x-video.center fuck from above. azure storm masturbating on give me pink gonzo style. motphim.cc sexvideos

হেলেন অফ ট্রয়ঃ যার ভালবাসার আগুনে পুড়েছিল গোটা সাম্রাজ্য

Source: Bangla Insider
2

আজও তুর্কিদের বিশ্বাস এ রাজ্য থেকে কেউ কিছু নিতে চাইলে যুদ্ধ অনিবার্য, হোক তা মাটি কিংবা মানবী। বারবার ধ্বংসের পরও ইতিহাসে যে নগরী চির অম্লান। যাকে পুঁড়ে ছাই হতে হয়েছিল এক রমনীর ভালবাসায়। যে রমনীকে ঘিরে আবর্তিত হয়ে চলেছে সহস্র বছরের ইতিহাস। গ্রীক ও রোমান পুরাণের সর্বাধিক আলোচিত নারীচরিত্র। সেই হেলেন আর ট্রয়কে নিয়েই আজকের এই লিখা। প্রথমে না হয় হেলেন কে দিয়েই শুরু করা যাক। .

হেলেনঃ

সাধারণভাবে হেলেন নামে পরিচিত হলেও তাকে বলা হয় ‘হেলেন অফ ট্রয়’ । কেউবা আবার বলেন ‘হেলেন অফ স্পার্টা’ । হেলেনের বুৎপত্তিগত অর্থ করলে দাঁড়ায় “আলোকবর্তিকা”। পুরুষবাচক শব্দ হওয়া সত্বেও এ নামেই পরিচিত হতে থাকেন হেলেন । খ্রিস্টপূর্ব ১২১৪ সালে স্পার্টার রাজা টিনডারাস এবং তার স্ত্রী লিডার ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। রাজ জ্যোতিষী সেই শিশুর নাম রাখেন হেলেন, সাথে এই বলে আশীর্বাদ করেন যে, নামের কারণেই জগদ্বিখ্যাত হবে এই কন্যা।

হেলেন অফ ট্রয়
হেলেন অফ ট্রয়
Source: Onedio

মহাকবি হোমারের ‘ইলিয়ড ও অডেসি’, ইউরিপিডিসের ‘হেলেন’, আর গ্রিক মাইথোলজির বর্ণনা অনুযায়ী টিনডারাস বাহ্যত হেলেনের জনক হলেও প্রকৃত জনক দেবতাধিরাজ জিউস। পুরাণমতে কোন একদিন, জিউস রাঁজহংসের বেশে ছিলেন। তখন একটি ঈগল তাকে তাড়া করলে জিউস আশ্রয় প্রার্থনা করেন রানী লিডার কাছে। রানী লিডার রুপে মুগ্ধ রাজহংসরূপী জিউস লিডার উষ্ণ সান্নিধ্যে আসেন এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। ফলশ্রুতিতে লিডা প্রসব করেন একটি ডিম। সেখান থেকে খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসে হেলেন।(কারো কারো মতে লিডা নয় বরং প্রতিশোধের দেবী নেমেসিসের কন্যা ছিলেন হেলেন । রাঁজহংসের সাথে মিলনে অখুশি নেমেসিসের ফেলে দেয়া ডিমটি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন রানী লিডা। আর তা ফুঁটেই জন্ম হেলেনের) ভ্যাটিকানের পুরাণ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাঁজহংস ও লিডার সঙ্গমে দুটো ডিম প্রসূত হয়। একটি জন্ম দেয় দুই বোন ক্লাইটেমেনেস্ত্রা এবং হেলেন; অন্যটি দুই ভাই; ক্যাস্টর এবং পুলাক্স। অনেকে মনে করেন, এক ডিম থেকে বের হয়েছে তিনজন: দুই ভাই এবং বোন হেলেন। সময়ের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে স্বর্গীয় রূপ-লাবন্য আর অসাধারণ মোহনীয় নারীত্বের পূর্ণতা নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকেন হেলেন অফ ট্রয়।

জিউস
জিউস
Source: Pinterest

রানী হেলেন ও রাজা মেনিলাসঃ .

সে সময় হেলেনের রূপ-সৌন্দর্যে মুগ্ধ গ্রিসের হাজারো যুবক পাণিপ্রার্থী হতে থাকে হেলেনের। তাদের মাঝে মেনিলাস আবির্ভূত হন সৌভাগ্যবান হিসেবে। হেলেনের অমতেই বিয়ে দেয়া হয় মেনিলাসের সাথে। প্রাচীন গ্রিস সে সময় বিভিন্ন রাজ্যে বিভক্ত ছিল- স্পার্টা ও মাইসেনিয়া ছিল তন্মধ্যে অন্যতম। স্পার্টার রাজা ছিলেন মেনিলাস, আর মাইসেনিয়ার রাজা আগামেনন। মেনিলাস ও আগামেনন সম্পর্কে ছিলেন আপন ভাই। একাধিক স্ত্রী থাকা সত্বেও রাজা মেনিলাস হেলেনকে রানী হিসেবে পেতে পাগল হয়ে ওঠেন। প্রায় ৬০ জন প্রহরী নিয়ে হাজির হন দেবরাজ জিউসের রাজপ্রাসাদে (কোন কোন বর্ণনায়,ছোট ভাই মেনিলাসের হয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন আগামেনন)।

হেলেন ও রাজা মেনিলাস
হেলেন ও রাজা মেনিলাস
Source: Pinterest

রাজার অনুরোধ আর বিনয়ে মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যান দেবরাজ জিউস (কেননা বিয়ের আগেই থেসিয়াস কর্তৃক কুমারীত্ব হারিয়ে ছিলেন হেলেন)! শুরু হয় নতুন অধ্যায়ের। মেনিলাস বয়সে ৪০ বছরের বড় হলেও নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন হেলেনকে।হেলেনের সেবায় নিযুক্ত করা হয় প্রায় ৮০ জন দাসী। নানা উপায়ে হেলেনের মুখে হাসি ফোটাতে চাইলেও কালে ভদ্রে হাসি ফুটতো রানী হেলেনের মুখে। কখনো ফুল, কখনো বা দামি পোষাক নিয়ে হাজির হতেন হেলেনের সামনে। নানা আয়োজনে হেলেনকে ভালোবাসতে চাইলেও হেলেন মোটেই কাছে টানতেন না মেনিলাসকে! সব সময় ভিন্ন কিছু পাওয়ার আশায় উদাসীন থাকতেন হেলেন। নিজেকে সদা আড়ালে রাখতেই পছন্দ করতেন তিনি। .

প্যারিস ও ট্রয় নগরীঃ .

এ সময় ‘দ্য ট্রোজান প্রিন্স’ প্যারিসের আবির্ভাব ঘটে ইতিহাসের রঙ্গমঞ্চে। মিথোলজির সুবিখ্যাত এজিয়ান সাগরের ওপারের এক নগরী ছিলো ট্রয় । ইতিহাসের ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীগুলোর মধ্যে যা অন্যতম। গ্রিক ভাষায় ট্রয় কে বলা হয় ‘ত্রইয়া’ বা ‘ইলিয়ন’। লাতিন ভাষায় ‘ত্রুইয়া’ বা ‘ইলিয়াম’। হিত্তীয় ভাষায় ‘উইলুসা’। ট্রয়ের তুর্কী নাম ‘ত্রুভা’ বা ‘ত্রয়া’। হোমারের ইলিয়াডে যে ট্রয়ের উল্লেখ রয়েছে সেটিকেই এখন ট্রয় নামে আখ্যায়িত করা হয়। এর অবস্থান আনাতোলিয়া অঞ্চলের হিসারলিক নামক স্থানে। অর্থাৎ, আধুনিক হিসারলিক-ই সেই প্রাচীন ট্রয় নগরী ।

প্রাচীন ট্রয় নগরী
প্রাচীন ট্রয় নগরী
Source: banglanews24.com

এর ভৌগলিক অবস্থান তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কানাক্কাল প্রদেশের সমুদ্র সৈকতের নিকটে এবং আইডা পর্বতের নিচে দার্দানেলিসের দক্ষিণ পশ্চিমে।সুদৃঢ় প্রাচীরবেষ্টিত চমৎকার নগরী ট্রয়ের ব্যাসার্ধ ছিল ৭৫০ থেকে ২০০০ মিটার। প্রাচীনকালে এ ধরনের শহরে শুধু রাজা ও তার অমাত্যরাই বসবাস করতেন। নগরীর চার পাশে থাকত প্রজারা। সেটিকে শহর ধরা হলে ট্রয় দার্দানেলিস (কানাক্কাল) থেকে বিস্তৃত হয়ে দক্ষিণে প্রায় পনেরো মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। যা প্রাচীন রোম থেকেও আয়তনে প্রায় দেড় গুণ বড়। ট্রয়ের রাজা প্রিয়াম এবং রানী হেকুবার দ্বিতীয় সন্তান প্যারিস। দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের পূর্বে হেকুবা স্বপ্নে দেখলেন, সে পৃথিবীতে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা বয়ে আনতে যাচ্ছেন,যে শিখা জ্বালিয়ে দেবে সমগ্র ট্রয় নগরী। দুর্ভাগ্য পীড়িত করবে গোটা সাম্রাজ্যকে। রাজ জ্যোতিষী পরামর্শ দেন প্যারিসকে হত্যা করার কিন্তু পিতা প্রিয়াম শিশুটিকে হত্যা করতে কুণ্ঠিত বোধ করেন। বিকল্প হিসেবে প্যারিসকে রেখে আসেন আইডা পর্বতে। সেখানে, এক রাখাল তাকে কুড়িয়ে নেয়, আর নিজ সন্তানের মতোই লালন-পালন করে বড় করে তুলতে থাকে। রাখাল আকর্ষণীয় ও সুদর্শন এই বালকের নাম রাখে প্যারিস। পুরাণ মতে, প্যারিস যখন টগবগে যুবক, মার্মিডনসের রাজা পেলেউস ও সমুদ্রদেবী থেটিসের বিয়েতে যুদ্ধদেবী এরিস ছাড়া সবাই আমন্ত্রিত হয়। দেবতাদের পিতা জিউস, তার স্ত্রী হেরা, জ্ঞানেরর দেবী অ্যাথেনা,প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী আফ্রোদিতি বিয়েতে উপস্থিত হন। মূলত একটি সংকট সৃষ্টি করার জন্যই যুদ্ধদেবী এরিস একটি সোনালি আপেল নিক্ষেপ করেন ভোজ টেবিলে। আপেলের গায়ে লেখা ছিল ‘সুন্দরীতম রমণীর জন্য’। আপেলের দাবি করে বসেন তিনজনই। দেবী হেরা, অ্যাথেনা ও আফ্রোদিতি। সৌন্দর্য আর শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব কেউ ছাড়তে সম্মত নয়। তিনজন নারীই দেবরাজ জিউসের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাদের কলহ মেটাতে বিচারের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে প্যারিসের কাঁধে। জিউস তার বার্তাদূত আইরিসকে বললেন, আপেলটি আইডা পর্বতের রাখাল প্যারিসকে দিতে। তার বিবেচনায় যে সুন্দরী ও শ্রেষ্ঠা, তাকেই যেন আপেলটি হস্তান্তর করা হয়।

সেসময় প্যারিস মেষ চড়াচ্ছিলো পর্বতে। আইরিস সহ তিন দেবী আবির্ভূত হলেন প্যারিসের সামনে। হেরা বললেন, ‘আমি তোমাকে সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজা বানিয়ে দেব।’ অ্যাথেনা দিতে চাইলেন ‘জ্ঞান, খ্যাতি আর যুদ্ধ জয়ের স্বর্গীয় ক্ষমতা’। মিষ্টি হেসে আফ্রোদিতি বললেন, ‘আমি তোমাকে দেব পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী, যে তোমার স্ত্রী হবে।’ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেনি প্যারিস; তার চাই সুন্দরী রমণী। ফলশ্রুতিতে,আপেল পেল আফ্রোদিতি। সন্তুষ্ট দেবী আফ্রোদিতি তার জন্য বরাদ্দ করল হেলেনকে আর ক্ষুব্ধ দেবী হেরা দিল সংকট। দেবী অ্যাথেনা ও হেরার কাছ থেকে নিজ পরিচয় পেয়ে প্যারিস ফিরে গেল পিতা প্রিয়াম ও মাতা হেকুবার কাছে এবং রাজপুত্র হিসেবেই আবির্ভূত হলো।

হেলেন ও প্যারিসের প্রণয়ঃ .

Related Posts
1 of 6

আফ্রোদিতি-প্রতিশ্রুত সুন্দরীর সন্ধানে প্যারিস সাগর পাড়ি দেবে। বোন ক্যাসান্ড্রা তাকে সতর্ক করল এবং অনুনয় করে বলল, এ যাত্রা ট্রোজানদের জন্য দুঃখ বয়ে আনবে। বোনের কথা অগ্রাহ্য করে খ্রিস্টপূর্ব ১১৯৪ সালে ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস ও বড় ভাই হেক্টর ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি করার জন্য স্পার্টায় আসেন।প্রাচীন গ্রিস ও ট্রয় (বর্তমান তুরস্ক) ছিল পাশাপাশি দুই রাষ্ট্র।তবে এর মাঝে ছিল বিখ্যাত এজিয়ান সাগর। স্পার্টার রাজা মেনিলাস দুই রাজপুত্রকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে বরণ করে নেন। তাদের আগমনে রাজ্যকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। যুবরাজদের সম্মানে নৈশভোজেরও আয়োজন করা হয়। আর এই নৈশভোজের সময়ই যুবরাজ প্যারিসের সঙ্গে পরিচয় ঘটে অনিন্দ্যসুন্দরী হেলেনে র। মেনিলাস নিজেই স্ত্রী হেলেন কে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। কিন্তু কে জানত এই পরিচয়ই জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলে পরিণত হবে মেনিলাসের। ব্যবসায়িক আলোচনার জন্য স্পার্টায় প্রায় ২০ দিন অবস্থান করেন প্যারিস ও হেক্টর। বড় ভাই হওয়ার ফলে বাণিজ্যসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হেক্টরের ঘাড়েই ন্যস্ত থাকত। রাজা মেনিলাস আর হেক্টরেরর বানিজ্য-সংক্রান ্ত ব্যস্ত সময় কাটাতেন আর প্যারিস গোপনে দেখা করতেন হেলেনের সঙ্গে। প্রথম দেখাতেই হেলেনের রূপ বিমোহিত করেছিল প্যারিসকে। হেলেনের প্রেমে পাগল ট্রয় রাজপুত্র প্যারিসও ছিলেন সুপুরুষ। প্যারিসের চেহারা, শরীরী গঠন সবকিছুই আকর্ষণ করতে শুরু করে হেলেনকে। অল্প সময়ের মধ্যেই হেলেনও প্যারিসের প্রতি প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েন। এদিকে হেক্টরও বানিজ্য-সংক্রান্ত কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন। এবার বিদায়ের পালা। ভোর হলেই তারা রওনা দেবেন ট্রয়ের উদ্দেশ্যে। রাজা মেনিলাসের আপ্যায়নেরও কোনো কমতি ছিল না। রাজকীয় খাবার-পানীয় আয়োজনের পাশাপাশি ছিল সুন্দরী রমণীদের আতিথেয়তা। নর-নারী, প্রহরী-রাজা, হেক্টর ও ট্রয়ের অতিথিরা যখন আমোদ-প্রমোদ আর নাচ-গানে বুঁদ, প্যারিস তখন চুপিসারে চলে গেলেন হেলেনের ঘরে। হেলেনও যেন প্যারিসের অপেক্ষায়ই প্রহর গুনছিলেন। প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়ে দুজনেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন।অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর পর হেলেনকে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলেন প্যারিস। ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা থাকলেও প্রেমের টানে হেলেনও রাজি হলেন যেতে। হেক্টর এসবের কিছুই জানতেন না। যথারীতি অতিথিদের বিদায় জানাল স্পার্টাবাসী। তখনো কেউ জানত না তাদের প্রিয় রানীকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন ট্রয়ের রাজকুমার প্যারিস। এজিয়ান সাগরের মাঝপথে এসে প্যারিস হেক্টরকে বলেন, হেলেন তাদের সঙ্গে এসেছেন। প্যারিসের কথা শুনে হতবাক হেক্টর! রাগে, ক্ষোভে জাহাজ স্পার্টার দিকে ঘোরানোর নির্দেশ দিলেন নাবিকদের।কিন্তু প্যারিসের অনুরোধ আর কান্নায় হেক্টর নিজের মত পরিবর্তনে বাধ্য হন। এদিকে স্পার্টায় ছড়িয়ে পড়ে প্যারিস হেলেনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন ট্রয়ে।

হেলেন ও প্যারিস
পলায়নরত প্যারিস ও হেলেন
Source: Pinterest

ইতিহাস বিখ্যাত ট্রোজান যুদ্ধ ও ট্রয়ের পতনঃ

রাজা মেনিলাস হেলেনকে হারিয়ে ক্রুদ্ধ ও পাগলপ্রায়। রাজ্যের সম্মান ফিরিয়ে আনতে মাইসেনিয়ার রাজা,ভাই আগামেননের সাহায্য প্রার্থনা করেন তিনি। সে বছরই খ্রিষ্টপূর্ব ১১৯৪ সালে এক হাজারেরও বেশি জাহাজে করে বিশাল সৈন্য বাহিনী যাত্রা করে ট্রয়ের উদ্দেশ্যে। সেনাপতির দায়িত্ব নিজ হাতেই রাখেন আগামেনন। পাশাপাশি যুদ্ধে যুক্ত করা হয় গ্রিসের বীরযোদ্ধা একিলিসকেও। আগামেননের কাছে ভাইয়ের স্ত্রী হেলেন কে উদ্ধার করা যতটা না গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ট্রয়ের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন। একারনেই একিলিস আগামেননের সাথে দ্বিমত পোষণ করতেন। তাঁকে রাজা বলে স্বীকার করতেও অস্বীকৃতি জানান। . হঠাৎই রাজ্যের বিপদ টের পেয়ে বাজানো হয় রাজ ঘন্টা। প্রজারা ছোটাছুটি করতে থাকে দিগ্বিদিক। প্রাসাদ থেকে হেক্টর ও পিতা প্রিয়াম দেখতে পান শত শত জাহাজ ধেয়ে আসছে ট্রয়ের দিকে। মুহূর্তের মধ্যেই কালো মেঘে ছেয়ে যায় গোটা সাম্রাজ্য।এদিকে গোপনে গভীর রাতে ট্রয় থেকে পালিয়ে যেতে চান হেলেন। কিন্তু ধরা পড়েন হেক্টরের হাতে। হেক্টর তাকে সাহস দেন আর বিজয় ট্রয়েরই হবে বলে আশ্বস্ত করেন। ফলে ট্রয়েই থেকে যান হেলেন। জাহাজ থেকে নেমেই যুদ্ধ শুরু করেন একিলিস ও তার সঙ্গীরা।

একিলিস
Source: HRY-NEJ.cz

প্রথম যুদ্ধেই ট্রয় নগরীর বন্দর দখল করেন নেয় গ্রিকরা। এভাবে টানা ১০ বছর বন্দর ও রাজ্য অবরোধ করে রাখে গ্রিকরা। বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধে নিহত হয় একিলিসের ভাই উইরোরাস, প্যারিসের বড় ভাই ট্রয় বীর হেক্টর ও নাম না জানা উভয় পক্ষের হাজারো যোদ্ধা। যুদ্ধে সহজে জয়লাভ না করতে পেরে শেষপর্যন্ত প্রতারণার আশ্রয় নেয় স্পার্টানরা । তৈরি করে বিশালাকৃতির অদ্ভুত এক ঘোড়া। যা ইতিহাসে জঘন্যতম প্রতারনার প্রতীক ‘ট্রোজান হর্স’ নামেই খ্যাত। আর এই ঘোড়াতেই লুকিয়ে ছিল ট্রয়ের পরাজয়। যেখান থেকেই এই ‘ট্রোজান ওয়ার’ বা ‘ট্রোজান যুদ্ধ’। যার স্থায়িত্বকাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১১৯৪ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১১৮৪ সাল পর্যন্ত। দীর্ঘ ১০ বছর। . এপিয়াস নামে মুষ্টিযোদ্ধা ও দক্ষ ছুঁতার সুবিশাল এই ঘোড়াটি তৈরি করেন। পলায়নের ভান করে স্পার্টান সৈন্যরা জাহাজে করে নিকটবর্তী টেনিডোস দ্বীপে চলে যায়। যাবার সময় তারা সাইননকে রেখে যায় সেখানে। সাইনন ট্রয়বাসীকে বোঝাল যে, ঘোড়াটি অপরাজেয়ের প্রতীক হিসেবে ট্রয়কে উপহার দেওয়া হয়েছে।

ট্রোজান হর্স
ট্রোজান হর্স
Source: banglanews24.com

রাজা প্রিয়াম শুরুতে এই উপহার নিতে অস্বীকৃতি জানালেও রাজ জ্যোতিষীর পরামর্শে(উপহার গ্রহন না করা অমঙ্গল বয়ে আনবে ট্রয়ের) মত পাল্টাতে বাধ্য হন। ট্রয়বাসী আনন্দ-উল্লাস করতে করতে ঘোড়াটিকে নগর-দেয়ালের ভেতরে নিয়ে আসে। আর ভেতরে আত্মগোপন করে থাকা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রিক যোদ্ধা অপেক্ষা করতে থাকে সন্ধ্যা নামার। এ কূটচালের কিছুই তখনো আঁচ করতে পারেনি ট্রয়বাসী। মূলত তাদের এই অদূরদর্শিতাই ধ্বংস ডেকে এনেছিলো ট্রয় নগরীর। রাতের গভীরে ঘোড়া থেকে বের হয়ে ট্রয়বাসীর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় স্পার্টানরা। খুলে দেয় নগরতোরণ। হাজারো গ্রিক সৈন্য রাজ্যে আগুন ধরিয়ে দেয় গোটা সাম্রাজ্যে। মুহূর্তেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় একসময়কার সমৃদ্ধ,সাজানো ও সুন্দর ট্রয়। আগুনে পুড়ে ছাঁই হয় হাজারো সৈন্য আর নিরীহ অধিবাসী। এদিকে একিলিস ছুটে যান হেলেনকে বাঁচানোর আশায়; কিন্তু প্যারিসের ছোড়া তীঁর বিদ্ধ করে একিলিসকে। মারা যান গ্রিক বীর একিলিস। জয়লাভ করে গ্রিকরা। . ইতিহাস বলে, হেলেনের বিয়ে হয়েছিল কমপক্ষে তিন বার। রাজা মেনিলাস, প্যারিস ও তার ভাই ডাইফোবাসের সাথে। মেনিলাসকে সে একটি কন্যা সন্তানও উপহার দেয়। যার নাম ছিল হারমিয়ন। ট্রয় যুদ্ধে প্যারিস নিহত হবার পর তার দুই ভাই হেলেনাস ও ডাইফোবাস ভ্রাতৃবধূকে পাওয়ার জন্য দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। হেলেনাসকে পরাজিত করে হেলেনকে লাভ করে ডাইফোবাস। যুদ্ধ শেষে মেনিলাসের হাতে নিহত হয় ডাইফোবাস। হেলেনকেও মারতে উদ্যত হন মেনিলাস। কিন্তু তার নয়নাভিরাম রুপে আবারও প্রেমে পড়ে যান রাজা মেনিলাস। শেষ জীবন তারা মিসরে কাটান।ঐতিহাসিকের মতে, তাদের মৃত্যু হয় গ্রিসের থেরাপিয়নে।

ট্রয় নগরীর আবিষ্কার, উত্থান ও পতনকালঃ

.স্কটিশ সাংবাদিক চার্লস ম্যাকলারেন ১৮২২ সালে সর্বপ্রথম ট্রয় নগরীর সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করেন। ১৮৬৬ সালে ক্যালভার্ট এ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক জার্নালে।যদিও সবার ধারণা ছিল ট্রয় এজিয়ান সাগরে তলিয়ে গেছে! জার্মান খননকারী হেনরিখ শ্লিম্যান ১৮৬৮ সালে অনুমতি পাবার পর ১৮৭১ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে চারবার খনন করে আবিষ্কার করেন ট্রয়ের একাংশ। দক্ষিন আফ্রিকার সোনা উদ্ধার এবং ওয়েস্টার্ন লুটতরাজের রুদ্ধশ্বাস-রোমাঞ্চকর কাহিনী পড়ে পড়ে জায়গাটার উপর শ্লিম্যান ঝাঁপিয়ে পড়েন বললেও কম বলা হয়। ১৮৭০ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যেই তুরস্কের ওসমানী পতাকা মর্যাদা হারাতে শুরু করে। সেই সময়ে শ্লিম্যানের তস্করবৃত্তিতে বাধা দেয়ারও কেউ ছিল না। প্রথম দিকে জানেসারিরা এসেছিল বটে কিন্তু পুরনো তরবারি, ছোরা আর খঞ্জর দেখে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। ও তো যেকোনো কামারের দোকানেই পাওয়া যায়!

হেলেন অফ ট্রয়ঃ যার ভালবাসার আগুনে পুড়েছিল গোটা সাম্রাজ্য
মহা-আনন্দে আর উৎসাহে ঘোড়াটিকে রাজ্যের ভেতরে নিয়ে আসে ট্রয়বাসী
Source: নৈঃশব্দ বাড়ি

শ্লিম্যান প্রথমে উদ্ধার করেন অ্যাপোলোর স্বর্ণমূর্তি। অতি মূল্যবান এই প্রত্নতাত্বিক তৈজস লুকানোর জন্যে তিনি এটিকে কাদা-মাটি মেখে আবর্জনায় ফেলে রাখেন। এরপর তিনি পেয়ে যান ট্রয়ের ভাঙা সিংহাসন। এভাবে এগোতে এগোতে তার তস্কর বাহিনী রাজা প্রিয়ামের প্রাসাদের তোরণ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। দুর্ভাগ্য তুর্কিদের! পাশারা এসবের খবরই রাখেনি। সেই সুযোগে, বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে প্রতিটি আবিষ্কার গিয়ে জমা হতে থাকে বার্লিনে; শ্লিম্যানের নিজ বাড়িতে। তার লোভের কারণে, প্রত্নতত্ত্ববিদরা দেখার আগেই মূল প্রাসাদ ভেঙে পড়ে। প্রকৃতি অবশ্য এর প্রতিশোধ নিয়েছে। গ্রিসের এক দ্বীপে শ্লিম্যান মারা যান নিজেকে রাজা জিউসের পোষ্য-পুত্র ভাবতে ভাবতে। আর ওদিকে বার্লিনে তার বাড়ি থেকে উদ্বার করা সমুদয় নিদর্শন অলংকারিত করে ইতিহাস ও জাদুঘরকে। সবটা অবশ্য শ্লিম্যান ধ্বংস করতে পারেননি। এম্ফিথিয়েটারেছুটা এখনো অক্ষতই রয়েছে। যা কিনা রোমের এম্ফিথিয়েটার থেকে ১০০০ বছর আগে গড়া। পরবর্তীতে আরো অনেকেই নতুন করে খুঁড়েছেন ট্রয় নগরীকে।বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে,ট্রয় বারবার ধ্বংস হয়েছে আবার তার ওপরেই গড়ে উঠেছে নুতন ট্রয়। যেন ইতিহাসকে কাপড়ের ভাঁজে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে একটির উপর আরেকটিকে পরতে পরতে।
.
প্রত্নতত্ববিদগণ ট্রয় নগরীকে এর সময়কাল ও পুনর্গঠনের উপর ভিত্তি করে ৯টি স্তরে বিভক্ত করেছেনঃ

ট্রয় ১মঃ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০-২৬০০ সাল
ট্রয় ২য়ঃ খ্রিষ্টপূর্ব ২৬০০-২২৫০ সাল
ট্রয় ৩য়ঃ খ্রিষ্টপূর্ব ২২৫০-২১০০ সাল
ট্রয় ৪র্থঃ খ্রিষ্টপূর্ব ২১০০-১৯৫০ সাল
ট্রয় ৫মঃ খ্রিষ্টপূর্ব বিংশ-অষ্টাদশ শতক
ট্রয় ৬ষ্ঠঃ সপ্তাদশ-পঞ্চদশ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
ট্রয় ৬ষ্ঠ(জ): তাম্র সভ্যতার শেষ দিকে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্দশ শতাব্দী
ট্রয় ৭ম(ক): খ্রিষ্টপূর্ব ১৩০০-১১৯০ সাল।
ট্রয় ৭ম(খ১): দ্বাদশ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
ট্রয় ৭ম(খ২): একাদশ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
ট্রয় ৭ম(খ৩): ৯৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত
ট্রয় ৮মঃ খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০-৮৫ সাল পর্যন্ত
ট্রয় ৯মঃ ৮৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে শুরু করে ৫০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত

নয়টি ট্রয়ের ধ্বংসের ইতিহাসও অদ্ভুত। প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রয় পুড়েছে আগুনে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ট্রয় মিশে গেছে ধূলিকনায়। ষষ্ঠ ট্রয় ভুমিকম্পে হারিয়েছে। সপ্তম ট্রয় ধ্বংসের মূল কারন ছিল বিখ্যাত ‘ট্রোজান ওয়ার’। ভস্মীভূত হয়েছে আগুনে। স্পার্টান রানী হেলেন এই সপ্তম ট্রয়কে ইতিহাসের স্বারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যা কিনা অধিকাংশ ইতিহাসবিদই বিনা দ্বন্দে মেনে নিয়েছেন। পরবর্তীতে সপ্তম ট্রয় স্বর্ণযুগের স্মারক হিসেবে এশিয়া মাইনরের সবচেয়ে খ্যাতিমান সমুদ্রবন্দরে পরিণত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। অষ্টম ট্রয় আবারো ধূলায় ধূসরিত হয়েছে। নবম ট্রয় এ নগরীর সর্বশেষ স্তর। রোমান সম্রাট অগাস্টাসের রাজত্বকালে প্রাচীন ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তুপের উপর ইলিয়াম নামে নতুন একটি শহর নির্মিত হয়। হিত্তীয় বর্ণনা অনুয়ায়ী ইলিয়াম উইলুসা নামেরই লাতিন সংস্করণ। যা পরবর্তীতে নবম ট্রয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইলিয়াম বিকশিত হয়েছে। যা রোমান সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিনত হয়। কনস্টান্টিনোপল স্থাপিত হওয়ার পর বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে ইলিয়াম অপ্রয়োজনীয় হয়ে পরে এবং সম্রাট বাইজান্টাইন এর রাজত্বকালে ক্রমে ক্ষয় প্রাপ্তির মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যায়।

.ইতিহাস বা মিথোলজি, সবক্ষেত্রেই ট্রয় নগরী ধ্বংসের জন্য দায়ী কর হয় হেলেনকে।ইউরিপিডিসের বর্ণনায় হেলেনকে দেখানো হয়েছে ‘তেড়ে আসা অভিশাপের সন্তান, ঈর্ষা ও খুনের সন্তান, পৃথিবীর লালিত প্লেগ, মৃত্যু ও বিভীষিকার প্রতীক হিসেবে।
.
এতকিছুর পরও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। এ দায় কি কেবলই হেলেনের? নাকি কিছুটা দায় ছিল প্যারিসেরও? অদূরদর্শিতাই ডুবিয়েছিল ট্রয়কে? নাকি এর পুরোটাই নিয়তির নির্মম পরিহাস?

তথ্যসূত্রঃ
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Trojan_War

Source Source 01 Source 02 Source 03
Leave A Reply
2 Comments
  1. Bnyyfu says

    order avodart 0.5mg online cheap order tamsulosin online cheap brand zofran 8mg

  2. Zaegqn says

    buy levaquin 250mg online levaquin us

sex videos ko ko fucks her lover. girlfriends blonde and brunette share sex toys. desi porn porn videos hot brutal vaginal fisting.