১৯৬৩ সালের ২২ শে নভেম্বর। এই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় রচিত হয়। কারণ এই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে একটি মোটরগাড়ি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকালে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন ফিটজেরাল্ড কেনেডি (জন এফ. কেনেডি) কে হত্যা করা হয়। কেনেডি তার স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডি, টেক্সাস এর গভর্নর জন কনালি ও তার স্ত্রী নেলী কনালি এর সাথে একটি ছাঁদ খোলা মোটরগাড়িতে ভ্রমণ করছিলেন। এই সময় লী হার্ভি অসওয়াল্ড নামে এক ব্যক্তির গুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই তরুণ প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয়। লী হার্ভি ছিলেন প্রাক্তন নৌ-সেনা। মৃত্যুর এতো বছর পরে এসেও কেনেডি হত্যা রহস্য কোন কূল কিনারা পায়নি এবং কেন তাকে হত্যা করা হল তা সঠিক ভাবে জানা যায়নি। অনেক আমেরিকাবাসীই মনে করে যে কেনেডি হত্যার পেছনে কোন একক ব্যক্তির হাত নয় বরং বড় ধরনের কোন ষড়যন্ত্র ছিল। প্রেসিডেন্টকে হত্যার দায়ে লী হার্ভেই কে বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি। ফলে তার দিক থেকে কিছু জানাই যায়নি কেননা তাকে জেল হাজতে নেয়ার সময়ই রুবি জ্যাক নামে ডালাসের এক নাইট ক্লাব ব্যবসায়ীর গুলিতে লী হার্ভি নিহত হয়।
জন এফ কেনেডির মৃত্যু:
১৯৬৩ সালের শেষের দিকে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও তার রাজনৈতিক উপদেষ্টাগণ তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যদিও তিনি সরাসরি নিজের প্রার্থিতার ঘোষণা দেননি, তবুও পরবর্তী নির্বাচনে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। ফলে গণসংযোগের জন্য তিনি দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণ শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে দুই দিনের সফরে জন এফ কেনেডি সস্ত্রীক টেক্সাসে আসেন।
টেক্সাস সফরের দ্বিতীয় দিন, ২২শে নভেম্বর শুক্রবারে প্রেসিডেন্ট কেনেডি তার স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডি ও গভর্নর জন কনালি ও তার স্ত্রী সহ একটি ছাঁদ খোলা গাড়িতে ১০ মাইল দীর্ঘ একটি মোটর শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি ডালাস শহরের ডিলে প্লাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানাতে এ সময় রাস্তার দু-পাশে ছিল জনতার ভিড়। ছাঁদ খোলা গাড়িতে বসে প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি প্যারেড রুট এর দু পাশের জনসমুদ্রের দিকে হাত নাড়ছিলেন। বেলা ১২ঃ৩০ এর দিকে তাদের গাড়ি বহর যখন টেক্সাস স্কুল বুক ডিপোজিটরি নামক একটি বহুতল দালানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো তখন ঐ দালান এর ষষ্ঠ তলার জানালা থেকেই প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। লী হার্ভি অসওয়াল্ড ঐ ভবনের জানালা দিয়ে প্রেসিডেন্ট কে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছুঁড়ে যার দুইটি এসে লাগে প্রেসিডেন্ট কেনেডির গলায় ও মাথায়। এর ৩০ মিনিট পর ডালাস এর পার্কল্যান্ড হাসপাতালে কেনেডি কে মৃত ঘোষণা করা হয়।
প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কে গুলি করার এক ঘণ্টার মাঝেই লী হার্ভি একজন পুলিশ অফিসারকে গুলি করে হত্যা করে। ঐ অফিসার কে হত্যার ৩০ মিনিট পরেই সন্দেহ ভাজন হিসেবে একটি মুভি থিয়েটার থেকে লী হার্ভিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর ২৩ শে নভেম্বর প্রেসিডেন্ট ও একজন পুলিশ অফিসার কে হত্যার দায়ে লী হার্ভি কে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২৪শে নভেম্বর লী হার্ভিকে ডালাস পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নিয়ে আসা হয় অধিক সুরক্ষিত জেলে স্থানান্তর করার জন্য। সাংবাদিকরা এই সময় পুলিশি কার্যক্রম গুলো সরাসরি সম্প্রচার করছিলেন। হঠাৎ করে পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনেই জ্যাক রুবি নামক এক নৈশ ক্লাবের মালিক লী হার্ভিকে গুলি করেন। তৎক্ষণাৎ জ্যাক রুবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন যে প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই তিনি লী হার্ভিকে গুলি করেছেন। তবে তার এই কথা অনেকেই বিশ্বাস করেন নি। অনেকের মতে, লী হার্ভিকে হত্যা প্রেসিডেন্ট কেনেডি কে হত্যার ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।
প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির মৃত্যুর মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করে। ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন, যিনি মোটর শোভাযাত্রায় প্রেসিডেন্ট কেনেডির গাড়ি থেকে মাত্র তিন গাড়ি পেছনে ছিল, বেলা ২ঃ৩৯ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ত্র শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সদ্য বিধবা জ্যাকুলিন কেনেডি সহ ৩০ জনের মত লোক উপস্থিত ছিলেন।
জন এফ কেনেডির হত্যা রহস্য:
প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের এতো বছর পেরিয়ে গেলেও তার হত্যা রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি। টেক্সাস স্কুল বুক ডিপোজিটরির কর্মচারী লী হার্ভি অসওয়াল্ড কে সন্দেহ জনক হত্যাকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলেও লী হার্ভি এই হত্যার দায় স্বীকার করেনি। এর আগেই ঘটনার দুই দিন পর জ্যাক রুবি লী হার্ভি কে হত্যা করে। ফলে কেনেডি হত্যাকাণ্ডে লী হার্ভির জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়েও শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
যদি লী হার্ভি প্রেসিডেন্ট কে হত্যা করেই থাকে তবে কেন বা কার নির্দেশে করেছে এটা একটা রহস্য কারণ তার কোন জবান বন্দীর পূর্বেই তাকেও হত্যা করা হয়। আবার নৈশ ক্লাব মালিক জ্যাক রুবিই বা কেন লী হার্ভিকে হত্যা করেছেন সেটাও একটা রহস্য। প্রেসিডেন্ট এর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে হত্যা করেছেন একথা বললেও তার কথা অনেকে বিশ্বাস করেনি। কারণ লী হার্ভির হত্যাকারী জ্যাক রুবির সখ্যতা ছিল অপরাধ জগতের মাফিয়াদের সাথে। ফলে অনেকে মনে করেন যে কেনেডি হত্যা রহস্য ধামাচাপা দিতে বা প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ডে অন্য কোন ব্যক্তির সম্পৃক্ততার তথ্য যাতে ফাঁস না হয় এই জন্য লী হার্ভিকে হত্যা করা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন অনেক তথ্য রয়েছে যা বড় কোন ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করে । যেমন–
১৯৭০ সালে প্রকাশিত তথ্য হতে পাওয়া যায় যে জন এফ কেনেডির ভাই এটর্নি জেনারেল রবার্ট কেনেডির নেতৃত্বে কেনেডি প্রশাসন কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যার জন্য একাধিক হত্যা চেষ্টা চালায়। কেনেডি প্রশাসন ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যার জন্য মাফিয়া সদস্যদের নিয়োগ দেয় বলে ধারণা করা হয়। ফলে অনেকে মনে করেন যে, কেনেডি ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যা করার আগেই সে কেনেডিকে হত্যা করেছে এবং এই হত্যাকাণ্ডে মাফিয়াদের ও হাত থাকতে পারে।
এছাড়া প্রাক্তন মেরিন শুটার লী হার্ভি অসওয়াল্ড ছিলেন কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী। এর ফলে তিনি নৌ-বাহিনীর চাকরি ছেড়ে ১৯৫৯ সালে রাশিয়া চলে যান। তারপর ১৯৬২ সালে প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যার একবছর আগে আমেরিকা ফিরে আসেন। তিনি তার জন্মস্থান নিউ অরলিন্স এ কিউবার সমর্থনে লিফলেট ও বিতরণ করেন। এরপর ১৯৬৩ সালের সেপ্টেম্বরে লী হার্ভি মেক্সিকো যান এবং সেখানে কিউবার দূতাবাসে গিয়ে কিউবা ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রাপ্তির চেষ্টা করেন। এছাড়া সে মেক্সিকো সিটিতে একজন কেজিবি অফিসারের সাথেও দেখা করেন। এসব থেকে ধারণা করা হয় যে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডে কিউবা বা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও জড়িত থাকতে পারে।
তবে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে, প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্য পরিচালনার জন্য গঠিত ওয়ারেন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এই হত্যাকাণ্ডে লী হার্ভি বা জ্যাক রুবি কোন ষড়যন্ত্রের অংশ নয়। বরং লী হার্ভি একাই প্রেসিডেন্ট কেনেডি কে হত্যা করে। তবে তাদের এই বক্তব্য ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে ম্লান করে দিতে পারেনি।
তারপর ১৯৭৮ সালে আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানানো হয় যে, প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডে একের অধিক হত্যাকারী ও সংগঠিত কোন অপরাধ চক্র জড়িত রয়েছে।
এছাড়া প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যাকাণ্ডের একটি বহুল প্রচলিত তত্ত্ব রয়েছে যে, এই হত্যাকাণ্ডে উগ্রবাদী ডানপন্থীদের ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং এতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সি.আই.এ এর হাত রয়েছে। তবে এতে সি.আই.এ এর জড়িত থাকার বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার কর্তৃক কেনেডি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত কিছু গোপন নথি প্রকাশিত হয়েছে। যদিও কিছু নথিপত্র নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশ করা হয়নি, তবে প্রকাশিত নথি সমূহ থেকে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। এদের মধ্যে রয়েছে-
একটি নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট কেনেডির হত্যাকারী লী হার্ভি অসওয়াল্ড হত্যার হুমকিতে ছিল এবং এই বিষয়ে এফবিআই পুলিশকে জানিয়েছিল। এফবিআই প্রধানের নথি থেকে জানা যায় যে, তারা লী হার্ভিকে হত্যার হুমকির কথা জানানোর পর পুলিশ প্রধান তার নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলো।
সিআইএ এর প্রকাশিত একটি নথি থেকে জানা যায় যে লী হার্ভি মেক্সিকো সিটি তে গিয়ে একজন কেজিবি অফিসারের সাথে দেখা করেন। এ থেকে ধারণা করা হয় যে ঐ কেজিবি অফিসারই লী হার্ভিকে প্রেসিডেন্ট এর হত্যাকাণ্ডে সাহায্য করেছে।
আরেকটি নথি থেকে যানা যায় ইংল্যান্ডের একটি সংবাদপত্র “ক্যামব্রিজ নিউজ” এ একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট এর হত্যার আধঘণ্টা আগে ফোন করে যুক্তরাষ্ট্রের কোন বড় খবরের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেয়।
যাই হোক, প্রকাশিত এ সকল নথি এখনো সঠিকভাবে জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রহস্যের সমাধান দিতে পারেনি। ফলে এখন অপেক্ষা পরবর্তী নথি প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত।
reputable canadian online pharmacies: canadian pharmacies – canada pharmacy world
when does zetia go generic
pharmacies in mexico that ship to usa: mexican pharmacy – mexico drug stores pharmacies
terbinafine online order – griseofulvin 250mg tablet buy grifulvin v medication
india online pharmacy: Cheapest online pharmacy – india online pharmacy
20 mg zyprexa
zofran dosage 4 mg
medication from mexico pharmacy: mexico pharmacy – buying prescription drugs in mexico
http://canadaph24.pro/# canadian drug pharmacy