রেইন ফরেস্ট বা অতিবৃষ্টি অরণ্য হচ্ছে সেই সকল অরণ্য যেখানে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, বিশেষ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট গুলোতে বছরে গড়ে ২৫০ থেকে ৪৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। ‘পৃথিবীর রত্ন’ বা ‘পৃথিবীর বৃহত্তম ঔষধালয়’ বলা হয়ে থাকে এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট গুলোকে। কর্কটক্রান্তি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখার মাঝখানে নিরক্ষীয় অঞ্চলে মূলত বেশির ভাগ রেইনফরেস্ট অবস্থিত। এই রেইনফরেস্ট গুলো দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, সাবসাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, কেন্দ্রীয় আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপে অবস্থিত। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেইন ফরেস্ট হল আমাজন। কিন্তু আমাজন আমার আজকের বিষয় নয়, আজকে আমি বলবো পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রেইন ফরেস্ট ‘কঙ্গো রেইন ফরেস্ট’ নিয়ে।
কঙ্গো রেইন ফরেস্ট কেন্দ্রীয় আফ্রিকার ক্যামেরুন, নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন, কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্র জুড়ে বিস্তৃত। ১.৫ মিলিয়ন বর্গ মাইল জুড়ে অবস্থিত এই রেইনফরেস্টটি পৃথিবীর সকল রেইন ফরেস্টের সম্মিলিত আয়তনের ১৮%। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী কঙ্গো নদী এই রেইনফরেস্টের মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হয়। এই রেইনফরেস্টের দুই তৃতীয়াংশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত এবং ঐ দেশের ৫৭% স্থলভূমি জুড়ে এই অরণ্য। সুবিশাল জীব বৈচিত্র্য এবং কেন্দ্রীয় আফ্রিকার লাখ লাখ লোকের জীবিকার যোগান দেয়ার কারণে এটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের দুই তৃতীয়াংশ লোক এই রেইনফরেস্টের উপর নির্ভর করে তাদের খাবার, আশ্রয় এবং ওষুধের জন্য।
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও দারিদ্র এবং যুদ্ধ থেকে উৎখাত হওয়ার দরুন সেখানকার অধিকাংশ নাগরিক বন্য প্রাণীর মাংসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফাঁদ পেতে কিংবা গুলি করে বন্য প্রাণী ধরা হয়, সেই মাংস হয় খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় না হয় তাদের রাজধানী কিনাশাসা ও অন্যান্য নগর অঞ্চলে বিক্রি করা হয় অর্থ উপার্জনের জন্য। কাঠ সংগ্রহকারী ও খনি খননকারী কোম্পানি গুলো রেইনফরেস্টের একটা বিরাট অংশ পরিষ্কার করে রাস্তা বানানোর বদৌলতে শিকারিরা এখন অরণ্যের এমন গহীন জায়গায় পৌছাতে সক্ষম যেখানে তারা আগে যেতে পারতোনা। এর ফলে গরিলা ও বনোবো এর মত অনেক প্রাণীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে রাতারাতি।
আমাজন কিংবা ইন্দোনেশিয়ান রেইনফরেস্টের তুলনায় বৃক্ষ নিধনের হার এখানে অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও কঙ্গো রেইনফরেস্টের ইকোসিস্টেম অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে বাণিজ্যিক ভাবে কাঠ সংগ্রহ, কৃষিকাজের জন্য বন উজাড়, গাছ কেটে রাস্তা তৈরি এবং স্থানীয় লোক জনের মধ্যে দ্বন্দ্বের জন্য। যার ফলে বনজ সম্পত্তি অনেক কমে গিয়েছে এবং বন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবসা অনেক বেড়ে গিয়েছে। কঙ্গো যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক বছর পর ২০০৪ সালে সরকার দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এবং অনেক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য সেখানে বাণিজ্যিক ভাবে কাঠ সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। গ্রিনপিসের মতে, রেইনফরেস্টের ৫০ মিলিয়ন হেক্টর অঞ্চল কে কাঠ সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে যার মধ্যে ২০ মিলিয়ন হেক্টর শুধু গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মধ্যে পড়ে। FAO (United Nations Food and Agriculture Organization) এর দেয়া তথ্য মতে ১৯৯০-২০০০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় আফ্রিকা প্রায় ৯১,০০০ বর্গ কিলোমিটার রেইনফরেস্ট হারিয়েছে বৃক্ষ নিধনের কারণে। অনুমান করা হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ কঙ্গো রেইনফরেস্টের ৩০% বিলীন হয়ে যাবে যদি না বৃক্ষ নিধনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয় বা বাণিজ্যিক কাঠ সংগ্রহ কমানো হয়।
জীব বৈচিত্র্যে অনন্য এই রেইনফরেস্ট। এখানে প্রায় ১০,০০০ প্রজাতির উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যার মধ্যে কমপক্ষে ৩০% শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই পাওয়া যায়, এছাড়াও রয়েছে ৪০০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭০০ প্রজাতির মাছ, ১,০০০ প্রজাতির পাখি। যে সকল প্রজাতি এখানে পাওয়া যায় তার মধ্যে পিগমি শিম্পাঞ্জী, বন্য হাতি, গরিলা, কঙ্গো ময়ূর, সাদা গণ্ডার, ওকাপি ও স্থল প্যাঙ্গোলিন অন্যতম। তবে এই সকল প্রজাতির মধ্যে অদ্বিতীয় প্রজাতি হচ্ছে ওকাপি যেটি দেখতে অনেকটা জিরাফের মত কিন্তু এর পায়ের সাদা কালো ডোরা কাটা দাগ মনে করিয়ে দেয় জেব্রার কথা।
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের অরণ্যে আনুমানিক ১০,০০০-২০,০০০ ওকাপি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই ওকাপি গুলো সাধারণত ৫০০-১০০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ি অঞ্চলের দিকে এবং ৫০০ মিটারের কম উচ্চতার জলা ভূমিতে থাকে। এই ওকাপিদের প্রধান খাদ্য হল ঘাস, ফলমূল, চারা গাছ, ফার্ন, ছত্রাক ইত্যাদি। এমন অনেক প্রজাতির গাছ এরা খায় যা মানুষের জন্য বিষাক্ত।
ওকাপির বিষ্ঠা পরীক্ষা করে দেখা যায় এরা বজ্রপাত এ পুড়ে যাওয়া গাছের কয়লাও ভক্ষণ করে থাকে। এছাড়াও মাঠ পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় এদের শরীরে খনিজ ও লবণের চাহিদা প্রাথমিকভাবে পূরণ হয় আশেপাশের নদী ও ঝর্নার ঈষৎ লবণাক্ত, সালফারযুক্ত, লালচে কাদা থেকে।
এছাড়াও এই রেইনফরেস্টের অনেক বড় একটা অংশ জুড়ে বিচরণ করছে মাংসাশী আফ্রিকান চিতাবাঘ। নির্জনবাসি, শক্তিশালী ও ক্ষিপ্রগতির এই চিতাবাঘ টিকটিকি থেকে শুরু করে পাখি, কৃষ্ণসার, মহিষের বাছুর পর্যন্ত সব কিছু শিকার করে।
চিতাবাঘের চেয়ে আকারে ছোট কিন্তু অনেক ভয়ানক আরেকটি মাংসাশী প্রাণী হল আফ্রিকান সোনালী বিড়াল। এই বিশালদেহী বিড়াল পাখি, বীবর, বানর এবং ছোট ছোট কৃষ্ণসার শিকার করে থাকে। এই অরণ্যের অন্যান্য মাংসাশী প্রাণী গুলো হল গলায় ছোপ ছোপ দাগযুক্ত নখবিহীন ভোঁদড়, আফ্রিকান ও পাম গন্ধগোকুল এবং নকুল।
এই রেইনফরেস্টের গাছের ঘন পাতার শামিয়ানায় বাস করে কালো কলম্বাস বানর যারা তাদের লাফ দেয়ার অসাধারণ পারদর্শিতার জন্য বিখ্যাত। এরা আফ্রিকার অন্যতম সংকটাপন্ন বানর প্রজাতি।
কঙ্গো রেইন ফরেস্ট কিছু কিছু জায়গায় গাছপালা এতো বেশি ঘন যে সেখানে এখন পর্যন্ত কোন মানুষের পায়ের ছাপ পড়েনি। এই অরণ্যের সবচেয়ে ঘন জায়গায় সূর্যালোকের মাত্র ১% পৌছাতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্যান্সার ইন্সটিটিউট রেইনফরেস্টে আনুমানিক ১৪০০ প্রজাতির উদ্ভিদের খোঁজ পেয়েছে যা ক্যান্সারের প্রতিকার হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে লিয়ানাস নামে এক প্রকার গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ পাওয়া যায় যা দেখতে শিরার মত এবং ৩ হাজার ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সেগুন কাঠ এই অরণ্যে অনেক বেশি দেখা যায়। সেগুন গাছ গুলো ১৫৪ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। কাঠ হিসেবে এই সেগুন গাছের চাহিদা অনেক বেশি এবং এটি বন উজাড়ের অনেক বড় একটা কারণ।
প্রায় ৫০,০০০ বছর যাবত মানুষজন বসবাস করে এই অরণ্যে। এখানে সব মিলিয়ে ১৫০ টি জাতি বাস করে যাদের মধ্যে অনেকে এখনো গভীর অরণ্যে শিকার করে আর দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। এই জাতি গোষ্ঠী গুলোর মধ্যে বিখ্যাত পিগমি রাও আছে যারা বিভিন্ন নাম যেমন: বুতি, আকা, বাকা, টা, এফে নামে পরিচিত। পিগমি পুরুষ দের গড় উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি, আর মহিলাদের গড় উচ্চতা ৪ ফুট ১ ইঞ্চি।তাদের এই স্বল্প উচ্চতা তাদের কে রেইনফরেস্টের ভিতর সহজে চলাচল করতে সহায়তা করে। তাছাড়া কম উচ্চতার কারণে তাদের ওজন ও কম হয়। এরা ১৫-৭০ জনের একেকটা দলে একত্রে বসবাস করে। তারা মূলত যাযাবর জীবন যাপন করে থাকে, বছরে বেশ কয়েকবার তারা স্থান পরিবর্তন করে। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় তারা তাদের জিনিসপত্র পিঠে বহন করে নিয়ে যায়। তাদের যাযাবর জীবন যাপনের ফলে অরণ্যের তেমন কোন ক্ষতি হয়না কারণ তারা কোন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অনেকদিন থেকে সেখানকার বনজ সম্পত্তির মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহার করেনা। কোন বসতি গড়ে তুলার সময় এরা বনের ছোট ছোট গাছপালা গুলো পরিষ্কার করে কিন্তু উপরে লম্বা লম্বা গাছের পাতা গুলো ঐরকমই রাখে অতিরিক্ত তাপ ও বৃষ্টি থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য। তারা যখন কোন বসতি ছেড়ে যায় তখন সেখানে অরণ্য দ্রুত পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়। যদিও তারা পরিবেশ বান্ধব ভাবে বসবাস করার জন্য বিখ্যাত কিন্তু বাণিজ্যিক কাঠ সংগ্রহ বা অবৈধ ভাবে বন দখলের মত বিষয় গুলোর জন্য অরণ্যে বসবাসকারী লোকদের কে জীবনের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।
অধিকাংশ আফ্রিকান উপজাতিরা যারা অরণ্যে বসবাস করে তারা বছরের বেশিরভাগ সময় কোন না কোন গ্রামের কাছে বসবাস করে। এতে করে গ্রামের লোকজনের কাছে কাঠ ও বন্য প্রাণীর মাংস বিক্রি করা তাদের জন্য সহজ হয়। তারা মূলত নিজেদের পছন্দের পরিবারের কাছে জিনিসপত্র বিক্রি করে, আর একবার তারা যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে যায় তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিবারের কাছেই বিক্রি করে। মাঝে মাঝে গ্রামের পরিবার ও অরণ্যের পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক এতো বেশি ভালো হয়ে যায় যে সে সম্পর্ক তাদের পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত ঠিক থাকে। অরণ্যে বসবাসকারী লোকজন চাইলেই গ্রামে এসে বসবাস করতে পারে কিন্তু তারা অরণ্যে বসবাস করাটাই বেছে নেয় কারণ সেখানে রয়েছে পরিষ্কার পানি, কম রোগবালাই, কম পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা, কম দ্বন্দ্ব। আরেকটা অনেক বড় কারণ হল অরণ্যে তাদের কোন টাকার দরকার নেই। সমীক্ষা থেকে জানা যায়, আফ্রিকান রেইনফরেস্টের লোকজনের স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস সাবসাহারান অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর লোকজনের চেয়ে ভালো।
কঙ্গো রেইন ফরেস্ট এর লোকজন শিকার করার জন্য বিখ্যাত। প্রতিটা দলের আলাদা আলাদা পদ্ধতি রয়েছে শিকার করার। উদাহরণস্বরূপ, এফে রা প্রায় ৪৫ প্রজাতির প্রাণী শিকার করে এবং তাদের শিকারের মূল হাতিয়ার হল তীর ধনুক। অন্য দলেরা তীর ধনুকের পাশাপাশি জাল ও ব্যবহার করে শিকারের জন্য। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুধু পুরুষ রা তীর ধনুকের সাহায্যে বৃক্ষবাসী প্রাণী শিকারের কাজ করে থাকে, তবে স্থলচর প্রাণী শিকারের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। স্থলচর প্রাণী শিকার করার জন্য পুরুষরা একটি উপবৃত্তাকার জাল মাটিতে বিছিয়ে রাখে। এখানে মহিলাদের কাজ হল শিকার কে ভয় দেখিয়ে ঐ জালের ভেতর আনা। জালে প্রাণী আসার সাথে সাথে পুরুষরা বর্শা নিক্ষেপ করে সেটার শিকার করে।
তারা বন্য প্রাণীদের অনেক সম্মান করে এবং শিকার করার সময় প্রাণীদের যত কম কষ্ট দেয়া যায় সে চেষ্টা করে। কিন্তু তবু ও দিন দিন বন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবসা অনেক বেড়ে গেছে। তাছাড়া অবৈধ বন দখলকারীরা ইদানীং অরণ্যে বসবাসকারীদের বিলুপ্তপ্রায় আফ্রিকান হাতির অনুসরণের কাজে ব্যবহার করছে। কারণ আফ্রিকান হাতির দাঁতের মূল্য সাভানা অঞ্চলের হাতির দাঁতের তুলনায় অনেক বেশি দামি।
অতুলনীয় জীব বৈচিত্র্য আর হাজার হাজার প্রজাতির আবাসস্থল কঙ্গো অরণ্যের সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরী বিশেষ করে কেন্দ্রীয় আফ্রিকার জনগণ ও প্রাণীকুল যারা খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য এই অরণ্যের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ১৬% ভূমি সরকারি রক্ষণাবেক্ষণে আছে এবং সেখানে কিছু প্রজাতির প্রাণী যেমন: পশ্চিমা স্থলভূমির গরিলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫,০০০ এ। ২০০৮ সালে কঙ্গো প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এই রেইনফরেস্ট কে বৃক্ষ নিধনের প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য। গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৮% ভূমি সংরক্ষণ করা আছে এবং পরিকল্পনা আছে এর পরিমাণ ১০-১৫% এ উন্নীত করার। গ্যাবনের ৮০% জুড়েই এই রেইনফরেস্ট অবস্থিত। ক্যামেরুনের ৮% বর্তমানে সংরক্ষিত কিন্তু দুর্বল আইন প্রয়োগকারী ও জনবলের অভাবে এখানে রেইনফরেস্ট সংরক্ষণ করা ক্যামেরুন সরকারের জন্য বেশ দুরূহ ব্যাপার। এ ছাড়াও নিরক্ষীয় গিনি তে ১৬.৮% এবং কেন্দ্রীয় আফ্রিকায় ১৬.৬% সংরক্ষিত। এছাড়াও জাতিসংঘ রেইনফরেস্টের ৫ টি জাতীয় উদ্যান কে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এসবের বাইরেও অনেক বড় একটা ঝুঁকি এই অরণ্যের লোকজনের জন্য সৃষ্টি করছে এখানকার কাঠ সংগ্রহকারীরা। কারণ তারা এখানে বাণিজ্যিক ভাবে কাঠ কাটতে এসে উপজাতিদের মধ্যে টাকা, তামাক, মারিজুয়ানার মত জিনিসের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে যা এখান কার জাতি গোষ্ঠী গুলোর সহজ সরল জীবন কে জটিল করে তুলছে এবং সেখানে শান্তি বিনষ্ট করছে। বন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণের পাশাপাশি এইসব দিকেও কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত অতি সত্বর।