বিশ্ব জুড়ে নন্দিত এবং দৃষ্টিনন্দন সব থিয়েটারগুলো দেখলে চোখ কপালে না উঠে উপায় নেই! এর মধ্যে কোন কোনটি আবার দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও। আজ কথা হবে বিশ্বের সেরকমই ১০টি থিয়েটার নিয়ে।
ট্যাট্রো লা ফেনিচে (ভেনিস, ইতালি)
দর্শনের দিক দিয়ে চমৎকার ভঙ্গি তো আছেই, সাথে ঐতিহাসিক গভীরতাটাও কম নয় ভেনিসের বহুল জনপ্রিয় এই কলাভবন বা নাট্যশালাটির। এই থিয়েটারটি সর্বপ্রথম খোলা হয় ১৭৯২ সালে। এরপর থেকে সেখানে বিশ্বের নামজাদা সব গীতিকার, সুরকার যেমন- ভেরদি, রোজিনি, বেলিনি, দোনিযেত্তি এবং স্ট্রাভিন্সকির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৬৬ সালের অগ্নিকান্ডের মতো আরও বেশ কয়েকটি বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়ে এখনও পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে এই থিয়েটারটি। বর্তমানে ২২৩তম পর্বেও বেশ ভালো অবস্থানই দখল করে রেখেছে এই থিয়েটারটি।
সিবানে (ব্রিগে নযে, অস্ট্রিয়া)
জার্মান ভাষায় সিবানে কথাটির অর্থ হলো সমুদ্রের স্টেজ। নামটি অবশ্য এই থিয়েটারের সাথে একেবারেই মানানসই কারণ থিয়েটারটি বাস্তবিকেই পানিতে ভেসে থাকে। ব্রিগেন ফেস্টিভ্যাল সর্বপ্রথম শুরু হয় লেক কনস্ট্যান্সে ১৯৪৬ সালে এবং ধীরে ধীরে ১৯৫০ সালে স্টেজ নির্মাণ করা হয়। সিবানে দ্য ম্যাজিক ফ্লুট থেকে শুরু করে ওয়েস্ট সাইড স্টোরির মতো নন্দিত কাজগুলো এখানে মঞ্চস্থ করা হয়েছে।
সবচাইতে মজার ব্যাপার হলো যে, প্রতিটি নাটক বা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুযায়ী সেখানে নানান ধরনের মঞ্চ স্থাপন কর হয় এবং প্রতিটিই যেন পাল্লা দিয়ে নয়নাভিরাম এবং নতুনত্বের বার্তা নিয়ে আসে। স্থাপত্য শিল্পীরাও তাদের কারসাজি দেখানোর সুযোগ পান এই মঞ্চে।
দ্য উইন্টার গার্ডেন থিয়েটার (টরোন্টো, কানাডা)
কানাডার এই রত্নটি দ্বিতল থিয়েটারের একটি অংশ এবং এলগিন (বাকি অর্ধেক অংশ)ও দেখতে দারুণ। তবে উইন্টার গার্ডেন থিয়েটারই মূলত সকল দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। অবশ্য এই জনপ্রিয়তা পাওয়াটা যুক্তিযুক্তও বটে! এই থিয়েটারের দেয়ালগুলো হাতে আঁকা যা দেখে মনে হবে যে কোন বাগানে এসেছেন। এছাড়াও এই থিয়েটারের ওপরের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে ছাদ থেকে নিচের দিকে প্রকৃতপক্ষেই বীচ বৃক্ষের ডালপালা বা শাখা ঝুলানো আছে। একটি চিত্তাকর্ষক বিচিত্রানুষ্ঠান বা লোকসঙ্গীত হিসেবে এই থিয়েটারের যাত্রা শুরু হয়।
তবে ১৯২৮ সালে যখন সবাই বিচিত্রানুষ্ঠানের চাইতে টক শো এর প্রতিই অধিক মোহিত হওয়া শুরু করলো, তখন এই থিয়েটার বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। উইন্টার গার্ডেন থিয়েটারটি বহু দশক ধরে একই অবস্থায় পড়ে ছিলো। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে ওন্টারিও হেরিটেজ ট্রাস্ট বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ করে তা পুনঃস্থাপনের কাজটি করে। দেয়ালের শিল্পকর্মগুলোর কোন রকম ক্ষতি সাধন এড়াতে কাঁচা রুটি দিয়ে পুরো জায়গাটি পরিষ্কার করা হয়। বলা বাহুল্য যে পরিষ্কার খাতের এই খরচাপাতি মোটেও ভেস্তে যায়নি।
পালাউ ডি লা মিউজিকা ক্যাটালানা (বার্সেলোনা, স্পেন)
এই কন্সার্ট মিলনায়তনের পথ ধরে হাঁটতে থাকলে প্রতিটি বাঁকে বাঁকে চোখে পড়বে রঙিন কাচ, টাইল করা মোজাইক এবং মার্বেলের তৈরি ভাস্কর্য।
এটি ক্যাটালান আর্ট নুভাইউয়ের (স্পেনের ঐতিহাসিক মূল্যবোধ ভিত্তিক স্থাপত্য শিল্পকর্ম) একটি মারাত্মক শিল্পকর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয় যা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের একমাত্র কন্সার্টের স্থান হওয়ার অগ্রাধিকার লাভ করে।
পালাইস গার্নিয়ার (প্যারিস, ফ্র্যান্স)
এই নাট্যশালাতে আপনি কী ধরনের কী দেখতে পাবেন তা পাগল করে দেয়ার মতো ছাদের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন। এই অংশটি নতুন করে প্রস্তুত করা অংশগুলোর মধ্যে একটি যা মার্ক সিগাল ষাটের দশকের দিকে এর চিত্রাঙ্কনের কাজটি করেন।
তবে এর ঐশ্বর্যমণ্ডিত ঝাড়বাতির চারপাশে বিভিন্ন জনপ্রিয় নাট্যশালা বা অপেরা হাউজের সম্মিলিত দৃশ্য চোখে পড়বে। এই ঝাড়বাতিটি ১৮৯৬ সালে একজন নির্মাণ শ্রমিকের ওপর পড়লে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গ্যাস্টন ল্যারক্স তার দ্য ফ্যান্টম অব দ্য অপেরা লেখাটির জন্য অনুপ্রেরণা পান এই ঘটনা থেকেই।
মিনাক থিয়েটার (পোর্তকার্নো, ইংল্যান্ড)
এক টিকিটে দুই শো দেখতে চান? তাহলে মিনাকে চলে যেতে হবে, যেখানে দিয়ে আপনি সরাসরি নাট্যশালা দেখতে পাবেন এবং কর্নওয়াল দেশীয় অভূতপূর্ব দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন। পাথরের তৈরি বেঞ্চে বসতে হবে সেখানে।
আর সবচাইতে ভালোলাগে যখন সেখানে বৃষ্টিতে বসে থাকা যায়! মঞ্চে বসে পুরো ভিজে থাকার অনুভূতিটা কেমন তা নিশ্চয়ই সেখানে বসেই উপলব্ধি করা যাবে। পোর্তকার্নো বে এর এরকম নয়নাভিরাম দৃশ্য থাকলে মখমলি সিট এবং ওপরে ছাদ ছাড়াও অবলীলায় থিয়েটারের আনন্দ অনুভব করা যায়।
বলশই থিয়েটার (মস্কো, রাশিয়া)
১৭৭৬ সালে বহু কিছুই ঘটে যাচ্ছিলো। আমেরিকা হয়ে যাচ্ছিলো ম্যারিকা, ইলুমিনাতি শুরু হচ্ছিলো, দ্বিতীয় ক্যাথরিন প্রিন্স পিয়োটর উরুসভকে একচেটিয়া দশ বছরের জন্য রাশিয়ার বিনোদন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মঞ্জুরি দেন।
পিয়োটর উরুসভ সিদ্ধান্ত নিলেন যে, প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি হলো একটি থিয়েটার তৈরি করা। আর এভাবেই ১৭৮০ সালে বলশই নির্মাণ করা হলো। এরপর থেকে এই থিয়েটারে বহুবার বিভিন্ন রকম পরিবর্তন আনা হয়।
গুয়াংঝো অপেরা হাউজ (গুয়াংঝো, চায়না)
স্থাপত্য শিল্প নিয়ে আপনার জ্ঞান যদি টেড মসবিতেই শুরু এবং শেষ হয়, তবুও আপনার সম্ভবত যাঝা হাদিদের ছোপ-ছোপ ক্রীড়া ক্ষেত্রের বিষয়ে জানার কথা। যাঝা হাদিদের কাজের মধ্যে রয়েছে লন্ডনের অ্যাকোইয়াটিক্স সেন্টার এবং টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়াম।
তার সংগঠনের অসাধারণ সব কাজের মধ্যে রয়েছে চায়নার অপেরা হাউজ বা নাট্যশালা। সেখানকার ঝিকিমিকি আলো এবং জলপ্রপাতের মতো স্তরগুলো আপনাকে এর সৌন্দর্য উপভোগ করাতেই ব্যস্ত রাখবে।
তিতুর ম্যানওয়েল (ভ্যালেতা, মাল্টা)
ছয় বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের তিতুর ম্যানওয়েলের ভেতরে আসার অনুমতি নেই। তাই বুঝতেই পারছেন যে, জায়গাটি আসলেই কতোটা অভিনব! এরপরও যদি কোন মন্থর সন্দেহ থাকে তাহলে একই নামধারী বিবেচনা করতে পারেন, দ্য গ্র্যান্ডমাস্টার অ্যান্টন ম্যানোয়েল ডি ভিলেনা।
এই থিয়েটারে আপনার আশানুরূপ অপেরা বা গীতিনাট্য এবং উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সবটাই পাবেন।
বালবোয়া থিয়েটার (স্যান ডিয়েগো, যুক্তরাষ্ট্র)
বছরের ধারাবাহিকতায় বালবোয়া নানান রকমের রূপ ধারণ করেছে। প্রথমবার সিনেমা হল হিসেবে, পরেরবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নৌবাহিনীর হাউজিং হিসেবে এবং তৃতীয়টি ক্ষয়প্রাপ্ত খালি স্থান হিসেবে।
তবে এখন এই থিয়েটারটি সুন্দর সাজানো গোছানো একটি জায়গা যেখানে নার্ডিস্ট পোডাকাস্ট, ভেজি টেলস ও স্ক্রিমফেস্টস্ সরাসরি দেখানো হয়।
buy generic rybelsus 14 mg – glucovance drug purchase desmopressin