১৯৮৮ সাল। ‘গ্রেটে উইন্টন’ সুটকেসে খুঁজে পান তাঁর স্বামীর একটি পুরনো স্ক্র্যাপবুক যা ছিলো ১৯৩৮-৩৯ সালের এক মহৎ কার্যের ইতিহাস সম্বলিত। অন্তত পঞ্চাশোধিক বছর ধরে যেই ইতিহাস সম্পর্কে কেউই জানতো না। এমনকি বাতাসেও এতোটুকু খবর হয় নিই। ফাইলটিতে ছিল প্রায় ছয় শতাধিক বাচ্চাদের ছবি, তাঁদের নাম, তাঁদের পিতামাতার নিকট হতে প্রাপ্ত চিঠি, তাঁদের পাঠানোর ব্যবস্থা সংক্রান্ত পরিকল্পনা এবং কিছু দরকারি কাগজাদি। গ্রেটে ঘটনাটি হলোকাস্ট বিশেষজ্ঞ ডঃ এলিজাবেথ ম্যাক্সওয়েলের কাছে খুলে বলেন। পরে এলিজাবেথের স্বামী এই অনবদ্য ইতিহাস ফলাও করে প্রচার করেন পত্রিকায়।
সময়কাল ১৯৮৮ সাল। সেই ইতিহাসের স্রষ্টা বসে আছেন বিবিসির “That’s Life” শিরোনামের একটি প্রোগ্রামের প্রথম সারিতে। আগে পিছে দর্শকে ভরপুর পুরো হলরুম। একটি চমক তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে যা ছিল তাঁর কাছে সম্পূর্ণ অজানা। একসময় অনুষ্ঠানের হোস্ট খুললেন একটি নোটবুক যারমধ্যে ছিলো ৬৬৯ জন শিশুর নামের তালিকা যাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হওয়ার পূর্ব সময়ে বাঁচিয়েছিলেন সেই ব্যক্তিটি। হঠাৎ পরিচালিকা ব্যক্তিটির পাশে বসা মহিলাকে ভেরা গিসিং নামে সম্বোধন করে জানালেন যে তিনি সেই মহান বীরপুরুষের পাশে বসে আছেন যিনি ১৯৩৮-৩৯ সালে তিনি সহ আরো ৬৬৮ জনকে জীবন দান করেছিলেন। আবেগাপ্লুত হয়ে ভেরা মানুষটিকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুম্বন করলেন গালে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। পরিচালিকা বললেন সে সময়ের আর কেউ কি ব্যক্তিটির কাছে দায়বদ্ধ কিনা। বলার সাথে সাথেই পিছের সারিতে দাঁড়িয়ে গেলো আরো ডজনখানেক মানুষ। ফিরে তাকিয়ে দেখলেন তিনি আর হ্যাঁ, এদের সবারই জীবন বাঁচিয়েছিলেন তিনি যা গত পঞ্চাশ বছর ধরে ছিলো রহস্যের আড়ালে। বিবিসি’র সেই ৫৯ মিনিটের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডজনখানেক মানুষ তাঁদের জীবন রক্ষাকারী সেই বীর পুরুষটির দেখা পেলেন। মানুষটি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন, চোখের কোণা হতে ঝরতে লাগল আনন্দাশ্রু। সাথে কাঁদল বিশ্ব।
দেবদূতটি আর কেউ নন, তিনি হলেন স্যার নিকোলাস উইন্টন যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর আগের বছরে নিজ উদ্যোগে বাঁচানো ৬৬৯ জন শিশুর ঘটনা সম্পর্কে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে কাউকেই জানতে দেন নিই এমনকি তাঁর জীবনসঙ্গিনী গ্রেটেকেও। শিশুদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছিয়ে দিয়েই এত বড় মহৎ কার্যটির সব ধরণের স্মৃতিকে নিজের মধ্যেই দাফন করে ফেলেন তিনি, কারণ বিশ্বের সামনে হিরো হয়ে উঠার চেয়ে বড় আত্মতৃপ্তি ছিলো তিনি এত শতো বাচ্চাকে তাঁদের ঘরে পাঠাতে পেরেছেন।
লন্ডনের হ্যাম্পস্টিডে ১৯০৯ সালের ১৯ শে জন্মগ্রহণ করেন এই মহারথী। পিতা রোডলফ ওয়রেথেম ছিলেন একজন ব্যাংক ম্যানেজার এবং মাতা বারবারা ছিলেন একজন গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। স্কুল জীবনে তিনি দক্ষ হয়ে উঠেন তলোয়ার চালনায় এবং ব্রিটিশ টিমে তাঁর জায়গা হয় ১৯৩৮ সালে। যদিও তাঁর ইচ্ছে ছিলো অলিম্পিকে যোগ দানের তবে বিশ্বযুদ্ধের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। পেশাগত জীবনে একজন ইংল্যান্ডের স্টক এক্সচেঞ্জের একজন স্টক ব্রোকার হলেও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইউকে’র রয়েল এয়ার ফোর্সে ফ্লাইট লিউটিন্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন ১৯৪০ হতে ১৯৫৪ পর্যন্ত। তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ সমাজতান্ত্রীক ব্যক্তি।
সময় ১৯৩৮ সাল। ছুটি কাটানোর স্কিং এর উদ্দেশ্যে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য মনস্থির করলেন তিনি। সিদ্ধান্ত যখন চূড়ান্ত ওই মুহূর্তে একটি ফোন কল নিমিষেই বদলে দেয় তাঁর জীবনের লক্ষ্য। ফোন কলটি ছিলো তাঁর বন্ধু মার্টিন ব্লেকের। অপর পাশ হতে ব্লেক প্রাগে চলে আসতে বিনীত অনুরোধ করেন উইন্টনকে। ব্লেক সেসময় ব্রিটিশ কমিটির সহযোগী হিসেবে চেকোস্লোভাকিয়ার রিফিউজি ক্যাম্পে কাজ করছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৩৮ এর অক্টোবরে জার্মানি ও অন্যান্য ইউরোপিয়ান পরাশক্তিদের মধ্যে ‘মিউনিখ চুক্তি’ হওয়ার পর নাৎসিরা পশ্চিম চেকোস্লোভাকিয়ার একটা অংশ নিজেদের দখলে নিয়ে ফেলার চেষ্টা চালায় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হওয়া মাত্র সময়ের ব্যাপার। প্রায় ৯১ জন ইহুদী মেরে ফেলা হয় এবং ৩০ হাজারের জায়গা হয় ক্যাম্পে। জার্মান ও অস্ট্রিয়ান ইহুদীদের উপর চালানো হয় এক বীভৎস হামলা। এই প্রেক্ষিতে ব্লেক উইন্টনকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন। তবে একসাথে সবাইকে আশ্রয় দিয়ে স্থানান্তর করা তাঁর পক্ষে ছিলো অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। রিফিউজি ক্যাম্পে চলছিলো নীরব দুর্ভিক্ষ। কারোও কাছে খাবার কেনার অর্থ ছিল না। ক্যাম্পে থাকা বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করতে লাগলো মায়েরা। তাঁরা চাচ্ছিলো কোনভাবে সন্তানদের অন্য দেশে স্থানান্তরের।
অগণিত পরিবার আশ্রয়হীনভাবে ঘুরে বেড়াতে লাগে রাস্তায়। উইন্টন চুপ করে থাকতে পারলেন না বিপর্যয় দেখে। ওয়েনসেসলাস স্কোয়াডে “গ্রান্ড হোটেল” এর ডাইনিং রুমে অনুমোদন ব্যতীত খুলে বসেন একটি অস্থায়ী অফিস এবং নিজের সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যতের আশায় বিপর্যস্ত পরিবার তাঁদের সন্তানদের তুলে দিতে মনস্থ হোন উইন্টনের হাতে। সে নিমিত্তে তিনি বাচ্চাদের পিতামাতা হতে আবেদনপত্র সংগ্রহ শুরু করলেন। একে একে অনেক জমা হলো। উপচে পড়া উৎকণ্ঠা পরিবারের ভার সামলাতে তিনি আরো একটি অফিসের অভাব বোধ করলেন এবং সেজন্যে সেন্ট্রাল প্রাগে আরেকটি অফিস খুললেন। এভাবে তাঁর কার্যক্রম পরিধি বাড়তে লাগলো এবং হাজারে হাজারে অভিভাবক ছুটে আসতে লাগলেন উইন্টনের অফিসে শুধুমাত্র তাঁদের সন্তানের জন্য একটি নিরাপদ দিন লগ্নি করার জন্যে।
গ্রেট ব্রিটেন সহায়তা হিসেবে ১৭ বছরের নিম্নের বাচ্চাদের ব্রিটেনে প্রবেশের অনুমতি দেন এবং প্রত্যেকের জন্য ৫০ ডলার করে গ্যারান্টি ডিপোজিট করে রাখার শর্ত দেন।
দেবদূত উইন্টনই তাঁদের আশার একমাত্র মাধ্যম। প্রাগের দায়িত্ব চ্যাডউইক ও বিলের হাতে দিয়ে ফান্ড সংগ্রহের জন্য লন্ডনে ফিরে আসেন তিনি। বিভিন্ন দেশ হতে সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি। চারিদিক হতে এখন দায়িত্ব পাহাড় সমান উইন্টনের কাঁধে। সকালে স্টক মার্কেটে সময় দিয়ে এরপরের অবসর সময়টুকু তিনি বাচ্চাদের পুনঃস্থাপনের কাজে ব্যয় করতে লাগলেন। তাছাড়া ৫০ ডলার তৎকালীন সময়ে অনেক বড় একটা অঙ্কের অর্থ। এজন্যে তাঁর খুঁজে বের করতে হবে প্রতিটা বাচ্চার জন্যে একটি ভালো পরিবার। তাছাড়া যাতায়াতের জন্য লাগবে বিশাল অঙ্কের টাকা। অক্লান্ত পরিশ্রম শুরু করলেন এবং বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সাথে অবলম্বন করলেন আরেকটি অভিনব পন্থা যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হলো। আশ্রয়ে থাকা বাচ্চাদের ছবি তুলে প্রিন্ট করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেঁটে দিতে শুরু করলেন যাতে স্পন্সররা মানবতার ডাকে অর্থ সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং সাথে বাচ্চাদের জন্য নতুন পরিবার খোঁজার কাজও সহজসাধ্য হলো।
তবে এতো অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও ভাগ্য সহায় তেমন একটা হলো না। ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে তেমন একটা সাহায্যের মনোভাব দেখা গেলো না বরং ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম এগোতে লাগলো অত্যন্ত ধীরগতিতে যা উইন্টনকে হতাশায় ফেলে দেয়।
সময়কাল মার্চ ১৪, ১৯৩৯ সাল। এই দিনটিতে উইন্টন প্রথম সফলতার মুখ দেখতে পান। উইন্টনের উদ্যোগে বাচ্চাদের নিয়ে প্রথম বিমান প্রাগ হতে লন্ডনের দিকে রওনা হয়। তবে পরেরদিন হিটলার তাঁর বাহিনী নিয়ে পুরো জার্মান দখলে নিয়ে নেয়া শুরু করে এবং প্রাগের দিকে যাত্রা শুরু করে। পরক্ষণে উইন্টনের তত্ত্বাবধানে আরো সাতটি স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় রেলপথে যা প্রাগ এবং জার্মানি হতে আটলান্টিক কোস্ট এবং ওইখান থেকে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে জাহাজে করে ব্রিটেন। তবে জার্মান কর্তৃপক্ষ ‘কিন্ডার ট্রান্সপোর্ট’ নামের বাচ্চাদের বহন করা ট্রেনটি চলতে থাকার নির্দেশ দেয়। লন্ডনের ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষমাণ বাচ্চাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো তাঁদের নতুন পরিবার। স্যার নিকোলাস উইন্টন প্রত্যেক বাচ্চার জন্য ভালো পরিবার এমনকি কোন বাচ্চা কোন পরিবারে যাবে তাও নির্ধারণ করে রেখেছিলেন আগে হতেই। তবে তাঁর ভাষ্যমতে, আরো অনেক বাচ্চা উদ্ধার হয়েছিলো যাদের পরিচয় পাওয়া যায় নিই।
সর্বশেষ শিশুদের বহন করা ট্রেনটি প্রাগ ত্যাগ করে আগস্টের ২ তারিখ। সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ ২৫১ জন বাচ্চাদের নিয়ে নবম স্থানান্তরকরণের উদ্দেশ্যে সবচেয়ে বড় গ্রুপটি লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও হিটলারের হঠাৎ পোল্যান্ড আক্রমণের ফলে তা আর হয়ে উঠে নিই, কারণ আক্রমণ ঠেকাতে জার্মানের নিয়ন্ত্রণাধীন সব বর্ডার বন্ধ করে দেয়াতে সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায় উইন্টনের উদ্ধার কার্যক্রম। হতাশা এবং আফসোস উইন্টনকে ঘিরে ধরে যা তাঁর বক্তব্য হতেই বুঝা যায়। তিনি বলেন,
“উইলসন স্টেশনে আরো অনেক বাচ্চা উদ্ধারের আশায় দাঁড়িয়ে আছে অথচ আমি কিছুই করতে পারলাম না। ঘটনাটি আমাকে বহু বছর পুড়িয়েছে অভ্যন্তরে। লিভারপুল স্টেশনে ওই বাচ্চাদের জন্য অপেক্ষারত পরিবারকে ফিরে যেতে হলো খালি হাতে। দৃশ্যটা বেদনাদায়ক। “
বলাবাহুল্য, হিটলার ওইসময়ে আক্রমণ করে না বসলে আরো বাচ্চাদের বাঁচানো সম্ভব হতো।
সম্মাননা:
শেষ বয়সে যখন তাঁর কৃতিত্ব সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতে পেরে হতবাক হয়ে যায় এবং প্রশংসা-ভালোবাসায় হোন তিনি সিক্ত। তাঁর ১০০-তম জন্মদিনে তাঁকে একটি মাইক্রোলাইটে করে হোয়াইট ওয়ালথাম এয়ারফিল্ডের উপর দিয়ে উড়িয়ে নেয়া হয় এবং তাঁর চালক ছিলো একটি মেয়ে যার পিতাকে উইন্টন বাঁচিয়েছিলেন।
২০০৩ সালে কুইন এলিজাবেথ II তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখায়। একই বছরে আজীবন সম্মাননা হিসেবে “Pride of Britain” পুরষ্কার লাভ করেন।
২০১০ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে “British Hero of the Holocaust” হিসেবে নামকরণ করে।
২০১৪ এর ২৮ অক্টোবর চেক রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমান দ্বারা সর্বোচ্চ সম্মাননা “ Order of the White Lion “ লাভ করেন। সাথে কুনজাকের একটি প্রাথমিক স্কুলের নামকরণ করা হয় তাঁর নামে। ২০০৮ সালে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনয়নের জন্য প্রস্তাব করে চেক রিপাবলিক সরকার। চেক জ্যোতির্বিদরা ‘19384 Winton’ নামের একটি মাইনর প্লানেট তাঁর নামে নামকরণ করে।
তাঁর ১ সেপ্টেম্বরের প্রাগ ছেড়ে যাওয়া শিশু বহনকারী শেষ বাহনের স্মৃতিনুসারে প্রাগের সেই এক নাম্বার প্লাটফর্মে একটি স্মৃতি মূর্তি নির্মাণ করা হয় যেখানে তিনি কোলে একটি বাচ্চা এবং পাশে দাঁড়ানো একটি কিশোরকে ধরে আছেন পাশে একটি সুটকেস সহিত।
তাছাড়া লন্ডনের লিভারপুল স্ট্রিট স্টেশন, যেখানে বাচ্চারা প্রাগ হতে এসে নামে ঠিক ওই জায়গাতে তিনটি স্মৃতিস্মারক নির্মিত হয়েছে। মেয়দানহেডে রেলওয়ে স্টেশনে ২০১০ সালে আরেকটি স্মৃতিস্মারক নির্মিত হয় যেখানে উইন্টন বেঞ্চে বই হাতে বসে আছে এমন অবয়বে।
২০১৪ সালে “Freedom of the City of London” পুরষ্কার লাভ করেন।
Winton Train: ‘ প্রাগ, চেক রিপাবলিক, নেদারল্যান্ড এবং ব্রিটেনের উদ্যোগে ২০০৯ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর ঠিক সকাল ৯:০১ মিনিটে একটি স্টিম লোকোমোটিভ ট্রেন চালু করা হয়। এটির প্রস্তাবনা তাঁরই হাতে জীবন পাওয়া ব্যক্তিদের নেয়া। ট্রেনটির নাম রাখা হয় “Winton Train” যা প্রাগের প্রধান রেলপথ হতে শুরু করে লন্ডন পৌঁছাবে সেই ঐতিহাসিক কিন্ডারস্পোর্ট রুট ধরে। ট্রেনটির ১৭০ জন যাত্রীর মধ্যে ৭০ জন ছিলো উইন্টনের হাতে বেঁচে যাওয়া বাচ্চারা যারা নিজেদের উইন্টনের সন্তান বলে পরিচয় দেয় এবং ৬৪ জন ছিলো তাঁদের ভরণপোষণ করা পরিবারবর্গ এবং স্যার উইন্টনের কন্যা “বারবারা।“
স্যার নিকোলাস বলেন, ট্রেনটি আমাদের পিছে তাকাতে নয় বরং সামনে দেখতে সাহায্য করবে। ট্রেনটি মেইডেনহেডে তাঁর স্ট্যাচুর সামনে এসে সাময়িক সময়ের জন্য থেমে যায় সম্মানার্থে। ‘
তাঁর হাতে বেঁচে যাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে বেশ কিছু পরিচিত মুখ আছেন যারা একসময় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য, ম্যাথমেশিয়ান, পেড্রিয়াট্রিক জেনেটিক্টস, কবি, চলচ্চিত্র নির্মাতা, টিভি সাংবাদিক এবং মালিক, জেরুজালেমের চীফ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন।
তাঁর জীবনী অবলম্বনে বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টারি ড্রামা তৈরি হয়।
১৯৯৯ সালে মাতেজ মিনাক “All My Loved Ones (1999)” নামের ড্রামা।
২০০০ সালে Warner Brothers এর ব্যানারে নির্মিত “Into the arms of Strangers” ডকুমেন্টারিটি ‘Academy Award for Best Documentary Feature” জিতে নেয়।
২০০২ সালে “The Power of Good: Nicholas Winton (2002)” নামের ডকুমেন্টারি ড্রামা ‘এমি এওয়ার্ড’ জিতে নেয়।
২০১১ সালে নির্মিত “Nicky’s Family” নামের আরেকটি প্রামাণ্য ড্রামা ক্যামব্রিজে মঞ্চায়িত হয়। (উইন্টনকে Nicky নামে ডাকতো তাঁর হাতে বেঁচে যাওয়া সন্তানেরা।)
মৃত্যু:
ব্রিটিশ শিন্ডলার – স্যার নিকোলাস উইন্টন ১লা জুলাই ২০১৫ সালে ১০৬ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের ওয়েকসাম পার্ক হসপিটালে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন পৃথিবীর বুকের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিবিসির সেই ভিডিওটি দেখলে কারোও পক্ষেই সম্ভব নয় চোখের জল আটকিয়ে রাখা। স্যার উইন্টন একজন রক্ত মাংসে গড়া একটি মানবতার প্রাচীর।
বিবিসি রেডিও 4’s এর এক সাক্ষাৎকারে সাম্প্রতিক বিশ্বের অবস্থা নিয়ে তিনি অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলেন,
“We have made a mess of it. I don’t think we ever learn from our mistakes of the past. I don’t think we have learned anything.”
“The world today is in a more dangerous situation than it has ever been, and so long as we have got weapons of mass destruction nothing is safe anymore.”
zetia generic date
rybelsus 14 mg pills – oral glucovance purchase desmopressin for sale
zofran in last trimester
why does zyprexa cause weight gain
repaglinide 2mg canada – buy generic empagliflozin for sale cheap empagliflozin 10mg