লেনিন, ইতিহাসের আলোচিত আবার সমালোচিত ব্যক্তিত্ব। অক্টোবর বিপ্লবের জন্ম দাতা, ইতিহাসের সকল বিপ্লবের সাথে যার নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তিনিই হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। তিনি বলছিলেন,
“THERE ARE DECADES WHERE NOTHING HAPPENS; AND THERE ARE WEEKS WHERE DECADES HAPPEN”

বাল্যকাল :
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন ১৮৭০ সালে ২২শে এপ্রিল জার শাসিত রাশিয়ার ভল্গা নদীর তীরবর্তী সিমবির্স্ক শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ। তার পিতা ল্যা নিকোলয়েবিচ উলিয়ানভ ছিলেন গণতন্ত্রবাদের কঠোর সমর্থক, তিনি পেশায় স্কুল পরিদর্শক ছিলেন। তার মা মারিয়া উলিয়ানভ ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা। তার দাদাকে তৎকালীন রাশিয়ার জারকে (সর্বোচ্চ শাসক) হত্যার অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। পারিবারিক ভাবে লেলিন পরিবার ছিল অত্যন্ত উচ্চ শিক্ষিত ও বিপ্লবী চেতনার অধিকারী। চার ভাই বোনের মধ্যে লেলিন ছিল চতুর্থ। পড়াশোনায় লেলিন ছিল অতুলনীয় ও অনন্য মেধাবী। পাশাপাশি খেলাধুলায়ও সমান ভাবে পারদর্শী ছিলেন তিনি। ভালো পিয়ানো বাদক হিসেবে সুখ্যাতি ছিল তার। মাধ্যমিক পরীক্ষায় লেলিন সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে। ১৯৮৭ সালে লেনিনের ভাই এলেকজান্ডার কে জারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। ভাইয়ের প্রতি নির্মম অত্যাচার লেনিনের মনকে গভীরভাবে মনঃক্ষুণ্ণ করে। লেনিনের স্বভাবের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে লেলিন প্রচণ্ড জেদি ছিল।
বিপ্লবী জীবনের সূচনা :
লেনিন কার্ল মার্ক্সের অনুসারী ছিল। তিনি ১৮৮৮ সালে নিজেকে পুরোপুরি মার্ক্সবাদী বলে আখ্যায়িত করে। কিন্তু পরবর্তীতে তার জীবনে বড় প্রভাব ফেলে অর্থনীতিবিদ নিকোলাই চেরিস্কেভি। তার লেখা উপন্যাস “What is to be done” ও “ Tales of the new people” লেনিনকে অনুপ্রাণিত করে। এখান থেকেই লেনিন ধারনা পায় আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত।

চার বছর বয়সে লেনিন, source: pinterest.com
লেনিন তার শিক্ষা জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। কারণ একই সাথে পড়াশোনা আর আন্দোলন চালানো সম্ভব না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাকে বারবার সতর্ক করছিল সরকার বিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে। অবশেষে, কাজান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করে। একজন আইনজীবী হিসেবে তার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯২ সালে তিনি সেন্ট পিটর্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন গেস্ট ছাত্র হিসেবে পরীক্ষা দেবার সুযোগ পায় এবং প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হবার গৌরব অর্জন করে। কিন্তু লেনিনের মনে বিপ্লবের চিন্তা ঘুরতে থাকে। পুঁজিবাদের অত্যাচার থেকে মানুষকে মুক্ত করতে তিনি বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা শুরু করেন।
সাল ১৮৯৫, লেনিন সহ সমমনা মার্ক্সবাদীদের গ্রেপ্তার করে সরকার। লেনিনকে তিন বছরের জন্য সাইবেরিয়াতে নির্বাসন করা হয়। এসময় তার হবু স্ত্রী নেসদা স্ক্রুপকায়া তাকে সমর্থন ও অনুপ্রেরণা দেয়। পরবর্তীতে ২২ জুলাই, ১৮৯৮ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তার স্ত্রীও একজন বিপ্লবী ছিল। জেল জীবন কাটানোর সময় বন্দীদের দুঃখ কষ্ট তাকে পীড়া দেয়। এসব থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে থাকেন। পুঁজিবাদের অত্যাচারে জর্জরিত সমাজের জনসাধারণ তথা শ্রমিক শ্রেণীর মানুষদের মুক্তির উদ্দেশ্যে ১৮৯৮ সালে তিনি রাশিয়ান সোশালিস্ট ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টি (RSDLP) গঠন করেন।
বুর্জোয়া শ্রেণীকে উৎখাত করে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই তার লক্ষ্য ছিল। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় ঘুরে বেড়ানোর কারণে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করত। ১৯০১ সালে লেনিন তার নিজের নাম হিসেবে লেনিন কে ব্যবহার শুরু করেন। সাইবেরিয়ান লেনা নদীর নামানুসারে তিনি নিজের নাম রাখেন লেনিন। কিন্তু পার্টির প্রতিষ্ঠার কিছুকাল পরই দলীয় মতভেদের শুরু হয়। কিছু নেতা আগ্রাসী মনোভাবের ছিল আবার কিছু ছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে ছিল। তরুন আর বয়স্ক দের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। লেনিন সমঝোতার প্রচেষ্টা করতে থাকে। তৎকালীন যুগে পত্রিকা ছিল সবচেয়ে বড় আন্দোলনের মাধ্যম। লেনিন, পার্টি থেকে পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। এখানেও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় বিপ্লবীরা। একদল প্রকাশ করে Skra (The Spark), লেনিন ছিল skra প্রকাশের মুল দায়িত্বে। অপর দল প্রকাশ করে Zarya (The Dwan)। লেলিন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশ’ শীর্ষক বইখানি এই নির্বাসিত জীবনেই লেখে শেষ করেন। ১৮৯৯ সালে তা প্রকাশিত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার্টির একতা বজায় থাকে নি। মূলত লেনিন আর মার্টবের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই পার্টি ভাগ হয়ে যায়। মেনশেভিক আর বলশেভিক দু গ্রুপে ভাগ হয়ে যায় পার্টি। বলশেভিক অংশের নেতৃত্বে থাকে লেলিন।

১৯০২ সালে লেনিন লন্ডনে চলে আসেন। সেখানে তাঁর পরিচয় ঘটে লেভ দাভিদোভিচ ব্রনস্টেইন নামে এক রাশিয়ান ইহুদি যুবকের সাথে। প্রচণ্ড মেধাবী এ যুবক শীঘ্রই লেনিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়। ইতিহাসে তাঁর পরিচিতি লিওন ট্রটস্কি নামে। লন্ডনে অবস্থান কালেই লেনিন পার্টির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। ভোটাভুটির মাধ্যমে বলশেভিক সংখ্যাগরিষ্ঠদের সমর্থন পায়। বলশেভিকরা নিজেদেরকে ভিত্তিহীন কৃষক শ্রেণীর রক্ষাকর্তা হিসেবে দাবি করে। তার প্রকাশিত পত্রিকা ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। সরকার চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে লেনিনকে দমন করা যায়। ১৯০২ সালেই লেনিন তার বিখ্যাত গ্রন্থ “What is to be Done” প্রকাশ করে। যা তার আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সর্ব সাধারণকে অবগত করে। পাশাপাশি লেনিন, মেনশেভিক দের বিরোধিতা করে প্রকাশ করেন “ One step forward, two step back” এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি মেনশেভিকদের আন্দোলনের ভুল ত্রুটি গুলো বিশ্লেষণ করেন এবং বিপ্লব কিভাবে সংগঠিত হয় তার ধারনা প্রকাশ করেন। লেনিন প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ত এবং বিরতি নিয়ে আবার পুরো দমে কাজ শুরু করে। বিরতির জন্য লেনিন বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে বেড়াত। কিছুকাল পরই লেনিন নতুন পত্রিকা Vpered (forward) প্রকাশনা শুরু করে। এতে করে আন্দোলনের গতি আরও বেশি ত্বরান্বিত হয়।
বিপ্লবের সূচনা :
১৯০৪ সালে রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এই যুদ্ধে জাপান বিজয়ী হয়। যুদ্ধের কারণ ছিল কোরিয়া বিভাজন নিয়ে। তৎকালীন আমেরিকান রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। এই কারণে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। সাল ১৯০৫ সালে রাশিয়াতে একটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিলো। কিন্তু শাসকবর্গ শীঘ্রই তা দমন করেন। লেনিন বিদ্রোহের খবর পেয়ে রাশিয়াতে ফিরে আসেন। স্বদেশে ফিরে তিনি প্রলেতারিয়েত আন্দোলনের দিকগুলি নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করলেন। এবার তিনি কৃষকদের পক্ষেও কথা বলতে লাগলেন। এই বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন ফাদার জর্জি গেপন। বিদ্রোহে প্রচুর লোক নির্যাতিত হয়েছিল শাসক বাহিনীর দ্বারা। এই বিদ্রোহ ইতিহাসে ব্লাডি সানডে নামে পরিচিত।
১৯ শতকের শুরুর দিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ গুলো সাম্রাজ্য প্রসারকে কেন্দ্র করে যুদ্ধে লিপ্ত হতে থাকে। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং রাশিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। লেনিন চিন্তিত হয়ে পড়ে। তার কাছে যুদ্ধ ছিল শ্রমিকদের রক্ত চুষে পুঁজিবাদীদের সম্পদ বাড়ানোর কৌশল। সাম্রাজ্য বৃদ্ধির লড়াই শাসকদের বিপদ ডেকে আনে। যুদ্ধের ফলে সাম্রাজ্য বাদীরা তাদের সাম্রাজ্য হারাতে শুরু করে। রাশিয়ার ক্ষেত্রেও একই পরিণতি হয়েছিল। ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার দ্বিতীয় নিকোলাস তার জেনারেলদের প্রভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। দুমার নামক সংরক্ষিত পার্লামেন্টের সদস্যের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন হয়। নতুন সরকারের প্রধান নির্বাচিত হয় আলেকজান্ডার কেরেনস্কি। লেনিন এসময় সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। রাজ বংশের পতনের খবর পেয়ে তিনি রাশিয়ায় ফেরত আসার সিদ্ধান্ত নিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি, রাশিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল তাই জার্মানি লেনিনকে সমর্থন করেছিল। তাকে জার্মানির ভিতর দিয়ে রাশিয়ায় ফিরতে অনুমতি প্রদান করে। জার্মানির প্রত্যাশা ছিল লেনিন বিপ্লবে সফল হলে রাশিয়া যুদ্ধ থেকে সরে যাবে। ফলে জার্মানির অবস্থান শক্ত হবে। ১৯১৬ সালে লেনিনের মা মারা যায় কিন্তু নিষিদ্ধ হবা ফলে দেশে ফিরতে পারেনি। এ ঘটনা লেনিনকে বেশ পীড়া দেয়।
১৯১৭ সালের ১৬ জুলাই, লেনিন তার সহযোগীদের সাথে নিয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছে। তারা যুদ্ধের বিরোধিতা করে। তাদের দাবি ছিল যুদ্ধ থেকে সৈন্যদের মুক্তি দিতে হবে। সাধারণ শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। লেনিনের হঠাৎ উত্থানে কেরেনস্কি বেশ বিরক্ত হয় এবং তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। কিন্তু লেনিন ফিনিশ রেলওয়ে কর্মীর ছদ্মবেশ ধারন করে ফিনল্যান্ডে পালিয়ে যায়।

অক্টোবর বিপ্লবে লেনিন :
যুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। জনসাধারণ বিদ্রোহী হয়ে উঠে, সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে পলায়ন শুরু করে। অক্টোবরেই লেনিন পুনরায় দেশে ফিরে আসে। ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর ট্রটস্কি, সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এসময় বলশেভিক পার্টি “Red Guard” নামক সশস্ত্র বাহিনী যোগ দেয় বিদ্রোহে। শুরু হয় ইতিহাস বিখ্যাত মহান অক্টোবর বিপ্লব। লেনিনও বিপ্লবে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করে। লেনিন আপামর জনসাধারণের ত্রাতা রূপে আবির্ভূত হয়। সর্ব শ্রেনীর লোক বিদ্রোহে অংশ গ্রহণ করে। ৮ নভেম্বর, ১৯১৭ পৃথিবীর ইতিহাসের অনন্য স্মরণীয় দিন। এই দিনেই পরাজয় বরণ করে সাম্রাজ্য বাদী রাশিয়ান শাসক গোষ্ঠী। সফল হয় বিপ্লব, যা ইতিহাসে অক্টোবর বিপ্লব হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন কাউন্সিল অফ পিপলস কমিসার্সের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। অধিষ্ঠিত হলেন পৃথিবীর বৃহৎ দেশের সর্বোচ্চ কর্তা।
শাসক জীবন:
যদিও লেনিনের শাসক হবার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না, তথাপি লেনিন অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই তার শাসক জীবনের সূচনা করে। সর্বক্ষেত্রে জাতীয়করণ শুরু করেন। Brest-Litovsk চুক্তির মাধ্যমে জার্মানী সহ বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তি গুলোর সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে রাশিয়া তার বিভিন্ন অঞ্চল হারায়, তারপরও লেনিন দাবি করে শান্তি আর নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য এই চুক্তি অপরিহার্য। লেনিন বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তও নিয়েছিল। তিনি ঘোষণা করেন জার সরকারের কোন বিদেশী ঋণ পরিশোধ করা হবে না। তার এই সিদ্ধান্তের ফলে রাশিয়া বিদেশে তাদের সম্পত্তি হারায়।
তার গৃহীত সিদ্ধান্ত ধনী শ্রেনীদের বিদ্রোহের দিকে ধাবিত করে। তারা “Whites” নাম ধারণ করে বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় আরেকটি গৃহযুদ্ধ। এই যুদ্ধে অবশ্য শ্রমিক প্রজা শ্রেণীদের পাশে পেয়েছিল লেনিন। ১৯২১ সালে শেষ হয় গৃহযুদ্ধ, যা লেনিনকে তিক্ত অভিজ্ঞতা দান করে। এই গৃহযুদ্ধে প্রায় এক লক্ষের উপর মানুষ নিহত হয়।

লেনিনের সরকারের আমলাদের মধ্যেও বিভিন্ন মতভেদের সৃষ্টি হয়। জোসেফ স্টালিন আর ট্রটস্কীর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব লেনিন সরকারকে বিব্রত করে। লেলিন তার সরকারের মধ্যে বিভাজন কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তিনি স্ট্রার্লিনের মাঝে মানব বিদ্বেষী মনোভাব আর ক্ষমতার লোভ দেখতে পেয়েছিলেন। তার এই অনুমান পরবর্তীতে সত্যি প্রমানিত হয়ে ছিল। স্টালিন হয়েছিল ইতিহাসের কুখ্যাত একজন শাসক।
১৯২২ সালের ডিসেম্বর মাসে লেনিন স্ট্রোকের কারণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সরকারী কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলে। এসময় তার স্ত্রী স্ক্রুপ কায়া তার পাশে ছিল। কিছুদিন পর আবারো স্ট্রোকের শিকার হয়ে বাক রুদ্ধ হয়ে পড়ে লেনিন। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে লেনিন মৃত্যু শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। তারপর তিনি আর কোন সরকারী কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে নি। অবশেষে ১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি প্রাণঘাতী এক স্ট্রোকের শিকার হন লেনিন। অবসান ঘটে রাশিয়ান বিপ্লবের মহানায়কের।

জোসেফ স্টালিনের নির্দেশ অনুযায়ী লেনিনের মৃত দেহকে ক্রেমলিনের অদূরে মস্কোর রেড স্কয়ারে একটি লাল গ্রানাইটের সমাধিতে স্থাপন করা হয়। তার সমাধি সৌধে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হয় ইতিহাসের মহা নায়ককে দেখার জন্য।
তারপরও সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেমন ছিলেন লেনিন। অনেকের মতে লেনিন স্বৈরশাসক আবার কমিউনিস্টদের চোখে লেনিন “greatest genius of human kind” হিসেবে স্বীকৃত। ব্রার্টান্ড রাসেল তার সম্পর্কে বলেছেন, “Very Friendly, and apparently simple, entirely without a trace of hauteur, I’ve never met a personage so destitute of self importance”
তার শাসন নিয়েই যতই মতভেদ থাকুক, ইতিহাসে অনন্য অধ্যায় হয়ে চিরদিন বেচে থাকবেন পৃথিবীর শোষিত মানুষদের হৃদয়ে। শেষ করছি একটি উক্তি দিয়ে, “Lenin deserve a lot of credit for the notion that the meek can inherit the earth, that there cab be a political movement based on social justice and equality” – J. ARCH GETTY
order dutasteride online cheap ondansetron sale buy ondansetron 4mg online
buy levaquin pill order levofloxacin 500mg online cheap