভ মনে হয়, বাদ বাকি সব ঠিক আছে।
চিপসেট হিসেবে থাকছে স্ন্যাপড্রাগন ৪৩০ যা একটি এন্ট্রি লেভেল চিপসেট, ২০১৮ সালে এই দামে এমন একটা চিপসেট আসলে মানায় না! এছাড়া জিপিউ হিসেবে থাকছে অ্যাড্রেনো ৫০৫। মানে পারফরমেন্স চলে আরকি! যদিও এই দামে লিস্ট এর বাকি ফোনগুলোর ধারের কাছেও নাই নোকিয়া, কিন্তু ঐ যে ব্যান্ড! এই স্মার্টফোনে আপনি ডে টু ডে টাস্কগুলোতে ল্যাগের খুব একটা দেখা পাবেন না, কিন্তু র্যামের স্বল্পতার কারণে মাল্টিটাস্কিং এর সময় ঝামেলায় পড়বেন। এছাড়া মোটামুটি লাইট গেমগুলো ভালোভাবেই খেলতে পারবেন, কিন্তু গ্রাফিক্স ইন্টেন্সিভ মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলো খেলার কথা চিন্তা না করাই ভালো। কেননা ২জিবি র্যাম তার আবার সাথে এই চিপসেট, দুইটা মিলে গেমিং এর জন্য না এই ফোন।
চলে আশা যাক ক্যামেরা সেকশনে, ব্যাকে থাকছে ১৩ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস ক্যামেরা এবং ফ্রন্টে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এই স্মার্টফোনটির দাম অনুযায়ী ক্যামেরা মোটামুটি ভালই যদিও আরেকটু ভালো হতে পারত। মানে ক্যামেরা ভালোই, আমি সন্তুষ্ট । আর ব্যাটারি থাকছে ৩০০০ এমএএইচ।
তাহলে কারা কিনবেন এই ফোন? প্রথমেই গেমারদের বলছি, ইগনোর করেন এই ফোন আপনাদের জন্য না। যারা বিল্ড কোয়ালিটি, ডিজাইন, ক্যামেরা, সাথে হাল্কা ফেসবুকিং আর টুকটাক করেন তাদের জন্য এই ফোন।
দাম – ১৭,৫০০ টাকা
ভালো দিক –
- ডিজাইন
- ডিসপ্লে
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ক্যামেরা
খারাপ দিক –
- র্যাম ও রম
- দামটা বেশি!
৫. রেডমি নোট ৪এক্স
এক নজরে রেডমি নোট ৪এক্স এর স্পেসিফিকেশন –
- ৫.৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার পিক্সেল রেজুলেশন ১৯২০x১০৮০।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ যা ২ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩ ৬৪বিট প্রসেসর।
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৬।
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ বা ৪ গিগাবাইট র্যাম এবং ৬৪ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট এর ওপর তৈরি এমআই-ইউআই ৯.৫ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১৩ মেগাপিক্সেল, f/2.0 অ্যাপারচার ক্যামেরা এবং সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও ডুয়ালটোন ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম।আবার সামনে থাকছে ৫ মেগাপিক্সেল, f/2.0 অ্যাপারচার সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ইনফ্রারেড ব্লাস্টার বা আইআর (রিমোট কন্ট্রোলের জন্য), ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৪১০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই কথা বলি এর ডিজাইন নিয়ে, রেডমি নোট সিরিজের সকল ফোনের ডিজাইন প্রায় একই এর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। সাদামাটা অ্যালুমিনিয়ামের বডি সমৃদ্ধ ডিজাইন হলেও কোনো দিক দিয়ে চিপ ফিল দিবেনা। বাকিটা আপনি নিজের মতো করে দেখে নিন কেননা আবারও বলছি ডিজাইন ব্যক্তির পছন্দের উপর নির্ভর করে।
ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। কালার টোন কিছুটা ওয়ার্ম তবে তা পরিবর্তনের সুবিধাও পাচ্ছেন। ফোনটি ডিসপ্লে বলা যায় বাজেট অনুযায়ী সেরা তাই এটা নিয়ে বেশি কথা বলবো না।
এখন চলে আসা যাক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যা হল এর পারফরমেন্স কেমন? কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ মূলত মাঝারি ধরনের প্রসেসর। তাই এর পারফরমেন্স মিডিয়াটেক প্রসেসর এর থেকে বেশি বলা যাবেনা। তবে অ্যাড্রিনো ৫০৬ জিপিউটি এর কারণে কিছুটা ভাল গেইমিং বা স্মুথ অপারেশন পাওয়া যাবে। তার সাথে ৩ বা ৪ জিবি র্যাম তো আছেই। আনটুটু বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ডিভাইসটির স্কোর ৬০,০০০। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
ক্যামেরা নিয়ে কথা বললে বলা যায় এভারেজ ক্যামেরা মানে খারাপও না আবার আহামরি কিছুও না। f/২.০ অ্যাপারচার থাকায় বেশ উজ্জ্বল ও পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায় দিনের বেলা, রাতে বেলা ছবিতে নয়েজ অনেক বেশি আসে। এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের বেশ ঘাটতি রয়েছে। সেলফি ক্যামেরাও একই ধরনের।
এছাড়াও ৪১০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যাবহারে ব্যাকআপ পাবেন। সাউন্ড কোয়ালিটির দিক থেকেও এটি বেশ এগিয়ে রয়েছে। হেডফোনে সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো শোনায়, স্পিকারে সাউন্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো। তাই এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। শেষে বলা যায় এটি হল এক কথায় পারফেক্ট ফোন! ফোনটি দেড় বছর পুরনো তাই অফিশিয়ালি না পেলেও আনঅফিশিয়ালি পাবেন।
দাম – ১২,৫০০-১৩,৫০০ টাকা ( ৩/৩২)
১৫,৬০০-১৬,৯৯০ টাকা (৪/৬৪)
ভালো দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- পারফরমেন্স (দাম অনুযায়ী)
- ডিসপ্লে
- ব্যাটারি
- র্যাম এবং স্টোরেজ
খারাপ দিক –
- ক্যামেরা
৪. শাওমি রেডমি ৫
এক নজরে শাওমি রেডমি ৫ এর স্পেসিফিকেশন –
- ১৮:৯ রেশিও এর ৫.৭ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ৭২০ x ১৪৪০ পিক্সেল। ২৮২ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি। গরিলা গ্লাস প্রটেকশন।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৫০ যা ১.৮ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩প্রসেসর।
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৬।
- ২ গিগাবাইট র্যাম এবং ১৬ গিগাবাইট স্টোরেজ বা ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট এর ওপর তৈরি এমআই-ইউআই ৯ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১২ মেগাপিক্সেল, f/২.২ অ্যাপারচার ক্যামেরা এবং সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও এলইডি ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ৫ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৩৩০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই কথা বলি এর ডিজাইন নিয়ে, অ্যালুমিনিয়ামের বডি সমৃদ্ধ এই ফোনটি বেশ চিকন এবং এর ডিজাইন সিম্পল কিন্তু সুন্দর, তাই কোনো দিক দিয়ে চিপ ফিল দিবেনা। বাকিটা আপনি নিজের মতো করে দেখে নিন কেননা ডিজাইন ব্যক্তির পছন্দের উপর নির্ভর করে। তবে ফোনটি হাতে নিলে একটা প্রিমিয়াম ফিল আসে।
১৮:৯ রেশিও এর ৫.৭ ইঞ্চি স্ক্রিনের ডিসপ্লের চারপাশে বাড়তি জায়গা খুবই কম, যা আমার কাছে ভালো লেগেছে। ডিসপ্লের আলো নিয়ে একটু সমস্যা মনে হয়েছে বিশেষ করে রোদে। তবে হাই কনট্রাস্ট মুডে ব্যবহার করলে আর কোন সমস্যা হবেনা। এর ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। কালার টোন কিছুটা ওয়ার্ম তবে তা পরিবর্তনের সুবিধাও পাচ্ছেন। এছাড়াও কোনো নেগেটিভটি নেই, ফোনটি ডিসপ্লে বলা যায় বাজেট অনুযায়ী সেরা।
এখন চলে আসা যাক এর পারফরমেন্স সেক্টরে, কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৫০ মূলত লো বাজেট প্রসেসর। তাই এর পারফরমেন্স মিডিয়াটেক প্রসেসর এর থেকে বেশি বলা যাবেনা। তবে অ্যাড্রিনো ৫০৬ জিপিউটি এর কারণে কিছুটা ভাল গেইমিং বা স্মুথ অপারেশন পাওয়া যাবে। তবে বেশি ভারি গেমগুলো না চালালেই ভালো হয়। তবে এর মানে যে চলবেনা তা নয় তবে বেশি হেভি গেম চালালে ল্যাগ নিশ্চিত, কারণ ২ বা ৩ জিবি র্যাম। আনটুটু বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ডিভাইসটির স্কোর ৫৫৬২০। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
ক্যামেরা নিয়ে কথা বললে বলা যায় এই বাজেটে এরকম ক্যামেরা আশা করা যায়না। ব্যাক ক্যামেরা কোয়ালিটি অ্যাভারেজ। রাতের ছবি তেমন ভাল না। তবে, এক্সপার্ট হাতের ছোঁয়ায় দিনে-রাতেও মোটামুটি ভালো ছবি তুলতে পারবেন। সেলফি ক্যামেরাটা এক কথায় তেমন ভালো না। ডিটেইলস লস হয়ে যাচ্ছিল বারবার। আমার কাছে এই বাজেটে এটাই যথেষ্ট মনে হল না । এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের হাল্কা ঘাটতি রয়েছে।
এছাড়াও ৩৩০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যাবহারে ব্যাকআপ পাবেন। সাউন্ড কোয়ালিটির দিক থেকেও পিছিয়ে নেই এটি, মোটামুটি মানের আরকি, তাই এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। সব বিবেচনা করে বলা যায়, ক্যামেরা ছাড়া বাকি সব দাম অনুযায়ী ভালো।
দাম – ১৩,৯৯০ টাকা (২/১৬)
১৫,৮৯০ টাকা (৩/৩২)
ভালো দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- পারফরমেন্স (দাম অনুযায়ী)
- ডিসপ্লে
- ব্যাটারি
- র্যাম এবং স্টোরেজ
খারাপ দিক –
- ক্যামেরা
৩. শাওমি রেডমি ৫ প্লাস
এক নজরে শাওমি রেডমি ৫ প্লাস এর স্পেসিফিকেশন –
- ১৮:৯ রেশিও এর ৫.৯৯ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ৭২০ x ১৪৪০ পিক্সেল। ৪০৩ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি। গরিলা গ্লাস প্রটেকশন।
- কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ যা ২.০ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩ প্রসেসর।
- জিপিউ হল অ্যাড্রিনো ৫০৬।
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ বা ৪ গিগাবাইট র্যাম এবং ৬৪ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৭ নোগাট এর ওপর তৈরি এমআই-ইউআই ৯ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১২ মেগাপিক্সেল, f/২.২ অ্যাপারচার ক্যামেরা এবং সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও এলইডি ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ৫ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক, আই আর ব্লাস্টার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৪০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
রেডমি ৫+ এর ডিজাইন হুবহু রেডমি ৫ এর মতন। তাই এটা নিয়ে আলাদা বললাম না উপরে রেডমি ৫ এর রিভিউ থেকে পড়ে নিবেন। রেডমি ৫ এর উন্নত ভার্শন হল রেডমি ৫+। ১৮:৯ রেশিও এর ৫.৯৯ ইঞ্চি স্ক্রিনের ডিসপ্লের চারপাশে বাড়তি জায়গা খুবই কম, যা ফোনটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। এর ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। ডিসপ্লে বেশ শার্প, কালার টোন কিছুটা কুল কিন্তু তা পরিবর্তন করা যায়। মুভি কিংবা ইউটিউবে ভিডিও দেখে বেশ আরাম পাবেন এর ডিসপ্লের কারণে। আমার মতে এই ডিসপ্লে দাম অনুযায়ী পারফেকশন!
ফোনটিতে ব্যাবহার হচ্ছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ যা মূলত মিড বাজেট প্রসেসর সাথে অ্যাড্রিনো ৫০৬ জিপিউটি এর কারণে বেশ ভালো গেইমিং বা স্মুথ অপারেশন পাওয়া যাবে। । সাথে থাকছে ৩ বা ৪ জিবি র্যাম। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এই প্রসেসরটি এই দামে বেশ মানানসই। এর পারফরমেন্সও বেশ ভালো।
ক্যামেরা নিয়ে কথা বললে বলা যায় এই বাজেটে এর ক্যামেরা আরেকটু ভালো হতে পারতো । ব্যাক ক্যামেরা কোয়ালিটি অ্যাভারেজ। দিনের বেলা খুব সুন্দর ছবি তুলতে পারলেও রাতের ছবি তেমন ভাল না। তবে, এক্সপার্ট হাতের ছোঁয়ায় রাতেও মোটামুটি ভালো ছবি তুলতে পারবেন। রেডমি ৫ এর মতো এটাতেও সেলফি ক্যামেরাটা ছিল এক কথায় বাজে। ডিটেইলস লস হয়ে যাচ্ছিল বারবার। আমার কাছে এই বাজেটে এটা যথেষ্ট মনে হলোনা । এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের হাল্কা ঘাটতি রয়েছে।
এছাড়াও ৪০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যাবহারে ব্যাকআপ পাবেন। সাউন্ড কোয়ালিটি মোটামুটি, তাই এটা নিয়ে কথা বললাম না। সবশেষে বলা যায় এই ফোনটা একটা পারফেক্ট ডিল হতে পারে আপনার জন্য, ক্যামেরা খুব একটা ভালো না হলেও খারাপও না তেমন। তাই বলা যায় সবমিলিয়ে ফোনটিকে পারফেক্ট বলা যায়।
দাম – ১৭,৯৯০ টাকা (২/১৬)
২০,৯৯০ টাকা (৩/৩২)
ভালো দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- পারফরমেন্স
- ডিসপ্লে
- ব্যাটারি
- র্যাম এবং স্টোরেজ
খারাপ দিক –
- ক্যামেরা
২. হুয়াওয়ে অনর ৯ লাইট
এক নজরে হুয়াওয়ে অনর ৯ লাইট এর স্পেসিফিকেশন –
- ১৮:৯ রেশিও এর ৫.৬৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ১০৮০×২১৬০ পিক্সেল। ৪২৮ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি।
- হাইসিলিকন কিরিন ৬৫৯ যা ২.৪ গিগাহার্জ গতির অক্টাকোর কর্টেক্স এ৫৩ প্রসেসর।
- জিপিউ হলো মালি-টি৮৩০ এমপি২
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ বা ৪ গিগাবাইট র্যাম এবং ৬৪ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- হাইব্রিড সিম স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৮ ওরিও এর ওপর তৈরি ইএম-ইউআই ৮ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১৩ + ২ মেগাপিক্সেল সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও এলইডি ফ্ল্যাশ। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ১৬+২ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক,ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর।
- ৩০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই কথা বলি এর ডিজাইন নিয়ে, ফুল গ্লাস বডি এবং চকচকে আয়নার মতো ব্যাক, এক কথায় দেখতে অস্বাভাবিক সুন্দর! আমার মতে কেও এর ডিজাইন নিয়ে অভিযোগ করতে পারবে না।
১৮:৯ রেশিও এর ৫.৬৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের ডিসপ্লের চারপাশে বাড়তি জায়গা খুবই কম তাই দেখতে ভালোই লাগে। এর ফলে ফোন দেখতেও বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে নীল কালারটা একটু বেশিই সুন্দর! এর ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। কালার টোন শার্প, তাই ফোনটি ডিসপ্লে বলা যায় বাজেট অনুযায়ী পারফেক্ট।
এখন চলে আসা যাক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যা হলো এর পারফরমেন্স। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এর সাথে সবার পরিচয় থাকলেও এবার কথা বলবো হুয়াওয়ে এর কিরিন চিপসেট সম্পর্কে। পারফরমেন্স এর দিক থেকে এই চিপসেট এগিয়ে থাকলেও গেমিং এ এর অবস্থা খারাপ। তবে হেভি গেম বাদে নরমাল গেমগুলো ল্যাগ ছাড়াই চলবে। অ্যাপ ওপেনিং স্পিড কিছুটা স্লো মনে হয়েছে আমার কাছে। এছাড়া বাকি সব ঠিক আছে। তার সাথে ৩ বা ৪ জিবি র্যাম তো আছেই। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
ক্যামেরা নিয়ে কথা বললে প্রথমেই আসা যাক এর ৪ তা ক্যামেরা নিয়ে! অনেকেই হয়তো ভাবছেন ৪ টা ক্যামেরা এই দামে! মূলত দুইটা ক্যামেরা এখানে ডেপ্থ সেন্সর এর কাজ করে। ব্যাক ক্যামেরাটা দাম অনুযায়ী ভালোই। শার্পনেস, ডিটেইলস ছিল বেশ ভালো। সব মিলিয়ে ডে লাইটে বেশ ভালো ছবি পাওয়া যাবে তবে লো লাইটে নয়েজ ছিল ব্যাপক। সেলফি ক্যামেরাটা ছিল মোটামুটি মানে ডে লাইটে ভালো ছবি উঠে আর লো লাইটে নয়েজ বেশি । বোকেহ মোডও বেশ ভালো কাজ করে, বেশি আলোতে কর্নারগুলো ধরতে পারলেও কম আলোতে তেমন একটা পারে, তবে এটা স্বাভাবিক মনে হয়েছে আমার কাছে । এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের বেশ ভালো ছিল। আমার কাছে এই বাজেটে এটাই যথেষ্ট মনে হলো ।
এছাড়াও ৩০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যাবহারে ব্যাকআপ পাবেন। সাউন্ড কোয়ালিটিও ছিল বেশ ভালো। তাই এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। সবশেষে বলা যায় আমার মতে ফোনটি দাম এবং পারফরমেন্স বিচারে খারাপ না, মানে হেভি গেমার না হয়ে থাকলে কিনতে পারেন ফোনটি।
দাম – ১৬,৫০০ – ১৭,৫০০টাকা (৩/৩২) [আনঅফিসিয়াল]
ভালো দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ক্যামেরা
- ডিসপ্লে
- ব্যাটারি
- র্যাম এবং স্টোরেজ
খারাপ দিক –
- পারফরমেন্স (গেমিং, হেভি ইউজ)
১. হুয়াওয়ে ওয়াই ৯
এক নজরে হুয়াওয়ে ওয়াই ৯ এর স্পেসিফিকেশন –
- ১৮:৯ রেশিও এর ৫.৯৩ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ১০৮০×২১৬০ পিক্সেল। ৪০৭ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি।
- হাইসিলিকন কিরিন ৬৫৯ অক্টাকোর যার ৪টি ২.৪ গিগাহার্জ গতির কর্টেক্স এ৫৩ এবং ৪টি ১.৭ গিগাহার্জ গতির কর্টেক্স এ৫৩ প্রসেসর।
- জিপিউ হলো মালি-টি৮৩০ এমপি২
- ৩ গিগাবাইট র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ বা ৪ গিগাবাইট র্যাম এবং ৬৪ গিগাবাইট স্টোরেজ।
- দুটি সিম স্লট এবং একটি মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট।
- অ্যান্ড্রয়েড ৮ ওরিও এর ওপর তৈরি ইএম-ইউআই ৮ অপারেটিং সিস্টেম।
- পেছনে ১৩ + ২ মেগাপিক্সেল (f/২.২) সাথে থাকছে ফেজ ডিটেকশন অটোফোকাস ও এলইডি ফ্ল্যাশসহ আরো নানা ফিচার। এটি ১০৮০পি, ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। আবার সামনে থাকছে ১৬+২ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।
- ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, এফএম রেডিওমাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক, ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর, ফেস আনলক।
- ৪০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারি যা নন-রিমুভেবল।
রিভিউ
প্রথমেই কথা বলি এর ডিজাইন নিয়ে, ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি প্রায় হুয়াওয়ে নোভা ২ আই এর মতো। বডি যথেষ্ট শক্ত এবং ডিউরেবল ছিল। দেখতে বেশ ভালোই লাগে, মানে সিম্পল এর মাঝে সুন্দর আরকি, তবে এটারও নীল রং টা একটু বেশিই সুন্দর!
১৮:৯ রেশিও এর ৫.৯৩ ইঞ্চি স্ক্রিনের ডিসপ্লের চারপাশে বাড়তি জায়গা খুবই কম, যা বেশ আকর্ষণীয় লুক দেয়, এর ফলে ফোন দেখতেও বেশ ভালো লাগে। এর ডিসপ্লে সেকশনে পাচ্ছেন ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে। কালার টোন শার্প, কোনো নেগেটিভিটি পাই নাই। তাই বলা ফোনটি ডিসপ্লে বলা যায় বাজেট অনুযায়ী সেরা। তবে ডিসপ্লেতে কোনো প্রটেকশন নাই তাই আলাদা প্রটেক্টর লাগিয়ে নিতে হবে।
এখন চলে আসা যাক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যা হলো এর পারফরমেন্স। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এর সাথে সবার পরিচয় থাকলেও এবার কথা বলবো হুয়াওয়ে এর কিরিন চিপসেট সম্পর্কে । এর সাথে যদি তুলনা করতে চান তাহলে বলা যায় এটি স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ এর মতো পারফরমেন্স দিবে। এই চিপসেট বাকি পারফরমেন্স যেমন টুকটাক ফেসবুক, ইন্সটা বা হাল্কা ব্রাউজিং এর ক্ষেত্রে বেশ ভালো চলবে কিন্তু বেশি অ্যাপ বা হেভি গেমগুলো এই ফোনে না ব্যবহার না করাই ভালো। তবে হেভি গেম বাদে নরমাল গেমগুলো ল্যাগ ছাড়াই চলবে। হেভি গেম খেলা যাবেনা ব্যাপারটা এমন নয় তবে সেক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজে ল্যাগ হতে পারে। মোটকথা র্যাম ফাকা থাকলে হেভি গেম ল্যাগ ছাড়াই চলবে। এছাড়া বাকি সব ঠিক আছে। তার সাথে আছে ৩ বা ৪ জিবি র্যাম। বলা যায় দাম অনুযায়ী এর পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই তবে হেভি গেমারদের জন্য এই ফোন না।
ব্যাক ক্যামেরায় পাচ্ছেন ১৩+২ মেগাপিক্সেল যা শার্পনেস, ডিটেইলস ছিল বেশ ভালো। সব মিলিয়ে ডে লাইটে বেশ ভালো ছবি পাওয়া যাবে তবে লো লাইটে নয়েজ ছিল অনেক। পোর্ট্রেইট মোডে ছবিগুলো ভালোই ছিল, কর্নারগুলো খুব একটা শার্প ভাবে ডিটেক্ট করতে না পারলেও খুব একটা খারাপ না। সেলফি ক্যামেরাটা ছিল বেশ ভালো মানে ডে লাইটে ভালো ছবি উঠে কিন্তু লো লাইটে নয়েজ পাওয়া যাবে যা আমার মতে স্বাভাবিক। এছাড়াও কালার ব্যালেন্স, ডিটেইল ও ডাইনামিক রেঞ্জের বেশ ভালো ছিল। আমার কাছে এই বাজেটে এটাই যথেষ্ট মনে হয়েছে।
এছাড়াও ৩০০০ এমএএইচ ধারণক্ষমতার ব্যাটারিটি অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হেভি ব্যাবহারে ব্যাকআপ পাবেন। সাউন্ড কোয়ালিটিও ছিল মোটামুটি। তাই এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। সবশেষে বলা যায় আমার মতে ফোনটি দাম এবং পারফরমেন্স বিচারে খারাপ না, মানে হেভি গেমার না হয়ে থাকলে কিনতে পারেন ফোনটি। যদিও ২০ হাজারের মাঝে কোনো ফোনই আসলে হেভি গেমারদের জন্য নয়। তবে এইটার গেমিং তালিকার বাকি সব ফোন থেকে ভালো। পাশাপাশি এর পারফরমেন্সও ভালো। আমার কাছে এটাই একমাত্র ফোন যার কোনো খারাপ দিক নেই।
দাম– ১৯,৫০০ টাকা (৩/৩২)
ভালো দিক –
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ক্যামেরা
- ডিসপ্লে
- ব্যাটারি
- র্যাম এবং স্টোরেজ
- পারফরমেন্স
glycomet 1000mg tablet – buy sitagliptin for sale acarbose pills