১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ইতালিতে মুসোলিনীর নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের উন্মেষ ঘটে । ফ্যাসিবাদ শুধু ইতালির রাজনীতিতেই পরিবর্তন আনে নি, বরং পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও ইতালি একটি সক্রিয় বিস্তারধর্মী নীতি অনুসরণ করতে থাকে । ফ্যাসিস্টগণ সাম্রাজ্যবাদ ও যুদ্ধনীতিতে বিশ্বাসী ছিলো । তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইতালির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা ।
ডানপন্থী রাজনীতির উত্থান : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতি
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শত্রুপক্ষ জার্মানির অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে । বিপর্যয় ঘটে অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীর, বিচ্ছিন্নতা ঘটে রাজনৈতিকভাবে এবং অবনমিত হয় জাতীয় মর্যাদা । প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের ফলে জার্মান জাতীয়তাবাদে দেখা দেয় অসন্তোষ । দায়ী করা হয় জার্মান সম্রাট দ্বিতীয় উইলিয়ামকে । জার্মান সম্রাট প্রাণভয়ে সপরিবারে হল্যান্ডে পলায়ন করেন ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দর ৯ নভেম্বর । ফলে অবসান ঘটে জার্মান রাজতন্ত্রের । জার্মান সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের নেতা হের এবার্টের নেতৃত্বে জার্মানি পরিণত হয় প্রজাতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রে । এসময় বিশেষ প্রসার লাভ করতে থাকে সাম্যবাদ । রুশ বিপ্লবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জার্মান কমিউনিস্টগণ তথা স্পার্টাকাসগণ প্লোলেতারিয়েতদের একনায়কতন্ত্র ঘোষণা করে সর্বত্র সোভিয়েত গঠন করে । সমগ্র জার্মানিতে সৈনিক ও শ্রমিকদের সংঘটিত করে বিপ্লব সংঘটিত করতে উদ্যোগ নিতে থাকে। চলতে থাকে অরাজকতা । জার্মান অন্তর্বিপ্লবের সূচনা হলে এবার্ট ও তাঁর সমাজতন্ত্রী সমর্থকগণ কমিউনিস্টদের নির্মমভাবে দমন করেন ।
উইমার প্রজাতন্ত্র
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র জার্মানিতে গণভোটের মাধ্যমে গণপরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয় । একই বছরে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জার্মানির উইমার নামক স্থানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জার্মানির জন্য একটি সংবিধান রচনা করেন । এটি Weimar Constitution নামে পরিচিত । সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্ট ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠিত হয় । উচ্চ পরিষদের নাম হয় রাইখস্ট্যাডেট ও নিম্ন পরিষদের নাম হয় রাইখস্ট্যাগ । সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ও তার মন্ত্রিসভাকে রাইখস্ট্যাগের ভোটের ওপর নির্ভরশীল করা হয় । বিশ বছর বয়সের উর্ধ্বে সকল নরনারীর ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হয় । উদারপন্থী সমাজতন্ত্রী এবার্ট এই প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ।

জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে উইমার প্রজাতন্ত্রের অবস্থান
এই প্রজাতন্ত্র সীমাবদ্ধতার বাইরে ছিলো না । অভ্যন্তরীন সমস্যা ছিলো নানাবিধ । শাসনব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক সংকট ছিলো প্রকট । ফলে জার্মানিতে কমিউনিস্টদের আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে । মস্কোর সহায়তায় তারা জার্মানিতে শ্রমিক–রাজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে । তবে সেই চেষ্টা সফলকাম হয় নি । কমিউনিস্টগণ ছাড়াও অন্যান্য প্রতিক্রিয়াশীল দল প্রজাতন্ত্রকে বিপন্ন করে তোলে । ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার এক সামরিক কর্মচারী ড. কাপ বলপ্রয়োগ করে বার্লিন দখল করেন এবং এবার্ট পলায়ন করেন । কিন্তু ড. কাপের সাফল্য বেশিদিন স্থায়ী হয় নি । কারণ কাপের বিরুদ্ধে এবার্ট ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে কাজে লাগিয়ে লাগাতার শ্রমিক ধর্মঘট চালিয়ে সাত দিনের মধ্যে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করেন । ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মান ওয়ার্কাস পার্টির জেনারেল লুন্ডেনড্রফের সাহায্যে এই প্রজাতন্ত্র ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায় । এসময তাঁর সহকর্মী ছিলেন হিটলার । প্রজাতন্ত্রের সরকার তাদের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় । ফলে হিটলার কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন । কারাগারে বসে হিটলার Mein Kampf নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন । এই বইটি তখনকার তরুণদের কাছে অবশ্যপাঠ্য বই হিসেবে সমাদৃত হয় ।

এই প্রজাতান্ত্রিক সরকারের অন্যতম সমস্যা ছিলো বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিপূরণস্বরূপ বিরাট ঋণের বোঝা । ক্ষতিপূরণ কমিশন ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬৬০ কোটি পাউন্ড জার্মানির মোট দেয় অর্থ বলে নির্ধারণ করে । কিন্তু এই বিরাট অঙ্কের ক্ষতিপূরণ প্রদান এক জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে । সমগ্র জার্মানি ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে থাকে । এমতাবস্থায় জার্মানি কয়েক কিস্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে থামিয়ে দেয় । ফলে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম যুগ্মভাবে ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্দেশ্যে জার্মানির শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চল রুঢ় দখল করে নেয় । প্রত্যুত্তরে ওই অঞ্চলের জার্মানরা বিদ্রোহ শুরু করলে অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ে ।
দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে স্ট্রেসম্যান নামে এক বিশিষ্ট রাজনীতিক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে জার্মান প্রজাতন্ত্র আবার পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে । তিনি রুঢ় অঞ্চলের ধর্মঘট প্রত্যাহার করান এবং ফ্রান্স ও বেলজিয়ামকে ক্ষতিপূরণের বাবদ অর্থপ্রদান শুরু করেন । তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডসহ মিত্র রাষ্ট্রসমূকে বোঝাতে সক্ষম হন যে জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত না হলে ক্ষতিপূরণ আদায় অসম্ভব । এমতাবস্থায় ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে জার্মানির অর্থনৈতিক সামর্থ্য বিবেচনার জন্য ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন অর্থনীতিবিদ চার্লস ডওজের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয় । এই কমিশন অল্প অল্প করে জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করার সুপারিশ করে । এই পরিকল্পনা মিত্ররাষ্ট্রসমূহ ও জার্মানি অনুমোদন করে । ফ্রান্স ও বেলজিয়াম রুঢ় অঞ্চল থেকে তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে । এই পরিকল্পনা জার্মানির অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে । আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ হয় । ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে লোকার্নো চুক্তি স্বাক্ষর করে । এই চুক্তির ফলে জার্মানি লীগ অব নেশনসের সদস্যপদ লাভ করে । এর কৃতিত্ব স্ট্রেসম্যানের । ডওজ কমিশনের সুপারিশের ফলে জার্মানির বিদেশী ঋণলাভের যে সুযোগ ঘটে তার ফলে শিল্পবণিজ্যের অভূতপূর্ব উন্নতির সূচনা হয় । বেকারত্ব হ্রাস পায় এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় ।
এই উন্নতি স্থায়ী হলো না । ক্রমশ জনগণ ক্ষতিপূরণ দানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে মিত্রশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অপর এক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ ওয়েন ইয়ং এর সভাপতিত্বে একটি কমিশন গঠন করে । এই কমিশনের সুপারিশে জার্মানির প্রদেয় মোট ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হ্রাস করা হয় । জার্মানিকে সহজ কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করতে দেওয়া হয় । এছাড়াও জার্মানির আর্থিক উন্নতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র তিনশত মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করে ।
উইমার প্রজাতন্ত্রের অবসান
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে স্ট্রেসম্যানের অকস্মাৎ মৃত্যু হলে জার্মানিতে প্রজাতন্ত্র রক্ষার আর কোনো উপর্যুক্ত কোনো লোক ছিলো না । উল্লেখ্য, ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে এবার্টের মৃত্যুর পর হিন্ডেনবার্গ জার্মানির রাষ্ট্রপতি হলেও জার্মানিকে স্থিতিশীল করার মত শক্তি তাঁর ছিলো না । ইতঃপূর্বে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে জার্মানিতে ভয়াবহ অর্থমন্দা হয় । এর ফলে প্রজাতন্ত্রের প্রাণশক্তি নিঃশেষিত হয় । ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিকে ঋণস্বরূপ অর্থ সহায়তা দেওয়ার অক্ষমতা প্রকাশ করলে জার্মানির অর্থনীতিতে ধ্বস নামে । ফলে জার্মানির পক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে । ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি বার্ষিক কিস্তি পরিশোধ করার অক্ষমতা জানায় । অর্থমন্দার ফলে এই প্রজাতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা বিনষ্ট হয় । এই সুযোগে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে নাৎসি দল ও কমিউনিস্টরা বহু আসন দখল করে নেয় । ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে জার্মানির রাইখস্ট্যাগে নাৎসি দল ৬০৮ টি আসনের মধ্যে ২৩০ টি আসন লাভ করে । ফলে বৃদ্ধ প্রেসিডেন্ট হিন্ডেনবার্গ পরিস্থিতির চাপে পড়ে হিটলারকে প্রধানমন্ত্রী তথা চ্যান্সেলর করতে বাধ্য হন । ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট হিন্ডেনবার্গ মারা গেলে হিটলার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী উভয় পদ একীভূত করে জার্মানির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন । এভাবে উইমার প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটে ।
হিটলারের উত্থান

এডলফ হিটলার (Adolf Hitler): জন্ম ২০ এপ্রিল ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দ, অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউয়ে । পিতা ছিলেন অস্ট্রিয়ার শুল্ক বিভাগের সাধারণ কর্মচারী এবং মাতা ছিলেন নারী কৃষক । হিটলার তাঁর আত্মজীবনী বইয়ে উল্লেখ করেন, অর্থাভাবে তাঁকে স্কুলত্যাগ করতে হয় । তাঁর বয়স যখন ১৩ বছর তখন তাঁর পিতা মারা যান । ফলে শুরু হয় তাঁর সংগ্রামী জীবন । ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনায় আসেন এবং চারুকলায় ভর্তি হন । সেখানে জীবনের কয়েকটি বছর অতিবাহিত করেন এবং এসময় তিনি ইহুদিবিদ্বেষী ও সাম্যবাদবিরোধী মনোভাবাপন্ন হয়ে ওঠেন । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন । যুদ্ধের পর তিনি মিউনিখে ফিরে আসেন এবং সেখানে প্রায় পাঁচ বছর ভবঘুরে হিসেবে অতিবহিত করেন । যুদ্ধে জার্মানদের শোচনীয় পরাজয় হিটলারকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে এবং তিনি স্বদেশের হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার এবং ভার্সাইয়ের অপমানজনক সন্ধির প্রতিশোধ গ্রহণের দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন । ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে হিটলার জার্মান জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক দল তথা নাৎসি দল গঠন করেন । তিনি এই দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং দলীয় প্রধান তথা ফ্যুয়েরার (Fuhrer) হিসেবে ক্ষমতার অধিকারী হন। তিনি একটি আধাসামরিক বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন । প্রাক্তন সামরিক কর্মচারী ও বেকার যুবকদের সমন্বয়ে এই আধাসামরিক বাহিনী গঠিত হয় । এই বাহিনী S A নামে পরিচিত ছিলো । শীঘ্রই এই বাহিনীর সহায়তায় জার্মানির রাজনৈতি মহলে হিটলার বেশ প্রভবশালী হয়ে ওঠেন । ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে জার্মান সেনাধ্যক্ষ লুন্ডেনডর্ফ ও অন্য কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় বলপূর্বক ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হিটলার কারাবরণ করেন । কারাগারে বসে হিটলার Mein Kampf নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন । এই বইটি তখনকার তরুণদের কাছে অবশ্যপাঠ্য বই হিসেবে সমাদৃত হয় ।
নাৎসি দল গঠন করার মধ্য দিয়ে নতুন ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হন হিটলার । ’স্বস্তিকা’ ছিলো নাৎসি দলের প্রতীক । দলের সদস্যগণ কতৃক নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দেওয়া এবং’স্বস্তিকা’ চিহ্নিত বিশেষ পোশাক দলীয় সদস্যদের ইউনিফর্ম করা হয় । সমগ্র জার্মানিতে হিটলার তাঁর কর্মসূচিকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেন । তাঁর কর্মসূচি ছিলো–
১/ ভার্সাই সন্ধির নিন্দা করা
২/ সমগ্র জার্মান ভাষাভাষী জনগণকে নিয়ে এক বৃহৎ জার্মান রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব
৩/ জার্মানির ইহুদি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে অভিযুক্ত করা ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের জন্য ইহুদিদের দায়ী করা
৪/ জার্মানিতে মার্কসীয় সমাজতন্ত্রের বদলে জাতীয় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা
মুসোলিনীর উত্থান

উনবিংশ শতাব্দির শেষভাগে ইতালি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হয় । কিন্তু গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও জাতীয়তাবোধের বিকাশের অভাবে নবগঠিত ইতালি ইউরোপীয় তথা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যথেষ্ট মর্যাদার আসনে উন্নীত হতে পারে নি । জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব ইতালির অগ্রগতির পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিলো । ইতালিয় জনগণের জীবনমানের নিম্নমান এবং দারিদ্র্য যখন সরকারের কাছে স্থায়ী সমস্যা হিসেবে প্রতিভাত হচ্ছিলো তখনই শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ । ইতালি জার্মানির সাথে মৈত্রী চুক্তি করলেও শেষ পর্যন্ত ইতালি মিত্রপক্ষে যোগদান করে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ইতালিতে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়। এছাড়া উগ্রপন্থী সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদীগণের ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের ফলে শিল্পপতি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয় । মধ্যবিত্ত শ্রেণী উদারতন্ত্রী সরকারের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে এবং একটি শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিতে থাকে ।
বলপ্রয়োগে মুসোলিনী ইতালির ক্ষমতা গ্রহণ করেন ফ্যাসিস্ট দলের নেতা ছিলেন মুসোলিনী । তাঁর আবির্ভাব ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা । প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অবসানের পর ইউরোপে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি কয়েকশত কর্মচ্যুত সৈনিক ও সমাজতন্ত্রবিরোধী একদল উৎসাহী জাতীয়তাবাদীদের নিয়ে মিলান শহরে ফ্যাসিস্ট সংগ্রামী দল গঠন করেন । ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ইতালিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ফ্যাসিস্টরা ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন করেও আইনসভায় মাত্র ৩১ টি আসন পায় । ব্যালটের মাধ্যমে ক্ষমতা পাওয়া অসম্ভব জেনে মুসোলিনী বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের সিদ্ধান্ত নেন । ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে মুসোলিনীর ডাকে হাজার হাজার সশস্ত্র ফ্যাসিস্ট স্বেচ্ছাসেবক রাজধানী রোমে প্রবেশ করে। এমতাবস্থায় ইতালির সম্রাট ভিক্টর তৃতীয় ইমানুয়েল মুসোলিনীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে বাধ্য হন । ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর মুসোলিনী ফ্যাসিস্ট মন্ত্রিসভা গঠন করে ইতালির শাসনভার গ্রহণ করেন। এভাবে মুসোলিনী ইতালিতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হন।
(চলবে) – দ্বিতীয় বা শেষ পর্বে থাকছে ” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ”, ” ভার্সাই সন্ধি ও জার্মানির উগ্র জাতীয়তাবাদ”, “সাম্রাজ্যবাদ ও তোষণ নীতি”, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ”, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল” । শেষ পর্বটি প্রকাশিত হবে আগামিকাল। চোখ রাখুন আমাদের সাইট বা ফেইসবুক পেইজ এ।
fosphenytoin will decrease the level or effect of ivermectin by P glycoprotein MDR1 efflux transporter cialis 20mg price A unified holy alliance may no longer be just a dream, Thus blood pressure scales broke can i lower blood pressure naturally out the civil war of the Holy Alliance