ফুটবল খেলাকে বলা হয় সৌন্দর্য্যের খেলা, সম্প্রীতির খেলা। যুগে যুগে রোমন্থন করার মতো হাজারো স্মৃতির জন্ম দেয়া এই খেলা কখনো ভক্তদের কাঁদিয়েছে, কখনো বা উদ্ভাসিত করেছে আনন্দে। ভক্তদের কাছে ফুটবল শুধু মাত্র একটি ভালোবাসার নাম নয়, এটি একটি আবেগের স্থানও বটে। ১৯৩০ সালে ফিফা বিশ্বকাপের সূচনার পর ফুটবল বিশ্ব দেখেছে পেলে-ম্যারাদোনার মতো লিজেন্ডদের, দেখেছে ব্রাজিলের শৈল্পিক জোগো বনিতো, আর্জেন্টিনার জাদুকরী ফুটবল, নেদারল্যান্ডের টোটাল ফুটবল, জার্মানীর ক্ষুরধার যান্ত্রিক ফুটবল, স্পেনের টিকিটাকা। সাক্ষী হয়ে আছে অজস্র সুন্দর মুহূর্তের। কিন্তু সৌন্দর্য্য এবং কলঙ্ক যেনো মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপেই ফুটবলীয় সৌন্দর্য্যের সাথে লুকিয়ে আছে অনেক কলঙ্কিত ঘটনা। কাঙ্ক্ষিত শিরোপা অর্জনের জন্য বিতর্কিত পথ বেছে নিয়েছিলো অনেক দেশ। তাই অনেক শিরোপাজয়ীদের ইতিহাসে সম্মানের সাথে লুকিয়ে আছে লজ্জাজনক ইতিহাস। ম্যারাদোনার “hand of god” থেকে শুরু করে “disgrace of gijon” সহ আরো অনেক কলঙ্কিত ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে ফুটবল বিশ্ব। রেফারীর ভুল ডিসিশন, লাইফ এন্ডিং ট্যাকেল, ম্যাচ ফিক্সিং এর মতো ঘটনাগুলো বিশ্বকাপের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ছিলো সবসময়ই। তাই আজকে বিশ্বকাপের এরকম কলঙ্কিত কিছু অধ্যায় তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
১৯৮২ বিশ্বকাপ (Disgrace of Gijon):
১৯৮২ ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক ছিলো স্পেন। সেই আসরেরই একটি ম্যাচ এতোটাই বিতর্কিত ছিলো যে তাদের ফ্যানরাই নিজের দেশের পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছিলো ক্ষোভে, ম্যাচ কমেন্টেটর রা লজ্জায় বলছিলো সবাইকে চ্যানেল চেঞ্জ করার জন্য। দুই দেশের সম্মিলিত সেই অপরাধে সেদিন কপাল পুড়েছিলো আলজেরিয়ার। দেশ দুইটি ছিলো পশ্চিম জার্মানী এবং অস্ট্রিয়া।
ম্যাচ টি ছিলো গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ। গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচের আগে সমীকরণ টা এমন ছিলো, ম্যাচ ড্র হলে বা অস্ট্রিয়া জিতলে আলজেরিয়া পরবর্তী রাউন্ডের জন্য কোয়ালিফাই করবে। পশ্চিম জার্মানী ৩ গোলের ব্যবধানে জিতলেও আলজেরিয়া পরের রাউন্ডে চলে যেতো। কিন্তু আলজেরিয়ার সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে ম্যাচ ফিক্সিং করে পশ্চিম জার্মানী এবং অস্ট্রিয়া। ম্যাচের ১১ মিনিটেই পশ্চিম জার্মানী গোল দিয়ে এগিয়ে যায়। বাকি সময় কোন দলই আর গোল দেয়ার চেষ্টা করেনি। ম্যাচ দেখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিলো, ইচ্ছা করেই করা হচ্ছে সব। রাগে-ক্ষোভে নিজদের দর্শকরাই সেদিন পতাকা পুড়িয়েছিলো, কমেন্টেটর রা বার বার বলছিলো, “এটি একটি লজ্জাজনক দিন”। এই কলঙ্কিত ঘটনার পর ফিফা বাধ্য হয়ে নতুন নিয়ম প্রণয়ন করে। এরপর থেকে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ গুলো এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। আলজেরিয়া এই ম্যাচ ফিক্সিং এর বিরুদ্ধে ফিফার কাছে আপিল করলেও, প্রমাণের অভাবে ফিফা কোন একশন নেয় নি। বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে এটি একটি কলঙ্কিত অধ্যায়।

১৯৮২ বিশ্বকাপ (Tragedy of Seville):
সেমিফাইনালে মুখোমুখি ফ্রান্স এবং পশ্চিম জার্মানী। সেমিফাইনাল ম্যাচ মানেই অন্যরকম উত্তেজনা, এই ম্যাচ ও তার ব্যতিক্রম ছিলো না। ম্যাচের স্কোর তখন ১-১। ফ্রান্স তারকা ব্যাটিস্টন দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন গোল বারের দিকে বলের পিছনে পিছনে। বিপরীত দিক থেকে দৌড়ে আসছিলেন জার্মান গোলকিপার শ্যুমাচের। ব্যাটিস্টন এর শট অনেক বাইরে দিয়ে গেলেও, শ্যুমাচের এর জোরালো ধাক্কা থেকে বাচতে পারেন নি তিনি। বুলডোজারের মতো গুড়িয়ে দেন ব্যাটিস্টন কে। আঘাত এতোটাই ভয়াবহ ছিলো যে ব্যাটিস্টনের ৩ টি দাঁত পড়ে যায়, তিনি অজ্ঞান হয়ে যান, মেরুদন্ড মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায় এবং কোমায় চলে যান তিনি। এর চেয়েও দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, এই প্রাণঘাতী ফাউলের পরেও রেফারী শ্যুমাচেরকে কোন বুকিং না দিয়ে গোল কিকের বাঁশি বাজান। ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য ফাউল করেও কোন কার্ড দেখেন নি, এমন কি ফাউল ও দেয়া হয়নি। বিতর্কিত এই ঘটনা টি “ট্র্যাজেডি অফ সেভিয়া” নামে পরিচিত।

১৯৬৬ বিশ্বকাপ ফাইনাল, ইংল্যান্ড বনাম পশ্চিম জার্মানীঃ
১৯৬৬ বিশ্বকাপের আয়োজক ছিলো ইংল্যান্ড নিজেই। সেবার ফাইনালে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হয় শক্তিশালী পশ্চিম জার্মানীর। খেলার ২০ মিনিটের মধ্যে দুই দলই গোলের দেখা পায়। ৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ২-২ থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ম্যাচের ১০৩ মিনিটের সময় ইংল্যান্ড তারকা জিউফ হার্স্টের ক্লোজ রেঞ্জের শট ক্রস বারে লেগে গোল লাইনের কাছাকাছি পড়ে। ইংল্যান্ড খেলোয়াড় রা সেটিকে গোল দাবি করছিলেন এবং পশ্চিম জার্মানীর খেলোয়াড় রা দাবী করছিলেন বল গোল লাইন ক্রস করেনি। ম্যাচ রেফারী গটফ্রাইড ডাইনস্ট আলোচনা করার জন্য লাইন্সম্যাচ তোফিক বাখরামোভের কাছে যান। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লাইন্সম্যান বাখরামোভ সেটি কে গোল বলে সিদ্ধান্ত জানান। কিছুক্ষণ পর আরো একটি গোল করে ইংল্যাড ৪-২ এ ম্যাচ টি জিতে নেয়।

পরবর্তীতে গোল লাইন টেকনোলজির মাধ্যমে দেখা যায়, সেদিন বল আসলে গোল লাইন ক্রস করে নি। মানে, সেটি গোল ছিলো না। কথিত আছে মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায় বাখরামোভকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, কেনও তিনি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন সেদিন। জবাবে তিনি বলেছিলেন “স্ট্যালিংগার্ড”. তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই রক্তক্ষয়ী ঘটনার কথা। সোভিয়েত এবং নাৎসিদের সেই লড়াইয়ে হাজারো সোভিয়েত প্রাণ হারিয়েছিলো। প্রতিহিংসার কারণে তিনি সেদিন জার্মানদের বিরুদ্ধে সেই ভুল সিদ্ধান্ত দেন। বিশ্বকাপের মতো আসরে এমন একটি ঘটনা ফুটবলের সৌন্দর্য্য কে ম্লান করে দেয় অনেকখানি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ (Hand of God):
১৯৮৬ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়েছিলো মেক্সিকো তে। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা এবং ইংল্যান্ড। ফকল্যান্ড যুদ্ধের রেশ ধরে এমনিতেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক টা ভালো যাচ্ছিলো না। এই ম্যাচ যেনো সেই উত্তাপ কে বাড়িয়ে দিয়েছিলো আরো বহুগুণ। ম্যাচ শুরুর পর প্রথমার্ধ শেষ হয় ০-০ স্কোরলাইন নিয়েই। ম্যাচের ৫১ মিনিটের ঘটে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত সেই ঘটনা টি। বল দখলের জন্য ইংল্যান্ড গোলকিপার পিটার শিলটন এবং ম্যারাদোনা একসাথেই লাফ দেন। কিন্তু হেড করার বদলে হাত দিয়ে পাঞ্চ করে বল জালে জড়ান ম্যারাদোনা। বল জালে জড়ানোর পর গোল সেলিব্রেট করার জন্য দৌড় দেন তিনি। ইংল্যান্ড খেলোয়াড় রা হ্যান্ডবলের দাবী জানালেও রেফারী তা এড়িয়ে যান। হাত দিয়ে গোল দিয়েও ১-০ তে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মিনিট চারেক পরেই ঐতিহাসিক “গোল অফ দ্যা সেঞ্চুরি” করে ফুটবল বিশ্বকে মুগ্ধ করেন দিয়েগো ম্যারাদোনা। দর্শনীয় সেই গোলের পর ২-০ তে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। পরবর্তী তে গ্যারি লিনেকার ১ টি গোল শোধ দিলে ম্যাচ টি ২-১ এ সমাপ্ত হয়। বিতর্কিত সেই গোল টি না হলে ম্যাচের রেজাল্ট কি হতো তা বলা সম্ভব নয়, কিন্তু বিশ্বকাপ জিতলেও এই কলঙ্কিত ঘটনার গ্লানি এখনো বয়ে বেড়াতে হয় আর্জেন্টাইন দের। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে, কোয়ার্টার ফাইনালের মতো একটি ম্যাচে এমন সিদ্ধান্ত খুবই লজ্জাজনক।

১৯৯৪ বিশ্বকাপ (আন্দ্রেস এস্কোবারের আত্মঘাতী গোল):
১৯৯৪ বিশ্বকাপে কলম্বিয়া ছিলো শিরোপার অন্যতম দাবিদার। ফর্মের তুঙ্গে থাকা কলম্বিয়া আসর টি শুরুও করেছিলো দারুণ ভাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে হোস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে তাদের কে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়, যা ছিলো দেশটির জন্য বিশাল বড় এক ধাক্কা। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সেই ম্যাচে কলম্বিয়া ক্যাপ্টেন আন্দ্রেস এস্কোবারের আত্মঘাতী গোলে ১-০ তে পিছিয়ে পড়ে কলম্বিয়া।শেষ পর্যন্ত ২-১ ম্যাচ টি হারে তারা। এই গোল নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে অনেক। অনেকের মতে, ইচ্ছে করেই নাকি আত্মঘাতী গোল দিয়েছিলেন তিনি। তাই নিজের দেশের লোকের কাছেই ভিলেইন হয়ে গিয়েছিলেন। এই ভুলের শাস্তি তাকে পেতে হয় কিছুদিন পর। দেশে ফেরার কিছুদিন পর একদিন রাতে বাইরে ঘুরতে বের হবার পর অজ্ঞাতনামা কিছু মানুষ তাকে গুলি করে মেরে ফেলে। এটি ছিলো ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।

১৯৭৮ বিশ্বকাপ (আর্জেন্টিনা-পেরু):
১৯৭৮ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ আর্জেন্টিনা। সেবছরই তারা জিতে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা। কিন্তু এই শিরোপা জিতার পিছনেও রয়েছে কিছু কালো অধ্যায়।
দ্বিতীয় রাউন্ডে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ছিলো আর্জেন্টিনা আর পেরুর। আর্জেন্টিনা সমালোচনার শিকার হয়, তাদের ম্যাচ টি পিছিয়ে নেয়ার জন্য। ফাইনালে যাওয়ার লড়াই চলছিলো ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার মধ্যে। আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে যেতে হলে মিনিমাম ৪-০ গোলে জিততে হতো। এর কম ব্যবধানে জিতলে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল চলে যেতো ফাইনালে। এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই ম্যাচটি ৬-০ তে জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। অনেকেরই মনে হয়েছিলো ম্যাচটি পাতানো ছিলো। তবে কোন প্রমাণ না থাকায় ঢাকা পরে যায় এসব কথা।
তবে কিছুদিন আগে বোমা ফাটালেন পেরুর তৎকালীন সিনেটর গ্যানারো লেডেসমা। তিনি স্বীকার করে নেন, আর্জেন্টিনা পেরুর সেই ম্যাচ টি আগে থেকেই ফিক্স ছিলো। রাজনৈতিক কারণে দুই দেশের ডিক্টেটর রা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলো। তিনি কোর্টে বলেন, ‘Videla (Argentine Dictator of that time) needed to win the World Cup to cleanse Argentina’s bad image around the world.
‘So he only accepted the group if Peru allowed the Argentine national team to triumph.’ (dailymail.co.uk) পেরুর ১৩ জন নাগরিক আর্জেন্টিনায় বন্দী ছিলো। তাদের মুক্তি দেয়ার শর্তেই ম্যাচ টি ফিক্স করা হয়।

পরবর্তীতে এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে আর্জেন্টিনার তৎকালীন দলের স্ট্রাইকার লিওপোল্ডো লুকি বলেন, ‘With what I know now, I can’t say I’m proud of my victory. But I didn’t realise; most of us didn’t. We just played football.’
ফুটবল ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায় এটি।
১৯৯০ বিশ্বকাপ (আর্জেন্টিনা বনাম পশ্চিম জার্মানী):
১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ ছিলো এটি। দুজন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় কে মাঠ ছাড়তে হয় ট্যাকেলের জন্য। তবে অনেকের মতে দ্বিতীয় লাল কার্ড টি রেফারী না দিলেও পারতেন। ৯ জনের আর্জেন্টিনা প্রতিপক্ষ পশ্চিম জার্মানী কে আটকেই দিয়েছিলো প্রায়। বিপত্তি ঘটে ম্যাচের ৮৫ মিনিটে। রবার্তো সেনসিনির করা একটি ট্যাকেলে পেনাল্টির বাশিঁ বাজান রেফারী। বিতর্কিত সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে শিরোপা জিতে নেয় পশ্চিম জার্মানী। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেয়ার পর আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় রা রেফারী কে ঘিড়ে ধরে। কিন্তু লাভ হয়নি। এই ম্যাচ নিয়ে পরবর্তীতে অনেক সমালোচনা হয়। অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞের মতে, রেফারিং খুবই বাজে ছিলো। ৮৫ মিনিটে দেয়া সেই পেনাল্টি টি ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো এমন টা জানায় অনেকেই। বিশ্বকাপ ইতিহাসের বিতর্কিত ম্যাচের তালিকায় এই ম্যাচটিও উঠে আসবে উপরের দিকেই।

২০০২ বিশ্বকাপ (দক্ষিণ কোরিয়া বনাম ইতালী,স্পেন):
২০০২ বিশ্বকাপের আয়োজক ছিলো যৌথভাবে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। সেই আসরে দক্ষিণ কোরিয়া সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌছে যায়। এই সাফল্য কে রূপকথার গল্প মনে হলেও, এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়ংকর কালো ইতিহাস।
নকআউট পর্বের ম্যাচে ইতালী মুখোমুখি হয় দক্ষিণ কোরিয়ার। যেই ম্যাচে বাজে রেফারিং এর সাহায্য নিয়ে ইতালী কে পরাজিত করে তারা। ডি বক্সের ভিতর টট্টি কে ক্লিয়ার ফাউল করা হলেও, রেফারী পেনাল্টির সিদ্ধান্ত না দিয়ে ডাইভিং এর অপরাধে টট্টি কে লাল কার্ড দেখান। দামিয়ানো টমাসি’র গোল অফসাইড না হওয়া সত্ত্বেও অফসাইড বলে বাদ দেয়া হয়। দেল পিয়েরো কে ভয়াবহ ফাউল করা হলেও কোন ফাউলের বাশিঁ বাজান নি রেফারী। পুরো ম্যাচে একের পর এক ফাউল করেও পার পেয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। ফলস্বরূপ অতিরিক্ত সময়ে গোল্ডেন গোল দিয়ে ২-১ এ ম্যাচ জিতে পরবর্তী রাউন্ডে চলে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষেও একই ভাবে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেন রেফারী। স্পেনের দুইটি সঠিক গোল বাতিল করে দেয়া হয়। ১২০ মিনিটের খেলা গোলশূণ্য শেষ হলে, টাইব্রেকারে স্পেন কে হারিয়ে সেমিফাইনলে চলে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কিত ম্যাচ হিসেবে এই দুটি ম্যাচের নাম লেখা থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে।

ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সম্মানিত আসর হচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ। কিন্তু এই আসরই সাক্ষী হয়ে আছে অজস্র বিতর্কিত ঘটনার। এই আসরই যেমন অনেক খেলোয়াড় এবং জাতিকে এনে দিয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এবং সম্মান, তেমনি এই আসরই অনেককে বানিয়েছে ঘৃণার পাত্র। আজকে সেরকমই কিছু বিতর্কিত ঘটনা তুলে ধরা হলো। এরকম আরো কিছু বিতর্কিত ঘটনা তুলে ধরা হবে পরবর্তী তে। জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
Comments are closed.