“স্টেফানি ‘স্টেফি’ গ্রাফঃ টেনিসের মহারাণী”

0

 

টেনিসের রাজা কে? রজার ফেদেরার নাকি রড লেভার? এ ব্যাপারে নানা জনের নানান মত থাকলেও টেনিসের রাণী যে স্টেফি গ্রাফ এ সম্পর্কে প্রায় সকলেই একমত। স্টেফির অবসরের পর ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বেশিরভাগ টেনিস-বোদ্ধাই এক বাক্যে স্বীকার করে নেন যে স্টেফি গ্রাফের মতোন প্রতিভাবান এবং সফল টেনিস খেলোয়াড় এর আগে কখনো প্রমীলা টেনিসে দেখা যায়নি।

জন্ম ১৪ ই জুন ১৯৬৯ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে। বাবা পিটার গ্রাফ  ছিলেন টেনিস-পাগল একজন মানুষ। মূলত বাবার মাধ্যমেই টেনিসের হাতে-খড়ি স্টেফির। জীবনের প্রথম কোচও ছিলেন বাবা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে  পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন ডান-হাতি স্টেফি গ্রাফ। এর আগে জার্মানির  ডমেস্টিক জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ গুলোতে নিজের প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন। ক্লেগ্রাস, হার্ড তিন সার্ফেসেই সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন। বলা যায়  মডার্ন উইমেন টেনিসের পথিকৃৎ ছিলেন তিনি। এক হাতে ব্যাক-হ্যান্ড, জোরালো  ফোরহ্যান্ড, চমৎকার ফুটওয়ার্ক, বেসলাইন থেকে পাওয়ারফুল সব শট, এগ্রেসিভনেস,  সব মিলিয়ে একজন কমপ্লিট ক্লাসিক টেনিস প্যাকেজ ছিলেন স্টেফি।

বাবা পিটার গ্রাফের সাথে কিশোরী স্টেফি গ্রাফ
বাবা পিটার গ্রাফের সাথে কিশোরী স্টেফি গ্রাফ Source: dailymail.co.uk

১৯৮৫ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে জার্মান ওপেনের ফাইনালে ওঠেন। প্রতিপক্ষ  হিসেবে ছিলেন আরেক টেনিস কিংবদন্তী ক্রিস এভার্ট লয়েড। ক্রিসের বিপক্ষে  ফাইনালে বেশ ভালো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার কাছে হার মেনে যান স্টেফি।

এরপর পরপর দুই ফাইনালে ক্রিস এভার্টের কাছে হারার পর ১৯৮৬ সালে চার্লসটন ওপেনের ফাইনালে ক্রিস এভার্টকে হারিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা জিতে নেন সদ্য কৈশোর পেরোনো স্টেফি গ্রাফ।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ভাগ্যদেবী যেনো দু হাত উজাড় করে দিয়েছেন এই টেনিস সুন্দরীকে।

১৯৮৫ আর ১৯৮৬, পরপর দুই বছর ইউএস ওপেনের সেমি থেকে বাদ পড়ে যেতে হয় স্টেফিকে। কিন্তু সেই যে চার্লসটন ওপেন থেকে কি এক জাদুকরী শক্তির স্পর্শ  পেয়েছেন, সেটাকে ধারণ করে নিয়েছেন একেবারে ক্যারিয়ারের  শেষ দিন পর্যন্ত।

সেই আমলে ট্রেসি অস্টিনের পর সবচেয়ে কমবয়সী নারী হিসেবে ১৯৮৭ সালের  ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নেন ১৮ বছর বয়সী স্টেফি গ্রাফ। অবাক করা ব্যাপার হলো  ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন প্রমীলা টেনিসের সেই সময়কার সম্রাজ্ঞী মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালে ৩১ বছর বয়সী নাভ্রাতিলোভাকে ৬-৪, ৪-৬,  ৮-৬ গেমে হারান স্টেফি। সেই বছর ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতে  পারেননি। তবে বছরের বাকি দুই গ্র্যান্ড স্ল্যাম- উইম্বলডন আর ইউএস ওপেনের  ফাইনালে ওঠেন তিনি। সেবার দুই ফাইনালেই নাভ্রাতিলোভার কাছে হেরে যান। সান্ত্বনার কথা হলো ১৯৮৭ তে নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের  পাশাপাশি জেতেন ডব্লিউটিএ ফাইনালস আর ডব্লিউটিএ রেংকিং এ দখল করেন প্রথম স্থান।

১৯৮৮ সাল। প্রমীলা টেনিস তথা সমগ্র টেনিস ইতিহাসে এক  গুরুত্বপূর্ণ বছর। পুরুষ টেনিসে ফেদেরার’০৬ কিংবা জোকোভিচ’১৫ এর মতো প্রমীলা টেনিসে স্টেফি’৮৮ এক মাইলফলকের নাম। সেবছর টেনিস ইতিহাসের এখন পর্যন্ত  একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন স্ল্যাম জেতেন স্টেফি গ্রাফ। গোল্ডেন  স্ল্যাম হলো একিই ক্যালেন্ডার ইয়ারে চারটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং অলিম্পিক  স্বর্ণ জেতা। মানে, ক্যালেন্ডার স্ল্যাম+অলিম্পিক গোল্ড=গোল্ডেন স্ল্যাম। মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা, গ্যাব্রিয়েলা সাবাতিনি, ক্রিস এভার্টদের মতো বাঘা বাঘা সব খেলোয়াড়দেরকে হারিয়ে জেতেন সে বছরের চারটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম আর সিউল ১৯৮৮ অলিম্পিকের স্বর্ণ জেতেন ১৯ বছরের তরুণী স্টেফি গ্রাফ। ১৯ বছরের এক তরুণীর এক বছরে এতোগুলো অর্জন! কল্পনাও করতে কষ্ট হয়।

ইতিহাসে একমাত্র গোল্ডেন স্ল্যাম জেতা খেলোয়াড় স্টেফি গ্রাফ
ইতিহাসে একমাত্র গোল্ডেন স্ল্যাম জেতা খেলোয়াড় স্টেফি গ্রাফ Source: Getty Images

স্টেফির ক্যারিয়ারের অর্জনের তালিকা এতো বিশাল যে সবগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে  গেলে সারা দিন পার হয়ে যাবে। তাই পাঠকদের সুবিধার্থে শুধুমাত্র তাঁর ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোকে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

সেরেনা উইলিয়ামসের ২০১৭ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার আগ পর্যন্ত ২২ টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা নিয়ে ওপেন যুগের সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা নারী টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন স্টেফি গ্রাফ। বর্তমানে ওপেন যুগে সেরেনা উইলিয়ামস (২৩) এর পর দ্বিতীয়  সর্বোচ্চ এবং সর্বকাল হিসেবে মার্গারেট কোর্ট (২৪) আর সেরেনা উইলিয়ামস (২৩) এর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার মালিক স্টেফি।

স্টেফির ক্যারিয়ারের ২২ টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ৪ টি এসেছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে,  ৬ টি এসেছে ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে, ৭ টি এসেছে উইম্বলডন থেকে এবং বাকি ৫ টি এসেছে ইউএস ওপেন থেকে। প্রমীলা ও পুরুষ টেনিস মিলিয়ে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে প্রত্যেক গ্র্যান্ড স্ল্যাম কমপক্ষে চারবার করে জেতার কৃতিত্ব রয়েছে শুধু স্টেফি গ্রাফেরই।

ডব্লিউটিএ এবং এটিপির রেংকিং প্রথা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রমীলা ও পুরুষ টেনিস মিলিয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩৭৭ সপ্তাহ রেংকিং এর প্রথম  স্থান দখল করে ছিলেন এই জার্মান সুন্দরী।

ওপেন যুগে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা (১৬৭) এবং ক্রিস এভার্ট (১৫৭) এর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০৭ টি সিংগেল টাইটেলের মালিক স্টেফি।

মার্গারেট কোর্টের সাথে যৌথভাবে পাঁচটা ক্যালেন্ডার ইয়ারে কমপক্ষে তিনটি  গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ডও তাঁর দখলে (১৯৮৮, ১৯৮৯, ১৯৯৩, ১৯৯৫,  ১৯৯৬)।

ওপেন যুগে প্রমীলা ও পুরুষ টেনিস মিলিয়ে মাত্র দুজন ক্যালেন্ডার স্ল্যাম জিতেছেন। তাঁরা হলেন- রড লেভার এবং স্টেফি গ্রাফ।

মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা (৮) এর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ বার ডব্লিউটিএ ফাইনালস শিরোপার মালিক স্টেফি।

রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩১ টা গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে খেলেছেন স্টেফি গ্রাফ।  এর মধ্যে ১৯৮৭ ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে ১৯৯০ ফ্রেঞ্চ ওপেন পর্যন্ত টানা ১৩ টা  গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে খেলেছেন তিনি, যার মধ্যে ৯ টার শিরোপাই  বগলদাবা করেছেন। ১৯৮৮ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে ১৯৮৯ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন  পর্যন্ত টানা ৫ টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জিতেছেন। ১৯৮৮ ও ১৯৮৯,  এই দুই ক্যালেন্ডার ইয়ারের ৮ টা গ্র্যান্ড স্ল্যামের ৭ টাই গিয়েছে স্টেফির ঘরে। ১৯৮৯ ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে স্প্যানিয়ার্ড সানচেজ ভিসারিওর বিপক্ষে এক  তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচে হেরে একটুর জন্য টানা দ্বিতীয়বারের মতো  ক্যালেন্ডার স্ল্যাম জিততে পারেননি।

রূপ এবং প্রতিভা, এ দুটোর মিশেল ছিলেন যেনো স্টেফি গ্রাফ!
রূপ এবং প্রতিভা, এ দুটোর মিশেল ছিলেন যেনো স্টেফি গ্রাফ! Source: tennisracquetdrillpro.com

আর্জেন্টাইন গ্যাব্রিয়েলা  সাবাতিনির সাথে জুটি গড়ে উঠেছেন চারটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম উইমেন্স ডাবলসের  ফাইনালে, যার মধ্যে ১৯৮৮ এর উইম্বলডন উইমেন্স ডাবলস জিতে নেন তাঁরা দুইজন। ১৯৮৮ সিউল অলিম্পিকে স্বদেশী ক্লওদিয়া ক্লেশিচের সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে জেতেন  উইমেন্স ডাবলসের ব্রোঞ্জ। পরবর্তীতে ১৯৯২ বার্সেলোনা অলিম্পিকে উইমেন্স সিঙ্গেলে সিলভার জেতেন স্টেফি গ্রাফ।

১৯৮৭ তে যেই ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের  মাধ্যমে স্টেফির জয়রথ শুরু, সেই ১৯৯৯ ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেই নিজের ২২ তম এবং সর্বশেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা ঘরে তোলেন স্টেফি। নিজের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ১৯৯৯ উইম্বলডনে হন রানার-আপ।

১৩ই আগস্ট ১৯৯৯ সালে ডব্লিউটিএ রেংকিং এ তৃতীয় অবস্থানে থাকাকালীন নিজের ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন  ৩০ বছর বয়সী স্টেফি গ্রাফ। নিজের শেষ টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান ওয়েলস মাস্টার্সের ফাইনালে হেরে যান সেরেনা উইলিয়ামসের কাছে। ঠিক যেনো চক্র পূরণের মতো। স্টেফি যেখানে শেষ করেছেন, সেরেনা সেখান থেকেই যেনো আবার শুরু করেছেন।

সেরেনা কি পারবেন স্টেফির জায়গাটা দখল করতে?
সেরেনা কি পারবেন স্টেফির জায়গাটা দখল করতে? Source: ESPN.com

নিজের প্রোফেশনাল ক্যারিয়ারের টাইম স্প্যানের (১৯৮২-১৯৯৯) ১৮ বছরে  টোটাল ৭২ টা গ্র্যান্ড স্ল্যামের ৩১ টার ফাইনালে উঠেছিলেন স্টেফি (শতকরা  হিসেব করলে প্রায় ৪৩ ভাগ, বেশ কয়েকটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে  ইনজুরির কারণে পরে নাম প্রত্যাহার করে নেন)। আর জিতেছেন ২২ টা গ্র্যান্ড  স্ল্যাম (শতকরা হিসেব করলে মোটা দাগে নিজের ক্যারিয়ার স্প্যানে ৩০ ভাগ  গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপাই জিতেছেন স্টেফি)। একচ্ছত্র আধিপত্য কাকে বলে তা  দেখিয়ে গিয়েছেন তিনি। তবে স্টেফির সময় স্টেফি-নাভ্রাতিলোভা রাইভালরি ছিলো  সবচেয়ে বিখ্যাত। এছাড়া স্টেফি-সাবাতিনি, স্টেফি-এভার্ট, স্টেফি-সেলেস,  স্টেফি-ভিসারিও রাইভালরিও বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়।

বর্তমান সময়ের ফেদেরার-নাদাল রাইভালরির চেয়েও কোনো অংশে কম ছিলো না সেসময়ের গ্রাফ-নাভ্রাতিলোভা রাইভালরি
বর্তমান সময়ের ফেদেরার-নাদাল রাইভালরির চেয়েও কোনো অংশে কম ছিলো না সেসময়ের গ্রাফ-নাভ্রাতিলোভা রাইভালরি Source: skysports.com

স্বদেশী বরিস বেকারকে সাথে নিয়ে নিজ দেশ জার্মানিতে টেনিসকে জনপ্রিয় মুখ্য ভূমিকা পালন  করেন স্টেফি গ্রাফ। টেনিসে তাঁর অবদান স্বরূপ ২০০৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল  টেনিস হল অফ ফেমে জায়গা করে নেন জার্মান টেনিসের এই কিংবদন্তী।

১৯৯২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত  জার্মান ফর্মুলা ওয়ান রেসার মাইকেল বার্টেলসের সাথে সম্পর্ক ছিলো স্টেফির।  ১৯৯৯ সালে নিজের রিটায়ারমেন্টের পরপরই মিডিয়ায় আরেক টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসির সাথে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কানা-ঘুষা শুরু হয়। বেশ কয়েক জায়গায়  তাঁদেরকে একসাথে ডেটিং করতেও দেখা যায়।

অবশেষে ২০০১ সালের ২২শে  অক্টোবর একত্রে গাঁটছাড়া বাঁধেন স্টেফি এবং আগাসি। তাঁদের ঘরে এখন রয়েছে এক  ছেলে এবং এক মেয়ে। টেনিসের সবচেয়ে আইকনিক দাম্পত্য-জুটি বলা হয়ে থাকে স্টেফি-আগাসি জুটিকে।

ছেলে, মেয়ে এবং স্বামী আন্দ্রে আগাসির সাথে স্টেফি গ্রাফ
ছেলে, মেয়ে এবং স্বামী আন্দ্রে আগাসির সাথে স্টেফি গ্রাফ Source: dailytelegraph.co.uk

গত ১৪ই জুন ৪৮ বছরে পা দিয়েছেন এই টেনিস কিংবদন্তী। স্বামী, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এখন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে। অবসর নেয়ার পর থেকেই নানান ধরনের জনসেবা মূলক কার্যক্রমে ব্যস্ত রয়েছেন স্টেফি-আগাসি জুটি। টেনিসের মহারাণী স্টেফি গ্রাফের প্রতি রইলো ইতিবৃত্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অফুরন্ত ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা!

Leave A Reply
sativa was turned on.mrleaked.net www.omgbeeg.com

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More