স্ত্রী ও তার প্রেমিককে মাতাল অবস্থায় খুন করার অপরাধে এন্ডি ডুফ্রেইনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। প্রফেশনাল একজন সফল ব্যাংকার এন্ডি ডুফ্রেইন এর শশাঙ্ক জেলখানার অভ্যন্তরীন হতাশাগ্রস্ত জীবন, মুক্তির স্বপ্ন, জীবন থেকে বাঁচার লড়াই এমন নানান উত্থান পতন নিয়েই চিত্রনাট্য তৈরি করেন ফ্রেংক ডারাবন্ট। হাল না ছাড়া এক মানুষের গল্প। জেলখানার নানান অসহায়ত্ব কাটিয়ে উঠার মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে টিকিয়ে রেখে এগিয়ে যাওয়ার গল্প।
ফ্রাংক ডারাবন্ট বিশ্ব বিখ্যাত ৬ জন পরিচালকের একজন, যাদের প্রথম দুটি সিনেমাই অস্কারে নোমিনেশান পেয়েছে। শশাঙ্ক রিডাম্পশান ফ্রাংক ডারাবন্ট এর প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি। ফ্রাংক ডারাবন্ট স্বল্পদৈর্ঘ্য ও বিভিন্ন টিভি শো পরিচালনা করেন। স্টিফেন কিং এর ‘রিটা হেওয়ার্থ এন্ড শশাংক রিডেম্পশান’ উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য তৈরি করেন ফ্রাংক ডারাবন্ট। সিনেমাটি টিভি নাটক প্রিজন ব্রেকের ধাঁচের মনে হলেও আসলে তেমন নয়, ভিন্নরকমের নাট্য চলচ্চিত্র। আশা হতাশার গল্প।
যেখানে পুরো সিনেমায় আশায় বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছে। শশাঙ্কের কারাগারে আবদ্ধ কারাবন্দীরা যখন হতাশা নিয়ে জেলখানার জীবন উপভোগ করতে শুরু করেছে, সেখানে এন্ডি ডুফ্রেইন স্ত্রী হত্যার অভিযোগে যাবজ্জীবন দণ্ডিত হয়ে শশাঙ্কে প্রবেশ করেন। মাস খানেক পর রেডের সাথে যখন সর্বপ্রথম কথা বলতে যায় এন্ডি, তখন রেড বলেছিলো, let me tell u something, hope is a dangerous things. hope can drive a man insane. এন্ডি সেদিন রেডের কথার কোন উত্তর দেয় নি। শুধু বলেছিলো তাকে একটি রকহ্যামার ও রিটা হেওয়ার্থের একটি বড় পোস্টার এনে দিতে। রেড ঘুষের বিনিময়ে এন্ডিকে ছোট্ট একটি রকহ্যামার ও পোস্টার এনে দেয়। এন্ডি ডুফ্রেইনও রেডের টিমের সাথে মানিয়ে নিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে।
একবার জেলরক্ষীদের ক্যাপ্টেন বায়রন হ্যাডলী তার ওয়ারিশী সম্পত্তির ট্যাক্স নিয়ে ঝামেলায় পড়েছিলো। সেসময় রেড এন্ডি ও তাদের বন্ধুদের নিয়ে শশাঙ্কের ছাদে কাজ করছিলো। এন্ডি বায়রন হ্যাডলীকে লাভজনক সমাধান দেখিয়ে দেয়ার সুবাদে সবাইকে মদের বোতল উপহার দেয়৷ জেলখানার ছাদে এমন আনন্দঘন মূহুর্ত তৈরি করতে পারায় এন্ডির সাথে সবার মাঝে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়।
এদিকে এন্ডির কথা ওয়ার্ডেন জানতে পেরে তাকে অভ্যন্তরীণ লাইব্রেরি ও হিসাব রক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এন্ডি তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সবার অর্থনৈতিক হিসাব নিকাশের কাজ করে দিতে শুরু করে। একসময় ওয়ার্ডেন নর্টনও এন্ডিকে দিয়ে তার সমস্ত অর্থনৈতিক লেনদেনের কাজ করাতে শুরু করে। এন্ডিও নর্টনের সকল অবৈধ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিজ অভিজ্ঞতায় চালিয়ে নিচ্ছেন। একসময় নর্টন জনস্বার্থমূলক কাজে শ্রমিক ব্যবহারের পরিবর্তে কারা শ্রমিক ব্যবহার শুরু করে প্রচুর টাকা আয় করতে শুরু করে। সেই কালো টাকা মানি লন্ডারিং করে একটি গোপন একাউন্টে গচ্ছিত রাখার দায়িত্ব দেয় এন্ডিকে।
এদিকে লাইব্রেরিয়ান ব্রুকস ৫০ বছর জেলখাটার পর মুক্তি পায়। কিন্তু ৫০ বছর পর দুনিয়ার সাথে তাল মিলাতে না পেরে আত্মহত্যা করে। ব্রুকসের সব দায়িত্ব এন্ডি পালন করে। রাজ্য সরকার থেকে টাকা আদায় করে শশাংক জেলখানার অভ্যন্তরীণ লাইব্রেরিকে ইংল্যান্ডের সেরা প্রিজন লাইব্রেরীতে পরিণত করে এবং সেখানে অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থারও চালু করে। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র হিসেবে আসেন চুরির অপরাধে ধরা পড়া টমি উইলিয়ামস। টমির সাথে সবার যখন বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায় তখন একদিন এন্ডির স্ত্রী হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়। টমির আরেক বন্ধু টমির কাছে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করে। এদিকে ওয়ার্ডন নর্টন তার অনৈতিক লেনদেন চালানোর জন্যে এন্ডিকে ছাড়তে রাজি নন। তাই একদিন টমকেই জেল থেকে পালানোর চেষ্টার দায়ে গুলি করে হত্যা করে।
নর্টনের অনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে অস্বীকার করলে এন্ডিকে মাস দু’মাস করে সেলে বন্দী করে রাখা হয়। ততদিনে এন্ডির জেলজীবন প্রায় ২০ বছর হয়ে এসেছে। এন্ডি তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু রেডকে তার স্বপ্নের কথা জানায়। এন্ডি যদি কখনো মুক্তি পায় তাহলে মেক্সিকোর উপকূলবর্তী জিহুয়াতানেজোতে বাকি জীবন কাটাবে। তখন এন্ডি রেড কে প্রমিস করিয়ে নেয়, রেড যদি কখনো মুক্তি পায় তাহলে যেন এন্ডির কথানুযায়ী একটি বাক্স খুঁজে বের করে৷ এন্ডি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রেডকে উদ্দেশ্য করে, Remember that, hope is a good thing. Red, maybe the best things, and no good thing ever dies. রেড চিন্তিত হয়ে পড়ে এন্ডির আচরনে। অন্যদিকে রেড আবার জানতে পারে আরেক কয়েদী থেকে এন্ডি ৬ ফুট দড়ি নিয়েছে তার সেলে।
অস্থিরতায় রাত কাটায় রেড৷ কি করতে যাচ্ছে এন্ডি? যেখানে দর্শকেরও নিশ্বাস নিতে দম আটকে আসে। কি করবে এন্ডি আজ রাতে? পরদিন সকালে জেলখানার সেলে সবাইকে পাওয়া যায় এন্ডিকে ছাড়া। এন্ডির রুমে কয়েকটি পাথরের তৈরি দাবার ঘুটি আর একটি অভিনেত্রী রিটা হেওয়ার্থের পোস্টার। তখন নর্টন আবিষ্কার করে এন্ডির শশাঙ্ক থেকে মুক্তির পথ। জেলখানার অভ্যন্তরে থেকে এন্ডি নর্টনের যত টাকা এদিক ওদিক করেন, সব নিজে তুলে নিয়ে নর্টনের বিরুদ্ধে একটি ফাইল সরকারের কাছে পাঠিয়ে মেক্সিকো পাড়ি দেয় এন্ডি ডুফ্রেইন। নর্টনকে গ্রেফতার করতে এলে নর্টন আত্মহত্যা করে। এদিকে রেডও ৪০ বছর জেলখাটার পর প্যারেলে মুক্তি পেয়ে এন্ডির কথামত বক্স খুঁজে নিয়ে মেক্সির উপকূলবর্তী শহরের দিকে এন্ডির কাছে চলে যায়৷
পুরোপুরি জেলখানার পরিবেশে নির্মিত সিনেমার কথক ছিলেন মর্গান ফ্রীম্যান। যার কণ্ঠ এখনো সারাবিশ্বে অদ্বিতীয় প্রভাব বিস্তারকারী। পুরো সিনেমায় দর্শককে আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য মর্গান ফ্রীম্যানের মুখের ভাষ্যই যেখানে যথেষ্ট সেখানে সিনেমার গল্প, নাটকীয়তা, আশায় টিকে থাকা জীবনের রূপ তুলে আনা সিনেমাটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়ার সময় সিনেমাটি বাণিজ্যিক সফলতা খুব একটা পায়নি। যদিও পরবর্তীতে সিনেমার জনপ্রিয়তা দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট এর ১০০ সেরা চলচ্চিত্রে জায়গা করে নেয় শশাঙ্ক রিডেম্পশান।
বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এ সিনেমা রটেন টম্যাটোসের স্কোর পেয়েছে ১০০ তে ৯১। IMBDতে দর্শকদের ভোটে শশাঙ্ক রিডেম্পশন ১০ এ ৮.২ পেয়ে বিশ্বের সেরা সিনেমা হিসেবে স্থান দখল করে আছে।দ্বিতীয়টি দ্যা গডফাদার৷
৬৭ তম একাডেমি পুরস্কারে শশাঙ্ক রিডেম্পশান সাতটি বিভাগে মনোনয়ন পেলেও একটিতেও পুরস্কার জিততে পারে নি। ৫২ তম গ্লোব পুরস্কারেও মনোনয়ন পেয়েও কোন পুরস্কার নিতে পারেনি শশাঙ্ক রিডেম্পশান। বেস্ট স্ক্রীনপ্লে সহ কয়েকটি ছোটখাটো পুরস্কার জিতলে আকর্ষনীয় কোন পুরস্কার এ সিনেমা অর্জন করতে পারেনি, নাকি এই সিনেমাকে দেয়ার মত কোন পুরস্কার ই তৈরি হয়নি সেটা দর্শক ইতোমধ্যে নির্ধারণ করেছে তাদের ভোটের মাধ্যমে, আপনি কি করবেন?
is wellbutrin a dopamine
zyprexa chemical structure
lamisil 250mg us – how to buy diflucan buy grifulvin v pill
purchase semaglutide pill – order generic glucovance order generic desmopressin