বিশ্বের শীর্ষ ১০ টেক জায়ান্ট

5

বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে চলছে। প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া একটি দিন কাটানো অসম্ভব হয়ে গেছে। বর্তমান বিশ্বকে প্রযুক্তি নির্ভর করে তুলতে যে ১০টি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অবদান রাখছে বা রেখে যাচ্ছে তাদের সম্পর্কে জানব আজ। শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে তাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন বা মার্কেট ভ্যালু এবং প্রযুক্তিতে তাদের প্রভাব এবং অবদানের উপর নির্ভর করে।

১০. আইবিএম

আইবিএম
আইবিএম
Source: Wikipedia

মার্কেট ভ্যালু : ১৩৪.৪৬ বিলিয়ন ডলার

আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন (আইবিএম) ১৯১১ সালে কম্পিউটিং-ট্যাবুলেটিং রেকর্ডিং কোম্পানি নামে আত্মপ্রকাশ করে। আইবিএম ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন টেকনোলজিক্যাল যন্ত্রপাতি নির্মাণ করে থাকে। বর্তমানে আইবিএম বিশ্বের ১৭৭টি দেশে সেবা দিয়ে থাকে। আইবিএমের সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে ক্লাউড কম্পিউটিং এবং কগনিটিভ কম্পিউটিং। বর্তমানে সারা বিশ্বে আইবিএমের ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশী কর্মী রয়েছে। ২০১৭ সালে আইবিএমের আয় ছিল ৫.৭৫৩ বিলিয়ন ডলার।

৯.  সিসকো সিস্টেম

সিসকো সিস্টেম
Source: Gizmodo Australia

মার্কেট ভ্যালু : ২১৫.৩৯ বিলিয়ন ডলার

সিসকো সিস্টেম নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার, টেলিকমিউনিকেশন ইকুইপমেন্ট এবং হাই টেকনোলজি সম্পর্কিত পণ্যের ডিজাইন, ডেভেলপ, সার্ভিস এবং সেল করে থাকে। আমেরিকান এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সিসকো সিস্টেম বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি ডোমেইন সিকিউরিটি এবং এনার্জি ম্যানেজমেন্ট নিয়েও কাজ করে থাকে। সিসকো সিস্টেমের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে  openDNS, WebEx, Jabber এবং Jasper. বর্তমানে এই কোম্পানিতে মোট ৭২ হাজার কর্মী রয়েছে এবং ২০১৭ সালে সিসকো সিস্টেমের আয় ছিল ৯.৬০৯ বিলিয়ন ডলার।

৮. ইনটেল

ইনটেল
ইনটেল
Source: TechJuice

মার্কেট ভ্যালু : ২৪৬.৬৯  বিলিয়ন ডলার

বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রসেসর এবং মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ইনটেল গর্ডন মুরে এবং রবার্ট নয়েসের হাত ধরে ১৯৬৮ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর পণ্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইনটেল অ্যাপল, লেনেভো, এইচপি এবং ডেলের মতো কম্পিউটার নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে প্রসেসর সরবরাহ করে থাকে। ইনটেলের তৈরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে মাদার বোর্ড চিপসেট, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কন্ট্রোলার, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, ফ্লাশ মেমোরি, গ্রাফিক্স চিপ, এমবেডেড প্রসেসর সহ আরও অনেক পণ্য। ইনটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে Mobileye, McAffe, Here, Wind River Systems. ইনটেলের মোট কর্মী রয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার। ২০১৭ সালে ইনটেলের আয় ছিল ৯.৬ বিলিয়ন ডলার।

৭. ওরাকল

ওরাকল
Source: Ground Report

মার্কেট ভ্যালু : ১৮৫.৮৭ বিলিয়ন ডলার

আমেরিকান সফটওয়্যার কোম্পানি ওরাকল ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ল্যারি এলিসন, বব মাইনার এবং এড ওটস। ওরাকল মূলত ডাটাবেস সফটওয়্যার,  ক্লাউড ইঞ্জিনিয়ার্স সিস্টেম এবং এন্টারপ্রাইজ সিস্টেমের ডেভেলপিং এবং মার্কেটিং করে থাকে। মাইক্রোসফটের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সফটওয়্যার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ওরাকল। ওরাকলের পণ্যের মধ্যে রয়েছে ওরাকল অ্যাপ্লিকেশন, ওরাকল ডাটাবেস, ওরাকল এন্টারপ্রাইজ ম্যানেজার, ওরাকল ফিউশন মিডলওয়্যার, সার্ভার, ওয়ার্কস্টেশন ইত্যাদি। বর্তমানে এই কোম্পানিতে কর্মীসংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার। ২০১৭ সালে ওরাকলের আয় ছিল ৯.৩৪ বিলিয়ন ডলার।

৬. স্যামসাং

স্যামসাং
Source: startitup.sk

মার্কেট ভ্যালু : ৩৭২ বিলিয়ন ডলার

দক্ষিণ কোরিয়ার বহুজাতিক কোম্পানি স্যামসাং বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী এবং বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৯ সালে স্যামসাং কোম্পানি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে স্যামসাং বিশ্বের মোট ৮০টি দেশে পণ্য অ্যাসেম্বলি করে এবং বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই তাদের পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে।  স্যামসাং মূলত কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স, সেমি-কন্ডাকটর এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স জাতীয় পণ্য উৎপাদন করে থাকে। স্যামসাংয়ের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং গ্রুপ এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্যামসাং মেডিসন, স্যামসাং টেলিকমিউনিকেশন এবং হারম্যান ইন্টারন্যাশনাল। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্যামসাংয়ের ৩ লাখের বেশী কর্মী রয়েছে। ২০১৭ সালে স্যামসাংয়ের আয় ছিল ৩৯.৩৪ বিলিয়ন ডলার।

৫. ফেসবুক

মার্কেট ভ্যালু : ৫০৩.৩০ বিলিয়ন ডলার

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ এবং তার কয়েকজন বন্ধু মিলে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ফেসবুক জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সেই সাথে একটি ব্যবসায়িক মাধ্যমও। ফেসবুক বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন দিকে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমান অনলাইন ব্যবসা হয়ে গেছে ফেসবুক নির্ভর। ফেসবুক বিশ্বের তৃতীয় ওয়েবসাইট। ফেসবুক ইন-কর্পোরেশনের অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা সেবাদানকারী কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ইন্সটাগ্রাম, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, Oculus VR,  টিবিএইচ এবং ওয়াচ। ফেসবুক কোম্পানিতে বর্তমানে ২৫ হাজার ১০৫ জন কর্মী রয়েছেন। ২০১৭ সালে ফেসবুকের মোট আয় ছিল ১৫.৯৩৪ বিলিয়ন ডলার।

টেক জায়ান্ট
Source: Twitter

৪. মাইক্রোসফট

মাইক্রোসফট
মাইক্রোসফট
Source: Arquitectonica

মার্কেট ভ্যালু : ৭৩৬.২০ বিলিয়ন ডলার

১৯৭৫ সালে বিল গেটস এবং পল অ্যালেন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন মাইক্রোসফট কর্পোরেশন। আমেরিকান বহুজাতিক এই কোম্পানি কম্পিউটার, কম্পিউটার সফটওয়্যার এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্য সমূহ ডিজাইন, ডেভেলপ, সেল এবং সার্ভিস দিয়ে থাকে। তবে মাইক্রোসফট কোম্পানির সবচেয়ে পরিচিত এবং জনপ্রিয় পণ্য বা সেবার নাম উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের বিকল্প নাই বললেই চলে। এছাড়া মাইক্রোসফটের জনপ্রিয় পণ্য মাইক্রোসফট অফিস, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। মাইক্রোসফট কোম্পানি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সফটওয়্যার কোম্পানি।

মাইক্রোসফট যে সকল পণ্য নিয়ে কাজ করে তার মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার সফটওয়্যার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও গেমস, ইন্টারনেট এবং কর্পোরেট ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। মাইক্রোসফটের পণ্যের মধ্যে রয়েছে উইন্ডোজ, অফিস, সার্ভারস, স্কাইপ, ভিজুয়াল স্টুডিও, ডায়নামিক্স, এক্সবুকস, সার্ফেস, মোবাইল ইত্যাদি। মাইক্রোসফটের সেবাসমূহের মধ্যে রয়েছে অ্যাজুর, বিং, লিঙ্কডিন, এমএসডিএন, ওয়ানড্রাইভ, আউটলুক ডটকম, টেকনেট, ওয়ালেট, উইন্ডোজ স্টোর, উইন্ডোজ আপডেট ইত্যাদি। বর্তমানে মাইক্রোসফটের কর্মীসংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার এবং প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সত্য নাদেলা। ২০১৭ সালে মাইক্রোসফটের আয় ছিল ২১.২০ বিলিয়ন ডলার।

৩. অ্যামাজন

অ্যামাজন
অ্যামাজন
Source: The News Tribune

মার্কেট ভ্যালু : ৭৬২.৬৭ বিলিয়ন ডলার

বিশ্বের সর্ববৃহৎ অনলাইন মার্কেট অ্যামাজন ডটকমের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই জেফ বোজেসের হাত ধরে। অ্যামাজন ডটকম শুরুতে একটি অনলাইন বুকস্টোর হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরবর্তীতে তারা ভিডিও, এমপি থ্রি, অডিও বুক, সফটওয়্যার, ভিডিও গেমস, ইলেকট্রনিক্স, অ্যাপারেল, ফার্নিচার, খাবার, খেলনা এবং জুয়েলারি বিক্রি করে। বর্তমানে অ্যামাজন ডটকম এমন একটি সাইট যেখানে পাওয়া যায় এমন কোন পণ্য নাই।

অ্যাপল ডটকম হচ্ছে ক্রেতা এবং বিক্রেতার একটি মিলনস্থল, এখানে যে কেউ পণ্য দিতে পারে আবার যে কেউ পণ্য কিনতে পারে। অ্যামাজনের পণ্যের মধ্যে রয়েছে অ্যামাজন অ্যাপ স্টোর, অ্যামাজন ইকো, অ্যামাজন কিন্ডলে, অ্যামাজন প্রাইম, অ্যামাজন ভিডিও এবং কমিক্সোলজি। অ্যামাজনে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে এ৯ ডটকম, অ্যাবে বুকস, অ্যালেক্সা ইন্টারনেট, অ্যামাজন বুকস, অ্যামাজন গেমস স্টুডিও, অ্যামাজন রোবটিক্স, অ্যামাজন স্টুডিওস, অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ইত্যাদি। অ্যামাজনের বিশ্বব্যাপী মোট কর্মী রয়েছে ৫লাখ ৬৬ হাজার। ২০১৭ সালে অ্যামাজনের মোট আয় ছিল ৩.০৩৩ বিলিয়ন ডলার।

২. অ্যালফাবেট

অ্যালফাবেট
Source: Social Songbird

মার্কেট ভ্যালু : ৭১৫.২ বিলিয়ন ডলার

আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি অ্যালফাবেট ইন-কর্পোরেশন ২০১৫ সালে ২ অক্টোবর গুগলের সাথে একীভূত হয় এবং সেই সাথে গুগল ও গুগলের অধীনস্থ অন্য সব কোম্পানির অভিভাবক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং সার্গেই ব্রিন রয়েছেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে। অ্যালফাবেট কোম্পানি যে সকল পণ্য বা সেবা বিক্রি করে থাকে তার মধ্যে রয়েছে টেকনোলজি, ইন্টারনেট, সফটওয়্যার, লাইফ সায়েন্স, স্বয়ংক্রিয় গাড়ী, গবেষণা এবং উন্নয়ন, বায়োটেকনোলজি। ২০১৭ সালে অ্যালফাবেট কোম্পানির মোট আয় হয়েছে ১২.৬৬ বিলিয়ন ডলার। অ্যালফাবেটের অধীনস্থ অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে রয়েছে  Calico, CapitalG, Chronicle, DeepMind, Google, Google Fiber, GV, Jigsaw, Sidewalk Labs, Verily, Waymo, X.   সারাবিশ্বের অ্যালফাবেটের মোট কর্মী রয়েছে ৮০,১১০ জন।

১. অ্যাপল

অ্যাপল
Source: USKINGS

মার্কেট ভ্যালু : ৯১০ বিলিয়ন ডলার

১৯৭৬ সালে এপ্রিলের ১ তারিখে স্টিভ জবস, স্টিভ ওজনিয়াক এবং রোনাল্ড ওয়েন অ্যাপল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির জগতে সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় অ্যাপল ইন-কর্পোরেশন। আমেরিকান এই কোম্পানিটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য, কম্পিউটার সফটওয়্যার এবং অনলাইন সেবাসমূহ ডিজাইন, ডেভেলপ এবং বিক্রি করে থাকে। তাদের তৈরি ইলেকট্রিনক্স পণ্যের মধ্যে রয়েছে আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাক কম্পিউটার, আইপড, অ্যাপল ওয়াচ নামে স্মার্টওয়াচ, অ্যাপল টিভি নামে ডিজিটাল প্লেয়ার, অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে ম্যাক ওএস, আই ওএস, ওয়াচ ওএস, টিভি ওএস।

অ্যাপল কোম্পানি বিভিন্ন পণ্য বিক্রির সাথে সাথে বিভিন্ন সেবাও দিয়ে থাকে। তাদের ডিজিটাল সেবাসমূহের মধ্যে রয়েছে অ্যাপল পে, অ্যাপল স্টোর, আইটিউনস স্টোর, অ্যাপ স্টোর, ম্যাক অ্যাপ স্টোর, আইবুকস স্টোর, আইক্লাউড এবং অ্যাপল মিউজিক। ব্যবসায়িক আয়েক দিক দিয়ে অ্যাপল বিশ্বের সর্ববৃহৎ টেকনোলজি কোম্পানি এবং স্মার্ট ফোন উৎপাদনের দিক দিয়ে এটি রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। ২০১৭ সালে তাদের নেট আয় হয়েছে ৪৮.৩৫১ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাপী অ্যাপলের মোট ১লাখ২৩হাজার কর্মী রয়েছে। বর্তমানে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন টিম কুক।

Source Featured Image
Leave A Reply
sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More