কোনো বিমান দুর্ঘটনার স্বীকার হলে সর্বপ্রথম যে বস্তুটির খোঁজ করা হয় তা হচ্ছে বিমানটির ব্ল্যাকবক্সের । কারণ একটি বিমানের কি হচ্ছে না হচ্ছে তার সব রকম তথ্যই জমা থাকে ব্ল্যাকবক্স এ ।
অন্যান্য যন্ত্রচালিত বাহনগুলোর তুলনায় বিমানের দুর্ঘটনা ঘটার সংখ্যা অনেক কমই বলা যায়। তাই এয়ার ট্রাভেল কে পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ পরিবহন ব্যাবস্থা হিসাবে ধরে নেওয়া যায়। তবে মাটিতে চলা অন্যান্য যেকোনো যান্ত্রিক বাহনগুলোর চেয়ে বিমানের যন্ত্রপাতির ব্যাবহার অনেক জটিল। সামান্য ছোট ভুলের কারণে একটি বিমান দুর্ঘটনার স্বীকার হতে পারে । আপনি বিমান দুর্ঘটনার সংক্রান্ত কোনো খবর বা ডকুমেন্টারি দেখে থাকলে সেখানে ব্ল্যাকবক্স নামক একটি বস্তুর নাম শুনে থাকবেন ।
ব্ল্যাকবক্স কি? ব্ল্যাকবক্স কিভাবে কাজ করে? ব্ল্যাকবক্সের মধ্যে কি কি যন্ত্রাংশ আছে? আজকের লেখায় আমি সেসব বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো ।

Source: Skift
ব্ল্যাকবক্স আবিষ্কারের ইতিহাস
বিমান পরিবহন ব্যাবস্থা শুরু হওয়ার প্রথম দিককার সময়ে বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে বেশিরভাগ সময়ই তার আসল কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হতো না ।
বিমান দুর্ঘটনার কোনো চাক্ষুস সাক্ষী পাওয়া গেলেও বিমানের অভ্যন্তরীন যান্ত্রিক ব্যাপারস্যাপারগুলো অত্যন্ত জটিল হওয়ায় আসলে কি কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে? বিমান চালকদের ভুলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে নাকি বিমানের কোনো যন্ত্রাংশের সমস্যার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য’ই জানা সম্ভব হতো না।
১৯৫০ সালের প্রথম দিকে জেট ইঞ্জিনের মাধ্যমে চালিত বিমান “de Havilland Comet” বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার স্বীকার হলে মেলবোর্নের এরোনটিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরটরিজে কর্মরত অস্ট্রেলিয়ান গবেষক ডেভিড ওয়ারেন চিন্তা করেন এমন একটি ডিভাইসের প্রয়োজন যেটার মাধ্যমে ককপিটে পাইলটদের কথাবার্তা রেকর্ড করার পাশাপাশি বিমানের অন্যান্য যন্ত্র্যাংশ কিভাবে কাজ করছে সে সম্পর্কে তথ্য জমা রাখা যায় । এই যন্ত্র যদি তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে কোনো বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে তার আসল কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে এবং সে কারণগুলো জানা গেলে পরবর্তিতে যাতে বিমানে এ ধরনের সমস্যার কারণে দুর্ঘটনার স্বীকার না হয় সে ব্যাবস্থাও নেওয়া যাবে ।

১৯৫৩ সালে ‘de Havilland Comet’ এয়ারলাইনের জেট ইঞ্জিনের মাধ্যমে চালিত কিছু বিমান পরপর দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। যে দুর্ঘটনাগুলো কি কারণে ঘটেছিলো তা কোনোভাবেই উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার সুত্র ধরেই অস্ট্রেলিয়ান গবেষক ডেভিড ওয়ারেন তার পরিকল্পিত যন্ত্র বা ডিভাইস বানানোর কাজে নেমে যান এবং এমন একটি ডিভাইস আবিষ্কার করেন যার সাহায্যে বিমানের ককপিটের শব্দ এবং বিমানের অন্যান্য যন্ত্র্যাংশ কিভাবে কাজ করছে সে সম্পর্কিত তথ্য রেকর্ড করে রাখা যায় ।
তার আবিষ্কৃত ডিভাইসটির নাম দেওয়া হয়েছিল “Flight Memory Unit.”
১৯৫৭ সালে এই ব্ল্যাকবক্সের প্রথম দিককার মডেল (প্রটোটাইপ) তৈরি করা হয় । যে ব্ল্যাকবক্স ডিভাইসগুলোতে ককপিটের শব্দ এবং বিমানের অন্যান্য যন্ত্র্যাংশের সম্পর্কিত তথ্য জমা রাখা যেতো, চারঘন্টার তথ্য জমা রাখার ব্যবস্থা ছিলো এই ডিভাইসটিতে । ব্ল্যাকবক্স আবিষ্কারক ডেভিড ওয়ারেন মনে করতেন যদি এই ব্ল্যাকবক্স ডিভাইসটি জনপ্রিয় করা যায় তাহলে বিমান দুর্ঘটনার আসল কারণ বের করতে এই ডিভাইসটি কাজে লাগবে এবং পরবর্তিতে বিমান দুর্ঘটনা কমাতে সাহায্য করবে । প্রাইভেসি ভঙ্গ হবে এমন কারণ দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়ান এভিয়েশন কমিউনিটি তাদের বিমানে ব্ল্যাকবক্স ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানায় ।

অবশেষে ব্রিটিশ অফিসিয়ালসরা এই ডিভাইসটির গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হয় এবং স্বীকার করে নেন যে আসলেই ফ্ল্যাইট ডাটা রেকর্ডারের প্রয়োজন রয়েছে ।
তখন থেকেই বাণিজ্যিকভাবে ওয়ারেন ফ্ল্যাইট ডাটা রেকর্ডার বাজারজাত করা শুরু করেন । ডিভাইসটি একটি ফায়ারপ্রুফ কন্টেইনারের ভিতরে রাখা হতো । ১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আবার একটি বিমান দুর্ঘটনার স্বীকার হয় যে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন সম্ভব হয়নি । তখন থেকেই প্রত্যেকটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটেই এইরেকর্ডার ডিভাইসটি রাখার আদেশ দেওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে ।
ব্ল্যাকবক্স কিভাবে কাজ করে ?
নাম ব্ল্যাকবক্স হলেও ব্ল্যাকবক্স কিন্তু মোটেও কালো রঙের কোনো বক্স নয় । ব্ল্যাকবক্স ডিভাইসটি একটি কমলা রঙের ডিভাইস এবং ডিভাইসটি কমলা রঙের হওয়ার কারণ হচ্ছে যদি বিমান দুর্ঘটনার স্বীকার হয় তাহলে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে সহজেই ডিভাইসটি খুজে পাওয়া যায় । ব্ল্যাকবক্সের দুটো অংশ থাকে যার একটি ব্যাবহার করা হয় ককপিট রেকর্ডার হিসাবে মুলত পাইলটদের মধ্যে কি কথাবার্তা হচ্ছে তা রেকর্ড করার জন্যে ককপিট রেকর্ডারের ব্যাবহার করা হয় এবং দ্বিতীয় অংশটি ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার হিসেবে কাজ করে । ব্ল্যাকবক্স রাখা হয় বিমানের পেছনের দিকে যাতে বিমান যদি কখনো দুর্ঘটনার স্বীকার হয় তাহলে ব্ল্যাকবক্স সবচেয়ে কম ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

Source: ATSB
ব্ল্যাকবক্সে মুলত ককপিটে পাইলটরা কি কথা বলছেন তাদের মাইক্রোফোনে যে সিগন্যাল আসছে এসব রেকর্ড করা হয় আর তা ব্ল্যাকবক্সে জমা হতে থাকে এছাড়াও ব্ল্যাক বক্সে ৮৮ রকমের ডাটা রেকর্ড হয় এবং সেটা ব্ল্যাকবক্সে জমা থাকে। যার মধ্যে রয়েছে বিমানটি কি উচ্চতায় উড়ছে, বিমানের এংগেল কি অবস্থায় রয়েছে, বিমানটি কত স্পিডে উড়ছে, বিমানের যে ইঞ্জিনগুলো রয়েছে সেখানে তেলের তাপমাত্রা (অয়েল টেম্পেরেচার) তেলের চাপ (অয়েল প্রেসার) কেমন? বিমানের যে ইঞ্জিনগুলো রয়েছে সেগুলো অন নাকি অফ? বিমানের প্যাসেঞ্জার ক্যাবিনের তাপমাত্রা কত ?

ব্যাগেজ কম্পার্ট্মেন্টের তাপমাত্রা কত ? বিমানের ফুয়েল (তেল) কতটুকু রয়েছে? এ ধরনের বিমান সম্পর্কিত আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো ব্ল্যাকবক্স রেকর্ড করতে থাকে এবং তা ব্ল্যাকবক্সের হার্ডড্রাইভে জমা হতে থাকে । ব্ল্যাকবক্সে ডাটা জমা রাখার জন্যে সলিড স্ট্রেইড ড্রাইভ বা SSD ব্যাবহার করা হয় । ব্ল্যাকবক্সকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে বিমান যতই ভয়ানক দুর্ঘটনার স্বীকার হোক না কেনো ব্ল্যাকবক্সের ডাটার যাতে কোনো প্রকার ক্ষতি না হয় । ব্ল্যাকবক্সে টাইটানিয়াম বা স্টিলের কেসিং এর ব্যাবহার করা হয় । ব্ল্যাকবক্স একটি ফায়ারপ্রুফ ডিভাইস সুতারাং বিমান যদি আগুনে লেগে পুড়েও যায় তাহলে ব্ল্যাকবক্সের কোনো ক্ষতি হবে না ।

কোনো বিমান যদি দুর্ঘটনার স্বীকার হয় আর সে বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা যায় তাহলে সে বিমানটির আকাশে থাকাকালীন প্রত্যেকটি মিনিটের তথ্য ব্ল্যাকবক্সের মাধ্যমে জানা সম্ভব। যদিও কোনো বিমান দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে পানিতে ডুবে যায় তাহলে ব্ল্যাকবক্স যদি কোনো প্রকার লিকিউডের সংস্পর্শে আসে সে অবস্থায়ও ব্ল্যাকবক্সটি এক মাস যাতে কার্যকরি অবস্থায় থাকতে পারে এমন ব্যাটারি রয়েছে ব্ল্যাকবক্সে এবং ব্ল্যাকবক্স একটি আলট্রা সনিক সিস্টেমের ব্যাবহার করার মাধ্যমে ডাটা সেন্ড করতে থাকে যার সাহায্যে ( আল্ট্রা সনিক সিস্টেমের মাধ্যমে পানির নিচে থেকে অতি সহজেই ডাটা সেন্ড করা সম্ভব হয় ) দুর্ঘটনাস্থলে যদি কোনো উদ্ধারকারী দল পৌছায় তাহলে তারা আল্ট্রা সনিক সিস্টেমের মাধ্যমে পাঠানো সংকেতকে অনুসরন করে ব্ল্যাকবক্সটি খুজে পেতে সক্ষম হবেন ।

সব সময় হয়তো ব্ল্যাকবক্স সঠিকভাবে কাজ করেনা যেমন মালয়েশিয়ান MH370 ফ্ল্যাইটের ব্ল্যাকবক্স খুজে পাওয়া যায়নি এবং ফ্ল্যাইটটির আসলে হলে কি হলো সে সম্পর্কেও কোনো কিছু জানা যায়নি । তবে সাধারনত বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে ব্ল্যাকবক্সের সাহায্যেই দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন করা হয় । সবশেষে বলা যায় বিমান পরিবহন ব্যাবস্থাকে বর্তমান সময়ের সবথেকে নিরাপদ পরিবহন ব্যাবস্থা পরিনত করাতে ব্ল্যাকবক্সের অনেক কৃতিত্ব রয়েছে । দুর্ঘটনায় স্বীকার হওয়া ফ্ল্যাইটগুলো কি ভুলের কারণে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে সে সম্পর্কে ব্ল্যাক বক্সের মাধ্যমে তথ্য জেনে ভবিষ্যতে যাতে সে ভুলগুলো না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়ার কারণে বিমান দুর্ঘটনা অন্যান্য পরিবাহন ব্যাবস্থার তুলনায় অনেক নিরাপদই বলা যায় ।
order avodart 0.5mg without prescription order generic celebrex 100mg ondansetron medication
levofloxacin 250mg sale buy levaquin pill
Nice post. I learn something more challenging on different blogs everyday. It will always be stimulating to read content from other writers and practice a little something from their store. I’d prefer to use some with the content on my blog whether you don’t mind. Natually I’ll give you a link on your web blog. Thanks for sharing.
Fantastic beat ! I would like to apprentice while you amend your web site, how can i subscribe for a blog site? The account aided me a acceptable deal. I had been a little bit acquainted of this your broadcast offered bright clear idea
I view something genuinely special in this internet site.
https://candipharm.com/search?text=rizact_10 rizact 10