সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আবারো মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপের ২১ তম আসর। আর বিশ্বকাপ মানেই উত্তেজনাপূর্ণ সব ম্যাচ, যার মধ্যে কিছু ম্যাচ থাকে যেগুলোর জন্য প্রহর গুণতে থাকে পুরো ফুটবল বিশ্ব। এবার ও তার ব্যতিক্রম হয় নি। গ্রুপ পর্বের ফিক্সচারের পরেই যে ম্যাচটির দিকে পুরো ফুটবল বিশ্ব তাকিয়ে আছে তা হচ্ছে স্পেন-পর্তুগালের মহাযুদ্ধ। ঐতিহ্যগত কারণে এবং শক্তিমত্তার বিচারে ম্যাচটি নিঃসন্দেহে আসরের অন্যতম সেরা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।
ক্লাবের হয়ে একসাথে একের পর এক মৌসুম জয় করে আসা রোনালদো-রামোস রা লড়বেন একে অন্যের বিরুদ্ধে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার এবং অন্যতম সেরা ফরওয়ার্ডের মুখোমুখি যুদ্ধ দেখার জন্য মুখিয়ে আছে ফুটবল ভক্তরা। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি কে হাসবেন তা এখনি বলা মুশকিল। তাই আপাতত জমজমাট একটি ম্যাচের অপেক্ষায় আছে ফুটবল বিশ্ব।

দুইদলেরই ২০১৮ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। গ্রুপের বাকি দুই দল তুলনামূলক দুর্বল মরোক্কো এবং ইরান। এই ম্যাচটিই হয়তো গ্রুপের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিবে। এছাড়াও ২০১৪ বিশ্বকাপের মতো প্রথম ম্যাচেই পা ফসকানোর মতো রিস্ক এড়াতে চাইবে দুইদলই। তাই সর্বোচ্চ শক্তি দিয়েই লড়াই করবে তারা। বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়নের সাথে সাবেক বিশ্ব এবং ইউরোপ জয়ীদের লড়াই উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্য যেকোন ম্যাচের চেয়ে বেশী।
আসুন দেখে নেয়া যাক সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ম্যাচটি কেমন হতে পারেঃ
সাম্প্রতিক ফর্মঃ
সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় কিছুটা এগিয়ে থাকবে স্প্যানিশ রা। সর্বশেষ ৬ ম্যাচের ৪ টিতেই জয় পেয়েছে তারা, বাকি দুটি ম্যাচ ড্র। এছাড়াও সর্বশেষ ১৮ ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে দলটি।
অন্যদিকে সর্বশেষ ৬ ম্যাচে পর্তুগালের জয় ৩ ম্যাচে। ড্র হয়েছে দুটি ম্যাচ এবং পরাজয় একটি তে। শেষ চার ম্যাচে মাত্র একটি জয়। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় তাই জয়ের সম্ভাবনার পাল্লাটা স্পেনের দিকেই কিছুটা ভারী হচ্ছে।
হেড টু হেডঃ
দুই দল সর্বমোট ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। বেশীরভাগ সময়ই স্পেনের সাথে পেরে উঠে নি পর্তুগাল।
৩৬ বারের দেখায় স্পেন জয় পেয়েছে ১৮ বার, পর্তুগাল জয় পেয়েছে ৬ বার। বাকি ১২ টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ ইউরো তে স্পেনের কাছে হেরেই টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়তে হয়েছিলো পর্তুগাল কে। স্পেন গেড়ো কাটাতে হলে, তাই অতিমানবীয় কিছু করে দেখাতে হবে রোনালদো বাহিনী কে।
সম্ভাব্য একাদশঃ
পর্তুগালঃ
গোলকিপারঃ রুই প্যাট্রিসিও
ডিফেন্সঃ জোসে ফন্টে/ব্রুনো আলভেস, পেপে, রাফায়েল গুরেইরো, সেড্রিক
মিডফিল্ডঃ জোয়াও মারিও, জোয়াও মৌতিনহো, উইলিয়াম কার্ভালহো, বার্নার্ডো সিলভা
ফরওয়ার্ডঃ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, আন্দ্রে সিলভা
ফর্মেশনঃ ৪-৪-২

স্পেনঃ
গোলকিপারঃ ডেভিড ডে হায়া
ডিফেন্সঃ সার্জিও রামোস, জেরার্ড পিকে, দ্যানি কার্ভাজাল, জর্দি আলবা
মিডফিল্ডঃ সার্জিও বুস্কেটস, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, থিয়াগো আলকান্তারা
ফরওয়ার্ডঃ ডেভিড সিলভা, ইস্কো আ্যলার্কন, দিয়েগো কস্তা
ফর্মেশনঃ ৪-৩-৩

ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন যারাঃ
স্পেনের হয়ে লাইমলাইট থাকবে ইস্কো, ডেভিড সিলভা, দিয়েগো কস্তা এবং ডেভিড ডে হায়ার উপর। দারুণ ফর্মে থাকা ইস্কো এবং ডেভিড সিলভা দুজনই বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ ৫ টি করে গোল করেছেন। অন্যদিকে, বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা গোলকিপার ডে হায়ার উপর ও থাকবে অনেক দায়িত্ব। নিজের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করতে পারলে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে যাবে এখানেই।
পর্তুগালের পার্থক্য গড়ে দেয়ার জন্য সবার উপরে থাকবেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বাছাইপর্বে ১৫ গোল দিয়ে জানান দিয়েছিলেন বিশ্বকাপে কিছু করে দেখাতে চান। রোনালদো সেদিন মুডে থাকলে স্পেনের জন্য দিনটা খুব একটা ভালো নাও যেতে পারে। রোনালদোর পাশাপাশি পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন আন্দ্রে সিলভা। মাত্র ২২ বছর বয়সী এসি মিলানের এই স্ট্রাইকার বাছাইপর্বে ৯ গোল দিয়ে প্রমাণ করেছে তার যোগ্যতার। এছাড়াও মাঝমাঠে উইলিয়াম কার্ভালহো ভালো কিছু করে দেখাতে পারলে জয়ের মুখ দেখতে পারে পর্তুগাল, কেননা স্পেনের সাথে জিততে চাইলে মাঝমাঠ থেকে তাদের আক্রমণ থামিয়ে বলের সাপ্লাই দিতে হবে আক্রমণভাগে। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় তাই তিনি ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
দুইদলেরই আস্থার জায়গা তাদের রক্ষণভাগ। বাছাইপর্বে মাত্র ৩ এবং ৪ গোল হজম করেছে যথাক্রমে স্পেন এবং পর্তুগাল। ম্যাচ জিততে হলে দুইদলেরই ফরওয়ার্ড লাইন কে তাই ভালো কিছু করে দেখাতে হবে।
বিশ্বকাপে সর্বশেষ দুই দলের দেখা হয়েছিলো ২০১০ আফ্রিকা বিশ্বকাপে। সেই ম্যাচে ১-০ তে হেরে স্বপ্নভংগ হয়েছিলো রোনালদোর পর্তুগালের। পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ৮ টি বছর। তবে ঘা এখনো শুকায়নি। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে রোনালদো বাহিনী। সময়ের পরিক্রমায় স্পেনের সেই স্বপ্নের দল আর নেই। ক্যাসিয়াস, পুয়োল, জাভি, ভিয়া দের বিদায়ে স্পেন তার শক্তি হারিয়েছে অনেকখানি। অন্যদিকে আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ফিরেছে পর্তুগাল। দলে রোনালদো ছাড়া সেইরকম কোন স্টার প্লেয়ার না থাকলেও, নিজেদের তারা প্রমাণ করেছিলো ২০১৬ ইউরোর ফাইনালেই- রোনালদো কে ছাড়াই ফাইনাল জয় করে। ইউরো জয় করে বিশ্বকাপই এখন তাদের লক্ষ্য একমাত্র আরাধ্য ট্রফি জয় করতে রোনালদোও চাইবেন তার পুরোটাই দিতে। তাই স্পেনের জন্য পরীক্ষাটা মোটেও সহজ হবে না। সর্বোপরি দুই দলই তাদের সেরাটা দিবে বিশ্বকাপে একটি শুভ সূচনার জন্য। ফুটবল অনুরাগীরাও বসে আছেন সেই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের সাক্ষী হয়ে থাকতে।ম্যাচের ফলাফল জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আর অল্প কয়েকদিন।
Reference:
Espnfc.com
avodart without prescription purchase celecoxib for sale zofran 8mg tablet
levaquin 500mg pill buy levaquin 500mg