ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধ, শান্তিচুক্তি ও ওয়েস্টফেলুয়ান বিশ্ব ব্যবস্থা

0

আধুনিক ইউরোপেরর সবচেয়ে দীর্ঘতম যুদ্ধ ছিল ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধ। এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে এবং শেষ হয়েছিল ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে ওয়েস্টফেলিয়ান শান্তিচুক্তির মাধ্যমে। প্রধানত জার্মানিতে প্রোটেস্টান্ট ও রোমান ক্যাথলিকদের মধ্যে গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ধর্মযুদ্ধরূপে এই যুদ্ধের সূত্রপাত হলেও পরবর্তীকালে ইউরোপের মোটামুটি সব জাতিই  রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। ইউরোপের রাজনীতিতে এই যুদ্ধের প্রভাব ছিল অপরিসীম।

তৎকালীন ইউরোপীয় দেশসমূহের অবস্থান
তৎকালীন ইউরোপীয় দেশসমূহের অবস্থান source:Wikipedia.com

যুদ্ধ সংঘটিত হবার ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক  কারণ ছিল অন্যতম।মূলত ইউরোপে পঞ্চদশ শতাব্দীতে ক্যাথলিক রোমান চার্চের বিরুদ্ধে প্রোটেস্টান্ট বিভিন্ন মতাদর্শের আবির্ভাব ঘটতে থাকে। তারমধ্যে লুথারবাদ,জুইলিংবাদ ও ক্যালভিনবাদ ছিল অন্যতম। ১৫৫৫ সালে অগসবার্গের শান্তি চুক্তিতে লুথারবাদকে মেনে নিলেও জার্মানিতে ক্যালভিনবাদকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। ১৫৫৫ সালে অগর্সবাগের শান্তিচুক্তি অনুযায়ী নিয়ম করা হয় যে,”রাজার ধর্মই  প্রজার ধর্ম” অর্থাৎ শাসকই ঠিক করে দিবেন প্রজার ধর্ম কি হবে। এ নীতি গ্রহণের ফলে দেখা যায় যে ক্যাথলিক শাসকদের অধীনে অনেক প্রোটেস্টান্ট এবং প্রোটেস্টান্ট শাসকদের অধীনে অনেক ক্যাথলিক নির্যাতিত হতে থাকে। ফলে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিষাদ  তিক্ততা ও ক্ষোভের সঞ্চার করে। এরপর আবার ক্যাথলিকরা পুনরায় জার্মানিতে ধর্ম প্রচার শুরু করলে প্রোটেস্টান্টদের সাথে সংঘাতের শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে প্রোটেস্টান্টরা নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য গড়ে তোলে প্রোটেস্টান্ট ইউনিয়ন (১৬০৮) এবং ক্যাথলিকরা তদ্রূপ রাতারাতি গড়ে তোলে ক্যাথলিক লীগ(১৬০৯) ফলে জার্মান সমাজ পরস্পর বিরোধী দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়।

সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড
সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড source: worldhistory.com

কেবলমাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রেই নয়,রাজনীতিগত দিক থেকেও জার্মান সমাজ তখন নানাবিধ জটিল সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। জার্মানীর এই বিভক্ততার সুযোগে ক্যাথলিক হলি রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড তাঁর নিজের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ নেবার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু জার্মানীর রাজন্যবর্গ মোটেও সে সুযোগ দিতে ইচ্ছুক ছিলনা। এমনকি ক্যাথলিকরা পর্যন্তও চাইছিলনা আর প্রোটেস্টান্টরা তো একেবারেই না। এভাবেই একটা জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

জার্মানিতে যুদ্ধের সূত্রপাত হয় ১৬১৮ সালে বোহেমীয়ার রাজধানী প্রাগের বিদ্রোহের মাধ্যমে। বোহেমিয়ার অধিকাংশ লোক ছিল প্রোটেস্টান্ট কিন্তু তাদের দেশ ছিল উগ্র ক্যাথলিক সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড এর অধীনে। একসময় ফার্দিল্যান্ড এর প্ররোচনায় একটি প্রোটেস্টান্ট চার্চ ধ্বংস করা হলে জনসাধারণ প্রত্যক্ষভাবে রোমান সম্রাট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তারা প্রাগের প্রাসাদ হতে ফার্দিল্যান্ডের দুই প্রতিনিধিকে জোরপূর্বক জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।অবশ্য ভাগ্যক্রমে তারা বেঁচেও যায়। তারপর বিদ্রোহীরা প্যালাটিনের ডিউক ফ্রেডরিককে তাদের রাজা বলে ঘোষণা করে। এরপর দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড তাকে দমন করতে যাওয়ার মধ্য দিয়েই ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধু শুরু প্রক্কালে কেউ হয়ত কল্পনাই করেনি যে এর বিভৎসতা এর প্রকট হবে। বোহেমীয়ার সামান্য ঘটনা থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের লেলিহান শিখা তারপর ত্রিশ বছর সমগ্র ইউরোপকে গ্রাস করে এবং জার্মানকে এক শ্মশানক্ষেত্রে পরিণত করে।

মানবতার অবক্ষয় ঘটেছিল এ যুদ্ধে
মানবতার অবক্ষয় ঘটেছিল এ যুদ্ধে source:warhistory.com

পর্যায়ে কাথলিকদের বিজয় সূচিত হয়। প্রোটেস্টারা হোয়াইট হিলের যুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধকে মোটামুটি চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। (১) বোহেমীয়-প্যালাটিন পর্যায়(১৬১৭-২৩),(২) ডেনিশ পর্যায়(১৬২৪-২৯),(৩) সুইডিশ পর্যায়(১৬৩০-৩৫) ও সর্বশেষ ও চতুর্থ পর্যায় ছিল ফরাসিদের নেতৃত্বে যার সমাপ্তি হয় ১৬৪৮ সালের শান্তিচুক্তির সাধ্যমে।

বোহিমিয়া হয়ে রাজ্য হারা হয় এবং চরম দুর্দশায় পতিত । ফলে দেখা গেল যে,ক্যালভিনপন্থীদের কষ্টে  লুথার পন্তীরাও এতে ব্যথিত হয় এবং প্রোটেস্টান্ট হিসেবে ক্যাথলিক শাসনাধীনে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে ত নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ে। অবশেষে তারাও ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। পরবর্তী পর্যায়ে ডেনমার্কের অধীনে যুদ্ধ চলতে থাকে। এবার এর সাথে ইংল্যান্ড ও যুক্ত হয় এবং ফ্রান্সের কাছ থেকেও ডেনমার্ক সাহায্য পায়। তবে ফার্দিল্যান্ডের বিরুদ্ধে  লুটারের যুদ্ধ পরাজিত হয়ে ডেনমার্ক হতাশ হয়ে যায় এবং লুবেক চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধ থেকে সড়ে দাঁড়ায়। ফলে একমাত্র ক্যাথলিক আধিপত্যই প্রতিষ্ঠিত হল চারদিকে। কিন্তু সম্রাট ফার্দিল্যান্ড এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রোটেস্টান্টদের সকল ক্যাথলিক গির্জা,জমি ইত্যাদি যা দখল করা হয়েছিল তা ফেরৎ দেবার নির্দেশ দেয়া হয়। এই অধ্যাদেশের ফলে ক্যালভিনপন্থী ও লুথারপন্থীরা নিজেদের মধ্যের বিবাদ ঘুচিয়ে সম্মিলিতভাবে ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। এই পর্যায়ে জার্মান প্রোটেস্টান্টদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন সুইডেনের রাজা গ্যাসটোভাস এডোলফাস। তিনি শুধু ধর্মীয় কারণেই নয়,রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও ছিল মুখ্য। তিঁনি চাচ্ছিলেন যে উত্তর জার্মানীর উপর অস্ট্রীয় হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্যের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে নিজ স্থান পোক্ত করা। সমগ্র বাল্টিক সাগরকে সুইডিশ হ্রিদে পরিণত করাই ছিল তার মূল ইচ্ছে। গাস্টাভাস এই যুদ্ধে ফরাসী মন্ত্রী রিশল্যুর সমর্থন,যুদ্ধের রশদ ও অর্থ সাহায্য লাভ করে। ফ্রান্সও চাচ্ছিল যে হ্যাবসবার্গ পরিবারের পতন হোক। এরপর কয়েকটি যুদ্ধে সুইডিশরা ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে এই প্রথম শক্ত প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয় এবং লাটজেন এর যুদ্ধে জয়ও আসে তবে ১৬৩২ সালে গাস্টাভের মৃত্যুতে প্রোটেস্টান্ট শিবির দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর সম্রাটেত নাবালক কন্যা খ্রিস্টিনার নেতৃত্বে যুদ্ধ চালিয়ে যায় তবে নর্ডলিংজের যুদ্ধ ক্যাথলিকদের কাছে পরাজিত হন। এরমধ্য দিয়েই সুইডিশ পর্যায় শেষ হয় এবং ফ্রান্সের অন্তর্ভুক্তি ঘটে। ফ্রান্স অনেক আগে থেকেই যুদ্ধ অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছিল কিন্তু আন্তঃকোন্দলের জন্য প্রবেশ করতে পারেনি যায় প্রমাণ ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধ শক্তি সুইডেন ও ডেনমার্ককে সামরিক ও অর্থ সাহায্যের মধ্যে নিহিত ছিল। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী রিশলু একজন ক্যাথলিক কার্ডিনাল হলেও তিনি দেশের অভ্যন্তরে ক্যাথলিক এবং বিদেশে প্রোটেস্টান্ট নীতি অনুসরণ করেন। ফ্রান্স নিজের সীমান্ত নিরাপদ করার জন্য হলেও স্পেন ও অস্ত্রীয় সামাজ্যের লাগাম টেনে ধরতে চাচ্ছিল। ইতিমধ্যেই অস্ত্রীয় ও স্পেন মৌত্রি জোটে আবদ্ধ হয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তৎপরতা শুরু করে।

ফ্রান্সের তৎকালীন ভৌগলিক অবস্থান
ফ্রান্সের তৎকালীন ভৌগলিক অবস্থান source:bluepete.com

যুদ্ধের প্রথম দিকে অস্ট্রীয়-স্পেন বাহিনীর নেতৃত্বে  ক্যাথলিকরা পর পর কয়েকটি বিজয় অর্জন করলেও সুইডিশ সেনাপতি ব্যানার উইটস্টকের যুদ্ধে সম্রাটের বাহিনীকে পরাজিত করে যুদ্ধের মোড় সম্পূর্ণরূপে পালটে দেন। এবং খুব শীঘ্রই আলসাস বিজয় সুনিশ্চিত করে তোলে। এদিকে ফরাসী সেনাধ্যক্ষ টুয়েন ও কন্ডির সমরকৌশল স্পেন-অস্ত্রিয়ার সম্মিলিত ক্যাথলিক শক্তি পরাজিত হতে থাকে এবং ফরাসিরা ক্রমেই অস্ত্রীয় সাম্রাজ্জ্যের তীর্থভূমি রাইন নদীর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু এরমধ্যেই হঠাৎ ১৬৪২ সালে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী রিশল্যু মৃত্যুবরন করেন, তবে তার যোগ্য উত্তরসূরি ম্যাজারিন তার কৌশল ভালোই রপ্ত করতে পেরেছিলেন এবং একই ধারাবাহিতায় যুদ্ধ চালিয়ে নেন। রকয়ের রণাঙ্গনে ফরাসী বিখ্যাত সেনাপতি কন্ডি স্পেনিস সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করে। ওদিকে ব্যাভারিয়ার ডিউক ম্যাক্সমিলানও প্রোটেস্টান্টদের কাছে পরাজিত হন। ইতোমধ্যে সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিল্যান্ড মৃত্যবরণ করলে তার পুত্র তৃতীয় দার্দিল্যান্ড ক্ষমতায় এসে আর ক্যাথলিক শক্তির পুর্নজাগরন ঘটাতে সক্ষম হননি। ইউরোপীয় শক্তি সমূহ এই দীর্ঘ যুদ্ধ থামানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে ১৬৪৮ খ্রীস্টাব্দে সম্রাট তৃতীয় ফার্দিল্যান্ড পরিস্থিতির চাপে ওয়েস্টফেলিয়ার শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বাধ্য হন।

শিল্পীর অঙ্কনে যুদ্ধের চিত্র
শিল্পীর অঙ্কনে যুদ্ধের চিত্র source:Wikipedia.com

শান্তিচুক্তির ধারাগুলোই জন্ম দেন অধুনিক ইউরোপ এবং যার মডেলেই তৈরি হয় পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থা। বলা হয়ে থাকে যে ওয়েস্টফেলিয়ান শান্তিচুক্তি একটু যুগের অবসান ঘটয়ে আর একটি নতুন যুগের সূচনা করিয়েছিল। চুক্তির কয়েকটি দিক নিয়ে কিছু আলোচনা করা যেতে পারে। এই চুক্তির ফলেই সূচিত হয় ধর্মীয় সহাবস্থান এবং সমাপ্ত হয় ধর্মযুদ্ধের। চার্চের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক চিরদিনের জন্য সম্পূর্ণভাবে  ছেদ পড়ে। পররাষ্ট্রনীতিতেও ধর্মের গুরুত্ব অনেকাংশে কমে এসেছিল। কার্যত ইউরোপ এখন থেকেই একটি সেকুলার বিশ্বের দিকে  হাটতে শুরু করেছিল।

প্রথম আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে এই পুস্তকটি স্বীকৃত
প্রথম আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে এই পুস্তকটি স্বীকৃত source;Wikipedia.com

ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা করতে গেলে আমরা যে বিষয় গুলো দেখতে পাই তারমধ্যে সামাজিক পরিবর্তন ছিল ব্যাপক। এ যুদ্ধের ফলে জার্মান সমাজ এক অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে পতিত হয়। হলি রোমান সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ হতে প্রায় তিনশত জার্মান সার্বভৌম রাজ্যের সৃষ্টি হয়। ফলে পরবর্তী দুইশত বছর ধরে জার্মানির বিভিন্ন শক্তিশালী রাজ্যগুলি দুর্বল রাজ্যকে গ্রাস করতে সচেষ্ট হয়। ইতিমধ্যে ব্যান্ডেনবার্গ প্রূশিয়া নামে উত্থানশক্তি হিসেবে জার্মানিতে আবির্ভাব ঘটে। ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধে মোটামুটি জার্মানির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়। আর যারা বেঁচে ছিল তাদের অবস্থাও নানান রোগ ব্যাধিতে অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্র সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। রাজনৈতিক ফলাফল দেখতে গেলে দেখা যায় যে,ইউরোপে হ্যাবসবার্গ আধিপত্যের অবসান হয়। জার্মান সাম্রাজ্যে বহু সংখ্যক রাজ্যের উদয় হয়। ইউরোপের রাজনীতিতে পোপের প্রাভবের স্থায়ী অবসান ঘটে। সবচেয়ে নতুন যে জিনিষটি এই যুদ্ধের ফলে সৃষ্টি হয় তা হল আন্তর্জাতিক আইন। ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা, হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসলীলা ও দুঃখকষ্ট দেখে অনেকে মর্মাহত হন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু নিয়ম কানুনের আবশ্যকা দেখা দেয়। হিউগো গ্রোটিয়াস নামে একজন ওলন্দাজ আইন বিশেষজ্ঞ বিভন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণকপ্লে একটি আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন এবং যুদ্ধে-বিগ্রহে কতগুলি মূলনীতি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভব করেন। ১৬২৫ সালে হিউগো গ্রোটিয়াস তাঁর রচিত যুদ্ধ ও সন্ধি বিষয়ক গ্রন্থ”de Jure belli et pacis” প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থ ইউরোপের রাজনীতিতে এক নবযুগের সূচনা করেছিল। এরপর হতেই উন্নত হতে থাকে আন্তর্জাতিক  সম্পর্ক ও আধুনিকায়ন। আর এই দীর্ঘ যুদ্ধের মাধ্যমেই প্রথম সূচিত হয় আজকের বিশ্বায়নের পথধরা যা এখনো বিদ্যমান।

তথ্যসুত্রঃ

১.ইউরোপের ইতিহাস; সুভাষ রঞ্জন চক্রবর্তী

২.আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস; আলী আসগর

৩.ইউরোপের ইতিহাসঃ দিলীপ কুমার সাহা

৪.Wikipedia.com

Leave A Reply
sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More