ছোটবেলায় আমরা অনেকেই হয়ত আকাশের তারা গণনা করতাম,কখনো কি শেষ হত সেই গণনা? সত্যি বলতে কি আকাশের তারা গণনার মাধ্যমে শেষ করা অসম্ভব। আবার, এই তারাগুলোর মধ্যেই আছে আমাদের এই সৌরজগতের মত অসংখ্য সৌরজগত, এগুলোকে ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি বললেও ভুল হবে না। এই ছায়াপথের সংখ্যা এতই বেশি যে অলৌকিক ভাবে যদি গণনা করে শেষও হয়, তখন নতুন নতুন আরও ছায়াপথ আমাদের সামনে চলে আসবে!
‘পৃথিবী বাদে আর কোথাও কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে?’- প্রশ্নটা আমাদের জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে বসবাস উপযোগি বিকল্প গ্রহের খোঁজ করছেন বিজ্ঞানীরা। অতিরিক্ত জনসংখ্যা,পরিবেশ দূষণ সর্বোপরি আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ‘ বাসযোগ্য নতুন গ্রহ’ সন্ধান এখন সময়ের দাবি।
মজার ব্যাপার হল, প্রতি মূহুর্তে আবিস্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রহ। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, আবিষ্কৃত এই সব গ্রহের মধ্যে কোথাও কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে? অন্য কোন গ্রহে যদি প্রাণের অস্তিত্ব থাকে,তবে আমরাও সেখানে বসতি গড়ে তুলতে পারব। আমরাও তো প্রাণী, তাই না? অন্তঃত অস্তিত্ব রক্ষার্থে চেষ্টা তো করা যায়! এক্ষেত্রে ২০০৯ সালে “কেপলার ২২বি” গ্রহ আবিষ্কার আমাদের বেশ আশা জুগিয়েছিল। কারণ এই গ্রহটি হচ্ছে পৃথিবীর জমজ ভাই। এর বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা প্রায় ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,যা প্রাণ ধারণের জন্য বেশ উপযোগি।
কিন্তু মূল সমস্যাটা হচ্ছে পৃথিবী থেকে এর বিশাল দূরত্ব।পৃথিবী থেকে ৬০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত “কেপলার ২২বি” নিরাশ করেছে আমাদের। আমরা যদি আলোর গতিতে টানা ৬০০ বছর ধরে ছুটে চলি তবেই ৬০০বছর পরে পৌঁছে যাবো পৃথিবীর জমজ ভায়ের কাছে!খুব একটা সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না, ৬০০ বছর বাঁচবো তো?
যাই হোক,আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার সাথে মিশে আছে মঙ্গলগ্রহ। অনেকেই স্বপ্ন দেখছে মঙ্গল গ্রহে একদিন বসতি গড়ে উঠবে, ধীরে ধীরে বিবর্তন ঘটবে মানব সভ্যতার। কিন্তু এই চিন্তা ভাবনা আসলেই কতখানি বাস্তবসম্মত? সত্যিই কি আমরা কোন দিন বসতি গড়তে পারব এই মঙ্গল গ্রহে? আর এক্ষেত্রে কি কি বাধা আমাদের অতিক্রম হবে আমাদের? সেগুলো জানার চেষ্টা করবো আমরা।
দূর নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সাহায্যে মানুষের মঙ্গল অভিযান শুরু হয় বহুদিন আগেই। ১৯৬৫ সালে মেরিনার ৪ মহাকাশযান মঙ্গল গ্রহ অভিযানে যায়। এই অভিযানের পর থেকে অনেকেই ধারণা করে আসছিলেন যে মঙ্গলে তরল পানির অস্তিত্ব আছে। সম্প্রতি বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞানীদের উৎসাহ অনেকাংশে বেড়ে গেছে। মঙ্গলে বিভিন্ন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এবং জাপানের পক্ষ থেকে মঙ্গল অভিমুখে ডজনখানেক নভোযান পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে অরবিটার, ল্যান্ডার, কিউরিওসিটি রোভার সবই ছিল। অভিযানগুলোর উদ্দেশ্য ছিল মঙ্গলের ভূত্বক, জলবায়ু এবং ভূতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা। মঙ্গলে পাঠানো নভোযানগুলোর মধ্যে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ তাদের উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হয়েছে।
অনেকগুলো অভিযান ঠিকমতো শুরু করার আগেই স্তব্ধ হয়ে গেছে। মূলত কৌশলগত সমস্যার কারণেই এই ব্যর্থতাগুলোর উৎপত্তি। অধিকাংশের সাথে মাঝপথে যোগাযোগ নষ্ট হয়ে গেছে। যোগাযোগ নষ্টের কারণ জানা যায়নি, অনেকগুলোর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা এখনও চলছে। এ পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা করা হয়েছে সরাসরি মানুষবাহী যান মঙ্গলে পাঠানোর। এ ক্ষেত্রে গবেষকদের ভাবতে হচ্ছে, অভিযানের স্থায়িত্ব এবং মঙ্গল গ্রহ থেকে বের হয়ে আসার উপায় নিয়েও। কারণ মঙ্গল গ্রহ এ অবতরণ যতটা কঠিন, তার থেকে অনেক বেশি কঠিন সেখান থেকে পৃথিবীতে ফেরত আসা। এ ক্ষেত্রে মানুষের মঙ্গল অভিযানের অনেক বিষয় নির্ভর করছে গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ের ওপর, যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কিউরিওসিটি রোভার ২০১২ সালে মঙ্গল গ্রহে নাসার প্রেরিত চতুর্থ রোবটযান। মঙ্গল গবেষণার ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত (২০১২) নাসার বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। মঙ্গলের যে বিশাল গহ্বরে (গেল ক্রেটার) অবতরণ করেছিল কিউরিওসিটি, সেখানকার ছবি পাঠিয়েছে এই মহাকাশযান এবং তাতে ধরা পড়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, মরুভূমির মতো বিস্তৃত রুক্ষ প্রান্তর যা কিনা অনেকটা পৃথিবীর মরুভূমির মতোই মঙ্গলের এই মরুভূমি। নাসার গবেষণাগারে পাঠানো সেই ছবি দেখে বিস্মিত গবেষকরা। বিজ্ঞানীদের একাংশ ক্যালিফোর্নিয়ার মোজাভে মরুভূমির সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন মঙ্গলের মরুভূমির। তবে মিল থাকলেও অমিলও রয়েছে। মঙ্গলের মরুভূমিতে সব সময় তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই এলাকা এক সময় আরও উত্তপ্ত ছিল। ঠিক কী কারণে এবং কী ভাবে আবহাওয়ার এই পরিবর্তন ঘটল তা নিয়ে গবেষণা চলছে।
নাসার দাবি, মঙ্গলগ্রহের তাপমাত্রা শূন্য থেকে পঁচিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই পানির দেখা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই পানি আসছে কোথা থেকে?বিষয়টি নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় নাসা। তাদের ধারণা, মঙ্গলের মাটির নীচে বরফ বা নোনা কোনো কিছু থেকে পানি আসতে পারে। তবে পানি যেখান থেকেই আসুক, এর ফলে মঙ্গলে প্রাণ আছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক আবারো জোরালো হতে শুরু করেছে। তাই ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানে যে সব এলাকায় পানি আছে, সে সব এলাকাতেই মহাকাশযান অবতরণের উদ্যোগ নেবে নাসা। পানির নমুনা সংগ্রহ করে চলবে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। আর প্রাণের সন্ধান মিললে মঙ্গল যাতে বাসযোগ্য হয়ে ওঠে, তার জন্য অক্সিজেন তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে নাসা। অবশ্য জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাল্ফ ইয়াউমান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘‘মঙ্গলগ্রহে পানি পাওয়া গেছে ঠিকই। কিন্তু সেই পানি অতিরিক্ত পরিমাণে লবণাক্ত। অর্থাৎ পান করার অযোগ্য। মঙ্গল অত্যন্ত হিমায়িত হলেও, এই লবণাক্ততার ফলেই বরফ দ্রুত গলতে শুরু করবে। আর পানির ভারিত্বের কারণে তা বেশি সময় পর্যন্ত মঙ্গলপৃষ্ঠে থেকেও যাবে।” আমাদের জন্য সুখের খবর,তাই না?
পৃথিবীর প্রাণের উৎস নাকি মঙ্গল গ্রহ ! মানুষের তৈরি একের পর এক মহাকাশযান মঙ্গলগ্রহে গেছে, সেখানে প্রাণের খোঁজ করছে। মানুষের বসতি স্থাপনের কথাও চলছে।এবার শোনা যাচ্ছে, মঙ্গল গ্রহ থেকেই নাকি পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল!
কোটি কোটি বছর আগে.পৃথিবীতে জীবজগত সৃষ্টির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, এ কথা আমরা জানি। কিন্তু সেই প্রাণের উৎস যে মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছিল, এমন তত্ত্বের কথা শুনেছেন কি? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের গেনসভিল-এ ওয়েস্টহাইমার ইন্সটিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-র অধ্যাপক স্টিভেন বেনার এমন এক তত্ত্ব খাড়া করেছেন। তাঁর ধারণা, মঙ্গলগ্রহ থেকে একটি উল্কা পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়েছিল। তাতে যে সব ধাতু ছিল, সেগুলোই পৃথিবীর বুকে প্রাণের সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে ‘মলিবডেনাম’ নামের উপকরণের অক্সিডাইজড ধাতুর রূপ এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বলে অধ্যাপক বেনার-এর বিশ্বাস। কারণ এই উপকরণই কার্বনের অণুকে নষ্ট হতে দেয় না। এই ‘মলিবডেনাম’ যদি সত্যি প্রাণের অস্তিত্বের চাবিকাঠি হয়ে থাকে, সেটি যে মঙ্গল গ্রহ থেকেই এসেছে, এমনটা মনে করার কারণ কী? অধ্যাপক বেনার বলেন, প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে যখন প্রাণের চিহ্ন দেখা দিয়েছিল, তখনকার পরিবেশ ছিল ভয়াবহ।এমনকি বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের মাত্রাও ছিল খুবই কম। একই সময়ে মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেনের অস্তিত্ব ছিল। তাছাড়া সৌরজগতের সেই বাল্যকালে পৃথিবীর বুকে যখন-তখন আছড়ে পড়তো উল্কা ও ধুমকেতু। মঙ্গল গ্রহ ও সেই আঘাত থেকে রক্ষা পায় নি। ফলে সেই গ্রহের অংশও ছিটকে মহাকাশে বেরিয়ে গেছে এবং একটা সময়ে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূ-পৃষ্ঠের উপর এসে পড়েছে। এই তত্ত্বের সপক্ষে সম্প্রতি আরও কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। মঙ্গলগ্রহের একটি উল্কাখণ্ড বিশ্লেষণ করে তাতে সত্যি ‘মলিবডেনাম’ পাওয়া গেছে। সঙ্গে ছিল ‘বোরন’ নামের আরেক উপকরণ, যা রাইবোনিউক্লিয়িক অ্যাসিড (RNA) সুরক্ষায় সহায়ক হয়ে থাকতে পারে। আরএনএ আসলে ডিএনএ-র একটা অতীত রূপ। পানির ক্ষয়শক্তি থেকে আরএনএ-কে বাঁচিয়ে রেখেছিল ‘বোরন’।
অধ্যাপক স্টিভেন বেনার এমন এক ঘটনার বিশেষ তাৎপর্যের কথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি। তাঁর মতে মঙ্গলগ্রহের বদলে পৃথিবীর বুকেই প্রাণের বিকাশ ঘটেছে বলেই মানুষের অস্তিত্ব সম্ভব হয়েছে।একই প্রক্রিয়া মঙ্গলগ্রহের মাটিতে ঘটলে প্রাণের বিবর্তন ঘটতে পারতো না। কারণ মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর মধ্যে তুলনা করলে আমাদের এই গ্রহের পরিবেশই প্রাণের বিকাশের জন্য অনেক বেশি অনুকূল ছিল। তবে এটাই একমাত্র তত্ত্ব নয়। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে আরও অনেক তত্ত্ব রয়েছে। যেমন ধূমকেতুই পৃথিবীতে পানি এনেছিল। অথবা মহাকাশের গভীর থেকে উল্কাখণ্ড চেপে প্রথম ব্যাকটেরিয়া নাকি পৃথিবীর সমুদ্রে এসে পড়েছিল। সেই ক্ষুদ্র জীবই আমাদের পূর্বপুরুষ!
মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর রকেট তৈরি হচ্ছে ! স্পেস শাটল বা মহাকাশফেরি কর্মসূচি বন্ধ হওয়ার পর থেকে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা বেশ সমস্যায় পড়েছিল। এবার নতুন প্রজন্মের রকেট সেই দুর্বলতা কাটাতে পারে। ২০১৮ সালে প্রথম বার মহাকাশে পাড়ি দেবে এই রকেট। পোশাকি নাম ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম’ বা এসএলএস ৷ তার একটি সংস্করণের ওজন প্রায় প্রায় ৭০ মেট্রিক টন। তার ধাক্কায় প্রায় ১৩০ মেট্রিক টন মহাকাশে পাঠানো যাবে, যেমনটা এতকাল সম্ভব ছিল না। বিপুল শক্তিতে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাটিয়ে দ্রুত মহাকাশের গভীরে নিয়ে যেতে পারবে এই রকেট।ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে এই প্রথম সৌরজগতের আরও গভীরে যাবার স্বপ্ন দেখতে পারে মানুষ।
মঙ্গল আরও দূরের কোনো গ্রহে মহাকাশযান পাঠানো আজ আর কোনো বিস্ময়কর ঘটনা নয়। কিন্তু পৃথিবীতে বসেই রোবট চালনার ক্ষমতা এখনো পুরোপুরি রপ্ত হয় নি। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতায় এমন পরীক্ষা চালাচ্ছে। নেদারল্যান্ডস উপকূলে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা-র গবেষণা কেন্দ্রে রোবটের হাত নড়াচড়া করছে। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকে এক বিজ্ঞানী মোবাইল টেলিফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তাকে চালাচ্ছেন।লক্ষ্য, অদূর ভবিষ্যতে কয়েক লক্ষ কিলোমিটার দূর থেকেও এটা সম্ভব করা। এমন এক যন্ত্রের সাহায্যে ভবিষ্যতে দূরের কোনো গ্রহে পৃথিবী থেকেই রোবট চালনা করা যাবে৷ ২০১৬ সালে মঙ্গল গ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। মানুষের জন্য মঙ্গল গ্রহ তেমন দূর নয় এমনকি এরকম যাত্রা রোবটের জন্য কিছুই নয়। সেটা চালনা করতে হবে আর অবশ্যই মঙ্গল যাত্রা শুরুর আগে কিছু বাধা দূর করতে হবে!
মঙ্গল গ্রহে স্থায়ী মানববসতি গড়ার পরিকল্পনা করেছে মার্স ওয়ান নামে একটি ডাচ প্রতিষ্ঠান। এর লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে কয়েকজন লোককে পাঠিয়ে একটি স্থায়ী মানববসতি গড়ে তোলা। অর্থাৎ এটা হবে মঙ্গল গ্রহ এর পথে যাকে বলে ‘ওয়ান-ওয়ে টিকিট’। যারা যাবেন, তারা আর পৃথিবীতে ফিরবেন না, চিরকালের জন্য মঙ্গলগ্রহেই থেকে যাবেন! এর মধ্যেই প্রথম দফা আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে,১৪০টি দেশ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক আবেদনপত্র জমাও পড়েছে।
তবে এই মঙ্গল গ্রহ এর পরিবেশ আমাদের পৃথিবীর সাথে অনেকটা মিল থাকলেও তা জীবন ধারণের জন্য কতটুকু উপযোগি তা প্রশ্নবিদ্ধ।ধরে নিলাম, আপনি কোন ভাবে পৌঁছে গেলেন মঙ্গলে,সেখানকার বৈরী পরিবেশ থেকে রক্ষার জন্য আপনাকে দেয়া হল বিশেষ পোশাক। এখন আপনি শুধুমাত্র যদি মাথার হেলমেটটা খুলে ফেলেন তবে সাথে সাথেই আপনার শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যেতে থাকবে কারণ এখানে বাতাসে কোন আদ্রতা নেই বললেই চলে আর ভূপৃষ্টে আসা অতিবেগুনী রশ্মি নিমিষেই আপনার DNA’র গঠন পরিবর্তন করে দিবে। অর্থাৎ শরীরের পানি শুকিয়ে যদি আপনি মমিতে রূপান্তরিত না হলেও DNA ‘র পরিবর্তন আপনার শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করবে।
‘মঙ্গল গ্রহ মানুষের ভাবনায় মঙ্গল নাকি অমঙ্গল বয়ে আনবে?’- উত্তর জানতে শুধুই সময়ের অপেক্ষা,অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো আমরা জানতে পারবো।
তথ্যসূত্র :
www.nasa.gov/mission_pages/mars/main/index.html
https://www.nasa.gov/mission_pages/mars/missions/marssciencelab-index.html
www.dw.com/bn/মঙ্গলগ্রহে-প্রাণ-পানির-অস্তিত্বের-দাবি-নাসার/a-18747596