এ পি জে আব্দুল কালাম: দ্যা মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া
এ পি জে আব্দুল কালাম। পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুল আবেদীন যিনি ২০০২-২০০৭ পর্যন্ত ১১ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভারতের সেবা করে গেছেন। তামিলনাড়ুর রামশ্বরমে জন্ম এবং বেড়ে উঠা এই ব্যক্তি পদার্থবিদ্যা এবং মহাকাশ প্রকৌশলী বিষয়ে অধ্যয়ন করেছেন এবং প্রায় ৪ দশক যাবত ভারতের শীর্ষ ডিফেন্স রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট এবং ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের হয়ে একজন বিজ্ঞানী এবং প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পি জে আব্দুল কালাম এর জীবনী সবচেয়ে বড় অবদান হলো ভারতের সিভিলিয়ান স্পেস প্রোগ্রাম এবং মিলিটারি মিসাইল ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রমে বিরাট ভূমিকা পালন।
এ পি জে আব্দুল কালামের আত্মজীবনীঃ
১৫ অক্টোবর, ১৯৩১ সালে এক গরীব পরিবারে জন্ম নেন ভারতের এই কৃতি সন্তান। তাঁর পিতা জয়নুল আবেদীনের উপার্জনের একমাত্র সম্বল হিসেবে ছিলো মাত্র একটি ডিঙি নৌকা যা দিয়ে পুরো পরিবার চালাতে হতো।
ছোটবেলা হতে কঠিন পরিস্থিতি গড়ে তোলে আব্দুল কালামকে একজন দক্ষ পরিশ্রমী হিসেবে। পিতাকে সাহায্য করতে মাত্র ৫ বছর বয়সে পড়াশোনা শেষে সন্ধ্যার দিকে তিনি শুরু করতেন পত্রিকা বিক্রির কাজ। কাজের জন্য কখনোই তিনি নিজের পড়ালেখার ক্ষতিসাধন করতেন না বরং সবকিছু শেষে তিনি গভীর মনোনিবেশ করতেন পড়ায়।
তামিলনাড়ুর তিরুচির সেন্ট জোসেফ স্কুল, যেখান হতে ১৯৫৪ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ঠিক তার এক বছর পর ১৯৫৫ সালে তিনি চেন্নাইয়ের মাদ্রাস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হোন। তাঁর পছন্দের বিষয় ছিলো পদার্থবিদ্যা এবং গণিতশাস্ত্র। তবে অধ্যয়ন শেষে আব্দুল কালামের কাছে আসে দুইটি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ। একটি বিমান বাহিনীতে এবং আরেকটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে তবে আব্দুল কালামের স্বপ্ন ছিলো মিলিটারী বেইজের একজন ফাইটার পাইলট হওয়া।
‘ বছরের পর বছর ধরে আমি স্বপ্ন দেখতাম আমি একটি উড়ন্ত যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্ট্রাটোস্ফিয়ারের স্তরে চষে বেড়াচ্ছি যা উড়তে থাকবে সেই উচ্চ সীমানায়। “ – নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি এভাবে লেখেছিলেন।
প্রথমে ডিটিডিপি’র (Directorate of Technical Development and Production) এর ইন্টার্ভিউ দিয়ে তিনি ছুটে যান দেরাদুন বিমান বাহিনীর অধীনে ইন্টার্ভিউ দিতে। তিনি ইন্টারভিউ দেয়ার প্রাক্কালে খেয়াল করেছিলেন বিমানবাহিনীতে শিক্ষা এবং দক্ষতার পাশাপাশি শারিরীক সক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে যারকারণে তাঁরা চাইছিলো হ্যাংলা পাতলা প্রার্থীর চেয়ে স্বাস্থ্যবান প্রার্থীকেই বেছে নিতে।
ফলাফল, ৯ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ৮ জনই নির্বাচিত হয় শুধুমাত্র আব্দুল কালাম বাদে। প্রচন্ড ভেঙ্গে পড়েন তিনি কারণ চোখের সামনেই নিজের স্বপ্ন ভেঙে যেতে দেখা সহজ কিছু নয়। জীবনে অনেক প্রতিকূলতা দেখেছেন তবে এতদূর এসে তীরে তরী ডুবে যাওয়ার মতো কষ্টের কিছুই নাই। তিনি হৃষীকেশ চলে যান ভগ্ন মন নিয়ে। সেখানে সাক্ষাৎ পান স্বামী শিবানন্দের।
তাঁকে সবকিছু খুলে বলার পর স্বামীজী তাঁকে উপদেশ দেয়া শেষে পরামর্শ দেন ভরসা না হারাতে। স্বামীজীর কথা শুনে তিনি পুরো উদ্যম ফিরে পান। বারবার মনে পড়তে থাকে স্বামীজীর কথা, “ আজকের ব্যর্থতা ভুলে যাও, তার বদলে তোমার জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যের অনুসন্ধান করো। এয়ার ফোর্স পাইলট হওয়া তোমার নিয়তি নয়। নিজের সঙ্গে একাত্ম হও, আত্মসমর্পণ কর ঈশ্বরের ইচ্ছার কাছে। “
আব্দুল কালাম ফিরে আসেন দিল্লী এবং সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাক্ষাৎকারের ফলাফল জানতে চলে যান। এবার ভাগ্য তাঁর সহায় হল, তিনি হাতে পেলেন এপয়েন্টমেন্ট লেটার। ভাগ্যে হয়তো সেদিন লেখা ছিলো না তাঁর স্বপ্ন পূরণের তবে তিনি এবার আর পিছে তাকান নি বরং ডিটিডিপি’র চাকরিতে মনোনিবেশ করেন একজন সিনিয়র সায়েন্টিফিক এসিস্ট্যান্ট হিসেবে।
সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার শুরু যেখানে
তাঁর ক্যারিয়ার জীবন শুরু হয় ইন্ডিয়ান আর্মির জন্য ছোট একটি হেলিকপ্টার বানানোর মধ্য দিয়ে।
ডিটিডিপি’তে বছর তিনেক কর্মজীবন শেষে এ.ডি.ই (এরোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হলে আব্দুল কালামকে সেখানে নিয়ে আসা হয়।
এরই মধ্যে পরিকল্পনা নেয়া হয় ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তির সাহায্যে হোভারক্রাফট তৈরীর কিন্তু বাধ সাধে নির্মাণ সামগ্রীর অপ্রতুলতা। হোভারক্রাফট এমন একটি বাহন যা মাটি, পানি এবং বরফের উপর অনায়াসে চলতে পারে। তখনকার যুগে এশিয়া মহাদেশে এই ধরণের বাহন তৈরীর সিদ্ধান্ত পুরোটাই দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তের সামিল। হোভারক্রাফট নির্মাণের নকশা এবং এই বাহন তৈরীর পরিকল্পনার নকশা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা দলটির ভার দেয়া হয় আব্দুল কালামের উপর।
এখানে এসে বাস্তবতা অন্যকিছু হয়ে ধরা দেয়। সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হয় এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের সক্ষমতা দলটির সাধ্য অতিক্রম করবে কারণ হোভারক্রাফট পরের কথা বরং একটি অন্য মেশিনকে সম্পূর্ণরুপে কাঠামোতে দাঁড় করানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কেউ নাই দেশে, এছাড়া এই বাহন নির্মাণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। বলে রাখা ভালো, একটি হোভারক্রাফট নির্মাণের জন্য দরকারী সব তথ্যের ছটাকও তখন কোথাও ছিলো না।
তবুও দমে যাওয়ার পাত্র নন তিনি বরং যা আছে তা নিয়েই নেমে পড়লেন। অন্তত তিনি জানতেন এখানে কিছু করতে না পারলে গ্রাম হতে উঠে আসা নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। এখানে সুযোগ বারবার আসে না। শত বাধাবিপত্তি, হেনস্তা সহ্য করে তিনি এগিয়ে চললেন। প্রকল্পটি করার জন্য সময়ে বেঁধে দেয়া হয়েছিলো কিন্তু দুর্বার গতিতে তাঁর দল মাত্র দুই বছর ছয় মাসের মাথায় কাজটি সম্পন্ন করে ফেলেন নিজ দেশে নির্মিত ৪০ মিলিমিটারের হাওয়ার গদির উপর ৫৫০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি হোভারক্রাফট। নাম ছিল তার ‘নন্দী।‘ তবে সামরিক খাতে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতকৃত হোভারক্রাফটি নির্মাণ করা হয়েছিলো তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভি.কে.কৃষ্ণ মেনন তবে দুর্ভাগ্যই বলা লাগে যে তিনি মন্ত্রীত্ব হারানোর পর প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা হারায়।
এতো পরিশ্রমের মাধ্যমে তৈরী নিজের সৃষ্টকর্মের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ভাবিয়ে তোলে আব্দুল কালামকে।
মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়াঃ
হোভারক্রাফট প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার পরেও এ পি জে আব্দুল কালাম নিজেকে এতোটা ভেঙে পড়তে দেন নিই। তিনি বিশ্বাস করতেন পরিশ্রমের ফল একদিন পাবেন।
বিশ্বাস যখন দৃঢ় তখন কেউই তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। বেশ কয়েকদিন পর হঠাৎ জানানো হয় আব্দুল কালামের ল্যাব পরিদর্শনে আসছেন কোন এক উঁচু পদের ব্যক্তি যার উপস্থিতিতে যেনো হোভারক্রাফটের পরীক্ষামূলক চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।
পরিদর্শক আসলেন, হোভারক্রাফটে চড়ে বেড়ালেন এবং আব্দুল কালাম হতে নানা ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন প্রোজেক্টের ব্যাপারে। তিনিও সবকিছু খুলে বললেন বিস্তারিত। পরিদর্শক চলে গেলে তিনি জানতে পারলেন তিনি ছিলেন টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) প্রতিষ্ঠানের এর ডিরেক্টর এম জি কে মেনন। বিস্ময় এখানেই শেষ হয়ে যায় নি বরং আরো বাড়ে যখন সপ্তাহ পরে আব্দুল কালামের ডাক পড়ে টিআইএফআর এর বিজ্ঞানীদের নিয়ে নির্মিত প্রতিষ্ঠান “INCOSPAR” হতে। তাঁকে ডাকা হয়েছিলো রকেট ইঞ্জিনিয়ারিং পদের চাকরির জন্যে ইন্টার্ভিউ দেয়ার জন্যে। তবে তিনি একটু পরেই বুঝতে পারেন এটি শুধুই ইন্টার্ভিউ বললে ভুল হবে বরং পরীক্ষকেরা তাঁকে যাচাই করতে চাইছেন তাঁর ভেতরে কোন বৃহত্তর পরিকল্পনার সম্ভাবনা আছে কিনা। তিনিও বিনয়ের সাথে বিস্তারিত সব জানালেন। পরেরদিনই আব্দুল কালাম জানতে পারেন তাঁর চাকরি হয়ে গেছে। তখনকার যুগে এই চাকরি ছিলো স্বপ্নের মতো। তিনি এখানে ডক্টর ভিক্রাম সারাভাইয়ের অধীনে কাজ করেন।
সময়কাল ১৯৬০ সাল, তিনি ডিআরডিও’তে যোগদান করেন একজন প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে। তবে এই কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি।
সময়কাল ১৯৬৯, তিনি চলে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও) যা স্যাটেলাইট সম্পর্কিত গবেষণা সংস্থা, তিনি সেখানে স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাঁর অধীনে বেশকিছু প্রকল্প সাফল্যের মুখ দেখে। এরইপ্রেক্ষিতে ৭০ এর দশকে প্রোজেক্ট ডেভিল এবং ভ্যালিয়ান্ট নামে দুটি প্রকল্প হাতে নেন তিনি। ভারত তাঁর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরীতে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় পায় আব্দুল কালামের এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে।
এরপর আর থেমে থাকা লাগে নি। দুইটি প্রোজেক্টের সফল উৎক্ষেপণের পরে এসএলভি প্রকল্পের মাধ্যমেও সফলতা বয়ে আনেন তিনি। এসএলভি রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপিত হয় রোহিনি – ১ নামের মিসাইল। এই উৎক্ষেপণ ভারতকে এনে দেয় বিশ্বব্যাপি স্বীকৃতি। এতো বড় মাইলফলক অর্জন সম্ভব হয় এ পি জে আব্দুল কালামের হাত ধরেই। ভারত সরকার তাঁর সফলতায় খুশি হয়ে বর্তমানের ‘অগ্নি’ এবং ‘পৃথ্বী’ নামের পারমানবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রকল্পের কাজ তাঁর হাতে তুলে দেয়।
তবে তিনি মিসাইল ম্যান হিসেবে খ্যাতি পান আরোও পরে। সময়কাল তখন ১৯৯২ সাল। তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা গবেষণা গবেষণা ও উন্নয়ন সংগঠনের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হোন। এই পদে তিনি ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দক্ষতার সাথে পালন করেন। এই সময়কালের মধ্যে তাঁর অধীনে পোখরান – ২ পারমাণবিক পরীক্ষার সফলতা অর্জন করে। এর মধ্যে তিনি লাভ করেন ‘মিসাইল ম্যান’ খ্যাতি।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং পুরষ্কার ও সম্মাননাঃ
কে আর নারায়নের পর ১১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হোন এ পি জে আব্দুল কালাম। ভারতের রাষ্ট্রপতির ইতিহাসে একজন চিরকুমার বিজ্ঞানী রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি অন্তর্ভূক্ত হোন। তবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তেমন ২০ জন আসামীর প্রাণভিক্ষার প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁর নির্বাক ভূমিকার কারণে কুড়িয়েছেন সমালোচনাও।
তাঁর ঝুলিতে প্রায় সবধরণের বেসামরিক সম্মাননার পাশাপাশি রয়েছে সর্বোচ্চ সম্মাননা হিসেবে ১৯৮১ সালে ‘পদ্মভূষণ’, ১৯৯০ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’ এবং ১৯৯৭ সালে ‘ভারতরত্ন’ খ্যাতি।
১৯৯৭ সালে হিসেবে যুক্ত হয় ‘ইন্দিরা গান্ধী’ সম্মাননা। এর পরেরবছর পান ভারত সরকারের পক্ষ হতে ‘বীর সভাকর’ সম্মাননা।
২০০০ সালে চেন্নাইয়ের আলোয়ার রিসার্চ সেন্টার তাঁকে ‘রামানুজন’ সম্মাননা প্রদান করেন। ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্য রয়্যাল সোসাইটি হতে পান ‘চার্লস II’ মেডেল।
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি তাঁকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভন কারম্যান উইংস’ নামের সম্মাননায় ভূষিত করেন।
তাঁর অনন্য প্রাপ্ত স্বীকৃতি হলো প্রায় ৪০ টি বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাপ্ত ডক্টরেট সম্মাননা লাভ। জাতিসংঘ তাঁকে দেয় অনন্য সম্মান তাঁর ৭৯তম জন্মদিনকে ‘বিশ্ব শিক্ষার্থী দিবস’ হিসেবে ঘোষিত করে।
এ পি জে আব্দুল কালাম তাঁর টুইটার একাউন্টে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে শুধুমাত্র ভিভিএস লক্ষণকেই ফলো করতেন। এছাড়া তিনি আরোও ৩৮ জনকে তাঁর টুইটার একাউন্ট হতে ফলো করতেন।
এ পি জে আব্দুল কালাম আজাদ এর সাহিত্যকর্ম
লেখক হিসেবেও এ পি জে আব্দুল কালাম তাঁর নিজস্ব ছাপ রেখে গিয়েছিলেন। তাঁর লেখনীর মাধ্যমে অনেকেই পেয়েছেন জীবনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা। পরিচয় হওয়া যাক তাঁর কিছু বিখ্যাত বইসমূহের সাথে।
১। India 2020: A Vision for the New Millennium (1998)
২। Wings of Fire: An Autobiography (1999)
৩। Ignited Minds: Unleashing the Power within India (2002)
৪। The Luminous Sparks: A Biography in Verse and Colors (2004)
৫। Guiding Souls: Dialogues ln the Purpose of Life (2005)
৬। Inspiring Thoughts: Quotation Series (2007)
৭। You are Born to Blossom: Take my journey Beyond (2011)
এ পি জে আব্দুল কালাম আজাদের বাণী অম্লান –
১। স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া অবধি তোমাকে স্বপ্ন দেখে যেতে হবে। স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখ বরং স্বপ্ন সেটাই যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না।
২। আমাদের হতাশ হওয়া এবং সমস্যাগুলোকে আমাদের হারানোর সুযোগ করে দেয়া উচিত নয়।
৩। যদি তুমি সূর্য্যের ন্যায় দীপ্তময় হতে চাও তবে আগে সূর্য্যের ন্যায় পুড়তে হবে।
৪। তোমার ভবিষ্যৎ পরিবর্তন সম্ভব নয় তবে অভ্যাস পরিবর্তন সম্ভব। একদিন এই অভ্যাসই তোমার ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করবে।
৫। জাতির সবচেয়ে ভালো মেধা ক্লাসরুমের শেষ বেঞ্চ থেকে পাওয়া যেতে পারে।
৬। জীবন ও সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন শেখায় সময়কে ভালোভাবে ব্যবহার করতে এবং সময় শেখায় জীবনের মূল্য দিতে।
৭। জীবনে সমস্যার প্রয়োজন রয়েছে। সমস্যা আছে বলেই জীবন এতো সুন্দর।
৮। আকাশের দিকে তাকাও। আমরা একা নই। মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুপ্রতীম। যারা স্বপন দেখে ও সে মতো কাজ করে তাঁদের কাছেই সেরাটা ধরা দেয়।
৯। তুমি নিজেই সম্পৃক্ত না হলে সফল হতে পারবে না। তোমার সম্পৃক্ততায় তুমি কখনোও ব্যর্থ হবে না।
১০। If u fail then never give up because F.A.I.L means (First Attempt In Learning).
১১। End is not the End, In fact E.N.D means “Effort Never Dies”.
১২। If you get No as an answer, Remember N.O means “Next Opportunity”
মহানায়কের মৃত্যু
সময়কাল ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সাল। মেঘালয়ের শিলং শহরের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে বক্তৃতা প্রদানকালীন সময়ে হ্রদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে বেথানী হাসপাতালে নেয়া হয় যেখানে সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মধ্য দিয়েই শেষ হয় ভারতের এক সমুজ্জ্বল নক্ষত্রের অবসান এবং এরই মধ্য দিয়ে ভারতের বিজ্ঞান অধ্যায় হয় ক্ষতিগ্রস্থ।
বাংলাদেশে এ পি জে আব্দুল কালাম আজাদ –
এ পি জে আব্দুল কালাম বাংলাদেশেও বেশ কয়েকবার পদার্পণ করেন।
তেমনই ঢাকার এমসিসিআই এর ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন,
‘ বাংলাদেশকে আমার দুইটি কারণে অনেক ভালো লাগে। এক হলো এ দেশের বিস্তৃত জলরাশি। আজও দিল্লী হতে উড়ে আসার সময় দেখেছিলাম দেশজুড়ে কতো নদী!! তোমাদের নাম হওয়া উচিত ‘ওয়াটার পিপল।‘
দুই হলো, তোমাদের দেশের তৈরী পোশাকশিল্প। তোমরা নিজেরাও হয়তো জানো না পোশাকশিল্পে তোমরা কতটা উন্নত। ‘
তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাদামাটা মনের একজন মানুষ, ছিলো শিক্ষার্থী এবং বাচ্চাদের জন্য অপরিসীম স্নেহ। তাঁদের করা সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে জুগিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অনুপ্রেরণা। তিনি বিশ্বাস করতেন এই শিশু এবং শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের দেশ গড়ার কারিগর।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব শেষে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোন একসময়ে সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলো তিনি কোন পরিচয়ে পরিচিত হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেনঃ একজন বিজ্ঞানী, একজন রাষ্ট্রপতি অথবা একজন শিক্ষক??
হাস্যোজ্জ্বল তিনি উত্তর দিয়েছিলেন,
‘ আমি চাই আমাকে একজন শিক্ষক হিসেবে স্মরণ করা হোক। এরপর যে হিসেবে করার করবে। ‘
(সুত্রঃ উইকিপিডিয়া, ব্লগ ও এ পি জে আব্দুল কালামের কিছু বই হতে।)
purchase terbinafine online cheap – order fulvicin 250mg pills grifulvin v cheap
order metformin – cheap metformin 1000mg precose 25mg generic