ছোটবেলায় রবিনসন ক্রুসোর গল্প আমরা কম-বেশি সবাই পড়েছি। রবিনসন ক্রুসো, অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন ব্রিটিশ নাগরিক। যে কিনা ভাগ্যের সন্ধানে পাড়ি দিতে চেয়েছিলো সমুদ্র। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত জাহাজ ঝড়ের কবলে পড়ার কারণে তাকে আটকে যেতে হয় ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের এক দ্বীপে। দীর্ঘ ২৮ বছর সেই দ্বীপে আটকে থাকার পর অবশেষে মুক্তি লাভ করে সে।
![রবিনসন ক্রুসোর সেই গল্প আমরা কে না জানি](https://itibritto.com/wp-content/uploads/2018/03/রবিনসন-ক্রুসোর-সেই-গল্প-আমরা-কে-না-জানি.jpg)
Source: art-prints-on-demand.com
কাস্ট অ্যাওয়ে মুভিটা যেনো আধুনিক যুগের সেই রবিনসন ক্রুসোরই গল্প। নাম চাক নোলান্ড। FedEx এর একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার। দেশ থেকে দেশে ঘুরে বেড়ান ফেডেক্সের এই টাইম অবসেসড ইঞ্জিনিয়ার। পর্যবেক্ষণ করে বেড়ান ফেডেক্সের কোনও অফিসে টাইম ম্যানেজমেন্টে কোনও ত্রুটি আছে কি-না। ক্রিসমাসের ছুটিতে নিজের দেশ আমেরিকার মেম্ফিসে ছুটি কাটাতে আসেন তিনি। প্রিয়তমা কেলির সাথে নিউ ইয়ার্স ইভেই গাঁটছড়া বাধার ইচ্ছা তার। কিন্তু হটাত করে ফেডেক্সের প্রয়োজনে ক্রিসমাসের রাতেই মালয়েশিয়ায় চলে যেতে হয় তাকে। যাওয়ার আগে চাক কেলির কাছে প্রতিজ্ঞা করে যায় যে, খুব দ্রুতই ফিরে আসবে সে। চাকের ভাগ্য খুব বেশি সুপ্রসন্ন ছিলো না। মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে প্রশান্ত মহাসাগরের উপরে ফেডেক্সের প্লেনে হটাত করেই দেখা দেয় যান্ত্রিক গোলযোগ। দেখতে দেখতে প্রশান্ত মহাসাগরের উপর আছড়ে পড়ে চাকদের প্লেন। ক্রাশ থেকে সার্ভাইভ করতে পারে শুধু চাক। ইনফ্ল্যাটেবল লাইফ র্যাফটের সাহায্যে একটা দ্বীপের উপকূলে পৌঁছায় চাক। পুরো জনশূন্য এক দ্বীপ। হাতের কাছে শুধু ফেডেক্সের কিছু প্যাকেজ। আর কিচ্ছুই নেই। চাক কি পারবে তার প্রেয়সীর কাছে ফিরে যেতে? নাকি সেই দ্বীপে মৃত্যু ঘটবে চাকের?
![কাস্ট অ্যাওয়ে তে নিঃসন্দেহে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পার্ফম্যান্স দিয়েছেন অস্কারজয়ী অভিনেতা টম হ্যাংকস](https://itibritto.com/wp-content/uploads/2018/03/কাস্ট-অ্যাওয়ে-তে-নিঃসন্দেহে-নিজের.jpg)
২০০০ সালের Robert Zemeckis পরিচালিত এপিক সার্ভাইভাল মুভি কাস্ট অ্যাওয়ে এর চাক নোলান্ড চরিত্রে অভিনয় করেছেন সবার প্রিয় টম হ্যাংকস। এই চরিত্রটির জন্য অনেক খাটুনি করেছেন তিনি। আমার মতে ফরেস্ট গাম্পের পর সবচেয়ে সেরা অভিনয় এই মুভিতেই করেছেন টম হ্যাংকস। শুধু তাঁর জন্যই পুরো মুভিটা দেখা যায়! প্রায় দুই বছর ধরে এই মুভিটির শুটিং হয়েছিলো। চরিত্রে প্রয়োজনে ছয় মাসে ২৫ কেজি ওজন বাড়িয়েছিলেন টম। আবার টমের ওজন ২৫ কেজি কমানোর জন্য, এবং দাড়িগোঁফ আরও বেশি গজানোর জন্য প্রায় এক বছর শুটিং বন্ধ ছিলো। এতো খাটুনির ফসলও পেয়েছেন টম। জিতে নিয়েছিলেন বেস্ট এক্টর এর জন্য ২০০১ সালের গোল্ডেন গ্লোব এওয়ার্ড। তম একাডেমী এওয়ার্ডসে পেয়েছিলেন অস্কার নমিনেশনও। মুভিটির একটি বিশেষত্ব হলো, প্রায় অনেকাংশ জুড়ে মুভিটি ছিলো সংলাপবিহীন। শুধুমাত্র নিজের এক্সপ্রেশন আর অভিনয় দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন টম হ্যাংকস। মুভিটির সিনেমাটোগ্রাফি আর সাউন্ড মিক্সিংয়ের প্রশংসা করতেই হয়। সাউন্ড মিক্সিং এর জন্য অস্কার নমিনেশনও পেয়েছিলো কাস্ট অ্যাওয়ে।
সব মিলিয়ে এখনো যারা মুভিটি দেখেননি তাদেরকে শুধু বলবো, “Come on man, it’s freakin’ Tom Hanks!” মুভিটি দেখলে বুঝতে পারবেন টম হ্যাংকস আসলেই কতোটা বড় মাপের অভিনেতা। ফরেস্ট গাম্পের পর দেখতে পারবেন টমের আরও একবার শক্তিশালী অভিনয়।
IMDb Rating: 7.7/10
My Rating: 9/10
ট্রেইলার দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
হ্যাপি ওয়াচিং!
order terbinafine 250mg – order fluconazole sale buy grifulvin v paypal