প্রখ্যাত রোমান সেনাপতি ও শাসক জুলিয়াস সিজার রোমান রিপাবলিক নামক ছোট নগর রাষ্ট্র থেকে গড়ে তুলেছিল বিশাল রোমান প্রজাতন্ত্র। শক্তি, সাহস আর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে জয় করে নিয়েছিলেন আশেপাশের বহু অঞ্চল আর সামরিক শক্তিতে হয়ে ওঠেন অদ্বিতীয়। তিনিই ছিলেন একমাত্র রোমান জেনারেল যিনি রোমান সাম্রাজ্য বিস্তৃত করেন ইংলিশ চ্যানেল ও রাইন নদী পর্যন্ত এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডেও অনুপ্রবেশ করেন। তবে এতো সাফল্য আর শক্তির অধিকারী হয়েও তাকে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করতে হয় তারই সিনেটরদের হাতে। চলুন জেনে নেয়া যাক জুলিয়াস সিজার এর জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে-
জুলিয়াস সিজারের জন্ম হয় একটি সম্ভান্ত পরিবারে। বলা হয় যে, জুলিয়াস সিজার ছিলেন রোমান পুরাণে উল্লেখিত প্রেমের দেবী ভেনাস ও ইউলাস এর পুত্র ট্রজান রাজকুমার ইনিয়াস (Aeneas) এর পুত্র ইয়্যোলাস (Iulus) এর বংশধর। রোম থেকে ২০ মাইল দক্ষিণে এ্যালবা লংগা নামক স্থানে সিজার পরিবারের বাসস্থান ছিলো। জুলিয়াস সিজারের জন্ম হয় ১২ই জুলাই (মতান্তরে ১৩ই জুলাই), খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ অব্দে। সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া জুলিয়াস সিজারের পিতার নাম ছিলো গ্যাইয়াস জুলিয়াস সিজার (Gaius Julius Caesar) এবং তিনি ছিলেন প্রাচীন রোমের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও এশিয়া অঞ্চলের শাসক। তার মায়ের নাম ছিলো অউরেলিয়া কোট্টা (Aureliya Cotta) এবং তিনি একটি প্রতাপশালী পরিবার থেকে এসেছিলেন। এছাড়া জুলিয়াস সিজারের শৈশব সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়না।
তারুণ্য ও মিলিটারি সার্ভিসে যোগদান
জুলিয়াস সিজারের বয়স যখন মাত্র ১৬ বছর তখন হঠাৎ তার বাবা মারা যান। এর পর তিনিই হয়ে উঠেন পরিবারের কর্তা। ঐ সময় জুলিয়াস সিজারের ফুপা গ্যাইয়াস মারিয়াস, যিনি ছিলেন প্রজাতন্ত্রের একজন প্রভাবশালী শাসক, ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুসিয়াস কর্নেলিয়াস সুলা গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পরে। মারিয়াস ও তার মিত্র লুসিয়াস সিনা যখন শহরটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়, তারা জুলিয়াস সিজারকে জুপিটার এর প্রধান যাজক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরিবারের সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে সিজারও রাজি হয়। কিন্তু যাজক হতে হলে নিজে সম্ভ্রান্ত পরিবারের হওয়ার পাশাপাশি সম্ভ্রান্ত পরিবারের কোনো মেয়েকে বিয়েও করতে হত। তাই লুসিয়াস সিনার কন্যা কর্নেলিয়ার সাথে তার বিয়ে দেয়া হয়। গৃহযুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সুলা জয় লাভ করে এবং মারিয়াস ও সিনার সাথে আত্মীয়তা সূত্রে জুলিয়াস সিজার সুলার নতুন টার্গেট এ পরিণত হয়। তাকে তার উত্তরাধিকার থেকে, স্ত্রীর নিকট হতে পাওয়া সম্পত্তি থেকে এবং যাজকবৃত্তি থেকে জোরপূর্বক বঞ্চিত করা হয়। এমনকি তাকে স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্যও চাপ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সিজারের মায়ের পরিবার ছিলো সুলার সমর্থক এবং তাদের হস্তক্ষেপে সুলা তার উপর থেকে হুমকি প্রত্যাহার করে কিন্তু তিনি বলেন যে জুলিয়াস সিজার একাই অনেক গুলো মারিয়াস এর সমান।
তার উপর থেকে হুমকি তুলে নেয়ার পরও সম্পত্তি ফিরে না পাওয়ায় জুলিয়াস সিজার ভাবল যে সুলার নিকট থেকে দূরে থাকাই তার জন্য উত্তম। তাই তিনি রোম ত্যাগ করে এশিয়ায় চলে গেলেন এবং মার্কাস মিনাসিয়াস থার্মাস এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এরপর তিনি সিসিলিতে সার্ভিলিয়াস ইস্যারিকাস এর নেতৃতে কাজ করেন। সৈনিক হিসেবে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেন এবং যুদ্ধে প্রাণ বাঁচানোর কৃতিত্ব স্বরূপ ‘সিভিক ক্রাউন’ পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি মিলিটারি দূত হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং একটা নৌ-বহর এর সুরক্ষার দায়িত্ব পান। সেখানে তিনি কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
খ্রিষ্টপূর্ব ৭৮ অব্দে সুলার মৃত্যুর খবর শুনে তিনি আবার রোমে প্রত্যাবর্তন করেন এবং জীবিকার জন্য তিনি আইন পেশা বেছে নেন। ব্যতিক্রমী বাগ্মিতা, ভরাট কণ্ঠস্বর আর গভর্নরদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থানের জন্য এই পেশাতেও তিনি সফল হন।
খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫ অব্দে ভ্রমণ শেষে গ্রীসে ফেরার সময় এজিয়ান সাগরে জলদস্যুরা সিজারকে বন্দি করে নেয় এবং মুক্তিপণ দাবি করে। শোনা যায় যে, নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণকারী সিজারকে যখন বলা হয় যে তাকে ২০ ট্যালেন্টস (প্রাচীন মুদ্রার মাপ) এর বিনিময়ে মুক্তি দেয়া হবে, তিনি জলদস্যুদের বলেন যে তার দাম অন্তত ৫০ ট্যালেন্টস। জলদস্যুদের হাতে বন্দি থাকাকালীন সময়ে জলদস্যুদের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। শোনা যায় যে তিনি প্রায়ই জলদস্যুদের বলতেন, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি তার ও তার পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য জলদস্যুদের ধরে ক্রুশবিদ্ধ করবেন। কিন্তু জলদস্যুরা তার কথা কৌতুক ভেবে উড়িয়ে দিতেন। তবে মুক্তির পর তিনি সত্যি সত্যিই তার কথা রেখেছিলেন। তবে তার সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য দয়া পরবশ হয়ে তিনি ক্রুশবিদ্ধ করার আগে জলদস্যুদের গলা কেটে দেন। ‘যেমন কথা, তেমন কাজ’ এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটি তার পরবর্তী জীবনের সর্বক্ষেত্রে দেখা যায়।
প্রথম ট্রায়ামভ্যারেট (ত্রয়ী শাসকের একজন) নিযুক্ত হওয়া
রোমে ফেরার পর তিনি মিলিটারি ট্রাইবান হিসেবে নিযুক্ত হন যা ছিলো জুলিয়াস সিজারের রাজনৈতিক জীবনের প্রথম ধাপ। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৬৯ অব্দে তিনি বিচারক পদে নির্বাচিত হন এবং একই বছর তার স্ত্রী কর্নেলিয়া মারা যান। পরে তিনি পম্পেইয়া নামক এক সম্পদশালী মেয়েকে বিয়ে করেন যার সাথে তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৬১ অব্দে একটি স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পরার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। পম্পেইয়া ছিলেন সুলার নাতনী। যথেষ্ট স্বনামধন্য হওয়ার পাশাপাশি এরই মধ্যে তিনি রোমের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মার্কাস লিসিনিয়াস ক্র্যাসাস এর সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেন এবং গ্নেইয়াস পম্পেয়াস (পরবর্তীতে পম্পেই দ্য গ্রেট ) এর সাথে মিত্র বাহিনী গড়ে তুলেন। ধারণা করা হয় যে, খ্রিষ্টপূর্ব ৬৩ অব্দে রোমের প্রধান যাজক (Pontifex Maximus) নির্বাচনে ক্র্যাসাসই তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে এবং এতে সিজার জয় লাভ করে। পম্পেইয়া এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর সিজার স্পেনে চলে যান এবং সেখানে হিসপানিয়া অঞ্চলের শাসক নিযুক্ত হন। স্পেনে থাকা অবস্থায় সিজার ওই অঞ্চলের সরকার বিরোধী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের হারিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন এবং নিজের সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন। কাজের পুরস্কার স্বরূপ সিজার সিনেটদের পক্ষ থেকে কনসুল পদে উন্নীত হন।
উচ্চ মর্যাদা নিয়ে রোমে ফিরে এসে তিনি পম্পেই ও ক্র্যাসাস এর সাথে একটি রাজনৈতিক চুক্তি করেন। এর ফলে তিনি পম্পেই ও ক্র্যাসাস এর সাথে প্রথম ট্রায়ামভ্যারেট নিযুক্ত হন। এরপর তিনি একজন প্রভাবশালী ও ধনী সিনেটরের কন্যাকে বিয়ে করেন যার নাম ছিলো ক্যালপুর্নিয়া। এছাড়াও পম্পেই এর সাথে নিজের বন্ধুত্বকে আরো দৃঢ় করতে তিনি নিজের কন্যা জুলিয়াকে তার সাথে বিয়ে দেন। তারপর এই ত্রিমূর্তি সফলতার সাথে রোম শাসন করতে থাকেন।
সরকারী পদে অভিষিক্ত থাকাকালীন সময়ে সিজার দরিদ্রদের ভূমি পূনর্বন্টনের জন্য সরকারের একটি আইন সংস্কারের প্রস্তাব করেন যদিও এতে অনেকের অমত ছিলো। তবে পম্পে এর সৈন্যবাহিনী ও ক্র্যাসাস এর অর্থ দ্বারা তার প্রস্তাবটি সমর্থিত ছিলো। তবে সিজার জানতেন যে তিনি সরকারী কর্মচারী থাকা অবস্থায় হয়তো তার আইনি হটকারীতার জন্য বিরোধী দল চুপ থাকবে, কিন্তু একবার তিনি পদ থেকে নিষ্কৃতি পেলেই তাকে অভিযুক্ত করা হবে। এছাড়া জুলিয়াস সিজার রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে ক্র্যাসাস এর নিকট দায়বদ্ধ হয়ে পরে। তার আত্মমর্যাদা ও অর্থ দুটোই উদ্ধার করা তার জন্য অপরিহার্য হয়ে পরে। তিনি বুঝতে পারেন যে একমাত্র রাজ্য জয়ের মাধ্যমেই সম্পদ আহরণ করা সম্ভব। তাই তিনি সৈন্য বাহিনী নিয়ে রোম ত্যাগ করেন।
সিজারের গল বিজয়
খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮ অব্দে সিজার তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে গল পৌঁছায়। সেখানকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গুলোর নিজেদের মধ্যে বিবাদ ছিলো আর এই সুযোগে সিজার গল আক্রমণ করে ও দখল করে নেয়। যখন তার কাছে মনে হয় যে জার্মান নৃগোষ্ঠীরা তাকে আক্রমণ করতে পারে, তিনি রাইন নদীতে একটি ব্রিজ তৈরি করেন ও শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে নদী পার হয়ে তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে এগিয়ে যান। কিছুদূর গিয়ে তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে ফিরে আসেন এবং ব্রিজটি ধ্বংস করে দেন। জার্মানরা বার্তাটি বুঝতে পারেন এবং আর কখনো আক্রমণ করতে আসেনি। এদিকে সিজার গলের উত্তরাংশও দখল করে নেন এবং দুইবার ব্রিটেন আক্রমণ করেন। ব্রিটেনে সিজারের আক্রমণই ছিলো ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে রোমানদের প্রথম বহিরাক্রমণ। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৫২ অব্দে অ্যালেসিয়া যুদ্ধে সিজার গলের সেনাপতিকে হারিয়ে পুরোপুরিভাবে গল দখল করে নেয়। সম্পদের পাশাপাশি তিনি গল প্রদেশের সার্বভৌমত্বও দখল করে নেন।
এই সময়ের মধ্যে রোমের কনসুল হিসেবে তার মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। খ্রিষ্টপূর্ব ৫৪ অব্দে পার্থিয়ানদের সাথে যুদ্ধে ক্র্যাসাস নিহত হয় এবং একই বছর সন্তান জন্মদানকালে জুলিয়াও মারা যায়। মেয়ের মৃত্যুর পর পম্পেই এর সাথেও তার সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হয়। এছাড়া ক্র্যাসাস মারা যাওয়ার পর পম্পে হয়ে ওঠে রোমের রাজনৈতিক ও মিলিটারি শক্তির একচ্ছত্র অধিকারী। সে গলে সিজারের শাসনকালের সমাপ্তি ঘোষণা করে এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাকে রোমে ফিরে আসতে বলেন। সিজার বুঝতে পারে যে কনসুল হিসেবে তার কাজের জন্য হয়তো তাকে অভিযুক্ত করা হতে পারে। তাই তিনি আদেশ অনুযায়ী রোমে ফিরে না এসে তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে রুবিকন নদী পার হয়ে শহরে প্রবেশ করে।
জুলিয়াস সিজার ও ক্লিওপেট্রা
রুবিকন নদী গল ও রোমের সীমানা নির্দেশক ছিলো। সিজার যখন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে রুবিকন অতিক্রম করে রোমে প্রবেশ করে তখন যুদ্ধের আভাস পেয়ে পম্পে রোম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে প্রথমে স্পেনে ও পরে সেখান থেকে গ্রীসে পালিয়ে যায় এবং ওখানেই সিজারের অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র সৈন্যবাহিনীর সাথে পম্পে এর সেনাবাহিনীর যুদ্ধ হয় ও যুদ্ধে পম্পে পরাজিত হয়। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পম্পেই মিশরে পালিয়ে যায় এবং সেখানে মিত্র বাহিনীর খোঁজ চালায়। ইতিমধ্যে সিজারের জয়ের খবর মিশরে ছড়িয়ে পরে এবং মিশরীয়রা ভেবে নেয় যে ঈশ্বর সিজারের পক্ষে ছিলেন। পম্পেই মিশরে কোনো সহযোগিতা পায় না বরং তারা পম্পেইকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য করে।
পম্পের পিছু নিয়ে সিজার মিশর পৌঁছে যায় এবং পম্পেকে হত্যার দায়ে সেখানে মার্শাল আইন জারী করে ও রাজ প্রাসাদ দখল করে নেয়। ইতিহাসবিদদের মতে তিনি ক্লিওপেট্রাকে ডেকে পাঠান (অনেকের মতে ক্লিওপেট্রা নিজেই আসেন)। কারণ টলেমীর সাথে সাথে ক্লিওপেট্রাও রাজ সিংহাসনের অধিকারী ছিলো কিন্তু টলেমী তাকে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করে দেয়। বলা হয়ে থাকে যে, ইরানি কার্পেটে মোড়ানো অবস্থায় ক্লিওপেট্রা সিজার এর সামনে হাজির হয় এবং তাকে প্রথম বার দেখেই সিজার তার রূপে মুগ্ধ হয় ও প্রেমে পড়ে যায়। তারপর সিজার ক্লিওপেট্রাকে তার হারানো সিংহাসন ফিরিয়ে দিতে চাইলে টলেমী তা মেনে নেয়নি। ফলে মিশরীয় বাহিনীর সাথে তার যুদ্ধ হয় এবং সিজার জয় লাভ করে। সিজার প্রায় ৯ মাস পর্যন্ত মিশরে থাকেন এবং তারপর রোমে ফিরে যান। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭ অব্দে ক্লিওপেট্রা একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন যার নাম রাখেন টলেমী সিজার এবং সে তার পুত্রকে রাজ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে। এদিকে ক্লিওপেট্রার হাতে মিশরের শাসন ভার দিয়ে সিজার তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে এশিয়া মাইনরের দিকে অগ্রসর হয় ও পথে অনেক অঞ্চল জয় করে তার রোমের শত্রুদের দিকে নজর দেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দের জুলাই মাসে তিনি বিজয়ী হিসেবে রোমে প্রবেশ করেন।
মিশর ও রোমান সংস্কার
মিশরে বসে ক্লিওপেট্রা আশা করে থাকে যে সিজার তার পুত্র টলেমী সিজারকে পিতৃপরিচয় দিয়ে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করবে। কিন্তু সিজার তার প্রপৌত্র গ্যাইয়াস অক্টাভিয়াস থুরিনাসকে তার উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে সিজারের স্ত্রী ক্যালপুর্নিয়া থাকা স্বত্বেও তিনি ক্লিওপেট্রা ও তার পুত্রকে রোমে নিয়ে আসেন, তাদেরকে আলাদা বাড়িতে রাখেন এবং প্রায়ই তাদেরকে দেখতে যেতেন।
এরই মধ্যে তিনি রোমে বিভিন্ন সংস্কার কাজে হাত দেন। তিনি দরিদ্রদের ভূমি পুনর্বন্টন করেন, পুলিশ বাহিনী তৈরি করেন, ঐতিহাসিক কারথ্যাজ নগরী পুনর্নির্মাণ করেন, ট্যাক্স সিস্টেম তুলে দেন। তিনি প্রায় সময়ই সিনেটদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই কোনো আইন প্রয়োগ বা পরিবর্তন করে ফেলতেন। ধীরে ধীরে সিজার আরও শক্তিশালী হতে থাকে । ফলে সিনেট এবং বিরোধী দলীয়রা বুঝতে পারে যে এভাবে চলতে থাকলে সিজার একসময় সিনেট বাতিল করে নিজেই সম্রাট বা রাজা হিসেবে এককভাবে শাসন করতে শুরু করবে।
জুলিয়াস সিজারের মৃত্যু
খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪ অব্দের ১৫ই মার্চ, সিনেটরা ষড়যন্ত্র করে জুলিয়াস সিজারকে হত্যা করে। তার হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া সিনেটদের মধ্যে ছিলেন মার্কাস জুলিয়াস ব্রুটাস, যে উত্তরাধিকারী হিসেবে সিজারের দ্বিতীয় পছন্দ ছিলো এবং গ্যাইয়াস ক্যাসিয়াস লঙ্গিনাস। এছাড়াও ঐতিহাসিকদের মতে প্রায় ৬০ জন হত্যাকারী জুলিয়াস সিজারের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। হত্যাকারীরা সিজারকে ২৩ বার আঘাত করার পর সিজার পম্পেই এর মূর্তির সামনে পড়ে যায় এবং ওখানেই প্রাণ ত্যাগ করে। সিজারকে হত্যার পরের পরিণতি কি হবে এই বিষয়ে হত্যাকারীদের কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা ছিলোনা। জুলিয়াস সিজারের ডান হাত মার্ক অ্যান্টনি বেঁচে যায় এবং সে রোমবাসীকে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলে। তারপর খ্রিষ্টপূর্ব ৪২ অব্দে অ্যান্টনি ও অক্টাভিয়ান এর মিত্রবাহিনীর কাছে ফিলিপ্পি যুদ্ধে ব্রুটাস ও ক্যাসিয়াস পরাজিত হয়।
জুলিয়াস সিজারের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের। তার মৃত্যুর পর অক্টাভিয়ান রোমের ক্ষমতা দখল করে এবং অগাস্টাস সিজার নাম ধারণ করে। আর এর সাথে সাথেই রোমান প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটে ও সূচনা হয় রোমান সাম্রাজ্যের।
Howdy! Do you know if they make any plugins to help with SEO?
I’m trying to get my site to rank for some targeted keywords but I’m not
seeing very good results. If you know of any please share.
Kudos! I saw similar text here: GSA List
Hey there! Do you know if they make any plugins to assist with SEO?
I’m trying to get my blog to rank for some targeted keywords but I’m not seeing very good
gains. If you know of any please share. Cheers! You can read similar article here: Sklep internetowy
whoah this weblog is fantastic i like reading your posts.
Keep up the great work! You know, many persons are searching
round for this info, you could aid them greatly. I saw similar here: Sklep online
Wow, incredible blog format! How long have you ever been blogging for?
you made blogging look easy. The total look of your web site is magnificent, as neatly as the content!
You can see similar here sklep internetowy