মাফিয়া! শুনলেই হয়তো অনেকের গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যায়। কেউ কেউ হয়তো আবার স্মৃতির পাতা হাতরে হাতরে চলে যান ‘গডফাদার’ ছবির দৃশ্যপটে। কিন্তু আপনারা যদি ভেবে থাকেন, বাস্তবের মাফিয়া গল্প/ছবির মতই হবে, তাহলে আপনাদের ভুল ধারণা ভাঙ্গা দরকার। বাস্তবের মাফিয়া আরও ভয়ংকর, আরও হিংস্র। তো আসুন জেনে নেওয়া যাক, তেমনই দশটি মাফিয়া দল সম্পর্কে।
১.ইয়াকুজা (Yakuza)
এই কোরীয় জাপানিজ অর্গানাইজড ক্রাইম সিন্ডিকেটটি মাফিয়া জগতের একদম শীর্ষে আছে। চলন-বলনেই যার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের অফিস বিল্ডিং আছে, আছে বিজনেস কার্ডও এবং মাঝে মাঝেই তারা স্থানীয় সংবাদপত্রের প্রধান ফোকাসে থাকে। পরিহিত কালো বিজনেস স্যুট এবং ডগা কাটা কনিষ্ঠা (little finger) আঙ্গুল, এই হলো তাদেরকে চেনার সবচেয়ে সহজ উপায়।

Source: Ethereum World News
ওদের বস ইউবিতসুমে (yubitsume) নামে পরিচিত। রাজনীতি এবং বিভিন্ন কর্পোরেট বোর্ডের ডিরেক্টররাও এই অর্গানাইজেশনের সদস্য। এ থেকেই এর প্রতাপ সম্পর্কে আঁচ করা যায়। অনেকে আবার এদের গোকুডো (Gokudo) নামেও ডেকে থাকে। যদিও তাদের কুখ্যাতির কমতি নেই, তবুও ২০১১ সালের সুনামির পর এই মাফিয়া অর্গানাইজেশনটিই ত্রাণ নিয়ে সবার আগে এগিয়ে গিয়েছিল।
২. এইটিন্টথ স্ট্রীট গ্যাং (18th Street Gang)
নর্দান হেমিস্ফিয়ারের এই মাফিয়া অর্গানাইজেশনটি ‘চিলড্রেন আর্মি’ নামেও পরিচিত। কারণ আর কিছুই না, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাইস্কুল পড়ুয়াদের সংগঠনে ঢোকায় এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের অভিজ্ঞ করে তোলে। এই দলটির সদস্য সংখ্যা অনেক।

Source: Pinterest
কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রতেই তাদের সদস্য সংখ্যা ৩০,০০০ এর উপরে। যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলস হল তাদের মূল ঘাটি। মেক্সিকান কার্টেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি ছোট কার্টেলের সাথেও তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে জানা যায়। প্রতিটি মাফিয়া সংগঠনের মতই তাদেরও প্রচুর প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। যাদের মধ্যে অন্যতম হলো এম.এস.-১৩।
৩.মুনজিকি (Mungiki)
‘মুনজিকি’ শব্দের অর্থ হলো ‘অধিক সংখ্যক’। নামের মতই এই মাফিয়া গ্রুপটিও অন্য গ্রুপগুলো থেকে কিছুটা আলাদা। এটি শুধু একটি মাফিয়া অর্গানাইজেশনই নয়, একটি টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনও বটে। যারা বিদেশী সকল কিছু বিশেষত পশ্চিমা পণ্য বর্জন করে নিজেদের স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর।

Source: kdrtv.com
কেনিয়া ভিত্তিক এই অর্গানাইজেশনটি স্থানীয় সকল কল-কারখানা নিয়ন্ত্রণ করে। স্থানীয় লোকজন তাদের ভয়ে সর্বদা তটস্থ হয়ে থাকে। কেননা, কেউ যদি তাদের বিরাগভাজন হয় তবে তারা তার মাথা কেটে উদাহরণ তৈরি করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভিক্টিমকে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। স্থানীয় পুলিশ এই অর্গানাইজেশনের কোনো সদস্যকে ধরতে পারলে কোনো ছাড় দেয়না।
৪.রাশিয়ান মাফিয়া (Russian Mafia)
এই মাফিয়া সংগঠনটি সবচেয়ে ভয়ানক অর্গানাইড ক্রাইম গ্রুপগুলোর মাঝে একটি। যারা তাদের সৃষ্টির আদি লগ্ন থেকেই দাপটের সাথে রাশিয়ায় বিরাজ করে আসছে। প্রাক্তন একজন F.B.I স্পেশাল এজেন্টের ভাষ্যমতে, রাশিয়ান মাফিয়া হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক মানুষকে নিয়ে গঠিত সংগঠন। প্রায় ৪৫০ টি গ্রুপ নিয়ে এই পুরো সংগঠনটি গঠিত। এদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষেরও অধিক। তাদের অর্গানাইজেশনের প্রতীকযুক্ত উল্কি (tattoo) দিয়ে এই অর্গানাইজেশনের সদস্যদের শনাক্ত করা যায়। প্রাক্তন কিছু সামরিক সদস্য এই অর্গানাইজেশনের সদস্য, যার ফলে তারা সবসময় সামরিক যুদ্ধকৌশল অনুসরণ করে থাকে। এই অর্গানাইজেশনটির প্রধান কাজ মূলত টেরোরিজম, অর্গান ট্রাফিকিং, কিডন্যাপিং এবং কন্ট্রাক্ট কিলিং।
৫. হেল’স এঞ্জেলস (Hell’s Angels)
পুরো নাম ‘হেল’স এঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাব’। এই অর্গানাইজ ক্রাইম সিন্ডিকেট টি যুক্তরাষ্ট্রে একটি বহুল পরিচিত মাফিয়া সংগঠন। এই সংগঠনের সদস্যরা ‘হার্লি ডেভিডসন’ নামক মোটর সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। এই সংগঠনটির নীতি হলো, ক্লাবের সদস্যরা সবাই মোটরসাইকেল প্রেমী মানুষ এবং যদি কোনো অপরাধ সংগঠিত হয় তবে সেটির দায় সেই অপরাধী সদস্যের কেউ বহন করে না।

Source: hellsangels.com
যদিও ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত ‘The Wild Angels’ নামক চলচ্চিত্রে তাদেরকে হিংস্র এবং চরম মাত্রার হিংসাত্মক অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সংগঠনের মূল কাজ হলো ড্রাগ ট্রাফিকিং, পতিতাবৃত্তি এবং চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা।
৬.সিসিলিয়ান মাফিয়া: লা কোসা নোস্ট্রা (Sicilian Mafia: La Cosa Nostra)
এই মাফিয়া সংগঠনটি ১৯ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আত্মপ্রকাশ করে। সে দিক দিয়ে একে অন্যদের তুলনায় নতুনই বলা যায়। কিন্তু এই অল্প সময়ে এটি যে পরিমাণ ত্রাসের সঞ্চার করেছে, সেদিক দিয়ে একে উপেক্ষা করার উপায় থাকেনা। অন্যান্য সংগঠনের সাথে এর পার্থক্য হলো, এই সংগঠনটি কঠোরভাবে পরিবারভিত্তিক। সিসিলিয়ান কয়েকটি পরিবার এই সংগঠনটি নিয়ন্ত্রণ করে। এদের নিয়ম অত্যন্ত কঠোর। নিখুঁত, নীরব এবং সতর্ক, এই হলো তাদের মূলমন্ত্র। যা ওমের্তা (omertà) নামে পরিচিত। যার ফলে তাদের কাজ অত্যন্ত সফলভাবে পূর্ণ হয়। ভুল-ত্রুটির কোনো স্থান এই সংগঠনে নেই। আরোপ্য কাজ করতে কেউ যদি ব্যর্থ হয়; তখন তার সাজা হয় একটাই, মৃত্যুদণ্ড।
৭.এলবানিয়ান মব (Albanian Mob)
১৫ টিরও অধিক গোষ্ঠী দ্বারা এই সংগঠনটি পরিচালিত। বাইরের লোক কম থাকায় এবং পরিবার ভিত্তিক সংগঠন হওয়ার কারণে এরা অত্যন্ত সুসংগঠিত। এদের এই কর্মকাণ্ডের ফলে এরা আজ বিশ্বব্যাপী শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে ।

Source: pinterest.com
এদের মূল কাজ হলো, মাদক পাচার, মানুষ পাচার এবং অস্ত্র চোরাচালান। এরা অত্যন্ত হিংস্র এবং প্রতিশোধপরায়ন। সম্প্রতি এদের গডফাদার ডাউট কাদ্রিওভস্কি (Daut Kadriovski) ইউরোপের সবচেয়ে বড় ড্রাগ ডিলার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
৮.সার্বিয়ান মাফিয়া (Serbian Mafia)
যুগোস্লাভ যুদ্ধের পর যখন সার্বিয়ার অর্থনীতিতে ধস নামে, তখনই এই সার্বিয়ান মাফিয়ার উদ্ভব ঘটে। মূলত অর্থনীতিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষেই এই সংগঠনটির জন্ম হয়। বর্তমানে প্রায় ২০-৩০ টি দেশে এরা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে নিজেদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন কাজের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো, মাদক এবং অস্ত্র পাচার। এই দলটি অত্যন্ত হিংস্র। বিশেষ করে, যারা তাদের মতামতের বিরোধী, তাদের ব্যাপারে এরা প্রায় উন্মাদের মত আচরণ করে। এক্ষেত্রে ২০০৯ সালে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উল্লেখ করা যায়। মাদ্রিদের প্রধান সংবাদপত্রের মতে, এই মাফিয়া দলের বসরা তাদের একজন বিরুপভাবাপন্ন ব্যক্তিকে প্রথমে মিট-গ্রাইন্ডারে পিষে হত্যা করে, তারপর সেই মাংস রান্না করে খেয়ে ফেলে। এই ঘটনার ফলে জনমনে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
৯.মন্ট্রিয়াল মাফিয়া: দ্য রিজ্জুটোস (Montreal Mafia: The Rizzutos)
যদিও পরিবারভিত্তিক এই অর্গানাইজড ক্রাইম সিন্ডিকেটটি মূলত মন্ট্রিয়াল ভিত্তিক, কিন্তু এদের কর্মকাণ্ড সাউদার্ন কিউবেক এবং ওন্টারিও পর্যন্ত বিস্তৃত। তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইউয়র্কের ‘বোনানো’ পরিবারের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ফলে ১৯৭০ সালের শেষের দিকে মন্ট্রিয়ালে বিশাল মাফিয়া যুদ্ধ সংগঠিত হয়।

Source: ctvnews.ca
তখন পুলিশ এই সংগঠনের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিকে স্টিং অপারেশন এবং গুপ্তহত্যার মাধ্যমে নির্মূল করে ফেলে। যার ফলে যুদ্ধ থেমে যায়। কিন্তু একইসাথে এই সংগঠনটির মাঝে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়। যা কাটিয়ে উঠতে এদের অনেক সময় লাগে। বর্তমানে রিজ্জুটো পরিবার মন্ট্রিয়ালের বেশিরভাগ কন্সট্রাকশন কোম্পানির মালিক।
১০. মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেলস (Mexican drug cartels)
যদিও এদের অস্তিত্ব অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু ম্যাডেলিন এবং ক্যালি-কলম্বিয়ান কার্টেলের ধ্বংসের আগ পর্যন্ত এরা ক্ষমতায় আসতে পারেনি। এখন মেক্সিকোর অর্থনীতির প্রায় ৬৩% ই মূলত ড্রাগ মানি। মেক্সিকোতে সংগঠিত প্রায় সকল অপরাধের পেছনেই এই সংগঠন কোনো না কোনো ভাবে অবশ্যই জড়িত থাকে।

Source: braitbart.com
কিছুদিন পর পর ড্রাগ-ওয়ার (drug war) এর জন্যও এরাই মূলত দায়ী। খুন, ধর্ষণ, অপহরণ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা এই কার্টেলের সদস্যরা করে না। মোটকথা, এদের কাজে নীতির কোনো বালাই নেই। প্রায় সময়ই এর সদস্যদের রকেট-লঞ্চার, একে-৪৭ এর মতো সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায়।
dutasteride without prescription dutasteride us buy zofran 4mg online
buy levofloxacin sale generic levofloxacin
It’s exhausting to search out knowledgeable folks on this topic, however you sound like you already know what you’re talking about! Thanks
Hello, Neat post. There is an issue together with your website in web explorer, could test this?K IE still is the market leader and a big section of other people will miss your fantastic writing due to this problem.